স্টুডিও বাবেল্সব্যার্গ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
স্টুডিও বাবেল্সব্যার্গ (জার্মান: Filmstudio Babelsberg, FWB: BG1) জার্মানির রাজধানী বার্লিনের উত্তরাংশে পটসড্যাম-বাবেল্সব্যার্গে অবস্থিত একটি ফিল্ম স্টুডিও। ফিল্ম স্টুডিও হিসেবে বৃহৎ আকৃতির এই স্টুডিওটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম। এটি ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্টুডিওটির আয়তন প্রায় ২৫ হাজার বর্গমিটার বা ২ লক্ষ ৭০ হাজার বর্গফুট। ফ্রিটজ্ ল্যাংয়ের মেট্রোপোলিশ, জোসেফ ভন স্টার্নবার্গের দ্য ব্লু অ্যাঞ্জেল-সহ শত শত চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে এখানে। ২০১২ সালে স্টুডিও বাবেল্সব্যার্গ তার শততম বার্ষিকী উদ্যাপন করছে।
বর্তমানে স্টুডিও বাবেল্সব্যার্গ মূলতঃ ফিচার ফিল্ম নির্মাণেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এছাড়াও এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশাল অঙ্কের বাজেটের চলচ্চিত্র পরিচালনায় অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে।
বায়োস্কোপ কোম্পানী ১৯১১ সালে নিউবাবেল্সবার্গে তাদের প্রথম গ্লাস-ফিল্ম স্টুডিও নির্মাণ করে। ড্যানিশ চলচ্চিত্র পরিচালক আরবান গ্যাড ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সালে দ্য ড্যান্স অব দ্য ডেড শীর্ষক চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে স্টুডিওটির অভিষেক ঘটান। ১৯২২ সালে ডয়েস বায়োস্কোপ গেসেলশ্যাফ্ট এরিক পোমার্সের ডেকলা-ফিল্ম জিএমবিএইচ এর সাথে একীভূত হয়ে ডেকলা বায়োস্কোপ নামধারণ করে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯২৬ সালে ফ্রিটজ্ ল্যাংয়ের বিশ্ববিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র মেট্রোপোলিশ নির্মাণ করে। এর ফলেই এটি বৃহৎ স্টুডিও হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে যা বর্তমানে মার্লেনে ডিটরিশ হল নামে পরিচিত। এখানেই অ্যালফ্রেড হিচকক সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন।[1]
টনক্রিউজ নামে বাবেল্সবার্গে জার্মানির প্রথম শব্দধারক মঞ্চ নির্মিত হয় ১৯২৯ সালে। উইলি ফ্রিটসচের মেলোডি অব দ্য হার্ট হচ্ছে জার্মানির প্রথম সবাক চলচ্চিত্র। এরপর ১৯৩০ সালের মধ্যে জোসেফ ভন স্টার্নবার্গের দ্য ব্লু অ্যাঞ্জেলের প্রদর্শনী ঘটে। এ চলচ্চিত্রে জার্মান অভিনেত্রী মার্লেনে ডিটরিশ এবং এমিল জ্যানিংস্ প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন।
১৯৪৬ সালের ১৭ই মে তারিখে ডয়েস ফিল্ম এজি বা ডিইএফএ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে আট শতাধিক ফিচার ফিল্ম নির্মিত হয়, তন্মধ্যে ১৫০টি ছিল শিশুতোষ চলচ্চিত্র। এছাড়াও, ১৯৫৯ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে টেলিভিশনে প্রচারের জন্য ছয় শতাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে প্রায় এক হাজার ফিচার ফিল্ম স্টুডিওটিতে নির্মিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে এডলফ হিটলারের নির্দেশে তার প্রোপাগোন্ডা প্রধান জোসেফ গোয়েবেলস্ শতাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয় এখানে। লেনি রাইফেনস্টালের ট্রাম্ফ অব দি উইল তন্মধ্যে অন্যতম। এছাড়া ১৯৪০ সালে দ্য জিউ সাস চলচ্চিত্রটিও এখানেই নির্মিত হয়।[2]
বার্লিন প্রাচীর পতনের পর স্টুডিওটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তা স্বত্ত্বেও ট্রিঊহ্যান্ড সাবেক ডয়েস ফিল্ম এজি বা ডিইএফএ-এর বেসরকারীকরণের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। আগস্ট, ১৯৯২ সালে ট্রিঊহ্যান্ডেনস্টল্ট ফরাসী প্রতিষ্ঠান কমপ্যাগনি জেনারেল ডেস ইউয়াক্স (বর্তমানে ভিভেনডি ইউনিভার্সাল)-এর কাছে বিক্রয় করে দেয়। পরবর্তী এক যুগের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি স্টুডিও'র অবকাঠামোগত উন্নয়নে €৫০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করে। স্টুডিও'র বেসরকারীকরণের পর ২০০৭ সালে সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জিত হয়।
জুলাই, ২০০৪ সালে ভিভেনডি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এফবিবি বা ফিল্মবেট্রাইবে বার্লিন ব্রান্ডেনবার্গ জিএমবিএইচ-এর কাছে স্টুডিও বাবেল্সবার্গকে বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে স্টুডিও'র প্রধান কর্ণধার চার্লি ওবকেন এবং ক্রিস্টোফ ফিসার অংশীদার হিসেবে রয়েছেন। ২০০৫ এর বসন্তে পুণর্গঠনকৃত স্টুডিওতে জনগণকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং মুক্ত বাণিজ্যের লক্ষ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে।
বিশ্বের প্রাচীনতম স্টুডিও হিসেবে ২০০৮ সালে স্টুডিও বাবেল্সবার্গ এবং হলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা জোয়েল সিলভার ফিচার ফিল্ম নির্মাণে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এতে ডার্ক ক্যাসেল প্রোডাকশনের নিয়ন্ত্রণে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল।
১৯৯২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে অনেকগুলো ফিচার ফিল্ম নির্মিত হয়। উল্লেখযোগ্য অভিনেতা হিসেবে টম ক্রুজের ভকাইরাই, ক্লাইভ ওয়েনের দি ইন্টারন্যাশনাল এবং ক্যাট উইন্সলেটের দ্য রিডার অন্যতম। সাম্প্রতিক সময়কালে স্টুডিও বাবেল্সবার্গে যৌথ পরিচালনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে কুয়েনটিন টারানটিনো'র ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডর্স (মুক্তি পায় ২০০৯ সালে) এবং রোমান পোলানস্কি'র দ্য ঘোস্ট রাইটার (২০১০) অন্যতম। সূচনালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত নিম্নরূপ চলচ্চিত্র এ স্টুডিও থেকে নির্মিত হয়েছেঃ-
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.