শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

আশুর

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

আশুরmap
Remove ads

আশুর (আক্কাদীয়; সিরীয়: ܐܫܘܪ Āšūr, 'আশুর; ফার্সি: آشور: Āshūr; হিব্রু ভাষায়: אַשּׁוּראַשּׁוּר;হিব্রু ভাষায়: אַשּׁוּר আসসুর; আরবি: اشور: Āshūr, কুর্দি: আসুর) কালা আত শেরকাত নামেও পরিচিত, প্রাচীন আশারীয় শহর, প্রাচীন আসিরিয় সাম্রাজ্য ( ২০২৫-১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), মধ্য অ্যাসিরিয় সাম্রাজ্য (১৩৬৫-১০৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) এবং নব্য-আসিরিয় সাম্রাজ্যের (৯১১-৬০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রাজধানী ছিলো। শহরটির ধ্বংসাবশেষ দজলা নদীর পশ্চিম পাড়ে, ছোট যাব নদীর উজানে, আধুনিক দিনের ইরাকে স্পষ্ট করে বলতে গেলে সালাহউদ্দিন প্রদেশের আল-শিরকাত জেলায় অবস্থিত।

দ্রুত তথ্য অবস্থান, অঞ্চল ...
Remove ads

শহরটির বিস্তৃতি প্রায় ৪০০০ বছর ধরে অব্যহত ছিলো, তৃতীয় সহস্রাব্দের খ্রিস্টপূর্বাব্দ (২৬০০ খ্রিস্ট্রপূর্বাব্দ)[][] থেকে মধ্য চতুর্দশ শতক পর্যন্ত, যখন এর ক্ষুদ্র আদিবাসী অ্যাসিরিয় জনসংখ্যা (তখন খ্রীষ্টান) তৈমুর লং হত্যা করে। স্থানটি ২০০৩ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত। মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের সময় এখানে একটি বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয় ফলে স্থানটির কিছু অংশ পানির নিচে তলিয়ে যেতো। এটা নিমরুদ থেকে ৬৫ কিমি (৪০ মা) দক্ষিণে এবং নিনেভেহ থেকে ১০০ কিমি (৬২ মা) দক্ষিণে অবস্থিত।

Remove ads

অনুসন্ধানের ইতিহাস

১৮৯৮ সালে জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদগণ আশুরের অনুসন্ধান শুরু করে। ১৯৯০ সালে ফ্রিড্রিশ ডেলিটজশ খননকাজ শুরু করেন এবং জার্মান ওরিয়েন্টাল সোসাইটির একটি দল যার প্রথম নেতৃত্বে ছিলেন রবার্ট কোল্ডেওয়ে এবং পরে ওয়াল্টার এন্ড্রের নেতৃত্বে ১৯০৩-১৯১৩ সাল পর্যন্ত অব্যহত থাকে।[][][][][] ১৬০০০ এর অধিক কিউনিফর্ম লিপি যুক্ত ট্যাবলেট আবিষ্কৃত হয়েছিল। প্রাপ্ত অনেক বস্তুকে বার্লিনের পেরাগ্যামন জাদুঘরে পাঠানো হয়।

সাম্প্রতিক কালের মধ্যে বি. হ্রোউডা মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাভারীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৯৯০ সালে আশুরের খননকাজ পরিচালনা করেন।[] একই সময়ে ১৯৮৮ ও ১৯৮৯ সালে সাইটটিতে থেকে জার্মান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পক্ষে আর. ডিট্টম্যান কাজ করছিলেন।[]

