Loading AI tools
বামন গ্রহ আবিষ্কারগত বিতর্ক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হাউমেয়া হল ১৯৩০ সালে প্লুটো আবিষ্কারের পর থেকে আইএইউ-স্বীকৃত প্রথম বামন গ্রহ। তবে আবিষ্কারের কৃতিত্ব কে পাবে তা নিয়ে বিতর্কের কারণে বামন গ্রহ হিসেবে এর নামকরণ এবং আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে বেশ কয়েক বছর বিলম্ব হয়। মাইকেল ই. ব্রাউনের নেতৃত্বে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) এর একটি দল প্রথম বস্তুটি দেখতে পায়, তবে জোসে লুইস ওর্টিজ মোরেনোর নেতৃত্বে স্প্যানিশ অপর একটি দল প্রথম এর ঘোষণা দেন, তাই স্বভাবতই তারাই কৃতিত্ব লাভ করবে বলে ধরা হয়।
তবে ব্রাউন স্প্যানিশ দলকে প্রতারক হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং দাবি করে যে তারা ক্যালটেকের পর্যবেক্ষণকে ব্যবহার করেই আবিষ্কার করেছে। পক্ষান্তরে ওর্টিজের দল, আমেরিকার দলটিকে আইএইউ'র সাথে রাজনৈতিক যোগসাজশের অভিযোগ আনে। আইএইউ ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্প্যানিশ দল ঘোষিত অ্যাট্যাসিনা নামকে স্বীকৃতি না দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার দল কর্তৃক ঘোষিত নাম হাউমেয়াকেই স্বীকৃতি দেয়।
২৮ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে মাইক ব্রাউন এবং তার দল ২০০৪ সালের ৬ই মে যুক্তরাষ্ট্রের পালোমার অবজারভেটরিতে ১.৩ মি স্মার্টস টেলিস্কোপ দ্বারা ধারণকৃত ছবির মধ্যে হাউমেয়াকে আবিষ্কার করে, যাকে তারা দশম গ্রহ বলে ভাবছিলেন। ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৪ সালে, অর্থাৎ বড়দিনের পরপরই এর আবিষ্কার হওয়ায় ক্যালটেক ডিসকভারি টীম একে সান্তা নামকরণ করেন।[1] তবে গ্রহ হিসেবে এটি বেশ ছোট ছিল, এমনকি প্লুটোর চেয়েও ছোট, তাই ব্রাউন তার আবিষ্কার ঘোষণা করেননি। তার পরিবর্তে তিনি এটিকে অন্যান্য বৃহৎ নেপচুনোত্তর বস্তুর (টিএনও) সাথে রেখে দেন, যাদের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করার জন্য অধিকতর পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।[2][3][4] যখন তাদের দল হাউমেয়ার উপগ্রহ আবিষ্কার করে, তখন তারা বুঝতে পারে যে হাউমেয়া অন্যান্য টিএনওর চেয়ে অধিক পাথুরে, এবং এর উপগ্রহগুলোর অধিকাংশই বরফ।[5] এরপর তারা একটি ছোট বরফ টিএনওর নিকটাবর্তী পরিবার আবিশকার করে এবং ধারণা করে যে এগুলো হল হাউমেয়ার বরফ ম্যান্টলের অবশেষ, যা কোনো সংঘর্ষের ফলে পৃথক হয়ে গেছে।[6] ২০০৫ সালের ৭ জুলাই, যখন তিনি আবিষ্কার সম্পর্কে জানাবার জন্য পেপার লিখছিলেন, তখন ব্রাউনের কন্যা লিলা জন্মগ্রহণ করে, যার ফলে ঘোষণাটি আরো পিছিয়ে যায়।[7] ২০শে জুলাই,[8] ক্যালটেক দল সামনের সেপ্টেম্বরে একটি সম্মেলনে তাদের আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করার কথা জানিয়ে অনলাইনে তাদের জার্নালের সংক্ষিপ্তসার (অ্যাবস্ট্রাক্ট) প্রকাশ করে। তখন হাউমেয়াকে কে৪০৫০৬এ কোড দেওয়া হয়।[9]
ঐ সময়ের দিকেই দক্ষিণ স্পেনে সিয়েরা নেভাডা অবজারভেটরির ইনস্টিটিউটো দে অ্যাস্ট্রোফিসিকা দে আন্দালুসিয়ায় জোসে লুইজ ওর্টিজ মোরেনোর ছাত্র পাবলো সান্তো স্যাঞ্জ দাবি করেন যে ওর্টিজের দল ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসেই ছবি যাচাইয়ের কাজ শুরু করে দেন। তিনি বলেন যে ২০০৫ সালের জুলাই মাসের শেষদিকে তারা ২০০৩ সালের ৭, ৯ ও ১০ই মার্চে ধারণকৃত ছবিতে হাউমেয়াকে খুঁজে পায়। তিনি আরো বলেন যে এটি একটি পূর্বে আবিষ্কৃত বস্তু কিনা তা যাচাই করা হলে তারা ব্রাউনের ইন্টারনেটে এর সংক্ষিপ্তসার খুঁজে পায়, যেখানে তাদের মতই একটি উজ্জ্বল টিএনও খুঁজে পাবার বর্ণনা রয়েছে। গুগল করে তারা ২৬ জুলাই সকালে কে৪০৫০৬এ সম্পর্কিত তথ্য এবং ক্যালটেক পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত লগ খুঁজে পায়। তবে উভয় বস্তুই অভিন্ন কিনা তা নিশ্চিত হবার জন্য ঐ লগের তথ্য যথেষ্ট ছিল না।[3][10][11][12] ওর্টিজের দল মাইনর প্লানেট সেন্টারেও (এমপিসি) অনুসন্ধান করেন, সেখানেও তারা এ বস্তুর কোনো উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায় না। ২৭শে জুলাই, ২০০৫ সালে কৃতিত্ব নেবার জন্য তারা তৎক্ষণাৎ এমপিসিকে ই-মেইল করে তাদের আবিষ্কারের কথা জানিয়ে দেয়। ই-মেইলে তারা একে "বিরাট টিএনও আবিষ্কার, জরুরী" (Big TNO discovery, urgent) বলে উল্লেখ করে।[13] ই-মেইলে তারা ক্যালটেক লগের কোনো প্রকার উল্লেখ করেনা। পরের দিন সকালে তারা আবারও ক্যালটেক লগে প্রবেশ করে, এবং আরো বেশকিছু রাতে পর্যবেক্ষণ যাচাই করে। এরপর তারা ম্যালোর্কার অ্যামেচার অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরির রেইনার স্ট্রসকে অধিকতর পর্যবেক্ষণের জন্য বলে। স্ট্রস ১৯৫৫ সালের ডিজিটালকৃত পালোমার অবজারভেটরি স্লাইড থেকে হাউমেয়ার আবিষ্কারপূর্ব ছবি খুঁজে পান এবং ২৮শে জুলাইয়ের ঐ রাতেই নিজের টেলিস্কোপে হাউমেয়ার অবস্থান নিশ্চিত করেন। এক ঘণ্টার মধ্যে,[8] ওর্টিজের দল এমপিসিকে নতুন তথ্যভিত্তিক দ্বিতীয় প্রতিবেদন পাঠায়। এখানেও ক্যালটেক লগে তাদের প্রবেশের কোনো কথা অন্তর্ভুক্ত থাকে না।[14] ২৯শে জুলাই এমপিসি তাদের এ তথ্য প্রকাশ করে।[14]
একই দিন এক প্রেস রিলিজে ওর্টিজের দল হাউমেয়াকে "দশম গ্রহ" হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।[15] ২৯ জুলাই, ২০০৫ সালে হাউমেয়াকে তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাময়িক নাম, ২০০৩ ইএল৬১ দেওয়া হয়। ২০০৩ দেওয়ার কারণ ছিল ছবির স্প্যানিশ আবিষ্কারের তারিখ অন্তর্ভুক্তি।[16] পরের বছরের ৭ই সেপ্টেম্বর, একে সংখ্যায়িত করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মাইনর প্লানেট ক্যাটালগে (১৩৬১০৮) ২০০৩ ইএল৬১ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[17]
এমপিসির প্রকাশনার দিনেই ব্রাউনের দল দশম গ্রহ হিসেবে অপর একটি কুইপার বেল্ট বস্তু এরিসের আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন, যা প্লুটোর চেয়েও অধিকতর দূরবর্তী ও উজ্জ্বল এবং কিছুটা বড়ও। পরিকল্পনার পূর্বে এ ঘোষণা করা হয়, যেন এ আবিষ্কারের মত একই ঘটনা আগেই অন্য কারো মাধ্যমে না ঘটে যায়। এর কারণ এমপিসি তাদেরকে জানায় যে তাদের পর্যবেক্ষণকৃত তথ্য যে কেউ গ্রহণ করতে পারে, এবং তখন তারা বুঝতে পারে যে শুধুমাত্র হাউমেয়া সংক্রান্ত তথ্যই নয়, বরং এরিস সংক্রান্ত তথ্যও সাধারণ প্রবেশযোগ্য ছিল।[2][18] একই দিন ওর্টিজ হাউমেয়ার আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করে, যেদিন ব্রাউন ২০০৫ সালের ২৬শে জানুয়ারি আবিষ্কৃত হাউমেয়ার প্রথম উপগ্রহের তথ্যসহ এ ব্যাপারে তার লেখা খসড়া দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশ করেন।[5]
ব্রাউন স্কুপড হয়ে হতাশ হওয়া সত্ত্বেও ওর্টিজের দলকে তাদের আবিষ্কারের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি এরিসের ঘোষণার ফলে হাউমেয়ার ঘোষণার জৌলুস ম্লান করে দেওয়ায় ক্ষমাও চান; তবে কারণ হিসেবে তিনি জানান যে তাদের তথ্যে অন্য কারো প্রবেশ ঘটেছে এবং তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যে আবারও হয়ত তিনি স্কুপড হবেন। ওর্টিজ স্বেচ্ছায় জানায় না যে তিনিই ব্রাউনের তথ্যে প্রবেশ করেছিলেন। ওয়েব সার্ভার রেকর্ড থেকে জানা যায় যে সিয়েরা নেভাডা অবজারভেটরির একটি কম্পিউটার থেকে ব্রাউনের দলের অবজারভেট লগে প্রবেশ করা হয়, যার মাধ্যমে হাউমেয়ার ২০০৩ সালের আবিষ্কারপূর্ব ছবি পাওয়া সম্ভব ছিল। এর ফলে ব্রাউন প্রতারিত হবার সন্দেহ করেন। তিনি এর ব্যাখ্যা চেয়ে ৯ই আগস্ট ওর্টিজকে মেইল করেন। ওর্টিজ এর কোনো জবাব দেননি। ফলে ক্যালটেক দল আগস্টের ১৫ তারিখ আইএইউতে ওর্টিজের ফলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করে। মূল অভিযোগ ছিল ক্যালটেকের তথ্য ব্যবহার করেও তা উল্লেখ না করা, যা কিনা বৈজ্ঞানিক নীতিমালার মারাত্মক লঙ্ঘন। একই সাথে তারা এমপিসি থেকে ওর্টিজের এ আবিষ্কারকে সরিয়ে ফেলার জন্য এমপিসিকে জানায়।[19] পরবর্তীতে ওর্টিজ স্বীকার করেন যে তিনি ক্যালটেকের পর্যবেক্ষণকৃত লগে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু ভুল কোনো কিছু করেননি বলে জানান। তারা এটা করেছিলেন শুধুমাত্র নতুন কোনো বস্তু আবিষ্কার হল কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হবার জন্য।[20] ব্রাউন অনুমার করেন যে হয়ত স্প্যানিশ ফলটি তার জার্নালের সংক্ষিপ্তসার (অ্যাবস্ট্রাক্ট) আর পর্যবেক্ষণ লগ পাবার আগে হাউমেয়াকে আদৌ খুঁজে পাননি।[18]
