জাতিসংঘ[lower-alpha 1] বা রাষ্ট্রপুঞ্জ[lower-alpha 2] একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা যার বিবৃত উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অর্জন করা এবং জাতিসমূহের কর্মকাণ্ডকে সমন্বয় করার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করা। এটি বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। জাতিসংঘের সদর দফতর নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত। এছাড়া জেনেভা, নাইরোবি, ভিয়েনাহেগ শহরে সংস্থাটির অন্যান্য দফতর রয়েছে।

দ্রুত তথ্য আরবি:, চীনা: ...
জাতিসংঘ
Thumb
পতাকা
Thumb
সদর দফতর৭৬০ জাতিসংঘ প্লাজা, ম্যানহাটন, নিউ ইয়র্ক শহর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (আন্তর্জাতিক অঞ্চল)
দাফতরিক ভাষা
ধরনআন্তঃসরকারি সংস্থা
সদস্যপদ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্র
২টি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র
নেতৃবৃন্দ
আন্তোনিও গুতেরেস
 উপমহাসচিব
আমিনা জে. মহম্মদ
 সাধারণ পরিষদের সভাপতি
ডেনিস ফ্রান্সিস[]
 অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সভাপতি
পাউলো নারভায়েয
প্রতিষ্ঠিত
 জাতিসংঘ ফরমান স্বাক্ষরিত
২৬ জুন ১৯৪৫ (৭৯ বছর আগে) (1945-06-26)
 ফরমান কার্যকর
২৪ অক্টোবর ১৯৪৫ (৭৮ বছর আগে) (1945-10-24)
জনসংখ্যা
 ২০১৬ আনুমানিক
৭,৪০৩,০২০,০০০
ওয়েবসাইট
un.org (সাধারণ)
un.int (স্থায়ী মিশনসমূহ)
পূর্বসূরী
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ
বন্ধ
Thumb
নিউ ইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ

১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর ৫১টি রাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং পরবর্তীতে বিলুপ্ত লীগ অব নেশন্সের স্থলাভিষিক্ত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে বিজয়ী মিত্রশক্তি পরবর্তীকালে যাতে যুদ্ধ ও সংঘাত প্রতিরোধ করা যায়— এই উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হয়। তখনকার বিশ্ব রাজনীতির পরিস্থিতি জাতিসংঘের সাংগঠনিক কাঠামোতে এখনও প্রতিফলিত হচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্য (যাদের ভেটো প্রদানের ক্ষমতা আছে) হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, রাশিয়াগণচীন। এরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী দেশ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অক্টোবর, ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৩ সদস্য।যার মধ্যে ২টি পর্যবেক্ষক।[6] এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে অবস্থিত। সাংগঠনিকভাবে জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গ সংস্থাগুলো হলো - সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ, সচিবালয়, অছি পরিষদ ওআন্তর্জাতিক আদালত। এছাড়াও রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ ইত্যাদি। জাতিসংঘের প্রধান নির্বাহী হলেন এর মহাসচিব। ২০১৭ সালের ১লা জানুয়ারি তারিখ থেকে মহাসচিব পদে রয়েছেন পর্তুগালের নাগরিক রাজনীতিবিদ ও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও ম্যানুয়েল দে অলিভেইরা গুতারেস।সব কাজের মূল উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণ ও সমাজের উপকার এবং জীবনমানের উন্নতি সাধন করা।

সদস্যরাষ্ট্র

Thumb
বিশ্ব মানচিত্রে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ (নীল বর্ণে চিহ্নিত)

২০১৬ সালের তথ্যানুসারে জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ১৯৩। বিশ্বের প্রায় সব স্বীকৃত রাষ্ট্রই এর সদস্য। তবে উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম হলো তাইওয়ান (প্রজাতন্ত্রী চীন),ভ্যাটিকান সিটি। এছাড়াও,অন্যান্য কিছু অস্বীকৃত এলাকার মধ্যে রয়েছে ট্রান্সনিস্ট্রিয়া ও উত্তর সাইপ্রাসের তুর্কি প্রজাতন্ত্র।

জাতিসংঘে যোগদানকারী সর্বশেষ সদস্য রাষ্ট্র হলো দক্ষিণ সুদান (২০১১ সালের ১৪ জুলাই, ১৯৩তম) যোগদান করে।

