Loading AI tools
কর কর্মকর্তা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নন্দকুমার ছিলেন নবাবি আমলে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের দেওয়ান। ১৭০৫ সালে বর্তমান বীরভূম জেলার নলহাটি থানার ভদ্রপুর গ্রামে নন্দকুমার জন্মগ্রহণ করেন।ব্রিটিশ আমলে তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় যিনি ফাঁসির সাজা পান। ১৭৬৫ সালে তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক বর্ধমান, নদিয়া এবং হুগলির দেওয়ানি লাভ করেন। এর আগে যার দায়িত্বে ছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংস।[1]
১৭৭৩ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস বাংলার গভর্নর-জেনারেল হয়ে এলে নন্দকুমার তার বিরেদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। এই বিষয়টিকে স্যার ফিলিপ ফ্রান্সিস-সহ বাংলার সুপ্রিম কাউন্সিলের বহু সদস্য সমর্থন করেন। তবে হেস্টিংস কাউন্সিলের আনীত সমস্ত অভিযোগ নাকচ করে দেন। এরপর ১৭৭৪ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস নন্দকুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। ঔপনিবেশিক ভারতের প্রথম প্রধান বিচারপতি স্যার এলিজা ইম্পের অধীনে তার মামলা চলে। ইম্পে ছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংসের বন্ধু। মামলায় নন্দকুমার দোষী সাব্যস্ত হন।১৭৭৫ সালের ৫ই আগস্ট কলকাতায় তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
পরবর্তীকালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রধান বিচারপতি এলিজা ইম্পে-সহ হেস্টিংকে ‘আইনি হত্যা’-র অপরাধে অভিযুক্ত করে। বুর্ক (এবং পরে মেকলে) তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগটি তুলেছিলেন। তবে এই মামলার তদারকিতে থাকা স্যার জেমস স্টিফেন হেস্টিংসের পক্ষেই সওয়াল করেন এবং বলেন যে ইম্পে ন্যায় ও সততার সাথেই মামলাটির নিষ্পত্তি করেছেন।
মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ১৭৬৪ সালে নন্দকুমারকে ‘মহারাজা’ উপাধি প্রদান করেছিলেন।[1] ১৭৬৪ সালে ওয়ারেন হেস্টিংসের পর তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক বর্ধমান, নদিয়া ও হুগলির কালেক্টর নিযুক্ত হন। তিনি রাধামোহন ঠাকুরের নিকট বৈষ্ণবধর্মে দীক্ষিত হন।[1]
মহারাজ নন্দকুমার অভিযোগ করেন যে, হেস্টিংস তাকে দশ লক্ষ টাকার এক-তৃতীয়াংশ ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন। তিনি এও দাবি করেন যে, হেস্টিংসের বিরুদ্ধে তার অভিযোগের প্রমাণস্বরূপ একটি চিঠি রয়েছে।[2]
ওয়ারেন হেস্টিংস সেই সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ঘটনাচক্রে স্যার এলিজা ইম্পে ছিলেন তার স্কুলের বন্ধু। তাই বহু ঐতিহাসিক এই মত পোষণ করেন যে, মহারাজ নন্দকুমারকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছিল।নন্দকুমারের ফাঁসিকে বহু ঐতিহাসিক ‘আইনি হত্যা’ বলে থাকেন।[3] মেকলে হেস্টিংস ও ইম্পে উভয়কেই ‘আইনি হত্যার’ ষড়যন্ত্রকারী বলে উল্লেখ করেছেন।[3] বাংলার গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের আমলে ১৭৭৫ সালের ৫ই আগস্ট কলকাতায় বর্তমান বিদ্যাসাগর সেতুর নিকটে নন্দকুমারকে ফাঁসি দেওয়া হয়।[3] সেই সময় ইংল্যান্ডের আইনসভায় দুর্নীতির শাস্তি হিসেবে ফাঁসির সাজা হিসেবে জালিয়াতি আইন, ১৭২৮ পাস করা হয়েছিল। তবে ইংল্যান্ডে তৎকালীন পরিস্থিতি অনুসারে দুর্নীতি সংক্রান্ত অপকর্মে অভিজুক্তদের ক্ষেত্রে এই আইনটিকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা হত এবং ভারতের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হওয়ার কোনো বিধান ছিল না।[4][5]
মহারাজ নন্দকুমার সমাজে একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাই তার ফাঁসি স্থানীয় জনসাধারণের মনে আতঙ্কের সঞ্চার ঘটায়।এর ফলে বহু বাঙালি কলকাতা ছেড়ে বেনারসের মতো জায়গায় চলে যায়।[3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.