Loading AI tools
মহারাষ্ট্রের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সাতারা জেলা পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা। জেলাটির আয়তন ১০,৪৮০ বর্গকিলোমিটার এবং ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জেলাটির জনসংখ্যা ৩,০০৩,৭৪১ জন[1][2]। জনসংখ্যার মধ্যে ১৪.১৭% শহরে বসবাস করেন।সাতারা শহর জেলাটির সদর শহর; এছাড়া জেলাটির অন্যান্য শহরগুলির মধ্যে রয়েছে ওয়াই, করাদ, কোরেগাঁও, দহিবাড়ি, কোয়নানগর, রহিমতপুর, ফল্টন, মহাবালেশ্বর, ভাদুজ এবং পাঁচগনি। এই জেলা পুণে, সাঙ্গলি, সোলাপুর এবং কোলাপুরের সাথে পুনে প্রশাসনিক বিভাগের অধীনে আসে।
সাতারা জেলা | |
---|---|
জেলা | |
দেশ | India |
রাজ্য | মহারাষ্ট্র |
প্রশাসনিক বিভাগ | পুণে বিভাগ |
সদর শহর | সাতারা |
আয়তন | |
• মোট | ১০,৪৮৪ বর্গকিমি (৪,০৪৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩০,০৩,৭৪১ |
• জনঘনত্ব | ২০৯/বর্গকিমি (৫৪০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | মারাঠি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় স্থানীয় সময় (ইউটিসি+5:30) |
তালুক / সাবডিভিশন | 1. সাতারা, 2. করাদ, 3. ওয়াই, 4. মহাবালেশ্বর, 5. ফল্টন, 6. মান, 7. খাটাও, 8. কোরেগাঁও, 9. পাটন, 10. জাওলি, 11. খান্ডালা |
লোকসভা কেন্দ্র | ১. সাতারা, ২. মাধা (সোলাপুর জেলার সাথে একত্রে) |
জাতীয় সড়ক | জাতীয় সড়ক ৪ (ভারত) |
ওয়েবসাইট | http://satara.nic.in/ |
সাতারা জেলা উত্তরে পুণে জেলা, উত্তর-পশ্চিমে রায়গড় জেলা, পূর্বে সোলাপুর জেলা, দক্ষিণে সাঙ্গলি জেলা এবং পশ্চিমে রত্নগিরি জেলা দ্বারা সীমাবদ্ধ[3]। সহ্যাদ্রি পর্বতমালা বা পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মূল পরিসরটি জেলার পশ্চিম প্রান্ত বরাবর উত্তর ও দক্ষিণে দন্ডায়মান এবং এই পর্বতমালাটি সাতারা জেলাকে রত্নগিরি জেলা থেকে পৃথক করেছে। মহাদেও পর্বতাংশটি মহাবালেশ্বরের প্রায় ১০ মিটার উত্তরে শুরু হয় এবং পুরো জেলা জুড়ে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বে প্রসারিত।মহাদেও পাহাড়গুলি দুর্গের মতো কালো পাথরের তৈরি একটি সাহসী রেঞ্জ।সাতারা জেলা দুটি প্রধান নদী অববাহিকার অংশ- প্রথমটি কৃষ্ণা নদীর প্রধান উপনদী ভীমা নদীহির অববাহিকা যা মহাদেও পাহাড়ের উত্তরে, জেলার উত্তর ও উত্তর-পূর্বে অবস্থিত; এবং দ্বিতীয়টি কৃষ্ণা এবং এর বাকি শাখানদী ও উপনদীগুলির অববাহিকা, যা জেলার বাকি অংশে বিস্তৃত।পাহাড়ি বনগুলিতে আসবাব বানানোর কাঠ এবং আগুন জ্বালানোর শুকনো কাঠের প্রচুর সমারোহ রয়েছে।পুরো সাতারা জেলা ডেকান ট্র্যাপস অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত; পাহাড়গুলি লাভার স্তর দ্বারা ছেদকৃত ট্র্যাপ এবং তার ওপর ল্যাটেরাইটের প্রলেপ দ্বারা গঠিত এবং সমভূমি অঞ্চলে বিভিন্ন রকম মৃত্তিকার মধ্যে সবথেকে সাধারণ হল চুন এবং কার্বনেটযুক্ত কালো দোঁয়াশ কাদামাটি।এই মাটিতে,উপযুক্ত সেচ ব্যবশ্তা থাকলে, ভারী ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম। সাতারা জেলাতে কৃষ্ণার খাল সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেচ কাজ রয়েছে।