Loading AI tools
আমেরিকান বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানের ইতিহাসবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
স্টিভেন জে গুল্ড (ইংরেজি: Stephen Jay Gould; ১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯৪১ – ২০শে মে, ২০০২) একজন মার্কিন জীবাশ্মবিজ্ঞানী, বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানের ইতিহাসবিদ। গুল্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালে অ্যান্টিওক কলেজ নামক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক হন। ১৯৬৭ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীবাশ্মবিজ্ঞানে ডক্টরেট সনদ লাভ করেন। ঐ বছরই তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সালে সেখানে পূর্ণকালীন অধ্যাপকে পরিণত হন।
স্টিভেন জে গুল্ড | |
---|---|
জন্ম | ১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯৪১ কুইনস, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | মে ২০, ২০০২ ৬০) ম্যানহাটন, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স
জাতীয়তা | মার্কিনী |
মাতৃশিক্ষায়তন | অ্যান্টিওক কলেজ (BA), ইউনিভার্সিটি অফ লিডস, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি (ডক্টরেট) |
পরিচিতির কারণ | যতিবিশিষ্ট সাম্যাবস্থা সম্পূর্ণ পৃথক রাজ্য স্প্যানড্রেল প্রাক-অভিযোজন |
দাম্পত্য সঙ্গী | ডেবোরা লি (১৯৬৫–১৯৯৫; বিবাহ বিচ্ছিন্ন; ২ সন্তান) রন্ডা রোল্যান্ড শিয়ারার (১৯৯৫–২০০২ (আমৃত্যু); ২ জন সৎ-সন্তান) |
পুরস্কার | লিনেয়ান সোসাইটি অফ লন্ডন-এর ডারউইন-ওয়ালেস পদক (২০০৮) জীবাশ্মবৈজ্ঞানিক সমাজ পদক (২০০২) সেন্ট লুই সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪) সু টাইলার ফ্রিডম্যান পদক (১৯৮৯) চার্লস শুশার্ট পুরস্কার (১৯৭৫) ফাই বেটা কাপ্পা বিজ্ঞানে পুরস্কার (দুইবার – ১৯৮৩, ১৯৯০) ম্যাকার্থার ফেলোশিপ জাতীয় গ্রন্থ পুরস্কার জাতীয় গ্রন্থ সমালোচক চক্র পুরস্কার |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | জীবাশ্মবিজ্ঞান, বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞান, বিজ্ঞানের ইতিহাস |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান অফ ন্যাচারাল হিস্টরি, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | প্লাইস্টোসিন অ্যান্ড রিসেন্ট হিস্টরি অফ দ্য সাবজিনাস পয়কিলোজোনাইটস ইন বার্মুডা: অ্যান এভোলিউশনারি মাইক্রোকজম (১৯৬৭) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | আর. এল. ব্যাটেন জে. ইম্ব্রি নর্ম্যান ডি. নেওয়েল |
স্বাক্ষর | |
গুল্ড তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করে এবং মার্কিন প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরে কাজ করে অতিবাহিত করেন। ১৯৯৬ সালে গুল্ড নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে জীববিজ্ঞান বিষয়ে অতিথি গবেষণা অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগলাভ করেন। তখন থেকে তিনি নিউ ইয়র্ক ও হার্ভার্ড উভয় বিশ্ববিদ্যালয়েই ভাগ করে পড়াতেন। গুল্ডের গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের স্থল-শামুকদের বিবর্তন এবং প্রজাতির উদ্ভব। নাইলস এলড্রেজের সাথে একত্রে তিনি ১৯৭২ সালে যতিবিশিষ্ট সাম্যাবস্থা (ইংরেজি Punctuated equilibrium পাংচুয়েটেড ইকুইলিব্রিয়াম) নামক তত্ত্ব প্রদান করেন, যা ছিল বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞানে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।