শেখ আবুল ফজল ইবন মুবারক (ফার্সি: ابو الفضل) (১৪ জানুয়ারি, ১৫৫১১২ অগস্ট ১৬০২) ছিলেন মুঘল সম্রাট আকবরের প্রধানমন্ত্রী। তিনি আবুল-ফজল, আবুল ফদলআবুল ফদল 'আল্লামি নামেও পরিচিত। তিনি তিন খণ্ডে রচিত আকবরের রাজত্বকালের সরকারি ইতিহাস গ্রন্থ আকবরনামা ও উক্ত গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ড আইন-ই-আকবরি-এর রচয়িতা এবং বাইবেলের একটি ফার্সি অনুবাদের অনুবাদক।[১] পারিবারিক সূত্রে তিনি ছিলেন আকবরের সভাকবি ফৈজির কনিষ্ঠ ভ্রাতা।

দ্রুত তথ্য আবুল ফজল, জন্ম ...
আবুল ফজল
Thumb
আবুল ফজল আকবরকে আকবরনামা উপহার দিচ্ছেন
জন্ম(১৫৫১-০১-১৪)১৪ জানুয়ারি ১৫৫১
মৃত্যু২২ আগস্ট ১৬০২(1602-08-22) (বয়স ৫১) দক্ষিণাত্য, মুঘল ভারত
মৃত্যুর কারণগুপ্তহত্যা
উল্লেখযোগ্য কর্ম
আত্মীয়ফৈজি (ভাই)
বন্ধ
Thumb
আকবরের রাজসভা, আকবরনামা গ্রন্থের পুথিচিত্র

জীবনী

সারাংশ
প্রসঙ্গ

আবুল ফজল ছিলেন রেল সিন্ধ নিবাসী শেখ মুসার অধস্তন পঞ্চম পুরুষ। তার পিতামহ শেখ খিজির নাগৌরে বসতি স্থাপন করেন। এখানেই আবুল ফজলের পিতা শেখ মুবারকের জন্ম হয়। প্রথম দিকে শেখ মুবারক নাগৌরে খ্বাজা আহররের নিকট পঠনপাঠন করেন। পরে তিনি আহমদাবাদে গিয়ে শেখ আবুল ফজল, শেখ উমর ও শেখ ইউসুফের কাছে পড়াশোনা করেছিলেন। পরে তিনি আগ্রায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানেই তার জ্যৈষ্ঠ পুত্র শেখ ফৈজি ও কনিষ্ঠ পুত্র আবুল ফজলের জন্ম হয়।[২] ১৫৭৫ সালে আবুল ফজল আকবরের রাজসভায় আসেন। ১৫৮০ ও ১৫৯০-এর দশকে আকবরের মতাদর্শে যে উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়েছিল, তার পশ্চাতে আবুল ফজলের একটি প্রভাব কার্যকরী ছিল। আবুল ফজল দাক্ষিণাত্যে মুঘল সেনাবাহিনীরও নেতৃত্ব দান করেছিলেন।

জানা যায়, আবুল ফজল যুবরাজ সেলিমের সিংহাসনে আরোহণের বিরোধিতা করেছিলেন। এই কারণে সেলিমের ষড়যন্ত্রে নারওয়ারের নিকট সরাই বীর ও অন্ত্রীর মধ্যবর্তী কোনো এক স্থানে বীর সিংহ বুন্দেলার হস্তে তিনি নিহত হন।[১][৩] তার ছিন্ন মস্তক এলাহাবাদে সেলিমের নিকট পাঠানো হয়েছিল। আবুল ফজলকে অন্ত্রীতে সমাধিস্থ করা হয়।[৪][৫] উল্লেখ্য, আবুল ফজলের ঘাতক বীর সিংহ বুন্দেলা পরে ওরছার শাসক হয়েছিলেন এবং ১৬০২ সালে যুবরাজ সেলিম জাহাঙ্গির নাম ধারণ করে মুঘল সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। পরে ১৬০৮ সালে জাহাঙ্গির আবুল ফজলের পুত্র শেখ আবদুর রহমান আফজল খানকে (২৯ ডিসেম্বর, ১৫৭১ – ১৬১৩) বিহারের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেছিলেন।[৬]

রচনাবলি

সারাংশ
প্রসঙ্গ

আকবরনামা

আকবরনামা ছিল তিন খণ্ডে রচিত আকবরের শাসনকাল ও তার পূর্বপুরুষদের ইতিহাস। এই গ্রন্থে তৈমুর থেকে হুমায়ুন পর্যন্ত আকবরের পূর্বপুরুষদের জীবনকথা এবং আকবরের রাজত্বকালের ৪৬ বছরের (১৬০২ সাল পর্যন্ত) বিবরণী লিখিত আছে। আইন-ই-আকবরি নামে আকবরের সাম্রাজ্যের একটি প্রশাসনিক প্রতিবেদনও এই গ্রন্থে সংযোজিত হয়েছে। আইন-ই-আকবরি গ্রন্থ থেকে লেখকের জীবন ও পুর্বপুরুষদের একটি বর্ণনাও পাওয়া যায়। আইন-ই-আকবরি গ্রন্থে আকবরের রাজত্বকালের ৪২ বছরের সম্পূর্ণ ও ৪৩তম বছরের বেরার জয় পর্যন্ত ইতিহাস লিখিত রয়েছে।[৭][৮]

রাকাত

রাকাত বা রাকাত-ই-আবুল ফজল হল মুরাদ, দানিয়াল, আকবর, মারিয়াম মাকানি, সেলিম (জাহাঙ্গির), আকবরের রানি ও কন্যাগণ, তার পিতা, মাতা, ভ্রাতৃগণ, ও একাধিক সমসাময়িক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে লিখিত আবুল ফজলের পত্রাবলি।[৭] এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করেন তার ভাগিনেয় নুর আল-দিন মুহাম্মদ।

ইনশা-ই-আবুল ফজল

ইনশা-ই-আবুল ফজল বা মক্তবাৎ-ই-আল্লামি হলো আবুল ফজল কর্তৃক লিখিত সরকারি প্রতিবেদনের সংগ্রহ। এই গ্রন্থ দুটি খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডে তুরানের আবদুল্লাহ্ খান উজবেগ, পারস্যের শাহ আব্বাস, খান্দেসের রাজা আলি খান, আহমদনগরের বুরহান-উল-মুলক, ও আবদুর রহিম খান খানান প্রমুখ নিজ অভিজাতবর্গকে লিখিত আকবরের পত্রাবলির সংকলন। দ্বিতীয় খণ্ডে রয়েছে আকবর, দানিয়েল, মির্জা শাহ রুখ ও খান খানানকে লিখিত আবুল ফজলের পত্রাবলি।[৭] এই গ্রন্থের সংকলক আব্দুস সামাদ।[৮]

পাদটীকা

অতিরিক্ত পঠন

বহিঃসংযোগ

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.