Remove ads

নাম

আশুর শহরের নাম এবং এই শহর দ্বারা শাসিত ভূমি এবং এদের দেবতা যা কাছ থেকে স্থানীয় অধিবাসীগন তাদের নাম নিতেন এবং পুরো আসিরীয়া সাম্রাজ্য গড়ে তোলে যেখানে আজকের উত্তর ইরাক, উত্তর পূর্ব সিরিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব তুরস্ক অবস্থিত। আজকের দিনেও মধ্য প্রাচ্যে আশিরিয়দের দেখতে পাওয়া যায় বিশেষ করে ইরাক, ইরান, সিরিয়া, তুরস্ক, এবং প্রবাসী পশ্চিমা বিশ্বে। আশুর (আশুরায়ু) হচ্ছে সিরিয়া এবং সিরিয়াকের মূল শব্দ এবং এগুলো আশারিয় ভাষার ইন্দো-ইউরোপীয় উপজাত এবং অনেক শতাব্দী শুধুমাত্র আশারিয়া এবং আশারিয় ব্যবহৃত হয়েছে লেভ্যান্ট দের জন্যেও এবং খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের সেলেকিয় সামাজ্যের অধিবাসীদের জন্য।

Remove ads

প্রাক ব্রোঞ্জ যুগ

প্রত্নতত্ত্ব প্রকাশ করে যে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের মধ্যভাগে শহরটি টিকে ছিলো। খ্রিষ্টপূর্ব ২৫ থেকে ২১ শতকে আসিরীয়া আবির্ভূত হওয়ার আগে সুমেরীয় রাজত্ব চলছিলো। শহরে সর্বপ্রাচীন ধ্বংসাবশেষের মধ্যে প্রাচীন রাজপ্রাসাদের পাশাপাশি ইশতার মন্দিরের ভিত্তি উল্লেখযোগ্য। পরবর্তী সময়ে শহরটি শাসন করে আক্কাদীয় সাম্রাজ্যের রাজাগণ। তৃতীয় রাজবংশের শাসনামলে সুমেরীয়দের শাসন করতো আশারিয় গভর্নর।[১০]

প্রাচীন ও মধ্য আশিরিয়া

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
মেসোপটেমিয়া, খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ২য় সহস্রাব্দে

নব্য-সুমেরীয় সময়ে উর-তৃতীয় রাজবংশ খ্রিস্টপূর্ব ২১ শতকে এসে এলামাইটদের হাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০ শতকের মাঝামাঝি গুতিয়ান এবং আমোরীয়দের অভিযান বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় আক্কাডিয়ভাষী রাজা নিশ্চিন্ত হন যখন সুমেররা আমোরিটিদের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। খ্রিস্টপূর্ব ২১ শতকে আশারিয় রাজা উশপিয়া তার নিজ শহরে প্রথম মন্দিরটি দেবতা আশুরের উদ্দেশ্যে নির্মাণ করেন। যদিও এই তথ্যটি ১৩ শতকে ১ম শালমানেসের একটি শিলালিপি থেকে জানা যায়। মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাকাল সম্ভবত প্রথম যখন আশুর নগরের অধিবাসীরা নগর দেবতার পৃষ্ঠপোষকতায় এই অঞ্চলে প্রথম আবাস গড়ে তোলে সেই সময়ে। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে ১ম পুজুর-আশুর নতুন রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার উত্তরসুরি ইলুশুমা, ১ম এরিশুমা, সারগন শহরে প্রতিষ্ঠিত আশুর, হাদাদইশতার প্রভূতি দেবতার উদ্দেশ্যে নির্মিত মন্দির নির্মাণ সম্পর্কে শিলালিপি রেখে গেছেন। এই সময়ে সমৃদ্ধি এবং স্বাধীনতা উৎকর্ষ লাভ করে। অঞ্চলে তুলনামূলক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করে, মেসোপটেমিয়া এবং আনাতোলিয়ার মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পায় এবং আশিরিয়া নগর কৌশলগত অবস্থানের কারণে ব্যাপকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়। ব্যবসায়ীগণ ক্যারাভ্যানে করে তাদের মালামাল আনাতোলিয়া নিয়ে যায় আনাতোলিয়ার আশারিয় কলোনিতে বিক্রির উদ্দেশ্যে যার প্রথম সারির একটি হচ্ছে কারুম কানেশ (কুলতেপে)।[১০]

