ইমাম শাফেয়ী
ইমাম উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল-শাফিঈ (আরবি: أبـو عـبـد الله مـحـمـد ابـن إدريـس الـشـافـعيّ) হলেন একজন ফিলিস্তিন-আরব মুসলমান তাত্ত্বিক, লেখক এবং পণ্ডিত যিনি ইসলামের অন্যতম সেরা আইনবিদ হিসাবে পরিচিত। তিনি ইমাম শাফিঈ নামে বেশি পরিচিত। তাকে শায়খুল ইসলাম হিসাবেও সম্বোধন করা হয় এবং তিনি ইসলামের প্রধান চারটি মাযহাবের একটি শাফিঈ মাযহাবের ইমাম। তিনি ছিলেন ইমাম মালিক ইবনে আনাসের অন্যতম সেরা শিক্ষার্থী এবং তিনি নাজারাহ-এর গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৬]
ইমামুল ফিকহ, ইমামুল হুজ্জাহ ইদ্রিস আশ-শাফিঈ اَلشَّافِعِيُّ | |
---|---|
![]() ইসলামী চারুলিপিতে লিখিত আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল-শাফিঈ-এ নাম | |
উপাধি | শাইখুল ইসলাম |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৫০ হিজরী ৭৬৭ সাল গাজা, আব্বাসীয় খিলাফত |
মৃত্যু | ১ রজব ২০৪ হিজরী ১৯ জানুয়ারি ৮২০ সাল (৫৪ বছর) আল-ফুসতাত, আব্বাসীয় খিলাফত |
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | খিলাফত |
জাতিসত্তা | আরব |
যুগ | ইসলামি স্বর্ণযুগ |
আখ্যা | সুন্নি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | আছারি |
প্রধান আগ্রহ | ফিকহ, হাদিস |
উল্লেখযোগ্য ধারণা | শাফিঈ মাজহাব |
উল্লেখযোগ্য কাজ | আল-রিসালা, কিতাব আল-উম্ম, মুসনাদ আল-শাফিঈ |
মুসলিম নেতা | |
যার দ্বারা প্রভাবিত
| |
যাদের প্রভাবিত করেন
|
জন্ম
ইমাম শাফিঈ ১৫০ হিজরী সন অর্থাৎ ৭৬৭ সালের অগাস্ট মাসে ফিলিস্তিনের গাজা নামক শহরে জন্ম গ্রহণ করেন।[৭]
বংশ পরিচয়
ইমাম শাফিঈর পিতার ইদ্রিস ও দাদার নাম আব্বাস। ইমাম শাফিঈর উপনাম আবু আব্দুল্লাহ। বংশনামা: "মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস বিন আব্বাস বিন উসমান বিন শাফিঈ আল কুরায়েশী আল শাফিঈ আল মাক্কী"। ইমাম শাফিঈর বংশ কুরাইশ বংশের অন্যতম আবদে মানাফ বিন কুসাই এর কাছে মিলিত হয়েছে, তাই তার বংশের মূল এবং রাসূল এর বংশ একই। এ জন্য তিনি আল-মুত্তালাবী বলে পরিচিত। তিনি কুরাইশ বংশের তাই কুরায়েশী এবং তার দাদা "শাফে" সাহাবীর দিকে সম্পৃক্ত করায় শাফিঈ, মক্কায় প্রতিপালিত হওয়ায় মাক্কী বলে পরিচিতি লাভ করেন।
ইমাম শাফিঈ-র উপাধি হল, নাসিরুল হাদীস যার অর্থ হাদিসের সাহায্যকারী বা সহায়ক; কারণ হাদিস সংগ্রহ ও সংকলন বিশেষ করে হাদিসের যাচাই-বাছাইয়ে তিনি সর্ব প্রথম অবদান রাখেন। তিনিই সর্ব প্রথম হাদিস শাস্ত্রের নীতিমালা প্রণয়নে কলম ধরেন আর রিসালাহ ও আল উম্ম গ্রন্থদ্বয়ে। অতঃপর সে পথ ধরেই পরবর্তী ইমামগণ অগ্রসর হন।