সদর দপ্তর

Thumb
নিউইয়র্ক শহরে জাতিসংঘের সদর দপ্তর।

জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত। এটি ১৬ একর জমিতে ১৯৪৯হতে ১৯৫০ সালের মধ্যে নির্মাণ করা হয়। ভবনটি ইস্ট নদীর তীরে অবস্থিত। সদর দপ্তর স্থাপনের জমি কেনার জন্য জন ডি রকফেলার জুনিয়র ৮.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। তিনি জাতিসংঘকে এই জমি দান করেন।

সদর দপ্তরের মূল ভবনটির নকশা প্রণয়ন করেন - লে করবুসিয়ে, অস্কার নিয়েমেয়ারসহ আরো অনেক খ্যাতনামা স্থপতি। নেলসন রকফেলারের উপদেষ্টা ওয়ালেস কে হ্যারিসন এই স্থপতি দলের নেতৃত্ব দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে সদর দপ্তরের উদ্বোধন হয় ১৯৫১ সালের ৯ই জানুয়ারি তারিখে।

সদর দপ্তর নিউইয়র্কে হলেও জাতিসংঘের বেশ কিছু অঙ্গ সংগঠনের প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভা, নেদারল্যান্ডসের হেগ, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা, কানাডার মন্ট্রিয়ল, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন, জার্মানীর বন ও অন্যত্র অবস্থিত।

জাতিসংঘের সদর দপ্তরের ঠিকানা হল -

760 United Nations Plaza,
New York City, NY 10017,
USA

নিরাপত্তার খাতিরে এই ঠিকানায় প্রেরিত সকল ধরনের চিঠিপত্র পরীক্ষণ-নিরীক্ষণসহ জীবাণুমুক্ত করা হয়।[7]

জাতিসংঘের সদর দপ্তরের পুরানো ভবনের সংস্কার কার্য উপলক্ষে ম্যানহাটানের ফার্স্ট অ্যাভিনিউতে ফুমিহিকো মাকির নকশায় অস্থায়ী দপ্তর নির্মাণ করা হচ্ছে।

১৯৪৯সালের আগে পর্যন্ত লন্ডন ও নিউইয়র্কের বিভিন্ন স্থানে জাতিসংঘের কার্যালয়ের অবস্থান ছিল।[8]

উদ্দেশ্যসমূহ

জাতিসংঘ একটি আন্তর্জাতিক তথা বিশ্ব প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের যে কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য হতে পারে।জাতিসংঘ কিছু মহৎ উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে।জাতিসংঘ গঠনের সাতটি লক্ষ ও উদ্দেশ্য হচ্ছে-

১. বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।

২. বিভিন্ন জাতি তথা দেশের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন করা।

৩. অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলা।

. জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান গড়ে তোলা।

৫. বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিদ্যমান বিবাদ মীমাংসা করা।

৬.প্রত্যেক জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের স্বীকৃতি ও তার সমুন্নত রাখা, এবং

৭.উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের কার্যধারা অনুসরণ করা ৷

উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘ তার ছয়টি শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে।

ভাষা

জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষা হলো আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, এবং স্পেনীয় ভাষা[9] জাতিসংঘের সচিবালয়ে যে দুটি ভাষা ব্যবহৃত হয় তা হলো ইংরেজিফরাসি

জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষাগুলোর মধ্যে ইংরেজি ৫৪টি সদস্য দেশের সরকারি ভাষা। ফরাসি হলো ২৯টি দেশের, আরবি ২৪টি দেশের, স্পেনীয় ২১টি দেশের, রুশ ১০টি দেশের, এবং চীনা ভাষা ৪টি দেশের সরকারি ভাষা।

এছাড়াও জাতিসংঘে কিছু প্রস্তাবিত দাপ্তরিক ভাষা হলো বাংলা, হিন্দি, জার্মান, পর্তুগিজ, মালয়, তুর্কি, জাপানি, সোয়াহিলি ইত্যাদি ।

অঙ্গসংস্থাসমূহ

জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গসংস্থা বা অঙ্গসংগঠন রয়েছে মোট ৬টি।এগুলো হলো-

১. সাধারণ পরিষদ

২. নিরাপত্তা পরিষদ

৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ

৪. অছি পরিষদ

৫. আন্তর্জাতিক আদালত

৬. সচিবালয়

জাতিসংঘের অংগসংগঠনের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ

১.সাধারণ পরিষদঃ

Thumb
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ

জাতিসংঘের সকল রাষ্ট্রই এর সদস্য। প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের ১টি ভোটাধিকার রয়েছে।সাধারণ সভায় ৫ জন প্রতিনিধি প্রতিটি সাধারণ সভায় একটিদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার সাধারণসভার বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়।১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র নির্বাচন এবং ECOSOC এর ৫৪ জন সদস্য নির্বাচন করে। সভাপতির কার্যকাল ১ বছর।

