Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
রানি অব্বাক্কা চৌতা উল্লালের প্রথম তুলুভা রানী ছিলেন। তিনি ১৬ শতকের শেষার্ধে পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। যারা ভারতের উপকূলীয় কর্ণাটকের (তুলু নাড়ু) অংশ শাসন করেছে, তিনি সেই চৌতা রাজবংশের অন্তর্গত ছিলেন। তাদের রাজধানী ছিল পুটিজ।[টীকা 1] উল্লাল বন্দর শহর তাদের সহায়ক রাজধানী হিসেবে কাজ করত। পর্তুগিজরা উল্লালের কৌশলগত অবস্থানের জন্য একে দখল করার অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আব্বাক্কা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তাদের প্রতিটি আক্রমণ প্রতিহত করেছিলেন। তাঁর সাহসিকতার জন্য, তিনি "অভয় রানী" নামে পরিচিত হয়েছিলেন।[1][2] তিনি ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রথম দিকের ভারতীয়দের মধ্যে একজন ছিলেন এবং কখনও কখনও 'ভারতের প্রথম মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী' হিসাবে বিবেচিত হন।[3][4] কর্নাটক রাজ্যে, তিনি রানি কিট্টুর চেন্নাম্মা, কেলাদি চেন্নামা, রানী চেন্নাভাইরাদেবী এবং ওনাকে ওবভার সঙ্গে অগ্রণী নারী যোদ্ধা এবং দেশপ্রেমিক হিসাবে পূজিত হন।
অব্বাক্কা চৌতা | |
---|---|
উল্লালের রানি অব্বাক্কার প্রমান মাপের মূর্তি | |
রাজত্ব | ১৫২৫ – ১৫৭০ এর দশক |
পূর্বসূরি | তিরুমালা রায় চৌতা |
দাম্পত্য সঙ্গী | বঙ্গ লক্ষ্মাপ্পা আরসা |
প্রাসাদ | চৌতা |
ধর্ম | জৈন ধর্ম |
চৌতারা দিগম্বর জৈন বান্ট সম্প্রদায়ের মাতৃবংশ উত্তরাধিকার (আলিয়াসন্তান) পদ্ধতি অনুসরণ করত। এই পদ্ধতিতে আব্বাক্কার কাকা তিরুমালা রায় তাঁকে উল্লালের রাণীর মুকুট পরিয়েছিলেন। তিনি ম্যাঙ্গালোর রাজ্যের দেশীয় রাজ্য বঙ্গের রাজা দ্বিতীয় লক্ষ্মাপ্পা আরসা বঙ্গরাজের সাথে আব্বাক্কার জন্য একটি বৈবাহিক সম্পর্কও তৈরি করেছিলেন।[5] এই সম্পর্কটি পরে পর্তুগিজদের জন্য উদ্বেগের কারণ প্রমাণিত হয়েছিল। তিরুমালা রায় আব্বাক্কাকে যুদ্ধ ও সামরিক কৌশলের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন। বিবাহ অবশ্য স্বল্পস্থায়ী ছিল এবং আব্বাক্কা উল্লালে ফিরে আসেন। তাঁর স্বামী এই কারণে আব্বাক্কার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন এবং আব্বাক্কার বিরুদ্ধে যুদ্ধে পর্তুগিজদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন।[6]
গোয়া দখল ও নিয়ন্ত্রণ করার পর, পর্তুগিজরা তাদের মনোযোগ দক্ষিণ দিকে এবং উপকূলের দিকে ঘুরিয়েছিল। ১৫২৫ সালে তারা প্রথমে দক্ষিণ কানাড়া উপকূল আক্রমণ করে এবং ম্যাঙ্গালোর বন্দর ধ্বংস করে। উল্লাল ছিল একটি সমৃদ্ধ বন্দর এবং আরব ও পশ্চিমের অন্যান্য দেশের সাথে মশলা বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল। এটি লাভজনক বাণিজ্য কেন্দ্র হওয়ায়, পর্তুগিজ, ওলন্দাজ এবং ব্রিটিশরা এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাণিজ্য পথের জন্য একে অপরের সাথে লড়াই করত। কিন্তু তারা খুব বেশি অগ্রসর হতে পারেনি কারণ স্থানীয় সর্দারদের প্রতিরোধ খুবই শক্তিশালী ছিল। এমনকি স্থানীয় শাসকরা জাতি ও ধর্মের ভেদ ভুলে জোট গঠন করেছিল।[7]
আব্বাক্কার প্রশাসনে জৈন, হিন্দু এবং পাশাপাশি মুসলিমের ভালই প্রতিনিধিত্ব ছিল। ঐতিহাসিক গবেষণা আরও প্রকাশ করে যে ১৬ শতকে তাঁর শাসনকালে, বিয়ারি পুরুষরা নৌবাহিনীতে নাবিক হিসেবে কাজ করেছিল। রানী আব্বাক্কা ব্যক্তিগতভাবে মালালি বাঁধ নির্মাণের তত্ত্বাবধান করেছিলেন। তিনি পাথরের কাজের জন্য বিয়ারিদের নিয়োগ করেছিলেন। তাঁর সেনাবাহিনীতেও সকল সম্প্রদায় ও বর্ণের লোক ছিল। এমনকি তিনি কালিকটের জামোরিনের সাথে জোট গঠন করেছিলেন। একসাথে, তাঁরা পর্তুগিজদের হাত থেকে উল্লাল রক্ষা করেছিলেন। প্রতিবেশী বঙ্গ রাজবংশের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থানীয় শাসকদের মৈত্রীকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছিল। তিনি নাগারার শক্তিশালী রাজা ভেঙ্কটপ্পানায়কের সমর্থনও অর্জন করেছিলেন এবং পর্তুগিজ বাহিনীর হুমকি উপেক্ষা করেছিলেন।[8]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.