আইএইউ-এর নিয়ম অনুযায়ী গৌণ গ্রহ বা মাইনর প্লানেট আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয় তাদেরকে, যারা এমপিসির কাছে যথেষ্ট পরিমাণ অবস্থানগত তথ্যসহ নির্ধারিত উপযুক্ত কক্ষপথ জানাতে পারবে। সেইসাথে কৃতিত্বপ্রাপ্ত আবিষ্কর্তাই এর নামকরণে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন, এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কৃতিত্বপ্রাপ্ত আবিষ্কর্তা ছিলেন ওর্টিজ এবং অন্যান্যরা (ওর্টিজ et al.), এবং তাদের প্রস্তাবিত নাম ছিল পাতালের আইবেরীয় দেবী অ্যাটাসিনা। তিনি রোমান দেবী প্রসারপিনার সমকক্ষ, যিনি প্লুটোদের প্রেমিকা ছিলেন।[10] তবে জনিক দেবতা হিসেবে অ্যাটাসিনা কেবলমাত্র নেপচুনের কক্ষীয় অনুরণনের সাথে সম্পর্কিত ক্ষেত্রেই এ নাম ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে নামটি হাউমেয়ার জন্য যথার্থ ছিল না।[21]
আইএইউ প্রতিষ্ঠিত নিয়মানুযায়ী ক্লাসিকাল কুইপার বেল্ট বস্তুসমূহের পৌরাণিক নাম দেওয়া হবে তাদের সৃষ্টির সাথে মিল রেখে।[22] ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্যালটেক দল হাওয়াইয়ান মিথোলজি থেকে আইএইউর কাছে (১৩৬১০৮) ২০০৩ ইএল৬১ এবং এর উপগ্রহ — উভয়ের জন্যেই আনুষ্ঠানিক নাম প্রস্তাব করে। তাদের প্রস্তাবিত নামের উদ্দেশ্য ছিল "উপগ্রহের অবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো"।[23] ক্যালটেক দল থেকে ডেভিড র্যাবিনোউইটজ এ নাম প্রস্তাব করেন।[24] হাউমেয়া হলেন হাওয়াই দ্বীপের রক্ষাকর্ত্রী, যেখানে মনা কেয়া অবজারভেটরি অবস্থিত। অধিকন্তু তিনি পাপার সাথেই পরিচিত, যিনি পৃথিবীর দেবী এবং ওয়াকিয়া (মহাকাশ) এর স্ত্রী।[25] এ নামটি যথার্থ ছিল কারণ ২০০৩ ইএল৬১কে ধরা হয় প্রায় সম্পূর্ণরূপে পাথরনির্মিত, যেখানে কুইপার বেল্টের অন্যান্য বস্তুসমূহ ছোট পাথরের অভ্যন্তরবিশিষ্ট, যার উপরে পুরু বরফে স্তর থাকে।[6][26] হাউমেয়া হলেন উর্বরতা এবং সন্তান জন্মদানের দেবী, যাঁর অনেক সন্তান দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে ঝুলে থাকে;[25] এর সাথে সম্পর্কিত হল বরফাবৃত দেহের ঝাঁক, যা কিনা কোনো এক আদিকালে বামন গ্রহটির সংঘর্ষের মাধ্যমে সৃষ্ট হয়েছিল।[6] এর দুটো পরিচিত উপগ্রহও এভাবেই সৃষ্টি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়,[6] এবং এ কারণে হাউমেয়ার দুই কন্যা হাই'ইয়াকা ও নামাকার অনুযায়ী রাখা হয়েছে।[26]
