আজারবাইজান
ককেসাস অঞ্চলের একটি রাষ্ট্র; পূর্ব ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত / From Wikipedia, the free encyclopedia
আজারবাইজান (আজারবাইজানি ভাষায়: Azərbaycan আজ়্যার্বায়জান্), সরকারী নাম আজারবাইজান প্রজাতন্ত্র (আজারবাইজানি ভাষায়: Azərbaycan Respublikası) পূর্ব ইউরোপের একটি প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র। এটি কৃষ্ণ সাগর ও কাস্পিয়ান সাগরের মধ্যবর্তী স্থলযোটক দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের সবচেয়ে পূর্বে অবস্থিত রাষ্ট্র। আয়তন ও জনসংখ্যার দিকে থেকে এটি ককেশীয় রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তম। দেশটির উত্তরে রাশিয়া, পূর্বে কাস্পিয়ান সাগর, দক্ষিণে ইরান, পশ্চিমে আর্মেনিয়া, উত্তর-পশ্চিমে জর্জিয়া। এছাড়াও ছিটমহল নাখশিভানের মাধ্যমে তুরস্কের সাথে আজারবাইজানের একচিলতে সীমান্ত আছে। আর্মেনিয়ার পর্বতের একটি সরু সারি নাখশিভান ও আজারবাইজানকে পৃথক করেছে। আজারবাইজানের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের একটি এলাকা নাগোর্নো-কারাবাখের আনুগত্য বিতর্কিত। কাস্পিয়ান সাগরে অবস্থিত অনেকগুলি দ্বীপও আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত। আজারবাইজানের রাষ্ট্রভাষা আজারবাইজানি। কাস্পিয়ান সাগরতীরে অবস্থিত বন্দর শহর বাকু আজারবাইজানের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
প্রজাতন্ত্রী আজারবাইজান | |
---|---|
নীতিবাক্য: None | |
জাতীয় সঙ্গীত: Azərbaycan marşı (আজারবাইজানের মার্চ) | |
আজারবাইজানের অবস্থান | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | বাকু |
সরকারি ভাষা | আজারবাইজানি |
সরকার | প্রজাতন্ত্র |
• রাষ্ট্রপতি | ইলহাম আলিয়েভ |
• প্রধানমন্ত্রী | আর্তুর রাসিজাদ |
স্বাধীনতা লাভ সোভিয়েত ইউনিয়ন হতে | |
• ঘোষিত | ৩০শে আগস্ট, ১৯৯১ |
• আনুষ্ঠানিকভাবে | আজারবাইজান এসএসআর |
আয়তন | |
• মোট | ৮৬,৬০০ কিমি২ (৩৩,৪০০ মা২) (১১৩তম) |
• পানি (%) | ১.৬% |
জনসংখ্যা | |
• 2018 আনুমানিক | 9,911,646[1] (91st) |
• ঘনত্ব | ১১৩/কিমি২ (২৯২.৭/বর্গমাইল) (99th) |
জিডিপি (পিপিপি) | 2018 আনুমানিক |
• মোট | $175 billion[2] (72nd) |
• মাথাপিছু | $17,857[2] (71st) |
জিডিপি (মনোনীত) | 2018 আনুমানিক |
• মোট | $39.207 billion [2] (110th) |
• মাথাপিছু | $4,097[2] (110th) |
জিনি (2018) | 31.8[3] মাধ্যম |
মানব উন্নয়ন সূচক (2018) | 0.759[4] উচ্চ · 78th |
মুদ্রা | মানাত (AZN) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+৪ |
কলিং কোড | ৯৯৪ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AZ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .az |
১৮শ ও ১৯শ শতকে ককেশীয় এই দেশটি পর্যায়ক্রমে রুশ ও পারস্যদেশের শাসনাধীন ছিল। রুশ গৃহযুদ্ধকালীন সময়ে ১৯১৮ সালের ২৮শে মে তৎকালীন আজারবাইজানের উত্তর অংশটি একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। কিন্তু মাত্র ২ বছরের মাথায় ১৯২০ সালে বলশেভিক লাল সেনারা এটি আক্রমণ করে আবার রুশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে[5] এবং ১৯২২ সালে দেশটি আন্তঃককেশীয় সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অংশ হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৩৬ সালে আন্তঃককেশীয় সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রটি ভেঙে তিনটি আলাদা প্রজাতন্ত্র আজারবাইজান, জর্জিয়া ও আর্মেনিয়াতে ভেঙে দেওয়া হয়। তখন থেকেই আজারবাইজানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং নাগোর্নো-কারাবাখ এলাকার খ্রিস্টান আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব্বের সূত্রপাত। নাগোর্নো-কারাবাখের জনগণ আর্মেনিয়ার সাথে একত্রিত হতে চায়। ১৯৯১ সালের ২০শে অক্টোবর আজারবাইজান স্বাধীনতা লাভ করলে[6] এই দ্বন্দ্ব্ব সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নেয়। ফলে নতুনভাবে স্বাধীন দেশটির প্রথম বছরগুলি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক অবনতি, এবং নাগোর্নো-কারাবাখের যুদ্ধে অতীবাহিত হয়। ১৯৯৪ সালের মে মাসে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর দীর্ঘ ২৮ বৎসর নগোর্নো কারাবাখ এবং সংলগ্ন ৭টি আজারবাইজানি জেলা বিচ্ছিন্নতাবাদী আর্মেনীয়দের নিয়ন্ত্রনাধীন ছিল,কিন্তু ২০২০ সালের ২৮শে অক্টোবর থেকে আজারবাইজান তাঁদের দখল হয়ে যাওয়া এলাকা উদ্ধারে সামরিক অভিযান শুরু করলে ৪৮ দিন পর এলাকাটি তাঁদের নিয়ন্ত্রনে আসে ।বর্তমানে নাগোর্নো-কারাবাখের কিছু অংশ এবং ১৯৯৪ সালে আর্মেনিয়া কর্তৃক দখল হয়ে যাওয়া ৭টি আজারবাইজানি জেলা আজারবাইজানের সামরিক নিয়ন্ত্রণে আছে। ১৯৯৫ সালে আজারবাইজানে প্রথম আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং ঐ বছরই সোভিয়েত-উত্তর নতুন সংবিধান পাস করা হয়।
আজারবাইজানের বাকু তেলক্ষেত্রগুলি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেলক্ষেত্রগুলির মধ্যে অন্যতম। কিন্তু দুর্নীতি, সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ এবং দুর্বল সরকারের কারণে দেশটি খনিজ সম্পদ থেকে সম্ভাব্য মুনাফা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হয়েছে।