Loading AI tools
রাসায়নিক যৌগ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট একটি অজৈব যৌগ যার রাসায়নিক সংকেত MgCO3। এটি বর্ণহীন বা সাদা রঙের কঠিন পদার্থ। ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের বেশ কয়েকটি সোদক এবং মৌলিক রূপের খনিজ রয়েছে।
নামসমূহ | |
---|---|
অন্যান্য নাম | |
শনাক্তকারী | |
| |
ত্রিমাত্রিক মডেল (জেমল) |
|
সিএইচইবিআই | |
সিএইচইএমবিএল | |
কেমস্পাইডার | |
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড | ১০০.০০৮.১০৬ |
ইসি-নম্বর | |
ই নম্বর | E৫০৪(i) (অম্লতা নিয়ন্ত্রক, ...) |
পাবকেম CID |
|
আরটিইসিএস নম্বর |
|
ইউএনআইআই |
|
কম্পটক্স ড্যাশবোর্ড (EPA) |
|
| |
এসএমআইএলইএস
| |
বৈশিষ্ট্য | |
MgCO3 | |
আণবিক ভর | ৮৪.৩১৩৯ গ্রাম/মোল (অনার্দ্র) |
বর্ণ | বর্ণহীন স্ফটিক বা সাদা কঠিন জলগ্রাহী |
গন্ধ | গন্ধহীন |
ঘনত্ব | ২.৯৫৮ গ্রাম/সেমি৩ (অনার্দ্র) ২.৮২৫ গ্রাম/সেমি৩ (ডাইহাইড্রেট) ১.৮৩৭ গ্রাম/সেমি৩ (ট্রাইহাইড্রেট) ১.৭৩ গ্রাম/সেমি৩ (পেন্টাহাইড্রেট) |
গলনাঙ্ক | ৩৫০ °সে (৬৬২ °ফা; ৬২৩ K) ভেঙ্গে যায় (অনার্দ্র) ১৬৫ সে (ট্রাইহাইড্রেট) |
পানিতে দ্রাব্যতা |
অনার্দ্র: ০.০১৩৯ গ্রাম/১০০ মিলি লিটার (২৫ °সে) ০.০০৬৩ গ্রাম/১০০ মিলি লিটার (১০০ °সে)[1] |
Solubility product (Ksp) |
১০−৭.৮[2] |
দ্রাব্যতা | অ্যাসিড ও জলীয় কার্বন ডাই অক্সাইড দ্রবণে দ্রবণীয়। অ্যাসিটোন ও অ্যামোনিয়া দ্রাবকে অদ্রবণীয় |
চৌম্বকক্ষেত্রের প্রতি সংবেদনশীলতা (χ) |
−৩২.৪·১০−6 সেমি৩/মোল |
প্রতিসরাঙ্ক (nD) | ১.৭১৭ (অনার্দ্র) ১.৪৫৮ (ডাইহাইড্রেট) ১.৪১২ (ট্রাইহাইড্রেট) |
গঠন | |
স্ফটিক গঠন | ত্রিকোণীয় |
Space group | R3c, No. 167[3] |
তাপ রসায়নবিদ্যা | |
তাপ ধারকত্ব, C | ৭৫.৬ জুল/মোল·কে[1] |
স্ট্যন্ডার্ড মোলার এন্ট্রোফি এস |
৬৫.৭ J/মোল·কে[1][4] |
গঠনে প্রমান এনথ্যাল্পির পরিবর্তন ΔfH |
−১১১৩ কিলোজুল/মোল[4] |
গিবসের মুক্ত শক্তি (ΔfG˚) |
−১০২৯.৩ কিলোজুল/মোল[1] |
ঔষধসংক্রান্ত | |
ATC code | |
ঝুঁকি প্রবণতা | |
নিরাপত্তা তথ্য শীট | ICSC 0969 |
এনএফপিএ ৭০৪ |
১
০ |
ফ্ল্যাশ পয়েন্ট | অদাহ্য |
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য অনাবৃতকরণ সীমা (NIOSH): | |
PEL (অনুমোদনযোগ্য) |
|
সম্পর্কিত যৌগ | |
অন্যান্য অ্যানায়নসমূহ |
ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট |
অন্যান্য ক্যাটায়নসমূহ |
বেরিলিয়াম কার্বনেট ক্যালসিয়াম কার্বনেট স্ট্রনশিয়াম কার্বনেট বেরিয়াম কার্বনেট রেডিয়াম কার্বনেট |
সম্পর্কিত যৌগ |
আর্টিনাইট হাইড্রোম্যাগনেসাইট ডাইপিনগাইট |
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছাড়া, পদার্থসমূহের সকল তথ্য-উপাত্তসমূহ তাদের প্রমাণ অবস্থা (২৫ °সে (৭৭ °ফা), ১০০ kPa) অনুসারে দেওয়া হয়েছে। | |
যাচাই করুন (এটি কি ?) | |
তথ্যছক তথ্যসূত্র | |
সবচেয়ে সাধারণ ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট হলো ম্যাগনেসাইট নামক অনার্দ্র একটি খনিজ। দুটি, তিনটি এবং পাঁচটি সোদক জলের অণু নিয়ে গঠিত খনিজগুলি যথাক্রমে ব্যারিংটোনাইট (MgCO3·2H2O), নিসেকিউহোনাইট (MgCO3·3H2O), এবং ল্যান্সফোর্ডাইট (MgCO3·5H2O) নামে পরিচিত।[6] কিছু মৌলিক রূপ যেমন আর্টিনাইট (Mg2CO3(OH)2·3H2O), হাইড্রোম্যাগনেসাইট (Mg5(CO3)4(OH)2·4H2O), এবং ডাইপিনগাইট (Mg5(CO3)4(OH)2·5H2O) খনিজ হিসাবেও পাওয়া যায়। এইসব খনিজগুলি দেখতে বর্ণহীন বা সাদা রঙের হয়।