বাল্যকাল
ইমাম শাফিঈ মাত্র ২ বছর বয়সেই পিতাকে হারিয়ে ইয়াতীম হয়ে যান । পিতার মৃত্যুর পর অভিভাবকহীনতা ও দারিদ্রতা ইত্যাদি নানা সমস্যার সম্মুখীন হন, পিতা মারা গেলে বিচক্ষণ মা তাকে দু’বছর বয়সে পিতৃভুমি ইয়ামেনে নিয়ে আসেন । তিনি তাঁর ছেলেকে কুরআন মুখস্থ করানোয় মনোনিবেশ করান এবং ৭ বছর বয়সে ইমাম শাফিঈ সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করে ফেলেন। এর পাশাপাশি ইমাম শাফিঈ বিভিন্ন মসজিদে ঘুরে আলেমদের শরণাপন্ন হয়ে বিভিন্ন হাদীস ও মাসআলা মুখস্থ করতে শুরু করেন ।(২) এর কিছু বছর পরেই তিনি তাঁর মায়ের সাথে মক্কায় পাড়ি জমান । ইমাম শাফিঈ ছোটবেলা থেকেই শিক্ষানুরাগী এবং কঠোর জ্ঞান সাধনা করার ফলে ৭ বছরে কুরআনের হাফেয এবং ১০ বছরে মুয়াত্তা হাদীস গ্রন্থ (ইমাম মালিকের “মুয়াত্তা” সর্বপ্রথম প্রামান্য হাদীসগ্রন্থ) হিফয করে ১৮ বছর বয়সে থেকে ফতোয়া প্রদান শুরু করেন। সাথে সাথে মক্কায় আরবী পণ্ডিতদের কাছে আরবী কবিতা ও ভাষা জ্ঞানে পূর্ণ পান্ডিত্ব লাভ করেন।(৩)
মদিনা সফর
তিনি ছোটবেলায় একবার মদীনা সফর করেন ইমাম মালিকের সংকলিত গ্রন্থ মুয়াত্তা মুখস্থ করে তাকে শুনান, ইমাম শাফিঈর ছোট বয়সে এই প্রজ্ঞা ও প্রতিভা দেখে তিনি অভিভূত হন। এবং তাকে স্নেহের পাত্র বানিয়ে নেন । ইমাম শাফিঈ ইমাম মালিকের নিকট জ্ঞান চর্চা শুরু করেন । মদীনার পর তিনি ইয়ামানে শিক্ষার উদ্দেশ্যে বের হন। সেখানে শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তারে আত্মনিয়োগ করেন। জনসমাজে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে তিনি বিদ্বেষিদের প্রকোপে পড়েন, ফলে তিনি ইয়ামেন ত্যাগ করে আবার মক্কায় ফিরে আসেন ।(৪)
ইরাক সফর
ইমাম শাফিঈ ইরাকে দু’বার সফর করেন, প্রথমবার রাজনৈতিক কারণে খলীফা হারুনুর রশীদ তাকে ইরাকে জোরপূর্বক পাঠান । সেখানে গিয়ে তিনি ইরাকের প্রসিদ্ধ জ্ঞানীদের নিকট শিক্ষা সমাপন করে আবার মক্কায় ফিরে আসেন এবং পূর্ণদমে দরস-তাদরীস ও ইসলাম প্রচার-প্রসারের কাজে একটানা নয় বছর এই কাজে আত্মনিয়োগ করেন।
অতঃপর ১৯৫ হিঃ ইমাম শাফিঈ আবারো ইরাক সফর করেন । প্রথম সফর ছিল জ্ঞান শিক্ষা গ্রহণের আর এ সফর হলো শিক্ষা গ্রহণ পাশাপাশি শিক্ষাদানের জন্য। ইমাম বায়হাকী (রহ.) স্বীয় সনদে বর্ণনা কারেন, হুসাইন কারাবিসী আমার কাছে আসলেন এবং বললেন যে, আমাদের মাঝে একজন হাদীস পন্থী (আহলে হাদীস) এসেছেন চল আমরা তার কাছে গিয়ে একটু হাসি-ঠাট্টা করি। আবূ ছাওর বলেন : আমরা তার কাছে গেলাম, হুসাইন ইমামকে এক মাসআলা জিজ্ঞাসা করলেন, জবাবে ইমাম সাহেব আল্লাহ ও রাসূল উদ্ধৃতি দিয়ে তাদের জবাব দিতে থাকলেন এভাবে রাত হয়ে গেল । তখন আমরা তার কুরআন ও হাদীসের অগাধ পান্ডিত্ব দেখে আশ্চর্য হলাম, শেষটায় আমরা তার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। এ সফরেই ইমাম আহমাদ বিন হানবাল (রহ.) ইমাম শাফিঈর সাক্ষাৎ করেন।(৫)
মিশর সফর
ইমাম শাফিঈ (রহ.)-এর ইরাকে অবস্থান যেমনি প্রশংসনিয় তেমনি আবার অপরদিক হতে কালো মেঘ নেমে আসতে লাগল। মুতাযিলা আলিমরা রাজনৈতিক প্রাঙ্গণ দখল করায় খলীফা হারুণসহ সে সময়ের আববাসীয় খলীফাগণ ফালসাফা ও তর্কবিদ্যা-মানতিকে প্রভাবিত হয়ে কুরআন মাখলুক বা মুতাজিলা বিশ্বাস পোষণ করে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ইমাম যেমনঃ ইমাম আহমাদ, ইমাম শাফিঈর উপর নির্যাতন শুরু করে, যার ফলে বাধ্য হয়ে ইমাম শাফিঈ ইরাক ত্যাগ করে মিসরে পারি জমান।(৬)
মিসরে আগমন করলেই মিসরবাসী তাকে অভিনন্দন জানান ও মিসরের বিখ্যাত মসজিদ– আমর বিন আল আস মসজিদে কিছু আলোচনা পেশ করলে সকলেই তার আলোচনায় মুগ্ধ হয়ে যান । এবং তারা এক বাক্যে স্বীকার করেন যে, মিসরের বুকে এমন প্রতিভাবান ব্যক্তির কখনও আগমন ঘটেনি, যিনি কুরাইশ বংশোদ্ভুত, যার সালাতের ন্যায় উত্তম সালাত আদায় করতে কাউকে দেখিনি, যার চেহারার ন্যায় সুন্দর চেহারা খুব কমই আছে, যার বক্তব্য ও বাচন ভঙ্গির মত আকর্ষণীয় ও শ্রুতিমধূর কাউকে দেখিনি।
তার হাদীস গবেষণা ও চর্চায় যারা হানাফী বা মালিকী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন, তার অনেকেই হাদীসের আলোকে ইসলাম চর্চার সুযোগ লাভে ধন্য হন। ইমাম শাফিঈ জীবনের শেষ পর্যন্ত মিসরেই অবস্থান করেন এবং তার মূল্যবান গ্রন্থসমূহ সেখানেই সংকলন করেন।
ইমাম শাফিঈর আকিদাহ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ইমাম শাফিঈ (রহ.) আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআতের ইমাম । যিনি ছিলেন কুরআন ও সুন্নাহর একনিষ্ঠ অনুসারী, আকীদাহ্-বিশ্বাস, আমল-আখ্লাক, ইবাদাত-বন্দেগী সকল ক্ষেত্রে তিনি সব কিছুর উর্দ্ধে কুরআন ও সুন্নাহ্কে প্রাধান্য দিতেন এবং আকড়ে ধরতেন, তিনি কালাম পন্থী যুক্তিবাদী বিদআতি ঘোর বিরোধী ছিলেন, অনুরূপ রায় ও কিয়াস পন্থীদেরও বিরোধী ছিলেন। সুতরাং কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআতের আকীদাহ্-বিশ্বাসই ইমাম শাফিঈর আকীদাহ্-বিশ্বাস।
কুরআন সম্পর্কে
