Loading AI tools
ভারতীয় অভিনেত্রী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আশা পারেখ (গুজরাটি: આશા પારેખ; জন্ম: ২ অক্টোবর, ১৯৪২) বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী বলিউডের সাবেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী, পরিচালক ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা। ১৯৫৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে হিন্দি চলচ্চিত্র অঙ্গনে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী ছিলেন তিনি।[3] ১৯৭২ সালে ভারত সরকার কর্তৃক তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। পারেখকে অন্যতম সফলতম ও হিন্দি চলচ্চিত্রে সর্বকালের অন্যতম প্রভাববিস্তারকারী নায়িকারূপে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।[4]
আশা পারেখ | |
---|---|
জন্ম | [1] | ২ অক্টোবর ১৯৪২
পেশা | অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, নৃত্যশিল্পী |
কর্মজীবন | ১৯৫২-১৯৯৯ |
মুম্বইয়ের এক মধ্যবিত্ত গুজরাতি জৈন পরিবারে আশা পারেখের জন্ম। বাবা আহমেদাবাদের পিরানার কাছাকাছি পল্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন ও মাতা দাউদি বোরা মুসলিম ছিলেন।[5] পারেখের ধর্মীয় বিশ্বাসবোধ সাঁই বাবাকে ঘিরে গড়ে উঠে।[6][7] শৈশবেই তার মা ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যে তালিম দেন। পণ্ডিত বংশীলাল ভারতীসহ অনেকের কাছেই দীক্ষা নেন তিনি।
১৯৫২ সালে আসমান চলচ্চিত্রে বেবি আশা পারেখ নামে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় জীবনের সূত্রপাত ঘটে তার। খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক বিমল রায় মঞ্চে তার নৃত্য উপভোগ করেন ও ১৯৫৪ সালে বারো বছর বয়সে বাপ বেটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ দেন। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক আকর্ষণে ব্যর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে কয়েকবছর শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনও বন্ধ রাখেন তিনি।[8] ষোলো বছর বয়সে তিনি পুনরায় অভিনয় জগতে ফিরে আসার চেষ্টা চালান ও নায়িকা হিসেবে অভিষেক ঘটান। কিন্তু ১৯৫৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিজয় ভাটের গুঞ্জ উঠি শেহনাই থেকেও প্রত্যাখ্যাত হন। অভিনেত্রী অমিতার সহযোগিতায় অংশ নিলেও চলচ্চিত্র নির্মাতা দাবী করেছিলেন যে, তিনি তারকার উপযোগী নন। আটদিন পর চলচ্চিত্র নির্মাতা সুবোধ মুখোপাধ্যায় ও চিত্রলেখক নাসির হোসেন ১৯৫৯ সালে দিল দেকে দেখো চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। তার বিপরীতে শাম্মী কাপুর অভিনয় করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি ব্যাপক সফলতা লাভ করে ও তিনি বিশাল তারকায় পরিণত হন।[9] এরফলে হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন ফলপ্রসূ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি পারেখকে আরও ছয়টি চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ দেন। এছাড়াও হোসেন ২১ বছর ধরে চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণের সাথে যুক্ত করেন যা ১৯৬৭ সালের বাহারো কে স্বপ্নের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।[10] শুরুতে পারেখ কেবলমাত্র গ্ল্যামারগার্ল/চৌকুশ নৃত্যশিল্পী হিসেবে ভূমিকা রাখতেন। কিন্তু পরিচালক রাজ খোসলা তাকে তিনটি চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিয়ে আসেন। পরিচালক শক্তি সামন্ত তাকে আরও নাটকীয়রূপে পাগলা কাহিন কা ও কাটি পতঙ্গ চলচ্চিত্রে রাখেন। শেষের চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও বিজয় আনন্দ, মোহন সেগাল ও জে.পি. দত্তের ন্যায় প্রথীতযশা পরিচালকের সংস্পর্শে এসেছেন তিনি।
হিন্দি চলচ্চিত্রের স্বর্ণশিখরে অবস্থান করেও নিজ মাতৃভাষায় তিনটি গুজরাতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তন্মধ্যে ১৯৬৩ সালে নির্মিত আখন্দ শুভগিয়াবতী ব্যাপক সফলতা লাভ করে।[11] এছাড়াও ধর্মেন্দ্রের বিপরীতে তিনি কঙ্কণ দে ওলে ও দারা সিংয়ের বিপরীতে লম্ভারদার্নির ন্যায় কয়েকটি পাঞ্জাবী চলচ্চিত্রে অংশ নেন। পাশাপাশি ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কন্নড় চলচ্চিত্রে শারাভেগাদা সারাদারাও জনপ্রিয়তা অর্জন করে।[12]
চলচ্চিত্র জগতে শেষ পর্যন্ত শীর্ষস্থানীয় চরিত্রে তাকে দেখা গেলেও ভাবী ও মায়ের চরিত্রের ন্যায় পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে ছিলেন। এ চরিত্রগুলো তার অভিনয় জীবনে প্রভাব বিস্তার করে। ফলশ্রুতিতে চলচ্চিত্রে অভিনয় বন্ধ করে দেন ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শক্রমে টেলিভিশন পরিচালকরূপে আবির্ভূত হন।[13]
১৯৯০-এর দশকের শুরুতে গুজরাটি ধারাবাহিক জ্যোতির মাধ্যমে নতুন জীবনের সূত্রপাত ঘটে তার। আক্রুতি নামের প্রোডাকশন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকে পলাশ কে ফুল, বাজে পায়েল, কোরা কাগজ ও কমেডি ডাল মে কালা নির্মাণ করেন।[14] ১৯৯৪ থেকে ২০০০ পর্যন্ত সিনে আর্টিস্টেস সংস্থার সভাপতি ছিলেন তিনি। ভারতের চলচ্চিত্র সনদ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রথম মহিলা সভাপতিরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এ পদে তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০১ মেয়াদে দায়িত্বে থাকলেও এরজন্য তিনি কোন অর্থ দাবী করেননি। কিন্তু কিছু চলচ্চিত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটান। তন্মধ্যে শেখর কাপুরের এলিজাবেথ চলচ্চিত্রটির ছাড়পত্র দেননি। পরবর্তীতে সিনে ও টেলিভিশন আর্টিস্ট সংস্থার (সিনতা) কোষাধ্যক্ষ মনোনীত হন। এরপর এ সংস্থার অন্যতম কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিত হন।[15]
২০০২ সালে ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।[16] অন্যান্য আজীবন সম্মাননা পুরস্কারের মধ্যে ২০০৪ সালে কলাকার পুরস্কার,[17] ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র একাডেমি পুরস্কার,[18] ২০০৭ সালে পুনে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার[19] এবং ২০০৭ সালে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে নবম বার্ষিক বলিউড পুরস্কার লাভ অন্যতম।[20] এছাড়াও, ভারতীয় চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) কর্তৃক জীবন্ত কিংবদন্তি পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি।[21]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.