ম্যাগনেসাইট একটি বর্ণহীন বা সাদা ত্রিকোণীয় স্ফটিক পদার্থ। ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের অনার্দ্র লবণ জল, অ্যাসিটোন এবং অ্যামোনিয়া দ্রাবকে অদ্রবণীয়। সব ধরনের ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটই অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে। ম্যাগনেসাইট যখন কেলাসিত হয় তখন এটি ক্যালসাইটের কাঠামো ধারন করে। এক্ষেত্রে ম্যাগনেসাইট স্ফটিকে থাকা ম্যাগনেসিয়ামের সঙ্গে ছয়টি অক্সিজেন পরমাণু বেষ্টিত থাকে।[3]
দ্বিঅণু স্ফটিক জল বিশিষ্ট ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট অর্থাৎ ডাইহাইড্রেটের একটি ট্রাইক্লিনিক অর্থাৎ ত্রিনতঅক্ষীয় কাঠামো রয়েছে। অন্যদিকে ট্রাইহাইড্রেট লবণের মনোক্লিনিক অর্থাৎ একনতঅক্ষীয় কাঠামো থাকে।
সোদক ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের খনিজ হাইড্রোম্যাগনেসাইট হালকা হয়। অন্যদিকে ডাইপিংগাইট খনিজটি ভারী হয়।[7]
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট সাধারণত খনিজ ম্যাগনেসাইট হিসাবে পাওয়া যায়। বিশ্বের শতকরা ৭০ ভাগ ম্যাগনেসাইটই চীন উৎপাদন করে।[8]
পরীক্ষাগারে যে কোনো ম্যাগনেসিয়াম লবণের দ্রবণের সঙ্গে সোডিয়াম বাইকার্বনেটের বিক্রিয়া করে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট প্রস্তুত করা যায়। ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণে সোডিয়াম কার্বনেট যোগ করলে সাদা ক্ষারকীয় কার্বনেট পাওয়া যায়। এই দ্রবণের মিশ্রণকে প্রলম্বিত অবস্থায় রেখে তার মধ্য দিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস পরিচালনা করলে ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট উৎপন্ন হয়। এরপর এই দ্রবণকে গরম করে ফোটালে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট অধঃক্ষিপ্ত হয়। এই মিশ্রণকে ছেঁকে নিলে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের গুঁড়ো পাওয়া যায়:
শিল্পক্ষেত্রে উচ্চ চাপ এবং মাঝারি তাপমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইডের সাথে কার্বন ডাই অক্সাইডের বিক্রিয়া করে উচ্চ বিশুদ্ধতার ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট তৈরি করা হয়। এই বিক্রিয়ায় প্রথমে ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট তৈরি হয়। উৎপন্ন ম্যাগনেসিয়াম বাইকার্বনেট বায়ু নিষ্কাশন যন্ত্রের মাধ্যমে শুকানোর সময় এর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জল বের হয়ে গিয়ে বিশুদ্ধ ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট তৈরি করে:
অন্যান্য ক্ষারীয় ধাতুর কার্বনেটের মতো, ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট লঘু অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জল উৎপন্ন করে:
উচ্চ তাপমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট ভেঙ্গে যায়। এই লবণটি ভেঙ্গে গিয়ে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড এবং কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে। ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড উৎপাদনে এই প্রক্রিয়াটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়াটিকে ক্যালসিনেশন বা ভস্মীকরণ প্রক্রিয়া বলা হয়:
এই প্রক্রিয়াটিতে তাপমাত্রা ৩৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রাখা হয়।[9][10] তবে এক্ষেত্রে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইডে কিছুটা পরিমাণে অধিশোষণ হয় বলে ভস্মীকরণ প্রক্রিয়াটি সাধারণত ৯০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সম্পূর্ণ হয়েছে বলে বিবেচিত হয় না।
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট লবণের সোদক স্ফটিকগুলি ভাঙ্গার সময় বিভিন্ন তাপমাত্রায় জলের অণু হারায়।[11] উদাহরণস্বরূপ, ট্রাইহাইড্রেট ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট MgCO3·3H2O যার রাসায়নিক সংকেত Mg(HCO3)(OH)·2H2O এই ভাবেও লেখা যেতে পারে, জলের অণুর বিযোজন ১৫৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৭৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এই দুই ধাপে ঘটে:[11]
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের প্রাথমিক ব্যবহার হল ভস্মীকরণ করে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড উৎপাদন করা। ম্যাগনেসাইট এবং ডলোমাইট খনিজগুলি তাপসহ ইট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট ঘরের মেঝে ও অগ্নিসহ কাজে, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রে, প্রসাধনের পাউডারে এবং টুথপেস্টেও ব্যবহৃত হয়। এটি পূরক উপাদান হিসাবে অনেক রাসায়নিকে ব্যবহার হয়। প্লাস্টিকের ধোঁয়া দমনকারী হিসাবে, নিওপ্রিন রাবারে এবং খাবারে রঙ ধরে রাখাতে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট কাজে লাগে। ঔষধ হিসাবে ও ছাপাখানার কালিতে এই লবণের চাইিদা আছে।
জলে কম দ্রবণীয়তা এবং জলগ্রাহী বৈশিষ্ট্যের কারণে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট সর্বপ্রথম ১৯১১ সালে খাদ্যলবণে যোগ করা হয় যাতে আর্দ্র আবহাওয়াতেও খাদ্যলবণ ভিজে ভিজে না হয়। মর্টন সল্ট কোম্পানী এর ব্যবহার প্রথম শুরু করে।[12] ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট, প্রায়শই "চক" হিসাবে পরিচিত। রক ক্লাইম্বিং, জিমন্যাস্টিকস, ভারোত্তোলন এবং অন্যান্য খেলাগুলিতে ক্রীড়াবিদরা খেলার সামগ্রী দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার জন্য হাত শুকানোর কাজে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট ব্যবহার করেন।[8]
খাদ্য সংযোজক হিসাবে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট ই ৫০৪ নামে পরিচিত। তবে এর একমাত্র পরিচিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল এটি উচ্চ ঘনত্বে রেচক হিসেবে কাজ করতে পারে।[13]
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট ট্যাক্সিডার্মি বিজ্ঞানে মাথার খুলি সাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে হাইড্রোজেন পারক্সাইডের সাথে ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের গুঁড়ো মিশ্রিয়ে একটি লেই তৈরি করা হয়। সেই লেই মাথার খুলিতে প্রলেপ দিলে এটি চকচকে সাদা দেখায়।
অভিক্ষেপ পর্দায় ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটের সাদা আবরণ দেওয়া হয়।[14]
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট জলে দ্রবীভূত হয় না। এটি অ্যাসিডে দ্রবীভূত হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস মুক্ত করে। তাই উচ্চ বিশুদ্ধতাযুক্ত ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট অ্যান্টাসিড ওষুধে ব্যবহৃত হয়।[15]
ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট বিষাক্ত নয়। এটি দাহ্য পদার্থও নয়। তাই এর থেকে বিপদের ঝুঁকি খুবই কম।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.