[1] এই তত্ত্বটি ছিল চার্লস ডারউইনের বিবর্তন সংক্রান্ত তত্ত্বের একটি সংশোধন। গুল্ডের তত্ত্ব বলে যে বিবর্তনগত পরিবর্তনের ফলে নতুন উপ-প্রজাতির উদ্ভবের প্রক্রিয়াটি বহু লক্ষ বছর ধরে ধীর, মসৃণ ও ধ্রুব হারে ঘটে না (যার নাম ক্রমবিবর্তনীয় ধীরত্ব, ইংরেজিতে Phylogenic gradualism ফাইলোজেনিক গ্র্যাজুয়ালিজম)[2], বরং মাত্র কয়েক হাজার বছরের মধ্যে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হয় এবং এর পরে দীর্ঘকাল ধরে বিবর্তনীয় স্থিতিশীলতা বজায় থাকে, যে সময় জীবদের তেমন কোনও পরিবর্তন হয় না। গুল্ডের তত্ত্ব ও তার পরবর্তী কর্মগুলিকে অন্যান্য বেশ কিছু বিজ্ঞানী সমালোচনা করেছেন।
গবেষণার বাইরে গুল্ড একজন বিজ্ঞান লেখক, তার্কিক ও বিবর্তবাদী তত্ত্বের প্রচারক হিসেবে খ্যাতিলাভ করেন। তিনি তার প্রজন্মের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সর্বাধিক পঠিত জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখকদের মধ্যে অন্যতম।[3] তিনি প্রায়ই খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থ বাইবেলের অনুসারীদের আক্রমণের বিরুদ্ধে বিবর্তন তত্ত্বটির স্বপক্ষে কথা বলতেন। তিনি ধর্মীয় সৃষ্টিবাদের বিরুদ্ধে লেখেন এবং প্রস্তাব করেন যে ধর্ম ও বিজ্ঞান দুইটি সম্পূর্ণ পৃথক রাজ্য ("Non-overlapping magisteria" নন-ওভারল্যাপিং ম্যাজিস্টেরিয়া) যাদের একটির উপর অন্যটির কর্তৃত্ব নেই।[4]অন্টোজেনি অ্যান্ড ফাইলোজেনি (১৯৭৭) বইতে তিনি বিবর্তন ও একক জীবের বিকাশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে লেখেন, যার কারণে তিনি বিশেষজ্ঞ মহলে স্বীকৃতি লাভ করেন।[5] দ্য মিসমেজার অফ ম্যান (১৯৮১) বইতে তিনি বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা ও কিছু বর্ণ বা গোত্রের মানুষের বুদ্ধিভিত্তিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবী খণ্ডন করেন। শেষোক্ত বইটি ১৯৮২ সালে ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কেল পুরস্কার (জাতীয় গ্রন্থ সমালোচক চক্র পুরস্কার) জেতে। তার জীবনের সেরা রচনাকর্মটি হল ২০০০ সালে প্রকাশিত স্ট্রাকচার অফ এভোলিউশনারি থিওরি, যা তার সারা জীবনের গবেষণাকর্মের সারমর্মভিত্তিক ১৪৩৩ পৃষ্ঠার একটি মহাগ্রন্থ।
গুল্ড সাধারণ পাঠকদের জন্য ন্যাচারাল হিস্টরি সাময়িকীতে প্রায় তিনশত প্রবন্ধ লেখেন।[6] এই রচনাগুলির একাধিক সঙ্কলন বই আকারে প্রকাশিত হয়। যেমন এভার সিন্স ডারউইন (১৯৭৭), দ্য প্যান্ডাস থাম (১৯৮০), হেনস টিথ অ্যান্ড হর্সেস টোজ (১৯৮৩), আই হ্যাভ ল্যান্ডেড: দ্য এন্ড অফ আ বিগিনিং ইন ন্যাচারাল হিস্টরি (২০০২)। প্যান্ডাস থাম বইটির জন্য তিনি ১৯৮১ সালে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড বা জাতীয় গ্রন্থ পুরস্কার লাভ করেন।
গুল্ড ১৯৮১ সালে ম্যাকার্থার ফেলোশিপ লাভ করেন। ১৯৮৩ সালে তিনি আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর (মার্কিন কলা ও বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি) সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর (মার্কিন বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি) সদস্য হন। এছাড়া তিনি প্যালিয়ন্টলজিকাল সোসাইটি (জীবাশ্মবৈজ্ঞানিক সমিতি) (১৯৮৫-৮৬), বিবর্তন গবেষণা সমিতি (১৯৯০-৯১), এবং আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্স (১৯৯৯-২০০০)-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালের এপ্রিল মাসে মার্কিন কংগ্রেস গ্রন্থাগার তাকে "জীবন্ত কিংবদন্তি" (Living Legend লিভিং লেজেন্ড্) উপাধিতে ভূষিত করে।[7]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.