জেলার পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি অঞ্চলে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৫ মিটার ছাড়িয়ে যায়; তবে পূর্ব দিকে বৃষ্টিপাত অপ্রতুল,সাতারা শহরে ১ মিটার থেকে আরও পূর্বদিকে ৩০ সেন্টিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত হয়। জেলাটি উত্তর থেকে দক্ষিণে একটি রেলপথ দ্বারা বিভক্ত, যা সাতারা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্ব দিক দিয়ে যায়[4]। ওয়াইয়ের নিকটবর্তী একটি বিখ্যাত মন্দির হল মন্ধ্রাদেবী কালুবাই মন্দির।ওয়াই থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৬৫০ ফুট উঁচুতে পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত এই মন্দিরটি থেকে মনোরম পুরন্দর দুর্গটি দেখা যায়। ভক্তরা মন্দিরের চারপাশে একটি স্থাপনাকে অলৌকিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত বা জাগ্রত বলে মনে করেন।স্থানীয় লোকগাথা মতে মন্দিরটি ৪০০ বছরেরও বেশি পুরানো এবং ছত্রপতি শিবাজীর মারাঠা শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল। তবে মন্দিরটি নির্মানের বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া যায় না।
২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্ধের ঐতিহাসিক শিলালিপি অনুসারে মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার যে প্রাচীনতম জনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়, তা হল করাদ (কর্হকদ রূপে উল্লেখ করা হয়েছে) । এটাও বিশ্বাস করা হয় যে পাণ্ডবরা নির্বাসনের ১৩ তম বছরে ওয়াইতে কাটিয়েছিলেন, যা তদানীন্তন সময়ে 'বিরাটনাগরী' নামে পরিচিত ছিল। সাতারা জেলায় রয়েছে রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্যের প্রাচীনতম ইতিহাস। বিশ্বাস করা হয় যে প্রাচীনতম রাষ্ট্রকূটরা কৃষ্ণা নদীর অববাহিকা কুন্তলা প্রদেশ থেকে এসেছিলেন।মানঙ্ক ৩৭৫ থেকে ৩৫০ খ্রিষ্টাব্দ অবধি শাসন করেছিলেন এবং তাঁর রাজধানী ছিল "মনপুর" (বর্তমানে সাতারা জেলার মান)। প্রথম মহেন্দ্রাদিত্য কুমারগুপ্ত নামে পরিচিত দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সাম্রাজ্য,দাক্ষিণাত্যের সাতারা জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল যখন তিনি ৪৫১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৪৫৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজত্ব করেছিলেন। মৌর্য সাম্রাজ্যের পরে, প্রায় দুই শতাব্দী, ৫৫০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দ অবধি এই অঞ্চল সাতবাহন সাম্রাজ্যের অধীনস্থ ছিল। ১২৮৬ সালে দাক্ষিণাত্যে প্রথম মুসলিম আক্রমণ হয়েছিল। ১৬৩৬ দাক্ষিণাত্যের আহমেদনগর নিজামশাহী রাজবংশের অবসান ঘটে।১৬৬৩ সালে শিবাজী পারলি জয় করেন এবং সাতারা দুর্গ করায়ত্ব করেন। শিবাজীর মৃত্যুর পরে ঔরঙ্গজেব সাতারা দুর্গ জয় করেন,যা পরবর্তীতে ১৭০৬ সালে পরশুরাম প্রতিনিধি দ্বারা অধিগৃহীত হয়। শিবাজীর প্রত্যক্ষ বংশধররা সাতারাতে বসবাস চালিয়ে যান এবং ১৭০৮ সালে সাতারা দুর্গের অভ্যন্তরেই মারাঠা সাম্রাজ্যের অধিপতি রূপে শিবাজীর পৌত্র শাহুজীর রাজ্যাভিষেক ঘটে। ১৮১৮ সালে তৃতীয় অ্যাংলো-মারাঠা যুদ্ধে তাদের বিজয়ের পরে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য মারাঠা সাম্রাজ্যের বেশিরভাগ অংশকেই বম্বে প্রেসিডেন্সি-তে সংযুক্ত করে, তবে উপাধি রাজারূপে প্রতাপ সিংহকে সাতারার শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয়। রাজনৈতিক চক্রান্তের ফলে ১৮৩৯ সালে প্রতাপ সিংকে পদচ্যুত করা হয় এবং তাঁর ভাই রাজা শাহাজিকে সিংহাসনে বসানো হয়। ১৮৮৪ সালে এই রাজপুত্র কোনও পুরুষ উত্তরাধিকারী ব্যতীত মারা গেলে, ব্রিটিশ সরকার সাতারা অধিগ্রহণ করে এবং বোম্বে প্রেসিডেন্সিতে জুড়ে নেয়।