২. নিরাপত্তাপরিষদঃ

Thumb
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ
  • নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিষ্ঠাকালীন (১৯৬৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত) সদস্য- ১১টি।
  • নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়- ২বছরের জন্য।
  • নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্থাব বাস্তবায়নের জন্য- ৯টি সদস্যরাষ্ট্রের সম্মতির প্রয়োজন (৫টি স্থায়ী ও ৪টি অস্থায়ী)
  • নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য- (স্থায়ী- ৫, অস্থায়ী-১০)
  • নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়- ১মাসের জন্য।
  • Veto শব্দটি ল্যাটিন; এর শব্দগত অর্থ ‘আমিমানিনা’।
  • ভেটো- কোন প্রস্থাবে স্থায়ী সদস্যদের ‘না’ বলার সাংবিধানিক অধিকার, নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কমপক্ষে ৯টি ভোটের প্রয়োজন (স্থায়ী ৫টি ও অস্থায়ী ৪টি), ৫টি স্থায়ী সদস্যের ভেটো ক্ষমতা আছে।

নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সমূহ-

নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য (ভেটো ক্ষমতা সম্পন্ন) দেশ রয়েছে ৫টি।এগুলো হলো-

১.  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

২.  যুক্তরাজ্য

৩.  ফ্রান্স

৪.  রাশিয়া

৫.  চীন

নিরাপত্তা পরিষদের আরো ১০টি অস্থায়ী সদস্য রয়েছে।

৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদঃ

Thumb
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ

এটিকে জাতিসংঘ পরিবার বলা হয়। বর্তমান সদস্য ৫৪ এবং সদস্য রাষ্ট্রের মেয়াদ তিন বছর। প্রতি বছর ১৮টি দেশ অবসর এবং নতুন ১৮টি দেশ অন্তর্ভূক্ত হয়।বছরে ২ বার অধিবেশন বসে। যথা- জেনেভাতে। এ পরিষদের ৫টি আঞ্চলিক কমিটি আছে।

(ক) ESCAP- Economic and social Commission for Asia and pacific.

সদর দপ্তরঃ ব্যাংকক (থাইল্যান্ড) (১৯৪৭)

(খ) ECA- Economic Commission For Africa.

সদর দপ্তরঃ আদ্দিস-আবাবা (ইথিওপিয়া) (১৯৫৮)

(গ) ECE- Economic Commission For Europe.

সদর দপ্তরঃ জেনেভা (সুইজারল্যান্ড) (১৯৪৭)

(ঘ) ECLAC- Economic Commission For Latin American and Carabian.

সদর দপ্তরঃ সান্টিয়াগো (চিলি) (১৯৪৮)

(ঙ) ESCWA- Economic and Social Commission For Western Asia.

সদরদপ্তরঃ বৈরুত (লেবানন) (১৯৪৭)

৪. অছিপরিষদঃ

Thumb
জাতিসংঘের অছি পরিষদ

নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী রাষ্ট্র এর সদস্য। ট্রাস্ট বা সাহায্য ভূক্তসমূহের রক্ষনাবেক্ষণ ,এদের নিয়ন্ত্রণ এ পরিচালিত হয়।জাতিসংঘের মাধ্যমে নাউরু, নিউগিনি, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন স্বাধীনতা পায়।১৯৯৪ সালে পালাউ এর স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাধ্যমে সকল অছিভুক্ত দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে।বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আইল্যান্ড একমাত্র অছিপরিষদভুক্ত অঞ্চল।১৯৯৪সালের পর অছিপরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

৫. আন্তর্জাতিক আদালতঃ

Thumb
জাতিসংঘ দ্বারা পরিচালিত আন্তর্জাতিক আদালত

৩ এপ্রিল ১৯৪৬ থেকে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।১৫জন বিচারপতি নিয়ে জাতিসংঘের আওতায় এর কার্যক্রম পরিচালিত। বিচারকদের কার্যকাল ৯ বছর।একটি দেশ থেকে কেবল একজন বিচারক একই সময়ে বিচারক নিযুক্ত হতে পারে। রোজালিনহ্যাগিন্স (টক) এই আদালতের প্রথম মহিলা বিচারপতি।সভাপতির মেয়াদকাল ৩ বৎসর। নেদারল্যান্ডের দ্যা হেগে এর প্রধান সদরদপ্তর।

