সমাজবিজ্ঞান
মানবসমাজ এবং এর সৃষ্টি, ক্রমবিকাশ ও সংগঠনের বৈজ্ঞানিক আলচনাশাস্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
সমাজবিজ্ঞান মানব সমাজের বৈজ্ঞানিক ও পদ্ধতিগত অধ্যয়ন। এতে সমাজ, মানুষের সামাজিক আচরণ, সামাজিক সম্পর্কের ধরণ, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পর্কিত সাংস্কৃতিক দিকের প্রতি মনোনিবেশ করা হয়। [1][2][3] সমাজবিজ্ঞানকে সামাজিক বিজ্ঞান এবং মানবিক উভয়ের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সামাজিক শৃঙ্খলা এবং সামাজিক পরিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞানের একটি শাখা বিকাশের জন্য, সমাজবিজ্ঞান অভিজ্ঞতাভিত্তিক গবেষণা এবং ক্রিটিক্যাল থিংকিং-এর বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে।[4] সমাজবিজ্ঞানের গবেষণার বিষয় পৃথক মাইক্রো-স্তরের মিথস্ক্রিয়া এবং এজেন্সির বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে সামাজিক ব্যবস্থা এবং সামাজিক কাঠামোর ম্যাক্রো-স্তরের বিশ্লেষণ পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলিত সমাজবৈজ্ঞানিক গবেষণা সরাসরি সামাজিক নীতি এবং কল্যাণে প্রয়োগ করা যায়। তবে তাত্ত্বিক পদ্ধতিগুলো সামাজিক প্রক্রিয়া এবং ঘটনাবলী বোঝার চেষ্টা করে।[5]
সমাজবিজ্ঞান প্রচলিতভাবে সামাজিক স্তরবিন্যাস, সামাজিক শ্রেণি, সামাজিক গতিশীলতা, ধর্ম, ধর্মনিরপেক্ষতা, আইনের সমাজবিজ্ঞান, যৌনতা, লিঙ্গ এবং বিচ্যুতির মতো বিষয়ে মনোনিবেশ করে। সাম্প্রতিক সময়ে গবেষণায় ডিজিটাল বিভাজনের সামাজিক-প্রযুক্তিগত দিকগুলো নতুন আগ্রহ হিসেবে যুক্ত হয়েছে। [6]যেহেতু মানব ক্রিয়াকলাপের সমস্ত ক্ষেত্র সামাজিক কাঠামো এবং স্বতন্ত্র সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া দিয়ে প্রভাবিত হয়,ফলে সমাজবিজ্ঞান ধীরে ধীরে অন্যান্য বিষয় এবং প্রতিষ্ঠানের দিকে তার মনোযোগ প্রসারিত করেছে। যেমন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, অর্থনীতি, সামরিক সমাজবিজ্ঞান,শাস্তি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ইন্টারনেট,শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান,সামাজিক পুঁজি এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞান উন্নয়নে সামাজিক কার্যকলাপের ভূমিকা।
সামাজিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পরিসরও প্রসারিত হয়েছে। সামাজিক গবেষকরা বিভিন্ন ধরণের গুণগত এবং পরিমাণগত গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করেন। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বাঁকগুলো সমাজ বিশ্লেষণকে ক্রমাগত ব্যাখ্যামূলক, হার্মেনিউটিক এবং দার্শনিক পদ্ধতির দিকে ধাবিত করেছে। অপরদিকে একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এজেন্ট-ভিত্তিক মডেলিং ও সামাজিক নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণের মতো নতুন বিশ্লেষণাত্মক, গাণিতিক এবং গণনামূলকভাবে কঠোর কৌশলের উত্থান লক্ষ্য করা যায়।[7][8]
শিল্প সহ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামাজিক গবেষণার প্রভাব বিদ্যমান। যেমন রাজনীতিবিদ, নীতি নির্ধারক এবং আইনপ্রণেতাদের মধ্যে; শিক্ষাবিদ,পরিকল্পনাকারী,প্রশাসক,ডেভেলপার, বিজনেস ম্যাগনেট, ম্যানেজার,সমাজকর্মী, বেসরকারী ও অলাভজনক সংস্থা; পাশাপাশি সাধারণভাবে সামাজিক সমস্যা সমাধানে আগ্রহী ব্যক্তিদের মধ্যে।