এ বস্তুটির আবিষ্কার প্রকৃতপক্ষে কে করেছিল তা নিয়ে বিবাদ চলমান থাকায় বামন গ্রহ হিসেবে এর আনুষ্ঠানিক শ্রেণিবিভাগ কিংবা এর গ্রহণযোগ্য কোনো নাম — কোনোটাই হচ্ছিল না, ২০০৮ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর, আইএইউ ঘোষণা করে যে বামন গ্রহের নামপ্রদান সম্পর্কিত দুটি সংস্থা — কমিটি অন স্মল বডি নোমেনক্ল্যাচার (সিএসবিএন) এবং ওয়ার্কিং গ্রুপ ফর প্লানেটারি সিস্টেম নোমেনক্ল্যাচার (ডব্লিউজিপিএসএন) ঐকমত্যে এসেছে যে ক্যালটেক প্রস্তাবিত হাউমেয়া নামটিকেই রাখা হবে।[27][28] সিএসবিএনে ভোটের ফলাফল খুবই নিকটবর্তী ছিল,[12] এবং শেষমেষ একটিমাত্র ভোটেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।[10] তবে ঘোষণায় আবিষ্কারের তারিখ হিসেবে ২০০৩ সালের ৭ই মার্চই ছিল, যেদিন সিয়েরা নেভাডা অবজারভেটরিতে হাউমেয়াকে আবিষ্কার করা হয় বলে দাবি করা হয়েছিল। তবে এক্ষেত্রে আবিষ্কর্তার নামের স্থানটি ফাঁকা রাখা হয়েছিল।[21][29][30]
হার্ভার্ডে এমপিসির প্রধান ব্রায়ান জি. মার্সডেন ব্রাউনের দাবিকে সমর্থন করে বলেন, "আগে হোক বা পরে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনুধাবক করবে যে কী ঘটেছিল, এবং ব্রাউন সম্পূর্ণ কৃতিত্বই পাবে।[21] তিনি আইএইউ-এর তালিকায় আবিষ্কর্তার নাম ফাঁকা থাকার প্রসঙ্গে বলেন যে, "বস্তুটির আবিষ্কর্তার ব্যাপারটি ইচ্ছাকৃতভাবেই অস্পষ্ট রাখা হয়েছে [...] আমরা একটি আন্তর্জাতিক ঘটনার ঘটাতে চাইনি।" তিনি সতেরো শতকের প্রথম দিকে বৃহস্পতির চারটি বৃহত্তম উপগ্রহের প্রকৃত আবিষ্কর্তা গ্যালিলিও গ্যালিলেই না সাইমন ম্যারিয়াস[11] — এ বিবাদসংক্রান্ত বিতর্কের পরে সবচেয়ে জঘন্য বিতর্ক হিসেবে একে উল্লেখ করেন। ঐ বিতর্কে শেষমেশ গ্যালিলিও জয়লাভ করেন।[31]
ওর্টিজ দল এর প্রতিবাদ করেন। তাদের পরামর্শ ছিল যে যদি অ্যাটাসিনা আইএইউ গ্রহণ করতে না পারে, তবে কোনো এক পক্ষের নাম না নিয়ে তৃতীয় আরেকটি নাম খুঁজতে পারত। উপরন্তু তারা আইএইউকে রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত দাবি করেন। আরো শোনা যায় যে সিএসবিএম-এর এক সদস্য আইরিশ মিথোলোজি অনুযায়ী "নিরপেক্ষ" নাম হিসেবে দাগদা নামটিকে প্রস্তাব করেছিল, তবে শেষে তা আর ব্যবহৃত হয়নি।[32] ওর্টিজ বলে চলেন যে "আমি খুশি নই, আমার মনে হয় [আইএইউ] সিদ্ধান্তটি দুর্ভাগ্যজনক এবং এটি একটি খারাপ উদাহরণ স্থাপন করেছে।"[11] স্প্যানিশ পত্রিকা এবিসি এ সিদ্ধান্তকে "ইউএস বিজয়" হিসেবে অভিহিত করে। এ প্রসঙ্গে তারা আইএইউতে স্পেনের চেয়ে আমেরিকার কর্মী দশগুণ বেশি এ তথ্যও টেনে আনে।[33]
নাম ঘোষণার পরপরই ব্রাউন উল্লেখ করেন যে কোনো বস্তু প্রকৃত আবিষ্কর্তাহীন অবস্থায় থাকাটা কিছুটা অদ্ভুত, তবে একই সাথে এও জানান যে তিনি ফলাফলে সন্তুষ্ট এবং প্রাপ্ত ফলাফলটি সঠিকই ছিল।[11] হাই'ইয়াকা এবং নামাকা উপগ্রহ দুটির আবিষ্কর্তা হিসেবে পূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করেন তিনি।[30] এ আবিষ্কারের পঞ্চদশ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিনি আবিষ্কারের গুরুত্ব নিয়ে একটি ব্লগ লেখেন। তবে এখানে বিতর্কের ব্যাপারে কোনো উল্লেখ ছিল না।[34]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.