সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাস
ইতিহাসের বিভিন্ন দিক / From Wikipedia, the free encyclopedia
সংযুক্ত আরব আমিরাত আরব উপদ্বীপে পারস্য উপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে এবং ওমান উপসাগরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত একটি দেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭টি আমিরাত দ্বারা গঠিত এবং এটি একটি যুক্তরাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭১ সালের ২রা ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। সাতটি আমিরাতের মধ্যে ছ’টি (আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, উম্মুল কুয়াইন এবং ফুজিরা) ঐ দিন সংযুক্ত হয়। সপ্তমটি, রাস-আল-খাইমা, ১৯৭২ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে যোগদান করে। ১৯শ শতকে ব্রিটিশদের স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি অনুসারে সাতটি রাষ্ট্র পূর্বে চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্র নামে পরিচিত ছিল।
আমিরাতে প্রাপ্ত হস্তনির্মিত বস্তু থেকে এই অঞ্চলের মনুষ্য বসতিস্থাপনের ও মেসোপটেমিয়ার মত সভ্যতার সঙ্গে স্থানীয় বাণিজ্য চলাচলের সুপ্রাচীন ইতিহাস পাওয়া যায়। এই অঞ্চলের উপকূলে ও অভ্যন্তরস্থ স্থানে কিছু সংখ্যক উপজাতি প্রথমে বসতি স্থাপন করে এবং তাদের খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে ইসলামীকরণ করা হয়।
আলবুকার্কের নেতৃত্বে পর্তুগিজ আক্রমণের সময় এই অঞ্চলের উপকূলবিভাগে বেশ কিছু রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল। চুক্তিবদ্ধ উপকূলের অধিবাসী এবং ব্রিটিশদের মধ্যে সংঘাতের ফলস্বরূপ ব্রিটিশরা একবার ১৮০৯ সালে এবং আরো একবার ১৮১৯ সালে রাস-আল-খাইমা লুন্ঠন করে; এর ফলে ১৮২০ সালে চুক্তিবদ্ধ শাসকদের সঙ্গে ব্রিটিশদের প্রথম কিছু চুক্তি স্থাপিত হয়। চিরস্থায়ী উপকূলীয় শান্তির চুক্তিসহ, আরো বেশ কিছু চুক্তি ১৮৫৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়, যার ফলে ১৯৩০-এর দশক পর্যন্ত উপকূল অঞ্চল বরাবর শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় ছিল; এরপর মুক্তোর ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই উপকূল অঞ্চলের অধিবাসীদের অত্যন্ত দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়।
১৯৬৮ সালে ব্রিটিশরা একটি সিদ্ধান্তে আসে যে তারা চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রগুলোর ওপর নিজেদের কার্যকলাপ বন্ধ করবে এবং একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠন করবে। এই সিদ্ধান্তটি চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রের সবথেকে প্রভাবশালী দুই নেতা – আবুধাবির শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান এবং দুবাইয়ের শেখ রশিদ বিন সৈয়দ আল মাকতুম সমর্থন করে। এরা দুজন অন্যান্য চুক্তিবদ্ধ শাসকদের এই যুক্তরাষ্ট্রে যোগদান করবার আহ্বান জানায়। একটা সময় মনে হয়েছিল, বাহরাইন এবং কাতার এই ইউনিয়নে যোগদান করবে, কিন্তু তারা স্বাধীন থাকবারই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল।
বর্তমান সময়ে আমিরাত হল একটি আধুনিক তেল রপ্তানীকারক রাষ্ট্র, যার অর্থনীতি খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ; বিশেষত দুবাই হল পর্যটন, খুচরা বিক্রয় এবং আর্থিক যোগানের একটি বিশ্বকেন্দ্র[1] ও এখানে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ইমারত এবং সর্ববৃহৎ মনুষ্য-নির্মিত সমুদ্রবন্দর রয়েছে।