Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সিলেটের অর্থনীতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি। প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্যের কারণে এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের কৃষি রাজধানী হিসেবে পরিচিত। বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্য সিলেটকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবেও দেখা হয়। আয়তন এবং উৎপাদন উভয়ের ভিত্তিতে, এই অঞ্চলটিতে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ চায়ের বাগান অবস্থিত। যাইহোক, এই অঞ্চল উচ্চবিলাসি হোটেল এবং রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ের প্রসার এবং বিনিয়গের জন্য বেশি পরিচিত।সিলেটের নামিক মাত্রায় গ্রোস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট ছিল $৩৬.৬০ বিলিয়ন ডলার এবং পাওয়ার প্যারীটি ক্রয়ে $৫০ বিলিয়ন ডলার, যা নেপাল এবং আফগানিস্তান এর সমান।[3]বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় ২৩% এ জেলা অবদান রাখছে।[4] এছাড়া পাহাড়ে ও প্রান্তরে বেড়ে ওঠা কৃষি ব্যবস্থাপনা যেমন; চা, ধান, মাছ, কমলা, লেবু, আনারস, বাশঁ, আম, ইত্যাদি এই অঞ্চলের মানুষের অনন্য অবলম্বন।
পরিসংখ্যান | |
---|---|
জিডিপি | $৩০.৬০ বিলিয়ন (Nominal) $৫০.৬ বিলিয়ন(PPP) (২০২০)[1] |
মাথাপিছু জিডিপি | $৫,০১০(২০১৪) |
দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থিত জনসংখ্যা | 21%[2] |
বেকারত্ব | ৭.৮০%(২০১০) |
সরকারি অর্থসংস্থান | |
ব্যয় | $২.৩ বিলিয়ন (মোট) |
সিলেট অঞ্চল বাংলাদেশের একটি সবথেকে সমৃদ্ধ অঞ্চল। এখানে প্রচুর গ্যাসের মজুত রয়েছে এবং বাংলাদেশের একমাত্র তেল ক্ষেত্র সিলেট অঞ্চলে অবস্থিত।
সিলেটে প্রচুর পরিমাণে আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত রয়েছে। সিলেট অঞ্চলে মোট আটটি গ্যাসক্ষেত্র অবস্থিত। এই অঞ্চলে মজুত গ্যাসের মোট পরিমাণ প্রায় ১৪ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট। জালালাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড এর মতে, এই কোম্পানির বার্ষিক রাজস্ব আয় ৫৬৬ কোটি।
সিলেটের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে একটা বড় অংশ হচ্ছে রেমিট্যান্স। বিভিন্ন গবেষণা অনুসারে, সিলেটের প্রতি ৩০ জনের এক জন প্রবাসী, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে। ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরের রেমিট্যান্স ছিল প্রায় $১০ বিলিয়ন ডলার।
সিলেট বাংলাদেশের একটি সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। এই অঞ্চল পর্যটকদের প্রাকৃতিক এবং বাণিজ্যিক বিভিন্ন ভাবে আকৃষ্ট করে। এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের সবথেকে বিলাসবহুল কতিপয় হোটেল, রিসোর্ট এবং শপিং মলের বাসভূমি।
বাংলাদেশের মৎস সম্পদের একটা বড় অংশ রয়েছে হাওরাঞ্চলে, তন্মধ্যে হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সিলেটের অসংখ্য হাওর এ অঞ্চলের মাছের চাহিদা পূরণ করে। নদী ছাড়া 'জলাশয় হিসেবে' সিলেট বিভাগে প্রায় ৪৬টি হাওর রয়েছে। সিলেটের হাওর গুলোতে হেমন্ত কালে অনেকাংশে জল জমাট থাকে। জল জমাট অংশ গুলো বিল হিসেবে খ্যাত এবং ঐ বিল হতে রুই, কাতলা, বোয়াল, ঘাগট ইত্যাদি জাতীয় মাছ পাওয়া যায়। হাওর গুলোর মধ্যে প্রসিদ্ধ; হাকালুকি হাওর, জাওয়া হাওর, টাঙ্গুয়া হাওর, শণির হাওর, টগার হাওর, ডেকার হাওর, ঘুঙ্গি জুরির হাওর, মইয়ার হাওর, শউলার হাওর, বানাইয়ার হাওর, দেখার হাওর, জিলকার হাওর ইত্যাদি[5]
হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর।[6] এটি এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি।[7] এর আয়তন ১৮,১১৫ হেক্টর, তন্মধ্যে শুধুমাত্র বিলের আয়তন ৪,৪০০ হেক্টর, যেখান থেকে এ অঞ্চলের মানুষের মাছের চাহিদা অনেকাংশে মেটানো হয়।
টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ২০০ প্রজাতির মাছ রয়েছে।[8] ১৯৯৯-২০০০ অর্থ বছরে, বাংলাদেশ সরকার এই হাওরের মাছ থেকে ৭,০৭৩,১৮৩ টাকার রাজস্ব মুনাফা অর্জন করে। এ হাওরের বিখ্যাত মাছের মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করা যায় মহাশোলের কথা। এছাড়াও ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪ প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটিসহ নানাবিধ প্রাণীর বাস, এই হাওরের জীববৈচিত্র্যকে করেছে ভরপুর।[8]
সিলেট ঐতিহ্যগতভাবে একটি চা উৎপাদনকারী এলাকা। বিস্তীর্ণ সুরমা উপত্যকা সারি সারি চা বাগান এবং ক্রান্তীয় বনে ভরপুর। পাহাড়ের পাদদেশে সারি সারি চা বাগান দেখতে পাওয়া যায় বলে শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানী বলা হয়। এজন্য বাংলাদেশ চা রিসার্চ ইন্সটিটিউট (BTRI) এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়।[9][10][11]
বর্তমানে, বাংলাদেশে ১৭২ টি বাণিজ্যিক চা বাগানের মধ্যে,[12][13] সিলেটে ১৫০টির বেশি চা বাগান রয়েছে। আয়তন এবং উৎপাদন উভয়ের ভিত্তিতে, এই অঞ্চলটিতে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ তিনটি চা বাগান অবস্থিত। এখানে ৩০০,০০০ এরো অধিক কর্মী কাজ করে, যার ৭৫% হচ্ছে নারী। এই শিল্প বৈশ্বিক চা উৎপাদনের ৩% যোগান দেয়, এবং ৪ মিলিয়নের অধিক লোকের কর্মসংস্থান যোগায়।[14]
পাটের পরেই চা বাংলাদেশের দ্বিতীয় রপ্তানিকারক অর্থনৈতিক ফসল। এই শিল্প দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের ১%।[15] সিলেট বিভাগের চারটির জেলার মধ্যে- মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সিলেট এই তিনটিই চা উৎপাদনকারী জেলা।[16]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.