Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লেওপল্ড রুজিচকা (১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৮৭-২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬)[4] একজন ক্রোয়েশীয়-সুইস বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি ১৯৩৯ সালে যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[5] কর্মজীবনের অধিকাংশই তিনি সুইজারল্যান্ডে অতিবাহিত করেন। তিনি বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও আইন বিষয়ে আটটি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন। এছাড়াও তিনি সাতটি পুরস্কার ও পদক এবং চব্বিশটি রাসায়নিক, প্রাণরাসায়নিক ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সমিতির সদস্যপদ অর্জন করেছিলেন।
লেওপল্ড রুজিচকা | |
---|---|
উচ্চারণ |
|
জন্ম | লাভোস্লাভ জেপান রুজিচকা ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৮৭ ভুকোভার, ক্রোয়েশিয়া-স্লাভোনীয় রাজ্য, অস্ট্রিয়া -হাঙ্গেরি (বর্তমান ক্রোয়েশিয়া) |
মৃত্যু | ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ ৮৯) ম্যামার্ন, সুইজারল্যান্ড | (বয়স
নাগরিকত্ব | হাঙ্গেরীয়-ক্রোয়েশীয় (১৮৮৭–১৯১৭) সুইজারল্যান্ড (১৯১৭-১৯৭৬) |
মাতৃশিক্ষায়তন | কার্লসরুহে বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | তারপিন |
পুরস্কার | মার্সেল বেনোইস্ট পুরস্কার (১৯৩৮) রসায়নে নোবেল পুরস্কার (১৯৩৯) ফ্যারাডে লেকচারশিপ পুরস্কার (১৯৫৮) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | প্রাণরসায়ন |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | সুইস ফেডারেল প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, জুরিখ |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | Über Phenylmethylketen (১৯১১) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | হারম্যান স্টেডিঙ্গার |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | জর্জ বুচি দুইলিও আরিগোনি আরি জঁ হাগেন স্মিথ মোসেস উলফ গোল্ডবার্গ ক্লাউস এইচ. হফম্যান জর্জ রোজারি সিরিল গ্রোব এডগার হেইলব্রনার আলবার্ট এসচেনমোজার |
অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের ক্রোয়েশিয়া-স্লাভোনিয়া রাজ্যের ভুকোভারে রুজিচকা জন্মগ্রহণ করেন। তার কৃষক ও কারিগর পরিবার প্রধানত ক্রোয়াট বংশোদ্ভূত হলেও প্রপিতামহের বংশধারার একটি অংশ চেক এবং একজন প্রপিতামহের পিতা ও প্রপিতামহের মাতা অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।[5]
রুজিচকা ওসিজেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছিলেন। শুরুতে পুরোহিত হতে চাইলেও একসময় তিনি পুরোহিত হওয়ার বাসনা পরিত্যাগ করেন এবং প্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞানলাভের বিষয়ে মনোনিবেশ করেন। রসায়ন তার পছন্দের বিষয় ছিল -তবে এক্ষেত্রে ওসিজেকের নবনির্মিত চিনি পরিশোধনাগারে কাজ করার বাসনা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রাত্যহিক কষ্টকর জীবনের বেদনা সইতে না পেরে রুজিচকা জার্মানির কার্লসরুহের উচ্চ প্রযুক্তি বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। পছন্দের বিষয়গুলোতে রুজিচকা বরাবরই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি মনে করতেন, জৈব রসায়ন মানবজাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। জৈব রসায়নের প্রতি রুজিচকার অত্যধিক আগ্রহের ফলে তার শিক্ষক ও খ্যাতনামা ভৌত রসায়নবিদ ফ্রিৎস হেবার(১৯১৮ সালে নোবেল বিজয়ী) তার "সামা কাম লৌডে"(বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সেরা ছাত্রদের প্রদত্ত ডিগ্রি) ডিগ্রির বিরোধিতা করেন। তবে লেওপল্ড আরেকজন কৃতী শিক্ষক ও রসায়নবিদ হারমান স্টেডিঙ্গারের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করেন। ১৯৫৩ সালে হারমান নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত হন। ১৯১০ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে তিনি স্টেডিঙ্গারের সহকারী হিসেবে কাজ করতে জুরিখ চলে যান।
রুজিচকা প্রাকৃতিক যৌগ বিষয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর বাকি জীবন তিনি এতেই অতিবাহিত করেন। ডালমাটিয়ান পতঙ্গ দমনের নিমিত্তে তৈরি পাইরিথ্রিন পাউডারের (Tanacetum cinerariifollium) উপাদানগুলো নিয়ে রুজিচকা বিস্তারিত গবেষণা করেন। সবজিজাতীয় খাদ্যশস্য হতে প্রস্তুতকৃত সুগন্ধি তেল টারপিনল আবিষ্কারেও তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা বিদ্যমান। রুজিচকা ব্যক্তিগত উদ্যোগে গবেষণা শুরু করেন এবং জেনেভায় চুইট ও নায়েফ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হন।
১৯১৬-১৯১৭ সালে তিনি জার্মানির হোলজমিনডেন শহরে অবস্থিত পৃথিবীর প্রাচীনতম সুগন্ধি উৎপাদনকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হারমান অ্যান্ড রেইমারের সহযোগিতা লাভ করেন। তারপিন বিষয়ে অভিজ্ঞতার কারণে তাকে ১৯১৮ সালে সুইস ফেডারেল প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ও ১৯২৩ সালে সাম্মানিক অধ্যাপক পদে নিযুক্ত করা হয়। এখানে তিনি মাস্কোন, সাইক্লোন ও ম্যাক্রোসাইক্লিক কিটোনের ধর্ম উন্মোচন করেন। কস্তুরিমৃগ ও ভাম থেকে এগুলো প্রস্তুত করা হয়।[6]
১৯২১ সালে চুইট ও নায়েফ কোম্পানির হয়ে কাজ শুরু করলেও লেওপল্ড প্রয়োজনীয় আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেননি। অতঃপর তিনি বাসেল শহরে অবস্থিত সিবা কোম্পানির হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯২৭ সালে তিনি নেদারল্যান্ডের উটরেখট বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগের সভাপতি নিযুক্ত হন। নেদারল্যান্ডে তিন বছর কাজ করার পর তিনি সুইজারল্যান্ড ফিরে আসেন।
১৯৩৯ সালে তিনি ও অ্যাডলফ বুটেনান্ট রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৪০ সালে নেদারল্যান্ডের রাজকীয় শিল্প ও বিজ্ঞান সমিতির সভ্য নির্বাচিত হন।
১৯৫৭ সালে লেওপল্ড অবসর গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে নোবেলজয়ী ছাত্র ভ্লাদিমির প্রেলগের হাতে নিজ বিজ্ঞানাগারের দায়িত্ব অর্পণ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি পোলিশ রসায়ন সমিতির সাম্মানিক সদস্য নির্বাচিত হন।[7]
রুজিচকা দুইবার বিয়ে করেন-১৯১২ সালে আনা হাউসমানকে ও ১৯৫১ সালে গারট্রুড হেকলিনকে। তিনি সুইজারল্যান্ডের কনস্ট্যান্স হ্রদের তীরে ম্যামার্ন গ্রামে পরলোকগমন করেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.