১ম শামসি-আদাদ (১৮১৩-১৭৮১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রাজধানী আশুরকে শহরের ক্ষমতার উৎকর্ষসাধন করেন এবং তার প্রভাব দজলা উপত্যকায় বিস্তৃত হয়। অনেকের মতে প্রথম আশারীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই যুগে বিখ্যাত রাজ প্রাসাদ নির্মাণ এবং আশুর মন্দির সম্প্রসারণ করা হয়। তবে এই সাম্রাজ্য শেষ সীমায় উপনীত হয় যখন ব্যাবিলনের আরোমাইট রাজা হামুরাবি শহরটি দখল করে তার স্বল্পস্থায়ী সাম্রাজ্যে যুক্ত করে। এর অল্প কিছুদিন পরে স্থানীয় রাজা আদাসি ১৭২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আশুর এবং আশারিয়া থেকে ব্যবলনিয়দের এবং আমোরীয়দের বিতাড়িত করেন। তার উত্তরসূরি সম্পর্কে খুব সামান্য তথ্য জানা যায়।

আরো নির্মাণ কার্যকলাপের তথ্য পাওয়া যায় কয়েক শতাব্দী পরে ৩য় পুজুর আসিরিয়র শাসনামলে যখন শহর পূন:বিন্যস্ত হয় এবং দক্ষিণের জেলাসমূহ মূল নগরের প্রতিরক্ষার সংগে যুক্ত হয়। চন্দ্র দেবতা সিন (নান্না) এবং সূর্যদেবতা শামসের মন্দির নির্মিত হয় এবং ১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে উৎসর্গ করা হয়। ১৫ শতকের শেষভাগে শহরটি মিটান্নির রাজা শাউশতাতার দ্বারা বারবার আক্রান্ত হয় এবং তিনি মন্দিরের স্বর্ণ ও রৌপ্য নির্মিত দরজাগুলি তার রাজধানী ওয়াশুকানিতে নিয়ে যান।[১০]

১ম আসিরিয়-উবাল্লিত তার পূর্বপুরুষ আদাসি,তিনি ১৩৬৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিটান্নি সামাজ্য আক্রমণ করেন। আশারিয়াগণ এই সুযোএর সদ্ব্যবহার করে মিটান্নি সাম্রাজ্যের পূর্ব অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে হিত্তীয়, ব্যাবিলনিয়া, আমোরীয় এবং হুরিয়ান অঞ্চল দখল করে নেয়। পরের শতাব্দীব্যাপী আশুরের পুরাতন মন্দির এবং প্রাসাদের সংস্কার চলে। ১৩৬৫ থেকে ১০৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শহরটি আরো একবার বিখ্যাত সাম্রাজ্য সিংহাসন হয়ে ওঠে। ১ম টুকুলটি-নিনুরতা (১২৪৪-১২০৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) দেবী ইশতারের জন্য নতুন একটি মন্দির নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ১ম তিগলাথ-পাইলেসার (১১১৫-১০৭৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)এর রাজত্বকালে আনু-আদাদ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্য আশারিয় যুগে শহরের মাঝখানে ১.২ বর্গ কিলোমিটার (৩০০ একর)[১০] এলাকা দেওয়াল দিয়ে ঘেরা হয়।

Remove ads

নব্য-অ্যাসিরীয় সাম্রাজ্য

Thumb
 আশারিয়ার মানচিত্র
Thumb
পারিষদবৃন্দের সঙ্গে আশুরনাসিপাল

নব্য আশারীয় সাম্রাজ্য (৯১২-৬০৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ), রাজকীয় বাসভবন অন্য অ্যাসিরিয়ান শহরসমূহে স্থানান্তর করা হয়। ২য় আসিরিয়-নাসির-পাল (৮৮৪-৮৫৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রাজধানী আশুর থেকে কালহুতে (কালাহ/নিমরুদ) সরিয়ে নেন এবং ধারাবাহিক পদক্ষেপে কলোসসাল ল্যামুসা ভাস্কর্যের মত শিল্পকর্ম তৈরী হয়।[১১] ২য় সারগনের (৭২২-৭০৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) একটি নতুন রাজধানী গড়ে উঠতে শুরু করে। দুর-শাররুকিন (সারগনের দুর্গ) আশুনিপালকে উৎকর্ষয় ছাড়িয়ে যায়।[১২] তবে তিনি যুদ্ধে মারা গেলে তার পুত্র এবং উত্তরাধিকারী সেন্নাকেরিব (৭০৫-৬৮২) শহরটি পরিত্যাগ করে নিনিভেহকে তার রাজকীয় রাজধানী হিসেবে বিবর্ধনের জন্য নির্বাচন করেন। আশুর নগরী তখনও সাম্রাজ্যের ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে রয়ে যায় এবং জাতীয় দেবতা আশুরের মন্দিরের কারণে সাম্রাজ্যের পবিত্র মুকুট হিসেবে সম্মানিত হতো।

সেন্নাক্যারিবের শাসনামলে (৭০৫-৬৮২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) নববর্ষ গৃহ আকিতু নির্মিত হয় এবং শহরে উৎসব পালিত হয়। রাজাদের মধ্যে অনেককেই পুরাতন রাজপ্রাসাদে সমাধিস্থ করা হয় এবং কোন কোন রানীকে, যেমন সারগনের স্ত্রী আতালিয়া, অন্যান্য রাজধানী শহরে সমাধিস্থ করা হয়। শহরটি বিশালাকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬১২ সালে মেদিস, ব্যবলনীয়, স্কাইথীয় এবং পারস্যীগণ আশারীয়া আক্রমণ করে।[১৩]

Remove ads

হাখমানেশী সাম্রাজ্য

প্রাচীন ইরানের প্রভাবশালী পারস্যিয়গণ মেদিসদের উৎখাত করে। আশারীয়া ৫৪৯ থেকে ৩৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত হাখমানী সম্রাটদের শাসনাধীন ছিলো। আশারিয়ার মাদা (মিদিয়া) এবং আথুরা (আশারিয়া) অঞ্চলের আশারীয়গণ প্রাসাদের স্বর্ণ, চাকচিক্যময় কারুকাজ এবং লেবাননের সিডার কাঠ প্রদান প্রভূতি কাজে অবদান রাখে। শহর এবং আশুর অঞ্চল আরো একবার সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিহিসেবে মাথা তুলে দাঁড়ায়। ৫২০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে আশারিয়ার মাদায় একটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়। আশারিয়া নাটকীয় ভাবে এই সময়ে ঘুরে দাঁড়ায় এবং সমৃদ্ধি অর্জন করে। এটা হাখমানি সাম্রাজ্যের একটি প্রধান কৃষি ও প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং এর সেনাবাহিনী পারস্যের সেনাবাহিনীর প্রধান অবলম্বন হয়ে ওঠে।[১৪]

Remove ads

পার্থীয় সাম্রাজ্য

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
 আশুরে পার্থীয় মন্দির

শহরটি কয়েক শতাব্দী পরে আশারিয় রেনেসাঁর অংশ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ১৫০ থেকে ২৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নগরটি পার্থীয় শাসিত আশুরিয়ার (আশুরিস্তান) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং সিমো পারপোলা এবং প্যাট্রিসিয়া ক্রোন এর মত আশারিয়াবিদগণের মতে খ্রিষ্টপূর্ব ২য় থেকে ৩য় শতক ছিলো সম্ভবত সর্বোচ্চ স্বাধীনতার কাল। অন্যান্য আশিরিয় শহর বেথ গারমাই, বেথ নুহাদ্রা, অস্রোয়েনে এবং দিয়াবেনে থেকে প্রাপ্ত লিপি অনুযায়ী পার্থিয়ানগণ শুধুমাত্র নগরের নিয়ন্ত্রণকারী ছিলো। নগরের উত্তর দিকে নতুন প্রশাসনিক ভবন এবং দক্ষিণ দিকে একটি প্রাসাদ গড়ে ওঠে। জাতীয় দেবতা আশুরের পুরাতন মন্দিরটি পূন:নির্মাণ করা হয়।

