ক্রিকেটঅতিরিক্ত রান (কখনও কখনও সান্ড্রি বলা হয়) দিয়ে ব্যাটিং দলকে রান স্কোর করার পুরস্কার দেওয়া হয় এবং তা কোনও ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত রান হিসাবে জমা দেওয়া হয় না। ব্যাট দ্বারা বল আঘাত করা ছাড়া অন্য পদ্ধতি দ্বারা করা রানগুলি এর অন্তর্গত।

Thumb
ব্যাটিং দলকে পুরস্কার দেওয়া অতিরিক্ত রান স্কোরবোর্ডে প্রদর্শিত হচ্ছে।

অতিরিক্ত রান স্কোরকার্ডে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয় এবং কেবল দলের স্কোর হিসাবে গণ্য করা হয়। অনেক অতিরিক্ত রান সম্পন্ন খেলা হলে প্রায়ই সেটি অবিন্যস্ত বোলিং নমুনা হিসাবে বিবেচিত হয়; বিপরীতে সামান্য কিছু অতিরিক্ত রান বিশিষ্ট খেলাকে সুবিন্যস্ত বোলিংয়ের নমুনা হিসাবে দেখা হয়।

পাঁচ ধরনের অতিরিক্ত রান রয়েছে: নো-বল (এনবি), ওয়াইড (ডব্লিউ [1] বা ডব্লিউডি), বাই (বি), লেগ বাই (এলবি) এবং পেনাল্টি রান (পিইএন[2]).

অতিরিক্ত রানের প্রকারভেদ

অবৈধ ডেলিভারি

বোলার বা ফিল্ডার ব্যাটসম্যানকে বল করার ক্ষেত্রে এবং বল প্রদানের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন করলে (যেমন তাঁরা যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বোলিং করছেন না বা বল ব্যাটসম্যানের নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে) অথবা তাঁরা মাঠে ঠিক জারগায় অবস্থান করছেন না বলে ক্ষতিপূরণের জন্য ব্যাটিং দলকে অতিরিক্ত রান দেওয়া হয়। সীমিত ওভারের ক্রিকেট এ অবৈধভাবে করা বলগুলিকে কখনই ইনিংসে বোলিং করার বৈধ সর্বাধিক সংখ্যক করা বল হিসাবে গণ্য করা হয় না।

নো-বল

একজন বোলার বা ফিল্ডার বোলিংয়ের সময় কোনও অবৈধ পদক্ষেপ নিলে আম্পায়ার নো-বল ডাকতে পারেন।

নো-বল ডাকার সর্বাধিক সাধারণ কারণ হ'ল যদি বোলার বল করার সময় বল ছাড়ার আগেই সামনের পায়ে পপিং ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান। বোলারের পেছনের পা রিটার্ন ক্রিজ এ স্পর্শ করা বা পেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা অতি বিরল। আরও যে কারণে নো-বল ডাকা হয় তা হল বোলিং করার সময় বল ছুঁড়লে বা নিক্ষেপ ('চাকস') করলে, কোমরের উঁচুতে ফুল টস বল করলে বা বিপজ্জনক তথা অন্যায়ভাবে শর্ট পিচ বল করলে।

নো-বলের জন্য জরিমানা হল এক রান (বা কিছু একদিনের প্রতিযোগিতায় দুটি রান এবং/অথবা একটি ফ্রি হিট দেয়) এর ব্যবস্থা থাকে; তা ছাড়া নো-বলটিকে ওভার এ ছয়টি বলের মধ্যে একটি হিসাবে গণনা করা হয় না এবং একটি অতিরিক্ত বল করতে হয়।

নো-বলের জন্য দেওয়া এই রানটি পৃথকভাবে কোনও ব্যাটসম্যানের স্কোরে জমা দেওয়া হয় না - দলের স্কোরের অংশ হিসাবে আলাদাভাবে রাখা হয়। এই বলে ব্যাটসম্যান ব্যাট হাতে কোনও রান করলে বা বাউন্ডারি করলে - সেটি তাঁর ব্যক্তিগত স্কোরের অন্তর্ভুক্ত হয়।

কোনও দলের পক্ষে কোনও বলের ডেলিভারি থেকে বাই বা লেগ বাই (তবে ওয়াইড নয়) স্কোর করা সম্ভব; এগুলি নো-বলের জন্য পুরস্কৃত রানটি বাদেও দেওয়া হয়।

১৯৮০ এর দশক থেকে বোলারের বিপক্ষে নো-বল লেখা শুরু হয়। এটি বোলিংয়ের পরিসংখ্যানকে আরও নির্ভুল করে তুলেছে।

ওয়াইড

কোনও বল ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে আঘাত করার জন্য খুব দূরে প্রদান করা হলে এবং বলটি ব্যাটসম্যানের দেহ বা তাঁর সরঞ্জামের কোনও অংশই স্পর্শ না করলে সেটি ওয়াইড নামে পরিচিত হয়।

