আবুল হাসনাত (১৯৪০–১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[১] তিনি ঢাকার প্রথম মেয়র, সংসদ সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ছিলেন।[২][৩]
ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত | |
---|---|
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র | |
কাজের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর ১৯৭৭ – ৯ মে ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | পদ সৃষ্টি |
উত্তরসূরী | আব্দুল মালেক |
কাজের মেয়াদ ৩ ডিসেম্বর ১৯৯০ – ১২ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | নাজিউর রহমান মঞ্জু |
উত্তরসূরী | মির্জা আব্বাস |
বাংলাদেশের গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৭ নভেম্বর ১৯৮১ – ১০ মে ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | জমির উদ্দিন সরকার |
উত্তরসূরী | আবদুল মান্নান সিদ্দিকী |
কাজের মেয়াদ ২০ অক্টোবর ১৯৯০ – ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | মোস্তফা জামাল হায়দার |
উত্তরসূরী | ওয়াহিদ উদ্দিন আহমেদ |
ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ সেপ্টেম্বর ১৯৯০ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | এম কোরবান আলী |
উত্তরসূরী | জমির উদ্দিন সরকার |
ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | গাজী গোলাম মোস্তফা |
উত্তরসূরী | খান মোহাম্মদ ইসরাফিল |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৪০ লালবাগ, ঢাকা |
মৃত্যু | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ লন্ডন, যুক্তরাজ্য |
সমাধিস্থল | আজিমপুর গোরস্থান ঢাকা, বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাতীয় পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | নাসরিন বেগম |
সন্তান | ২ |
পিতামাতা | গনি সর্দার (পিতা) |
পারিবারিক পরিচয়
ব্যারিস্টার হাসনাত ১৯৪০ সালে পুরান ঢাকা লালবাগে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা গনি সর্দার আজিমপুর ইউনিয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।[৪] তার স্ত্রী নাসরিন বেগম, এই দম্পতীর এক ছেলে রাজীব হাসনাত ও এক মেয়ে ফারাহ হাসনাত।[৪][৫]
রাজনৈতিক জীবন
আবুল হাসনাত কমিশনারদের দ্বারা ১৯৭৭-৮২ মেয়াদে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন।[৬][৭]
তিনি প্রথমে ১৯৭৮ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বাধীন জাগো দলের ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হলে যোগদান করে ঢাকা মহানগর দায়িত্ব নেন।[৭]
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ত তৎকালীন ঢাকা-১৩ (ধানমন্ডি- লালবাগ) আসন হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩][৮]
আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি ২৭ নভেম্বর ১৯৮১ থেকে ১০ মে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২][৯]
১৯৮২ সালে আব্দুস সাত্তার সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর সেনাশাসক এরশাদের সরকার তাকে বন্দী করে এবং মার্শা‘ল কোটে বিচার করে ১৪ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।[৭]
সামরিক শাসন প্রত্যাহার হলে তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন চলে যান। ১৯৮৭ সালে দেশে ফিরে আবার ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব নেন।[৭]
১৯৯০ সালে নভেম্বরের শেষ দিকে তিনি বিএনপি ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে ২৩ জুলাই ১৯৯০ সালে ঢাকা-৯ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য এম কোরবান আলীর মৃত্যু কারণে উপ-নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১০][১১]
তিনি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের মন্ত্রিসভায় ২০ অক্টোবর ১৯৯০ থেকে ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]
এবং আবার ঢাকার (তখন সরকার কর্তৃক মনোনীত) মেয়র হন। মাত্র দুই সপ্তাহ মেয়র থাকার পর এরশাদ সরকারের পতন ঘটে। তখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে হাসনাতের লালবাগের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হয়। বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের তত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই তাকে আটক করা হয়। একটি দুর্নীতির মামলায় তার ৬ মাসের কারাদন্ড হয়।[৭]
১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আকস্মিকভাবেই আবার তিনি পুনরায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য হন এবং তৎকালীন ঢাকা-৮ (তৎকালীন লালবাগ-হাজারীবাগ-কামরাঙ্গীরচর) আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হাজী সেলিমের কাছে হেরে পরবর্তিতে রাজনীতিতে তিনি আর সক্রিয় ছিলেন না, আইন পেশায় ছিলেন।[৭]
মৃত্যু
আবুল হাসনাত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে লন্ডনে নিজের বাসায় স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় নিজের বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। বার্ধ্যক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তাকে আজিমপুর কবরস্থানে তার পিতার কবরে সমাহিত করা হয়।[৫][৪]
তথ্যসূত্র
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.