হৈম-আগ্নেয়গিরি
From Wikipedia, the free encyclopedia
হৈম-আগ্নেয়গিরি (ইংরেজি: Cryovolcano) হল এমন এক শ্রেণির আগ্নেয়গিরি যেখান থেকে গলিত পাথরের পরিবর্তে জল, অ্যামোনিয়া বা মিথেনের মতো উদ্বায়ী পদার্থ নির্গত হয়।[2] সম্মিলিতভাবে হৈম-ম্যাগমা (ইংরেজি: Cryomagma), হৈম-লাভা (ইংরেজি: Cryolava) বা হৈম-আগ্নেয় গলিত পদার্থ (ইংরেজি: Ice-volcanic melt) নামে পরিচিত[2] এই নিঃসৃত পদার্থ সচরাচর তরল আকারে থাকে এবং তা প্লিউম সৃষ্টি করতে পারে; কিন্তু তা বাষ্পের আকারেও থাকতে পারে। নির্গত হওয়ার পর পারিপার্শ্বিকের অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রার সংস্পর্শে এসে হৈম-ম্যাগমার জমে কঠিন আকার ধারণ করারই কথা। তুষারময় প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং সৌরজগতের অতীতে যে সকল তুষার রেখায় (যেমন প্লুটো [3]) জলের প্রাচুর্য ছিল এমন অন্যান্য বস্তুতে হৈম-আগ্নেয়গিরির অস্তিত্বের সম্ভাবনা থাকে। বামন গ্রহ প্লুটো ও সেরেস এবং শনির প্রাকৃতিক উপগ্রহ টাইটানের অনেক বৈশিষ্ট্যটিকে সম্ভাব্য হৈম আগ্নেয়গিরি হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং বৃহস্পতির প্রাকৃতিক উপগ্রহ ইউরোপার পৃষ্ঠভাগে এক শ্রেণির গম্বুজাকৃতি বৈশিষ্ট্যের উৎসও সম্ভবত হৈম-আগ্নেয় ক্রিয়াকলাপ।[4][5] এছাড়াও এনসেলাডাস ও সম্ভবত ট্রাইটনেও তুষার প্রস্রবণ দেখা যায়। যদিও সেগুলি আগ্নেয়গিরি গঠন করেছে কিনা তা জানা যায় না।
বরফ গলন ও হৈম-আগ্নেয়গিরির সৃষ্টির ক্ষেত্রে সৌরজগতের কোনও কোনও বস্তুর সম্ভাব্য শক্তির উৎসটি হল জোয়ার-সংক্রান্ত বিরোধ।[6] হিমায়িত পদার্থের আলোকভেদ্য অথচ অস্বচ্ছ সঞ্চয় পৃষ্ঠভাগের ঠিক তলায় একটি গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টি করে, যার থেকে প্রয়োজনীয় তাপ উৎপন্ন হয়।
কাইপার বেষ্টনীর বস্তু কুয়াওয়ারে অতীত উষ্ণায়নের চিহ্নগুলি[7] দেখে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে এগুলি অতীতে হৈম-অগ্ন্যুৎপাতের ফলশ্রুতি। তেজষ্ক্রিয় ক্ষয় এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দিয়ে থাকতে পারে। কারণ, হৈম-আগ্নেয়গিরিগুলি অ্যামোনিয়া-মিশ্রিত জল উদ্গীরণে সক্ষম এবং অ্যামোনিয়া ১৮০ K (−৯৫ °সে) তাপমাত্রায় গলে চরম শীতল এক তরল সৃষ্টি করে যা আগ্নেয়গিরি থেকে নিঃসৃত হতে পারে।