![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/48/Shahbag_Projonmo_Square_Uprising_Demanding_Death_Penalty_of_the_War_Criminals_of_1971_in_Bangladesh_32.jpg/640px-Shahbag_Projonmo_Square_Uprising_Demanding_Death_Penalty_of_the_War_Criminals_of_1971_in_Bangladesh_32.jpg&w=640&q=50)
২০১৩-র শাহবাগ আন্দোলন
From Wikipedia, the free encyclopedia
২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন (অন্যান্য নাম: শাহবাগ গণদাবি, শাহবাগ আন্দোলন, শাহবাগ গণ-অবরোধ, গণজাগরণ মঞ্চ) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ শুরু হয়[4]। এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামী আব্দুল কাদের মোল্লার বিচারের রায় ঘোষণা করে[5]। কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা, আলুব্দি গ্রামে ৩৪৪ জন মানুষ হত্যা সহ মোট ৬টি অপরাধের ৫টি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। কিন্তু এতোগুলো হত্যা, ধর্ষণ, সর্বোপরী গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ মেনে নিতে পারেনি। রায়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকার শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে এবং এর অনুসরণে একসময় দেশটির অনেক স্থানেই সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়।[6][7]
![]() |
২০১৩ সালের শাহবাগ অবরোধ | |
---|---|
![]() ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির শাহবাগ অবরোধকালের গণসমাবেশ | |
তারিখ | ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ (2013-02-05) |
অবস্থান | ২৩°৪৪′১৮″ উত্তর ৯০°২৩′৪৫″ পূর্ব |
কারণ |
|
প্রক্রিয়াসমূহ |
|
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। ২৫শে মার্চ রাতে ও ২৬শে মার্চ ভোর রাত জুড়ে পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। ২৬শে মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে। প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের রক্ত এবং প্রচুর নারীর ধর্ষণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ যুদ্ধে জয়লাভ করে। তবে বাংলাদেশেরই কিছু মানুষ স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং পাকিস্তানি বাহিনীকে বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে সক্রিয়ভাবে সহায়তা প্রদান করেছিল, যার মধ্যে ছিল গণহত্যা, ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন ইত্যাদি। যুদ্ধকালীন সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে একটি আইন তৈরি করা হয় যা ২০০৯ সালে কিছুটা সংশোধন করা হয়। এ আইনের আওতায় ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ এ সকল অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। ২০১৩ সালের ২১শে জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে আবুল কালাম আযাদ (বাচ্চু রাজাকার)-কে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।[8]
এরপর ৫ই ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে কাদের মোল্লাকে ৩টি অপরাধের জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ২টির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু এতো বড় সব অপরাধের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে সাধারণ জনগণ মেনে নিতে পারেননি। তারা শাহবাগে অহিংস বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করে। একসময় তা দেশব্যাপী বিক্ষোভে রূপ নেয়। দেশের অন্য যেসব স্থানে উল্লেখযোগ্য বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, চট্টগ্রামের প্রেসক্লাব চত্বর, রাজশাহীর আলুপট্টি মোড়, খুলনার শিববাড়ি মোড়, বরিশালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বগুড়ার সাতমাথা, যশোরের চিত্রা মোড়, কুমিল্লার কান্দিরপাড়া, কুষ্টিয়ার থানা মোড় ইত্যাদি। শাহবাগের অনেকে বলেন তারা মৃত্যুদণ্ডের রায় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চত্বর ছেড়ে যাবেন না।[9] অন্যদিকে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনিসুল হক বলেন "কাদের মোল্লার সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার সুযোগ এখনো রয়েছে"।[10] শেষ পর্যন্ত সরকার জনতার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় এবং আইন সংশোধনের মাধ্যমে আপিল করার ব্যবস্থা রাখে। যার ফলশ্রুতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কর্মসূচির ফলে শাহবাগ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে।[11]