মেনাখেম বেগিন (listen; হিব্রু ভাষায়: מְנַחֵם בֵּגִין; পোলীয়: Mieczysław Biegun; রুশ: Менахем Вольфович Бегин Menakhem Vol'fovich Begin; জন্ম: ১৬ আগস্ট, ১৯১৩ - মৃত্যু: ৯ মার্চ, ১৯৯২) পোল্যান্ডের ব্রেস্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইসরায়েলের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। ইসরায়েলের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, লিকুদ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পূর্বে ইহুদিদের নিয়ে গড়া সশ্রস্ত্র সংগঠন ইরগানের নেতৃত্ব দেন। ইরগানের প্রধান হিসেবে তিনি ফিলিস্তিনের বিষয়ে ব্রিটিশদের নজর কাড়েন।[2] ১৯৪৭-৪৮ সালে আরবদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনকে ঘিরে গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

দ্রুত তথ্য মেনাখেম বেগিন, ইসরায়েলের ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী ...
মেনাখেম বেগিন
מנחם בגין
Thumb
ইসরায়েলের ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২১ জুন, ১৯৭৭  ১০ অক্টোবর, ১৯৮৩
রাষ্ট্রপতিএফরাইম কাতজির
আইজাক নাভন
চাইম হারজগ
পূর্বসূরীআইজাক রবিন
উত্তরসূরীআইজাক শামির
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
কাজের মেয়াদ
২৮ মে, ১৯৮০  ৫ আগস্ট, ১৯৮১
প্রধানমন্ত্রীস্বয়ং
পূর্বসূরীএজার ওয়েজম্যান
উত্তরসূরীএরিয়েল শ্যারন
কাজের মেয়াদ
১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩  ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩
প্রধানমন্ত্রীস্বয়ং
পূর্বসূরীএরিয়েল শ্যারন
উত্তরসূরীমোশে অ্যারন্স
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯১৩-০৮-১৬)১৬ আগস্ট ১৯১৩
ব্রেস্ট, রুশ সাম্রাজ্য
মৃত্যু৯ মার্চ ১৯৯২(1992-03-09) (বয়স ৭৮)
তেল আভিভ, ইসরায়েল
রাজনৈতিক দলহেরাত (১৯৪৮-১৯৮৮)
লিকুদ (১৯৮৮-১৯৯২)
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
গাহাল (১৯৬৫-১৯৮৮)
দাম্পত্য সঙ্গীআলিজা আর্নল্ড (১৯৩৯-৮২)
সন্তানজীভ বিনিয়ামিন
হাসিয়া
লিহ
প্রাক্তন শিক্ষার্থীওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়
ধর্মইহুদি[1]
স্বাক্ষরThumb
বন্ধ

প্রারম্ভিক জীবন

Thumb
১৯৩২ সালে পোল্যান্ডে বেগিন তার পিতা -মাতা, তার বোন রাচেল এবং তার ভাই হার্জলের (শীর্ষ কেন্দ্র) সাথে

তৎকালীন রুশ সাম্রাজ্যের ব্রেস্টের শহর ব্রেস্ট-লিতোভস্ক এলাকায় পোলীয় ইহুদী জিভ দভ এবং হাসিয়া বাইগান দম্পতির সন্তান তিনি। পরিবারের তিন সন্তানের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন।[3] তার জন্মকালীন সময়ে এরিয়েল শ্যারনের দাদী ধাত্রী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।[4] শৈশবে নিজ শহরে হাশোমার হাতজায়ের নামীয় ইহুদীদের স্কাউট আন্দোলনের সদস্য হন। এরপর ষোল বছর বয়সে বেতারে যোগ দেন।[5] ১৪ বছর বয়সে পোলীয় সরকারের পরিচালনায় বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ও ধ্রুপদী সাহিত্য চর্চা করেন।[6]