সাতারা জেলা চারটি মহকুমা নিয়ে গঠিত- সাতারা, ওয়াই, করাদ ও ফল্টন।জেলাটি মোট এগারোটি তালুকা বা সাবডিভিশনে বিভক্ত (তাহসিল)। এগুলি হ'ল সাতারা, করাদ, ওয়াই, মহাবালেশ্বর, ফল্টন, মান, খাটাও, কোরেগাঁও, পাটান, জওলি এবং খান্ডালা। এই জেলায় মোট আটটি বিধানসভা কেন্দ্র ও দুটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে। করাদ উত্তর, করাদ দক্ষিণ, পাটান, কোরেগাঁও, ওয়াই এবং সাতারা সাতারা লোকসভা কেন্দ্র এবং ফল্টন ও মান মাধা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, সাতারা জেলার লোকসংখ্যা ৩,০০৩,৭৪১ জন,[5] যা প্রায় আলবেনিয়া[6] রাষ্ট্রের সমান বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি.[7] রাজ্যের সমান। এজনসংখ্যার বিচারে এটি ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে ১২২তম স্থান অধিকার করে। জেলাটির জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটার ২৮৭ জন এবং জেলাটির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০০১ থেকে ২০১১-য়ের দশকে ছিল ৬.৯৩%। জেলার লিঙ্গানুপাত হল প্রতি ১০০০ জন পুরুষে ৯৮৮ জন মহিলা এবং সাক্ষরতার হার ৮২.৮৭%। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, জেলার ৯৩.০৫% লোকের প্রথম ভাষা মারাঠি, ৪.১০% জনগণের প্রথম ভাষা হিন্দি, ০.৯০% জনগণের প্রথম ভাষা উর্দু, ০.৬৭% জনগণএর প্রথম ভাষা কন্নড এবং ০.৫২% জনগণের প্রথম ভাষা তেলুগু [8]।
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে হিন্দু ধর্ম হল এই জেলার প্রধান ধর্ম; এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে ইসলাম ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম। জেলার জনসংখ্যার ৮৯,৬% জনগণ হিন্দু ধর্মের অনুসারী, ৪.৯৯% জনগণ ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং ৪.৭০% জনগণ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ৮,৪৯,৬৭২ | — |
১৯১১ | ৮,৩৫,৩৩৭ | −১.৭% |
১৯২১ | ৭,৮৬,৪৩৬ | −৫.৯% |
১৯৩১ | ৮,৯৫,০১৪ | +১৩.৮% |
১৯৪১ | ১০,১৩,২১২ | +১৩.২% |
১৯৫১ | ১১,৭৭,০১৬ | +১৬.২% |
১৯৬১ | ১৪,৩০,১০৫ | +২১.৫% |
১৯৭১ | ১৭,২৭,৩৭৬ | +২০.৮% |
১৯৮১ | ২০,৩৮,৬৭৭ | +১৮% |
১৯৯১ | ২৪,৫১,৩৭২ | +২০.২% |
২০০১ | ২৮,০৮,৯৯৪ | +১৪.৬% |
২০১১ | ৩০,০৩,৭৪১ | +৬.৯% |
সাতারা সৈনিক স্কুলটি অন্যতম প্রাচীন আবাসিক স্কুল যা সামরিক ক্যারিয়ারের জন্য ছেলেদের প্রস্তুত করে। ছেলেরা এনডিএ (ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি) ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য এবং আর্মি নেভি এবং এয়ারফোর্সের প্রযুক্তিগত প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হয় এখানে। প্রাক্তন বিমান বাহিনী প্রধান মার্শাল প্রদীপ বসন্ত নায়েক সহ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেক কর্মকর্তার মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র। এটি ভারতে প্রতিষ্ঠিত প্রথম সৈনিক স্কুল এবং এটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে রয়েছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.