যখন কোনও ওয়াইড বোলিং করা হয় তখন ব্যাটিং দলকে একটি রান দেওয়া হয় যা পরিসংখ্যানে আলাদাভাবে লেখা হয় এবং তা ব্যাটসম্যানের স্কোরের জন্য গণনা করা হয় না। এই বলটিকে ওভারের ছয়টি বলের মধ্যে গণ্য করা হয় না। তাই ওয়াইড বলের কারণে অতিরিক্ত আর একটি বল করতে হয়। ওয়াইডের জন্য প্রদত্ত সমস্ত রানের স্কোর বোলারের বিরুদ্ধে যুক্ত করা হয়।

বাই

যদি ব্যাটসম্যানের ব্যাটে বল আঘাত না করে (বা ব্যাটসম্যানের দেহের কোনও অংশের সাথে তার সংস্পর্শ না ঘটে) তবুও ব্যাটসম্যানরা ইচ্ছুক হলে রান করতে উদ্যোগী হতে পারেন। যদি তাঁরা বলটি সীমানা র বাইরে পাঠাতে পারেন তবে চারটি রান আর তা না হলে ব্যাটসম্যানদের দৌড়ে করা রান 'কটিকে বাই রান হিসাবে পুরষ্কৃত করা হয়। এই রান ব্যাটসম্যানের দলীয় রান হিসাবে পরিসংখ্যানে আলাদাভাবে লেখা হয় এবং তা ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত স্কোরের জন্য গণনা করা হয় না।

নো-বলের পাশাপাশি বৈধ বল থেকেও বাই রান হতে পারে।

আধুনিক ক্রিকেটে বাই রানের পরিসংখ্যান সাধারণত উইকেট-রক্ষক এর বিপক্ষে রাখা হয়।

লেগ-বাই

যদি বলটি ব্যাটসম্যানের দেহে আঘাত করে এবং তাতে যদি ব্যাটসম্যান লেগ বিফোর উইকেট (এলবিডব্লিউ) আউট না হয়ে থাকেন এবং ব্যাটসম্যান বলটিকে এড়াতে সচেষ্ট হন বা ব্যাট দিয়ে মারতে সচেষ্ট হন - এমন পরিস্থিতিতে তাঁর শারীরের অংশ নির্বিশেষে বলটি স্পর্শ করার পর তাঁরা যে রানগুলি করেন তা লেগ-বাই হিসাবে পরিচিত হয়। এ সময় ব্যাটসম্যানরা দৌড়ে থাকুন বা না থাকুন বলটি বাউন্ডারীতে পৌঁছে গেলে চারটি লেগ-বাই রান পুরস্কৃত করা হয়।

নো-বল এবং বৈধভাবে করা বল থেকে লেগ-বাই রান হতে পারে এবং তা ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত রান হিসাবে গণ্য না হয়ে কেবল তাঁদের দলের স্কোরের দিকে গণনা করা হয়।

নো-বল এবং ওয়াইডের মতো না হয়ে বাই এবং লেগ-বাই রান বোলারের বিরুদ্ধে করা হয় না।

পেনাল্টি রান

আইনত বিবিধ লঙ্ঘনের জন্য পেনাল্টি রানের পুরস্কার দেওয়া হয় যা সাধারণত অন্যায়ভাবে খেলা বা খেলোয়াড়ের আচরণের সাথে সম্পর্কিত। ২০০০ সাল থেকে এই শাস্তির অনেকগুলিকে যুক্ত করা হয়েছে। অবৈধভাবে খেলার জন্য আইন ৪১ এর অধীনে রাখা নিয়ম অনুসারে [3] এবং ২০১৭ সাল থেকে খেলোয়াড়দের আচরণের জন্য আইন ৪২ এর অধীনে রাখা নিয়ম অনুসারে এই পেনাল্টি প্রদান করা হয়। [4]

রেকর্ডস

টেস্ট ম্যাচ এ ইনিংসে সর্বাধিক অতিরিক্ত ৭৬ রান (৩৫ বাই, ২৬ লেগ বাই, ০ ওয়াইড এবং ১৫ নো-বল) ২০০৭ সালের তৃতীয় টেস্ট এ ভারত দিয়েছিল। [5]

একদিনের আন্তর্জাতিক ইনিংসে সর্বাধিক অতিরিক্ত রান ৫৯ যা পাকিস্তান কর্তৃক দু-বার প্রদত্ত হয়েছে: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯৭৯ সালের ৯ম ওয়ানডে তে এবং স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে[6]

টুয়েন্টি২০ ইনিংসে সর্বাধিক অতিরিক্ত হ'ল ৪০ যা ২০০৪-০৫ টি-২০ কাপশিয়ালকোট স্ট্যালিয়নস এর বিরুদ্ধে প্রদান করেছিল লাহোর ঈগলস[7]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.