Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩ হল ১৯৭৩ সালে পাশ হওয়া একটি আইন যার অধীনে বাংলাদেশের গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ আন্তর্জাতিক আইনের অন্তর্ভুক্ত সকল সশস্ত্রবাহিনী, প্রতিরক্ষা ও এর সহায়ক কোন বাহিনীর সদস্যকে আটক ও ফৌজদারি আইনের অধীনে দণ্ডদান করতে পারে। আইনটিতে ট্রাইবুনাল গঠনের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিতে আইনি সাহায্যের বিধান রাখা হয়। এই আইন প্রণয়নের জন্য আন্তর্জাতিক ল’ কমিশনের প্রতিবেদনসমূহের সাহায্য গ্রহণ করা হয়।[1] সুপ্রিম কোর্ট যাতে এই আইনটিকে মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী হবার কারণ দেখিয়ে একে অসাংবিধানিক ঘোষণা না করতে পারে সেজন্য সংবিধান প্রথম সংশোধন আইনও পাশ করা হয়।[2]
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৩ সালের ১৯ নম্বর আইন হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন ১৯৭৩ প্রণয়ন করা হয়। এই আইনে যুদ্ধাপরাধের ব্যাখ্যায় খুন, নির্যাতন, বেসামরিক লোকদের বাংলাদেশের রাজ্যসীমায় দাসশ্রমিক হিসেবে ব্যবহার এবং দেশ থেকে বিতাড়ন, যুদ্ধবন্দী ও সাধারণ বন্দীদের হত্যা এবং সামরিক প্রয়োজনের বহির্ভূত ধ্বংশাত্মক কার্যকলাপ, ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি দখলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[3] ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের বিচারকার্যে জড়িত অভিজ্ঞ অধ্যাপক ইয়েশেখের কাছে পরামর্শ গ্রহণের জন্য ব্যারিস্টার সোহরাব আলীকে পাঠানো হয়। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ন্যূন্যতম যে দক্ষতা ও নিবেদিতপ্রাণ প্রসিকিউটরের প্রয়োজন ছিল তার বড়ই অভাব ছিল। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে দোদূল্যমানতা এবং সর্বোপরি উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার না হওযার কারণ বলে তিনি মনে করেন।[2]
এই ট্রাইব্যুনাল নিম্নোক্ত অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা দল, সেনাবাহিনী কিংবা তাদের সহযোগী সশস্ত্রবাহিনীর বিচারের ক্ষমতা রাখে।[3]
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারী ‘দালাল আইন (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ’ জারী করা হয়। একই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি, ১ জুন ও ২৯ আগস্ট তারিখে তিন দফা সংশোধনীর পর আইনটি চূড়ান্ত হয়। দালাল আইন জারীর পর ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৩৭ হাজার ৪৭১ দালালকে গ্রেফতার করা হয়। ৭৩টি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এদের বিচার কাজ চললেও ২২ মাসে মাত্র ২ হাজার ৮৪৮টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়। এ-রায়ের মাধ্যমে ৭৫২ জন বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত হন। ১৯৭৩ এর ৩০ নভেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এ-ঘোষণার মাধ্যমে ২৬ হাজার ব্যক্তি মুক্তি পান। বাকীদের বিচার অব্যাহত থাকে। সাধারণ ক্ষমার প্রেস-নোটে বলা হয়, ‘ধর্ষণ. খুন, খুনের চেষ্টা, ঘর-বাড়ী অথবা জাহাজে অগ্নি সংযোগের দায়ে দণ্ডিত ও অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে ক্ষমা প্রদর্শন প্রযোজ্য হবে না।’[4] ১৯৭৩ সালের দালাল আইনে মতান্তরে প্রায় ৩৪,৬০০ অভিযুক্তদের ভেতর অনেক ব্যক্তিকে ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়।[2]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.