আশারিয়ার ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত অ্যাসিরিয়ান পূর্ব আরামাইক শিলালিপি পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় আশারিয়ার নিজস্ব আরামীয় সিরিয় লিপি ছিলো যা ব্যাকরণ এবং বাক্যবিন্যাসের দিক থেকে এডেসসা এবং নব্য আশারীয় রাজ্য অস্রোয়েনে প্রাপ্ত লিপির মত একই।

জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্লস বেয়ার মেসোপটেমীয় নগর ও শহর যেমন আশুর, দুরা-ইউরোপোস, হাত্রা, গাদ্দালা, তিকরিত এবং তুর আবদিন ইত্যাদিতে প্রাপ্ত ৬০০ লিপি প্রকাশ করেন। পার্থীয় যুগে খ্রিস্টানধর্মের প্রভাব বেড়ে যায় আশারীয়দের মধ্যে, আশারীয় খ্রিস্টানত্বের পাশাপাশি আদি আশারীয় সংস্কৃতি এবং ধর্ম কিছুকাল টিকে থাকতে সক্ষম হয়েছিলো। যা বিভিন্ন দেবদেবী যেমন আশুর, নারগাল, সিন, ইশতার, শামস এর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত শিলালিপি থেকে প্রমাণিত হয়। পাশাপাশি জনগণ মেসোপটেমীয় ঐতিহ্য অনুসরণ করে স্থানের নাম নির্বাচন করতো। ব্যক্তিদের নাম হতো আশুর-হেল (আশুর আমার শক্তি), আশুর-এমার (আশুরের আদেশ), আশুর-ন্তান (আশুরের দেয়া পুত্র), আশুর-স্মা (আশুর শুনছেন)।[১৫]

১১৪ সালে আশারিয়া অল্প সময়ের মধ্য রোমান সাম্রাজ্যের সৈন্যবাহিনী দখল করে নেয়। আশারিয়া রোমের প্রদেশ হওয়ার কিছুকাল আগে পার্থীয়রা স্থানীয় আশারিয়দের সাহায্যে রোমানদের বিতাড়িত করে। সাসানিয়ান অঞ্চল বারবার রোমানদের দ্বারা আক্রান্ত হতে থাকে এবং ১৯৮ সালে সেপ্টিমাস সেভেরাসের হাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২৫৭ সালে ১ম শাপুর বন্দী হন এবং শহরটিকে অস্রোয়েনে, আদিয়াবেনে, বেথ নুহাদ্রা, বেথ গারমাই এবং হাত্রার মত সাসানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে নেওয়া হয়।[১৬][১৭] তবে শহরটির উন্নয়ন এবং আশারিয়দের বসতি স্থাপন ১৪ শতাব্দী পর্যন্ত চলতে থাকে যখন তৈমুর লং স্থানীয় খ্রিস্টান অধিবাসীদের উপর আক্রমণ চালায়। এরপর এই অঞ্চলে মনুষ্য বসতির আর কোন প্রত্নতাত্ত্বিক অথবা মুদ্রাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় নি।[১৮]

Remove ads

আশুরের প্রতি হুমকি

২০০৩ সালে ইউনেস্কো সাইটটিকে বিপদাপন্ন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে। সে সময়ে একটি বড় মাপের বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলে যা প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটিকে নিমজ্জিত করে ফেলবে।[১৯] ২০০৩ সালে ইরাক অভিযানে অল্পকিছুদিনের মধ্যেই বাঁধ প্রকল্পে হাত দেওয়া হয়।

২০১৫ সালে প্রাচীন এই অঞ্চলইসলামিক স্টেট অব ইরাক এবং লেভান্ত (ISIL) দখল করে নেয়। তারা হাত্রা, খোরসাবাদ এবং নিমরদ শহরের অনেক প্রত্নতত্ত্বীয় স্থাপনা ধ্বংস করে ফেলে। আশুরও ধ্বংস হয়ে যায় কিনা এরকম বৈশ্বিক ভীতি বাড়তে থাকে। কিছু কিছু উৎস দাবী করে যে ২০১৫ সালে আশুরের সিটাডেল বোম মেরে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।[২০]

Remove ads

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

Loading content...
Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads