লুই দাগের
From Wikipedia, the free encyclopedia
লুই-জাক-মঁদে দাগের (ফরাসি: Louis-Jacques-Mandé Daguerre) বা সংক্ষেপে লুই দাগের ছিলেন একজন ফরাসি শিল্পী, বিজ্ঞানী ও আলোকচিত্রগ্রাহক। তিনি ইতিহাসে সর্বপ্রথম দীর্ঘস্থায়ী আলোকচিত্র উৎপাদনকারী ও বাস্তবে ব্যবহারযোগ্য আলোকচিত্রগ্রহণ প্রক্রিয়াটি উদ্ভাবন ও বাণিজ্যিকীকরণ করেন, যার নাম ছিল "দাগেরেওতিপি" বা দাগেরোচিত্রগ্রহণ প্রক্রিয়া। এ কারণে দাগেরকে আলোকচিত্রগ্রহণের একজন জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। এছাড়া তিনি রঙচিত্র অংকন, ছাপচিত্র, মঞ্চনাটক ও গীতিনাট্য মঞ্চসজ্জায় পারদর্শী ছিলেন।
লুই দাগের | |
---|---|
জন্ম | Louis-Jacques-Mandé Daguerre (১৭৮৭-১১-১৮)১৮ নভেম্বর ১৭৮৭ Cormeilles-en-Parisis, Val-d'Oise, France |
মৃত্যু | ১০ জুলাই ১৮৫১(1851-07-10) (বয়স ৬৩) Bry-sur-Marne, France |
পরিচিতির কারণ | daguerreotype পদ্ধতি আবিস্কারের জন্য বিখ্যাত। |
স্বাক্ষর | |
দাগের আরেক ফরাসি উদ্ভাবক জোযেফ নিসেফর নিয়েপসের সাথে একত্রে একটি ব্যবহারযোগ্য আলোকচিত্রগ্রহণ প্রক্রিয়া আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। নিয়েপস ১৮১৪ সাল থেকেই এ ব্যাপারে কাজ করে আসছিলেন, পরে ১৮২৯ সালে দাগের-ও তাঁর সাথে যুক্ত হন। ১৮২২ সালে নিয়েপস একটি ধনাত্মক প্রতিবিম্ব তৈরি করতে সফল হন, যেটি তৈরির প্রক্রিয়াটির তিনি নাম দেন "এলিওগ্রাফি" (Héliographie) বা "সৌরচিত্রণ"। ১৮৩৩ সালে নিয়েপসের মৃত্যু হয় ও এরপর দাগের তাদের কৌশলগুলি পরিশীলিত করা অব্যাহত রাখেন। এভাবে উৎকর্ষসাধন করে শেষ পর্যন্ত তিনি যে প্রক্রিয়াটিতে উপনীত হন, সেটিতে ক্যামেরা বা চিত্রগ্রাহক যন্ত্রের ভেতরে বসানোর আগে একটি রূপার প্রলেপযুক্ত তামার পাতকে প্রথমে পরিস্কার ও পালিশ করে আয়নার মতো চকচকে করে নিতে হয়। এরপর আয়োডিনের বাষ্প দ্বারা পাতটিকে সুবেদী করা হয়, ফলে সেটি হলদে-গোলাপী বর্ণ ধারণ করে। তারপরে সেটিকে ক্যামেরার ভেতরে স্থাপন করে সেটির উপরে বস্তু থেকে আগত আলোকসম্পাত (এক্সপোজ) করে (আলোকসম্পাতকাল শুরুর দিকে ৩ থেকে ১৫ মিনিট ছিল) ঐ বস্তুর ধনাত্মক প্রতিবিম্বটি ধারণ করা হয়, এবং উত্তপ্ত পারদের বাষ্পের সাহায্যে সেটির বিকাশ সাধন (ডেভেলপ) করা হয় যাতে প্রতিবিম্বটি ফুটে ওঠে। সবশেষে একটি লবণাক্ত (সোডিয়াম থায়োসালফেট বা হাইপো) দ্রবণে নিমজ্জনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করে চিত্রটিকে স্থায়ীরূপ দান করা হয়। দাগের এরপর ১৮৩৯ সালের ৭ই জানুয়ারি তারিখে ফরাসি বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সম্মুখে তাঁর উদ্ভাবনটি পেশ করেন ও তাঁর প্রক্রিয়াটির বিশদ বিবরণ দেন। তিনি তাঁর তোলা একক, অনন্য আলোকচিত্রগুলির নাম দেন দাগেরোচিত্র। এগুলিতে বাস্তব বস্তুর অত্যন্ত বিশদ খুঁটিনাটি ধরা পড়ত। তাঁর এই কাজ আলোকচিত্রগ্রহণকে একটি নির্ভরযোগ্যরূপে বাস্তবায়নযোগ্য কাজে পরিণত করে। তাই দাগেরের কাজকে আলোকচিত্রগ্রহণের ইতিহাসে এক নতুন যুগ সূচনাকারী ঘটনা হিসেবে গণ্য করা হয়।[1]