সূচিবেধী চিকিৎসা (আকুপাংচার)
From Wikipedia, the free encyclopedia
সূচিবেধী চিকিৎসা বা আকুপাংচার (ইংরেজি Acupuncture অ্যাকিউপাংকচার) হল শারীরিক ব্যথা ও রোগ নিরাময় করার জন্য ব্যবহৃত এক ধরনের প্রাচীন চৈনিক চিকিৎসাপদ্ধতি।[1] শরীরের বহুসংখ্যক নির্দিষ্ট জায়গায় সরু লম্বা সুঁই ফুটিয়ে (সূচি বিদ্ধকরণ তথা সূচিবেধের মাধ্যমে) এই চিকিৎসাটি প্রয়োগ করা হয়।[2] বহুপূর্বে চীনা চিকিৎসাবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এই সূচিবেধী চিকিৎসা বা আকুপাঙ্কচার। প্রথমে একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে তা আবিষ্কৃত হলেও পরে তা বিজ্ঞানের স্বীকৃতি পায়নি, কিন্তু বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমত আছে , এই আকুপাংচার নির্ভর কিছু সায়ন্টিফিক তথ্য আছে । আকুপাংচার এর লক্ষ্য হচ্ছে কৌশল। ক্লিনিকের নিয়মিতকরণ আর তার মৌলিক তত্ত্ব রেকর্ড করা।
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূচিবেধী চিকিৎসা বা আকুপাঙ্কচারকে স্বীকৃতি প্রদান করে। যে সব সমস্যায় সূচিবেধী চিকিৎসা সফল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে, সেগুলির একটি তালিকাও সংস্থাটি করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সূচিবেধী চিকিৎসার সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। প্রাচীন বই-পুস্তকে সূচিবেধী চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ছিল হাড় নির্মিত। চার থেকে আট হাজার বছর আগে এ ধরনের যন্ত্রপাতি দেখা গেছে। এটি ছিল গোত্র সমাজের শেষ ভাগের সময়ের পর্ব। প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের সময় হাড়ের সূঁচ পাওয়া গিয়েছিল। বসন্ত ও শরৎ যুগে (খ্রীঃ পূর্বঃ ৭৭০–৪৭৬) চিকিৎসাবিদ্যা মায়া বা জাদু তথা ঝাড়-ফুঁক থেকে অন্যদিকে মোড় নেয়, এবং তখন কিছু চিকিৎসকেরও আবির্ভাব ঘটে। দুইন ছিউ ঝুও শি চুয়ান নামক গ্রন্থে ডাঃ ই হোয়ান সূচিবেধী চিকিৎসা (আকুপাংচার) ও মক্সিবাশ্চনের কথা উল্লেখ করেন, যা নৃপতি চিংয়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
যুদ্ধমান আর পশ্চিম হান যুগে (খ্রীঃ পূঃ ৪৭৬—খ্রীষ্টীয় ২৫), লোহা গলানোর প্রযুক্তি আবিস্কারের কল্যাণে অধিকতর সংখ্যার ধাতব সূঁচ তৈরি হয়। হাড়ের সূঁচ পৌঁছুতে পারতোনা শরীরের এমন জায়গায় ধাতব সূঁচ ফুটিয়ে আকুপাংচার চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রয়োগ আরও উন্নত হয়। তারপর পূর্ব হান আর ত্রি-রাজ্য যুগে বহু আকুপাঙ্কচার বিশারদের অভ্যূদয় ঘটে। হোয়াং পু মি’র লেখা জেন জিও চিয়া ইচিং গ্রন্থেই প্রথম নিয়মতান্ত্রিকভাবে সূচিবেধী চিকিৎসা বা আকুপাংচারের বিষয়াদি আলোচিত হয়। আরও বেশি সংখ্যার আকুপাংচার বিষয়ক বই প্রকাশিত হয় চীন এবং দক্ষিণ ও উত্তর যুগে (খ্রীষ্টীয় ২৫৬–৫৮৯)। তখন কোরিয়া ও জাপানে আকুপাংচার পরিচিতি লাভ করে।
সুই আর থাং যুগে (খ্রীষ্টীয় ৫৮১–৯০৭) আকুপাঙ্কচার একটি বিশেষায়িত বিষয়ে পরিণত হয়। ষোড়শ শতাব্দিতে আকুপাংচার ইউরোপে প্রবেশ করে, তবে ছিং রাজার আমলে তার যথাযোগ্য মূল্যায়ন হয়নি বলে দুর্দিনে পতিত হয়।
১৯৪৯ সালের পর থেকে অদ্যবধি সূচিবেধী চিকিৎসা বা আকুপাংচারের প্রভূত উন্নতি হচ্ছে। আকুপাঙ্কচার গবেষণায় অনেক মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেছে। বিশেষ করে তার নিয়মিত কর্মকান্ডে, ব্যথার উপশমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নয়নে এবং মানুষের শরীরের নল-নালীতে , আকু পয়েন্টে আর অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। তবে আকুপাংচার পদ্ধতিটি সর্ম্পকে বড় বড় চিকিৎসাবিদরা ভিন্নমত দিয়েছেন। এটি আসলেই কোন কাজ করে কিনা, এ সর্ম্পকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। ড. চ্যান বলছেন, ‘আকুপাঙ্কচার পদ্ধতি সত্যিই কাজে আসে- এমন কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু তাই বলে এগুলো একেবারে আশাহতও করে না। এসবের সুবিধা হচ্ছে, এ পদ্ধতির সঙ্গে উপদেশনার যোগ থাকলে তা খুব কার্যকর হয়ে উঠতে পারে। আর অসুবিধা হচ্ছে, এ পদ্ধতির উপকারিতা এখনও পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি। তা ছাড়া এটি খুব ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে।