তুরীয়বাদ একটি দার্শনিক, সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন যা ১৮২০ ও ১৮৩০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বভাগে বিকাশ লাভ করে।[1][2][3] ব্যক্তি ও প্রকৃতি যে ভেতর থেকে ভালো, তা তুরীয়বাদের একটি কেন্দ্রীয় বিশ্বাস।[1] যদিও সমাজ ও তার প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যক্তির খাঁটি ধর্মকে দিকভ্রান্ত করেছে, যখন মানুষ প্রকৃতপক্ষেই স্বনির্ভর ও স্বাধীন হয়, তখনই সে তার সর্বোত্তম পর্যায়ে উন্নীত হয়। তুরীয়বাদীরা দূরবর্তী স্বর্গে বিশ্বাস করার পরিবর্তে দৈনন্দিন জীবনে নিহিত দৈব অভিজ্ঞতায় বিশ্বাসী ছিলেন। তারা ভৌত ও আধ্যাত্মিক ঘটনাবলীকে বিচ্ছিন্ন সত্তা হিসেবে না দেখে এগুলিকে কিছু সদা-পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণ্য করতেন।

তুরীয়বাদে ব্যক্তিনিষ্ঠ স্বজ্ঞাকে বস্তুনিষ্ঠ অভিজ্ঞতাবাদের তুলনায় বেশি জোর দেওয়া হয়। তুরীয়বাদীরা মনে করেন ব্যক্তিমাত্রেই অতীতের পণ্ডিতদের প্রতি তেমন শ্রদ্ধা বা মনোযোগ প্রদান না করেই নিজেরাই সম্পূর্ণ স্বকীয় অন্তর্দৃষ্টি লাভে সক্ষম। তুরীয়বাদ যে সময় বিকাশ লাভ করছিল, সেসময় প্রচলিত বুদ্ধিজীবীবাদ ও আধ্যাত্মিকতাবাদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই মতবাদটির উদ্ভব ঘটে।[4] হার্ভার্ড ধর্মতত্ত্ব বিদ্যালয়ে যে খ্রিস্টীয় একত্ববাদের মতাদর্শটির শিক্ষা দেওয়া হত, তার সাথে তুরীয়বাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

ইংরেজ ও জার্মান রোমান্টিকবাদ, ইয়োহান গটফ্রিড হের্ডার ও ফ্রিডরিখ শ্লাইয়ারমাখারের বাইবেলীয় সমালোচনা এবং ডেভিড হিউমের সন্দেহবাদ থেকে তুরীয়বাদের উদ্ভব হয়।[1] এছাড়া ইমানুয়েল কান্টের তুরীয় দর্শন ও জার্মান আদর্শবাদও এতে অবদান রাখে। কোনও কোনও গবেষক এমানুয়েল সুইডেনবরি ও ইয়াকব ব্যোমেকে তুরীয়বাদের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী হিসেবে গণ্য করেন।[5][6] অধিকন্তু তুরীয়বাদের উপরে মনের দর্শন ও আধ্যাত্মিকতার উপরে হিন্দুধর্মের রচনাবলী, বিশেষত উপনিষদের গভীর প্রভাব রয়েছে।

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.