ষড়দর্শন
ভারতীয় ধর্মে দর্শনের ছয়টি ভাগ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ষড়দর্শন হল হিন্দু শাস্ত্রমতে আস্তিক দর্শনগুলোর ছয়টি ভাগ। এখানে আস্তিক কথার অর্থ হল এই দর্শনগুলো প্রথমেই বেদকে প্রামাণ্যগ্রন্থ হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে তারপর তার নিজস্ব প্রতিপাদ্য বিষয়গুলোকে বিচার করে। ভারতীয় আস্তিকদর্শনের এই ছয়টি ভাগ হল- ন্যায়, বৈশেষিক, সাংখ্য, যোগ, পূর্বমীমাংসা বা মীমাংসা এবং উত্তরমীমাংসা বা বেদান্ত।[1] বৈশেষিককে কখনও কখনও গুণাদ বলেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।[2]
এই দর্শনগুলো এই অর্থে 'আস্তিক' যে এগুলো বেদে বিশ্বাস স্থাপন করে ও বেদকেই একমাত্র প্রামাণ্য বলে স্বীকার করে। এখানে আস্তিকতা অর্থে ঈশ্বরে বিশ্বাসের সাথে কোনও সম্পর্ক নেই।[3] বস্তুত আস্তিক বলে পরিচিত এই ছ'টি দর্শনের অন্যতম সাংখ্য ও মীমাংসা জগতের স্রষ্টা হিসেবে ঈশ্বরের অস্তিত্বেই বিশ্বাস করে না; বৈশেষিক দর্শনেও সরাসরি ঈশ্বর সম্পর্কিত কোনও কথা বলা নেই। আবার ন্যায় দর্শন যদিও ঈশ্বর ও আত্মার অস্তিত্বে বিশ্বাসী, এই দর্শনের মতে জগতেরও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। অর্থাৎ, বেদান্ত দর্শনে যে ঈশ্বর (সগুণ ব্রহ্ম) ও ব্রহ্মের (নির্গুণ) কথা বলা হয়েছে এবং ব্রহ্মই সত্য, জগত মিথ্যা বলে মতপ্রকাশ করা হয়েছে - আস্তিক বলে পরিচিত সমস্ত দর্শনগুলোই সে প্রশ্নে মোটেই একমত নয়।[1]
নাস্তিক দর্শনগুলোর সাথে এদের মূল পার্থক্য হল এই যে, নাস্তিক দর্শনগুলো জড়বাদী, আত্মা ও ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না এবং বেদকেও তারা কোনও প্রামাণ্যগ্রন্থ বলে স্বীকার করে না। চার্বাক, বৌদ্ধ ও জৈন দর্শন হল প্রাচীন ভারতে বিকশিত নাস্তিক দর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম।