রক্ষণশীলতাবাদ
From Wikipedia, the free encyclopedia
রক্ষণশীলতা বা রক্ষণশীলতাবাদ হল দ্রুত পরিবর্তনের বিরোধিতা, এবং এটি সমাজে ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে।[1] গ্র্যাজুয়ালিজম বা পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনবাদ এর একটি প্রকরণ।
১৮১৮ সালে ফ্রান্সিস-রেনে দে চেট্যুব্রিয়ান্ড রাজনৈতিক প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম এই পরিভাষাটি ব্যবহার করেন।[2] এটি ছিল বর্বোন পুনুরুদ্ধারকালীন সময়, যখন ফরাসি বিপ্লবের প্রণীত নীতিসমূহ প্রত্যাবর্তনের দাবি করা হয়েছিল।
ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে উক্ত পরিভাষাটি সম্পর্কিত। বিস্তৃত পরিসরের একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে ব্যাখ্যা করার জন্য এই পরিভাষাটি বারংবার ব্যবহৃত হয়েছে। রক্ষণশীল হিসেবে স্পষ্টভাবে বিবেচিত কোন একটিও নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই, কারণ রক্ষণশীলতার সংজ্ঞার্থ এ সম্পর্কিত স্থান ও কালের উপর নির্ভর করে।
প্রধানত আব্রাহামিক ধর্মের ঐতিহ্যবিশিষ্ট দেশগুলোতে রক্ষণশীলতাবাদে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সমর্থনের প্রবণতা দেখা যায়, যেখানে সেগুলো হল প্রধান বা সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম। ইংল্যান্ডে প্রকাশিত এডমান্ড বার্কের রিফ্লেকশন্স অন দ্যা রেভুলেশন ইন ফ্রান্স (ফ্রান্সে বিপ্লবের প্রতিফলন) বইয়ে লেখক অভিমত দেন যে, কোন যত্নবান সরকারের কর্তব্য হল জনগণকে সন্তুষ্ট রাখা এবং আইনানুগভাবে তাদের ব্যবস্থাপনা করা।[3] তার এই দুটি নীতিই পরবর্তীকালে একই সঙ্গে প্রচলিত হয়।
কিছু রক্ষণশীলবিদ প্রচলিত বিষয়গুলোকে যেমন আছে তেমনই রাখতে চায়, অন্যদিকে বাকিরা চায় সেগুলোকে সেই অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে যে অবস্থায় এগুলো পূর্বে ছিল বা এগুলোর উৎপত্তি ঘটেছিল।[4] ইংল্যান্ডে একটি রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছিল যার লক্ষ্য ছিল ধনী দরিদ্রের মাঝে উন্নত সমবায়, গণতন্ত্র, এবং কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সে সময়ে ফ্রান্স এবং ইউরোপের অন্যান্য অংশের রক্ষণশীলপন্থীরাও একে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
অতীতে যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষণশীলপন্থীরা কেন্দ্রীকরণের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন; তারা কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতেন এবং ব্যবসায়ীদেরকে মজুরি ও পণ্যের মূল্যের ব্যপারে আস্থাভাজন বলে মনে করতেন।