কুরআন আল্লাহর বাণী।কুরআনকে আল্লাহর সৃষ্টি দাবিকারীদের ইমাম শাফিঈ(রহ.) কাফের বলতেন। ইমাম লালকাঈ(রহ.) রবী‘ বিন সুলায়মানের বরাতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, ইমাম শাফিঈ(রহ.)বলেছেন,
مَنْ قَالَ اَلْقُرْآنُ مَخْلُوْقٌ فَهُوَ كَافِرٌ
অনুবাদঃ ‘যে বলবে যে, কুরআন মাখলূক( সৃষ্ট) সে কাফের’।[৮]
আল্লাহর অবস্থান
ইমাম ইবনুল কাইয়ুম(রহ.) ইমাম শাফিঈ(রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম শাফিঈ(রহ.) বলেছেন,
যে সুন্নাহর উপর আমি আছি, যার উপর আমি আমার মুহাদ্দিস সাথী-বন্ধুদের দেখেছি এবং সুফিয়ান, মালিক প্রমুখ যাদেরকে আমি দেখেছি এবং যাদের থেকে হাদিস গ্রহণ করেছি সেই সুন্নাহ অনুযায়ী আমাদের সকলের কথা এই যে, এসব সাক্ষ্যের স্বীকৃতি দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ রয়েছেন আকাশে তাঁর ‘আরশের উপর, তিনি যেভাবে ইচ্ছা তার সৃষ্টির নিকটবর্তী হন এবং যেভাবে ইচ্ছা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। [৯][১০][১১][১২][১৩]
আল্লাহর সিফাত বা গুণাবলি
আল্লাহর হাত,পা, হাসি,রাগ ইত্যাদি সিফাত সম্পর্কে যে বর্ণনা আছে সে সম্পর্কে কোন রূপ পরিবর্তন করার পরিপন্থী ছিলেন ইমাম শাফিঈ(রহ.)।তিনি বলেছেন,
কুরআন ও সুন্নাহ-তে আল্লাহর যেসব গুণ বর্ণিত হয়েছে সেগুলো আমরা যথাযথ মানি এবং তাঁর সাথে কোনরূপ উপমা দেওয়া অস্বীকার করি, যেমন তিনি নিজেই নিজের বেলায় তা অস্বীকার করেছেন। لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ‘তার তুল্য কেউ নেই’ (শূরা ২৬/১১)।[১৪]
ইমামের শিক্ষকবৃন্দ
ইমাম শাফিঈ (রহ.) স্বীয় যুগে বিভিন্ন দেশে অগণিত আলিম হতে শিক্ষালাভ করেন । তন্মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্যঃ(৭)
(১) ইমাম সুফইয়ান বিন উয়ায়নাহ (রহ.) - (মৃত: ১৯৮ হিঃ) (মাক্কী)।
(২) ইমাম ইসমাঈল বিন আব্দুল্লাহ (রহ.) - (মৃত: ১৭০ হিঃ) (মাক্কী)।
(৩) ইমাম মুসলিম বিন খালিদ (রহ.) - (মৃত: ১৭৯ হিঃ) (মাক্কী)।
(৪) ইমাম মালিক বিন আনাস (রহ.) - (মৃত: ১৭৯ হিঃ) (মাদানী)।
(৫) ইমাম মুহাম্মদ বিন ইসমাইল (রহ.) - (মৃত: ২০০ হিঃ) (মাদানী)।
(৬) ইমাম হিশাম বিন ইউসুফ (রহ.) - (মৃত: ১৯৭ হিঃ) (ইয়ামানী)।
(৭) ইমাম ওয়াকী বিন আল জাররাহ্ - (রহ.) (মৃত: ১৯৭ হিঃ) (কুফী)।
ইমামের ছাত্রবৃন্দ
ইমাম শাফিঈ (রহ.)-এর ছাত্র হওয়ার যারা সৌভাগ্য লাভ করেছেন তাদের সংখ্যা ও বর্ণনা দেয়া অসম্ভব । কারণ তিনি যে দেশেই ভ্রমণ করেছেন এবং শিক্ষার আসরে বসেছেন সেখানেই অগণিত ছাত্র তৈরী হয়েছে।
নিম্নে কয়েকজন প্রসিদ্ধ ছাত্রের নাম উল্লেখ করা হলঃ
১. ইমাম রাবী বিন সুলায়মান আল মাসরী।
২. ইমাম ইসমাঈল বিন ইয়াহইয়া আল মুযানী আল মাসরী।
৩. ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ্ আলফাকীহ আল মাসরী।
৪. ইমাম আবূ ইয়াকূব ইউসুফ বিন ইয়াহইয়া আল মাসরী।
৫. ইমাম আবুল হাসান বিন মুহাম্মদ আয্যাফরানী।
৬. ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ.।
আলিম সমাজের মন্তব্য
ইসলামে ইমাম শাফিঈর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি তাঁর বিদ্যা, বুদ্ধি ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে ইসলামকে প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন । ইসলাম বিশেষজ্ঞদের চোখে ইমাম শাফিঈ সম্পর্কে কিছু মন্তব্য নিচে দেয়া হল।
(১) ইমামুল মাদীনাহ- ইমাম মালিক (রহ.) বলেন : "আমি এ যুবক ইমাম শাফিঈ-র মত অধিক বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান আর কোন কোরাইশীকে পাইনি" । (৮)
(২) ইমাম আবূল হাসান আয্যাফরানী বলেন : ‘‘আমি ইমাম শাফিঈ-র ন্যায় অধিক সম্মানী, মর্যাদাশীল, দানশীল, আল্লাহ ভীরু দ্বীনদার ও অধিক জ্ঞানী আর কাউকে দেখিনি’’ ।
(৩) ইমাম ইসহাক বিন রাহ্উয়াহ (রহ.) বলেন : আমি ইমাম আহমাদ (রহ.) সহ মক্কায় ইমাম শাফিঈ (রহ.)-এর কাছে গেলাম, তাঁকে বেশ কিছু জিজ্ঞাসা করলাম তিনি খুব ভদ্রতার সাথে সাবলীল ভাষায় প্রশ্নের জবাব দিলেন।
(৪) একদল আলেম বলেন: ইমাম শাফিঈ হলেন স্বীয় যুগে কুরআনের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী মানুষ।’’
(৫) ইমাম ইসহাক বলেন : আমি যদি তাঁর কুরআনের পাণ্ডিত্য সম্পর্কে আগে অবগত হতাম তাহলে তাঁর কাছে শিক্ষার জন্য থেকে যেতাম’’ ।
গ্রন্থাবলী
ইমাম শাফিঈ অসংখ্য গ্রন্থ রেখে গেছেন, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -[১৫]
(১) ‘‘কিতাবুল উম্ম’’ মূলতঃ এটি একটি হাদীসের গ্রন্থ, যা ফিকহী পদ্ধতিতে স্বীয় সনদসহ সংকলন করেছেন, এটি একটি বিশাল গ্রন্থ। যাহা ৯টি বড় খণ্ডে প্রকাশিত।
(২) ‘‘আর রিসালাহ’’ এটা সেই গ্রন্থ যাতে ইমাম শাফিঈ উসূলে হাদীস ও উসূলে ফিকহে সর্বপ্রথম কলম ধরেছেন।
(৩) ‘‘আহকামুল কুরআন’’।
(৪) ‘‘ইখতিলাফুল হাদীস’’।
(৫) ‘‘সিফাতুল আমরি ওয়ান্নাহী’’।
(৬) ‘‘জিমাউল ইলম’’।
(৭) ‘‘বায়ানুল ফারয’’।
(৮) ‘‘ফাযাইলু কুরাইশ’’।
(৯) ‘‘ইখতিলাফুল ইরাকিঈন’’।
(১০) ইখতিলাফু মালিক ওয়া শাফিয়ী।
ইত্যাদি আরো বহু গ্রন্থ রয়েছে।
মৃত্যু
ইমাম শাফিঈ (রহ.) ৮২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে জানুয়ারি অর্থাৎ ২০৪ হিজরীর রজব মাসের প্রথম দিন জুমআর রাত্রিতে ৫২ বছর বয়সে পৃথিবী হতে বিদায় গ্রহণ করেন।[১৬]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.