৬. সচিবালয়ঃ

Thumb
জাতিসংঘ সচিবালয়ের ভবন

সকল প্রশাসনিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয় মহাসচিব নিযুক্তির ক্ষেত্রে পরিষদের দুই তৃতীয়াংশ ভোটে মহাসচিব ৫ বৎসরের জন্য নির্বাচিত হন। এর ইউরোপীয় সদরদপ্তর জেনেভা।জাতিসংঘ সচিবালয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত। এর প্রধানের উপাধি হলো সেক্রেটারিজেনারেল বা মহাসচিব।এর দপ্তর সংখ্যা ৮টি।

মহাসচিব

Thumb
জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস

জাতিসংঘের প্রধান হিসেবে রয়েছেন মহাসচিব। জাতিসংঘ সনদের ৯৭ অনুচ্ছেদ মোতাবেক মহাসচিবকে “প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ সনদে আরো বলা হয়েছে যে, মহাসচিব যে-কোন বিশ্ব শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা ও নিরাপত্তার খাতিরে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আনতে পারবেন। মহাসচিব পদটি দ্বৈত ভূমিকার অধিকারী - জাতিসংঘের প্রশাসক এবং কুটনৈতিক ও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে।

নিরাপত্তা পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ মহাসচিব নিযুক্ত করেন।

পদের মেয়াদ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন নীতিমালা নেই। কিন্তু পূর্ব থেকেই এক বা দুই মেয়াদে ৫ বছরের জন্য ভৌগোলিক চক্রাবর্তে মহাসচিব পদে মনোনীত করার বিধান চলে আসছে।

আরও তথ্য ক্রমিক নং, নাম ...
জাতিসংঘ মহাসচিবদের তালিকা[10]
ক্রমিক নংনামযে দেশে জন্ম নিয়েছেনকার্যভার গ্রহণকার্যভার প্রদানমন্তব্য
(১)ট্রিগভে লি নরওয়ে২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৬১০ নভেম্বর, ১৯৫২পদত্যাগ; ১ম মহাসচিব: স্ক্যান্ডিনেভিয়া দেশ থেকে
(২)ডগ হামারশোল্ড সুইডেন১০ এপ্রিল, ১৯৫৩১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬১কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু। শান্তিতে নোবেলজয়ী
(৩)উ থান্ট মিয়ানমার৩০ নভেম্বর, ১৯৬১১ জানুয়ারি, ১৯৭২এশিয়া থেকে নির্বাচিত ১ম মহাসচিব
(৪)কুর্ট ওয়াল্ডহেইম অস্ট্রিয়া১ জানুয়ারি, ১৯৭২১ জানুয়ারি, ১৯৮২
(৫)হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার পেরু১ জানুয়ারি, ১৯৮২১ জানুয়ারি, ১৯৯২আমেরিকা থেকে নির্বাচিত ১ম মহাসচিব
(৬)বুট্রোস বুট্রোস-ঘালি মিশর১ জানুয়ারি, ১৯৯২১ জানুয়ারি, ১৯৯৭আফ্রিকা থেকে নির্বাচিত ১ম মহাসচিব
(৭)কফি আন্নান ঘানা১ জানুয়ারি, ১৯৯৭১ জানুয়ারি, ২০০৭মুসলিম মহাসচিব। নোবেলজয়ী
(৮)বান কি মুন দক্ষিণ কোরিয়া১ জানুয়ারি, ২০০৭৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬২য় এশীয়
(৯)অ্যান্টোনিও গুতেরেস পর্তুগাল১ জানুয়ারি, ২০১৭-UNHCR সাবেক মহাসচিব
বন্ধ

শুভেচ্ছা দূত

জাতিসংঘ তার সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মাঝে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুভেচ্ছা দূত নিয়োগ করে থাকে। শুভেচ্ছা দূতের মধ্যে - বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতা, খেলোয়াড়, চলচ্চিত্র তারকা প্রমুখ পেশাজীবিদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়।

জাতিসংঘ শান্তি বার্তাবাহক, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এইচআইভি ও এইডস্‌ কর্মসূচী, পরিবেশ কার্যক্রম, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো, ইউনোডিসি, ইউএনএফপিএ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউনিসেফ, ইউনিডো, ইউনিফেম, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রমূখ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য শুভেচ্ছা দূত হিসেবে সময়ে সময়ে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে নিয়োগ করে থাকে।

আরও দেখুন

টীকা

  1. বাংলাদেশে প্রচলিত নাম[2][3]
  2. পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত নাম[4][5]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.