রাজনৈতিক জীবন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জুলাই, ১৯৪১ সালে জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে। পোলীয় নাগরিক হিসেবে সিকরস্কি-মেস্কি চুক্তি আওতায় তিনি মুক্তি পান। কর্পোরাল অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ফ্রি পোলিশ অ্যান্ডার্স আর্মিতে যোগ দেন। মে, ১৯৪২ সালে পারস্য করিডোর হয়ে ফিলিস্তিনে সেনাদলের সদস্যরূপে প্রেরিত হন।[7] ডিসেম্বর, ১৯৪২ সালে অ্যান্ডার্স আর্মি ত্যাগ করে ইরগানে যোগ দেন।[8] ১৫ মে, ১৯৪৮ তারিখে রেডিওতে এক বেতার ভাষণে ইরগানের গুপ্ত অবস্থান থেকে প্রকাশ্যে চলে আসার ঘোষণা দেন তিনি।[9] ১ জুন ডেভিড বেন গুরিয়নের নেতৃত্বাধীন প্রাদেশিক সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।

আগস্ট, ১৯৪৮ সালে ডানপন্থী রাজনৈতিক দল হেরাতের সাথে একীভূত হয় ইরগান দল।[10] দলীয় প্রধান হিসেবে মাপাইয়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতিপক্ষ হন ও নেসেটের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের সদস্য ছাড়া ধারাবাহিকভাবে আটটি নির্বাচনে বিরোধীদলে অবস্থান করেন ও রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে জয়ী হবার পর তিন দশক লেবার পার্টির প্রাধান্য খর্ব করতে ভূমিকা রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৭৯ সালে মিশরে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এরফলে আনোয়ার সাদাতের সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির ফলে মিশরের বিরুদ্ধে ছয়দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে দখলকৃত সিনাই উপত্যকা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর বেগিনের সরকার পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলীদের বসতি স্থাপনে অগ্রসর হয়। ইরাকের অসিরাক পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমা আক্রমণ চালানোর নির্দেশ দেন ও ১৯৮২ সালে পিএলও’র ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত লেবানন দখলকল্পে যুদ্ধ করেন। এরফলে লেবানন যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। সাবরা ও শাতিলা গণহত্যায় ইসরায়েলীদের বর্বরতার প্রেক্ষিতে বিশ্ববাসী ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।[11] তা স্বত্ত্বেও বেগিন তার বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখেন।[12]

মূল্যায়ন

ইসরায়েলী প্রতিরক্ষা বাহিনীকে লেবাননে মোতায়েন রাখেন ও দেশে উত্তরোত্তর মুদ্রাস্ফীতির কবলে পড়ে। স্ত্রীর মৃত্যু পরবর্তীকালে জনসমক্ষে আসা বন্ধ রাখেন ও অক্টোবর, ১৯৮৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। অবসর নেয়ার পরও পর্দার অন্তরালে থেকে লিকুদ দলে রাজনৈতিক প্রভাববিস্তার করতেন।[13][14][15]

ব্রিটিশ সরকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সংগঠন ইরগানের নেতা হিসেবে তাকে চিহ্নিত করে। ১৯৫০-এর দশকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।[16]

দেহাবসান

২৯ মে, ১৯৩৯ তারিখে আলিজা আর্নল্ডের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এ দম্পতির তিন সন্তান ছিল।

৩ মার্চ, ১৯৯২ তারিখে নিজ অ্যাপার্টমেন্টে অবস্থানকালে হৃদজনিত সমস্যা দেখা দেয় ও ইচিলভ হাসপাতালের নিবীড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। তাঁ বামদিকের অংশ পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। ২০ ঘণ্টা পর আশঙ্কামুক্ত হলেও ছয়দিন পর তার অবস্থা গুরুতর আকার ধারণ করে। ৯ মার্চ ভোর ৩:৩০ ঘটিকায় তার দেহাবসান ঘটে। দেড় ঘণ্টা পর তার মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালের রাব্বি কর্তৃক কাদ্দিস প্রার্থনা করা হয়।[17][18] বিকেলে জেরুজালেমে তার শবানুষ্ঠান হয়। এতে হাজারো জনতা উপস্থিত ছিলেন।[19]

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.