Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নাসুহ বিন কারাগোজ বিন আবদুল্লাহ আল-ভিসোকাভি আল-বসনাভি (তুর্কি উচ্চারণ: [matrakˈtʃɯ naˈsuh]; বসনীয়: Matrakčija Nasuh Visočak) (১৪৮০ - ১৫৬৪) ছিলেন ১৬শ শতাব্দীতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের একজন বসনিয়াক বংশোদ্ভূত[1][2][3] কূটনৈতিক, পলিমেথ, গণিতবিদ, শিক্ষক, ইতিহাসবিদ, ভূগোলবিদ, মানচিত্রবিদ, তলোয়ার যোদ্ধা, চিত্রশিল্পী, নাবিক, আবিষ্কারক ও অনুচিত্রশিল্পী। তিনি তার উদ্ভাবিত মাত্রাক নামক খেলার কারণে মাত্রাকচি নাসুহ নামে পরিচিত। এছাড়াও অস্ত্রের উপর পারদর্শিতার জন্য তিনি নাসুল আল-সিলাহি বা তলোয়ারমানব নাসুহ নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি কয়েকজন উসমানীয় সুলতানের অধীনে দায়িত্বপালন করেছেন। তিনি এন্দেরুন মক্তবের শিক্ষক ছিলেন।[4]
মাত্রাকচি নাসুহ বসনিয়ান শহর ভিসোকোতে জন্মগ্রহণ করেন।[5] তিনি দক্ষ তলোয়ার চালনাকারী ও শুটার ছিলেন। তিনি পাঁচটি ভাষায় কথা বলতে পারতেন। তিনি উসমানীয় নৌবাহিনীতে ভর্তি হয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন গণিত ও জ্যামিতি অধ্যয়ন করার পর তিনি জামালুল কুত্তাব ও কামালুল হিসাব গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলি তিনি সুলতান প্রথম সেলিমকে প্রদান করেছিলেন। এছাড়াও তিনি মাজমাওত তাভারিহ ও সুলাইমাননামা গ্রন্থ রচনা করেছেন। এই গ্রন্থগুলিতে ১৫২০ থেকে ১৫৪৩ সালের মধ্যকার ঐতিহাসিক বিবরণ রয়েছে। এছাড়াও তিনি সুলতান প্রথম সুলাইমানের পারস্য অভিযান নিয়ে ফাতিহনামা-ই কারাবুগদান গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার উমদাতুল হিসাব গ্রন্থের সাম্প্রতিক পর্যালোচনা থেকে জানা যায় যে তিনি গুণের কিছু নিখুত নিয়ম বের করেছিলেন। এই বইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল থেকে জানা যায় যে জন নেপিয়ার ইউরোপে চালু করার ৫০ বছর পূর্বে এন্দেরুন মক্তবে ল্যাটিস গুণ প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত।[1]
গণিত ও ইতিহাস ছাড়াও তিনি তার অণুচিত্রের জন্য বিখ্যাত। তিনি একটি প্রকৃতিবাদি ধারা তৈরি করেছিলেন যাতে চিত্রে ভূপ্রকৃতির প্যানারোমা দৃশ্য এবং শহরের সর্বোচ্চ বিস্তারিত বিবরণ থাকত। তার সবচেয়ে বিখ্যাত কর্ম হল ইস্তানবুলের ছবি যাতে শহরের প্রায় সব রাস্তা ও দালান তুলে ধরা হয়েছে। উসমানীয় অণুচিত্রশিল্পে এই শৈলী পরবর্তীতে "মাত্রাকচি শৈলী" নামে পরিচিতি পায়। তার অণুচিত্রের চারটি ঐতিহাসিক খন্ডের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল সুলতান সুলাইমানের সাফাভি যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ভিত্তিতে তিনি ফাতিহনামা-ই কারাবুগদান গ্রন্থ রচনা করেছেন। ইস্তানবুল থেকে বাগদাদ ও এরপর তাবরিজে উসমানীয় বাহিনীর অগ্রযাত্রা এবং আলেপ্পো ও এসকিশেহিরের মধ্য দিয়ে ফিরে আসার দৃশ্য অঙ্কনের পাশাপাশি তিনি যাত্রাপথে অতিক্রম করা সকল শহরের দৃশ্যও অঙ্কন করেছেন। ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে এই গ্রন্থের একমাত্র কপি রয়েছে।
মাত্রাকচি নাসুহ একজন সৈনিক ও দক্ষ অস্ত্রনির্মাতাও ছিলেন। এন্দেরুন মক্তবে তিনি অস্ত্র শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ও তার ছাত্ররা সুলতান সুলাইমানের ছেলেদের খতনা অনুষ্ঠানে নিজেদের দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। এতে সাফল্যের জন্য সুলতান তাকে সম্মানসূচক উস্তাদ ও রেইস খেতাবে ভূষিত করেছিলেন। তার লেখা তুহফাত-উল গুজাত গ্রন্থে তিনি অশ্বারোহী ও পদাতিক যুদ্ধের বিভিন্ন অস্ত্র ও পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ে লিখেছেন।[1][2][3][4][5]
তার নিজ শহর বসনিয়ার ভিসোকোতে শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্মানে সম্মেলন হয়ে থাকে। মাত্রাকচিকেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করা হয়। চিত্রশিল্পের জন্য তাকে বসনিয়ার লিওনার্দো দা ভিঞ্চি বলা হয়।[6] তার নামে ভিসোকোতে সড়কও রয়েছে।[7]
১৯৭৮ সালে তুর্কি রেডিও-টিভিতে মাত্রাকচি নাসুহর উপর ডকুমেন্টরি তৈরি হয়েছে।[6]
তুর্কি টিভি ধারাবাহিক মুহতেশেম ইউযিয়েলে মাত্রাকচি নাসুহর ভূমিকায় অভিনেতা ফাতিহ আল অভিনয় করেছেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.