হরিণ
স্তন্যপায়ী, তৃণভোজ়ী, চতুষ্পদী প্রাণী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হরিণ কেরভিডায়ে পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা স্তন্যপায়ী প্রাণী। বল্গা হরিণ, মায়া হরিণ, সম্বর হরিণ এবং চিত্রা হরিণ এদের কিছু উদাহরণ। চাইনিজ ওয়াটার ডিয়ার এবং মাদি রেইনডিয়ার জন্ম নেয় এবং প্রতিবছর নিজের শিং নিজে নিজেই কেটে ফেলে। এইভাবে তারা নিজেদেরকে শিং ওয়ালা পশুদের কাছ থেকে একেবারেই বদলে ফেলে যেমন, এন্টিলোপ; এরা সাধারণ হরিণদের মতোই। এশিয়ার মাস্ক ডিয়ার এবং আর্দ্র আফ্রিকার ওয়াটার চেভ্রোটেইন (অথবা মাউস ডিয়ার)দের কে আসল হরিণ ধরা হয়না কেননা তারা কেরভিডায়ে পরিবার বাদ দিয়ে নিজেদের আলাদা আলাদা পরিবার গঠন করে। নিচে এদের গঠন করা পরিবারের নাম দেওয়া হল- মাস্ক ডিয়ার= মোসচিডেই এবং ওয়াটার চেভ্রোটেইন= ট্রাগুলিডেই।
হরিণ সময়গত পরিসীমা: Early Oligocene–Recent | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | স্তন্যপায়ী |
বর্গ: | Artiodactyla |
উপবর্গ: | Ruminantia |
পরিবার: | Cervidae Goldfuss, 1820 |
Subfamilies | |
Capreolinae/Odocoileinae |

প্রস্তরযুগ থেকেই হরিণকে বিভিন্ন গুহায় আকাঁ ছবি বা ছাচে দেখা গেছে । ইতিহাসে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পৌরানিক কাহিনি, ধর্মীয় গাথা এবং সাহিত্যে এদের বর্ণনা আছে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও তাদের গুরুত্ব ছিল যেমন মাংস হিসেবে, চামড়ার ব্যবহারে এবং ছুরির বাটে শিং ব্যবহারে। মধ্য যুগ থেকে হরিণ শিকার জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং এখনও তা রয়েছে।
বর্ণনা
সারাংশ
প্রসঙ্গ

যদিও একই রকম দেখতে তবুও এন্টিলোপ থেকে এদের পার্থক্য রয়েছে অনেক যেমন তাদের শিং নিয়মিতই গজায়। [১] হরিণের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে লম্বা, শক্তিশালী পা, লম্বা কান এবং হ্রস লেজ।[২] শারীরিকভাবে হরিণের অনেক বৈচিত্র্য দেখা যায়। সবচেয়ে বড় হরিণ হল চামরি গাই যেটা প্রায় ২.৬ মিটার (৮.৫ ফুট) লম্বা এবং ওজন হয় ৮০০ কিলোগ্রাম (১,৮০০ পাউন্ড)।[৩][৪] এল্করা কাঁধ থেকে লম্বায় হয় ১.৪–২ মিটার (৪.৬–৬.৬ ফুট) এবং ওজন হয় ২৪০–৪৫০ কিলোগ্রাম (৫৩০–৯৯০ পাউন্ড)।[৫] বিপরীতভাবে উত্তরের পুডু হল বিশ্বের সবচেয়ে ছোট হরিণ। এটা কাঁধ থেকে প্রায় ৩২–৩৫ সেন্টিমিটার (১৩–১৪ ইঞ্চি) লম্বা হয় এবং ওজন হয় প্রায় ৩.৩–৬ কিলোগ্রাম (৭.৩–১৩.২ পাউন্ড)। দক্ষিণের পুডুগুলো উত্তরের চেয়ে একটু লম্বা আর ওজনদার হয়।[৬] বেশিরভাগ প্রজাতিতেই পুরুষ হরিণরা স্ত্রী হরিণের চেয়ে বড় হয়[৭] এবং, রেইনডিয়ার ছাড়া সব পুরুষেরই শিং আছে।[৮]
গায়ের রং সাধারণত লাল আর বাদামির মিশ্রণ হয়,[৯] যদিও tufted deer দেখতে গাঢ় চকোলেটের মত হয়[১০] অথবা এল্কের মত ইষৎ ধূসর হয়।[৫] brocket deer এর বিভিন্ন জাত ধূসর থেকে লালচে বাদামি রংয়ের হয়।[১১] বিভিন্ন জাতের হরিণ যেমন চিতল,[১২] fallow হরিণ[১৩] এবং সিকা হরিণের[১৪] বাদামি চামড়ায় সাদা ছোপ দেখা যায়। জায়গার উপর ভিত্তি করে রেইনডিয়ারের চামড়ায় উল্লেখযোগ্য বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।[১৫] হরিণদের বছরে দুবার লোম ঝরে;[৯][১৬] যেমন লাল হরিণদের লাল চিকন গ্রীষ্মকালীন লোম ঝরে ধীরে ধীরে বাদামি ছাই রঙ্গা ঘন লোমে পরিণত হয় শরৎকালে যা আবার বসন্তের দিকে গ্রীষ্মকালের লাল লোমে পরিণত হয়।[১৭]photoperiod দ্বারা লোম ঝরে পড়া প্রভাবিত।[১৮]
হরিণরা ভাল ঝাপ দিতে পারে আর সাতারও কাটতে পারে। পত্রভোজী এই প্রাণী চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট পাকস্থলী আছে। কিছু হরিণ মাংসও খায় যদি তারা তা পেয়ে থাকে যেমন Rùm দ্বীপের হরিণরা।[১৯][২০]
প্রায় সব হরিণেরই মুখাবস্থিত গ্রন্থি আছে চোখের সামনের অংশে। এই গ্রন্থিতে শক্তিশালী গন্ধক ফেরোমন রয়েছে, যা ব্যবহার করা হয় হরিণের নিজস্ব এলাকা চিহ্নিত করার কাজে। কিছু প্রজাতির হরিণের এই গ্রন্থি রাগান্বিত বা উত্তেজিত হলে খুলে যায়। সব হরিণের গলব্লাডার ছাড়া একটি লিভার আছে। এদের tapetum lucidum রয়েছে যার ফলে এরা রাতেও ভাল দেখতে পারে।
জীব বিদ্যা

খাদ্যাভ্যাস
হরিণরা বিচরণকারী জীব, তারা প্রধানত পাতা খায়। তাদের পাকস্থলি ছোট, জাবর কাটার উপযোগী এবং উচ্চ পুষ্টির প্রয়োজন। গৃহপালীত প্রাণী বা ভেড়ার মত তারা বেশি পরিমাণে নিম্ন মানের আঁশযুক্ত খাদ্য খায় না বরং সহজে হজম হয় এমন খাবার যেমন কচি পাতা, নরম ঘাস, অঙ্কুরিত চারা, নরম ফল, গাছের ডাল, ছত্রাক এবং শৈবাল খায়। কম আঁশযুক্ত খাবারগুলো স্বল্প গাজন আর ছেছন প্রক্রিয়া শেষে খাদ্যনালী দিয়ে দ্রুত চলে যায়। হরিনের অনেক বেশি খনিজ পদার্থ বিশেষ করে ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট প্রয়োজন হয় শিংয়ের বৃদ্ধির জন্য যা পরে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তার দিকে গড়ায়। অন্যদিকে কিছু রিপোর্টে দেখা গেছে হরিণরা মাংশাসি হচ্ছে যেমন Northern bobwhite'রা।[২১]
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.