![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/4a/Philip_Burne-Jones_-_The_Vampire.jpg/640px-Philip_Burne-Jones_-_The_Vampire.jpg&w=640&q=50)
ভ্যাম্পায়ার
বিজ্ঞানের ধারণা বহির্ভূত এক জীব, যা জীবিতের রক্ত শোষণ করে জীবনধারণ করে। / From Wikipedia, the free encyclopedia
ভ্যাম্পায়ার বা রক্তচোষক হল বিজ্ঞানের ধারণা বহির্ভূত এক জীব, যা জীবিতের প্রাণরস (সাধারণত রক্তের আকারে) শোষণ করে জীবনধারণ করে। এরা প্রকৃতি ও মানুষের মন কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।ইউরোপীয় লোককথায় ভ্যাম্পায়ারদের মৃতোত্থিত জীব (Undead) মনে করা হয়। এই লোককথাগুলিতে দেখা যায়, তারা শবাচ্ছাদন বস্ত্র পরিধান করে, প্রিয়জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং জীবৎকালে তারা যেখানে থাকত সেখানকার প্রতিবেশীদের ক্ষতিসাধন করে বা তাদের মৃত্যু ঘটায় ও নিজেদের মতো করে নেই। ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে যে আধুনিক ভ্যাম্পায়ার কল্পনার সূত্রপাত ঘটেছিল তার বর্ণনায় ভ্যাম্পায়াররা কৃশকায় ও পাণ্ডুরবর্ণ হলেও লোককথার উক্ত ভ্যাম্পায়ারদের চেহারা সাধারণ মানুষ এর মতোই। বর্তমানে ভ্যাম্পায়ার সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/4a/Philip_Burne-Jones_-_The_Vampire.jpg/320px-Philip_Burne-Jones_-_The_Vampire.jpg)
সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ভ্যাম্পায়ার-জাতীয় জীবের কথা নথিবদ্ধ রয়েছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর বলকান ও পূর্ব ইউরোপে প্রচলিত পুরনো লোকবিশ্বাসটিকে ঘিরে এক গণ-উন্মাদনার প্রেক্ষাপটে পশ্চিম ইউরোপে ‘ভ্যাম্পায়ার’ শব্দটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই গণ-উন্মাদনার ফলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকেরা কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভ্যাম্পায়ার সন্দেহে মৃতদেহে সূচালো প্রান্তযুক্ত লাঠি বিদ্ধ করত, এমনকি অনেকের বিরুদ্ধে ভ্যাম্পায়ার-সত্তার অভিযোগও আনত।[1] পূর্ব ইউরোপে ভ্যাম্পায়ার-জাতীয় জীবেরা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন: আলবেনিয়ায় শ্ট্রিগা, গ্রিসে ভ্রাইকোলাকাস ও রোমানিয়ায় স্ট্রিগোই।
আধুনিক যুগে ভ্যাম্পায়ারকে সাধারণত কাল্পনিক জীবই মনে করা হয়। তবে ভ্যাম্পায়ারের অনুরূপ জীবের অস্তিত্বে বিশ্বাস কোনও কোনও সংস্কৃতিতে এখনও বিদ্যমান। এই প্রসঙ্গে চুপাকাবরা-র নাম করা যেতে পারে। মনে করা হয় যে, মৃত্যুর পর দেহের ক্ষয় সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব এবং প্রাক্-শিল্পযুগীয় সমাজে সেই ক্ষয়ের সপক্ষে কী যুক্তি উপস্থাপনা করা হত তারই উদাহরণ হল ভ্যাম্পায়ার-সংক্রান্ত পুরনো লোকবিশ্বাসগুলি। সেই যুগে এই জাতীয় জীব কল্পনা করেই মৃত্যুর রহস্য ব্যাখ্যা করা হত। ১৯৮৫ সালে ভ্যাম্পায়ার কিংবদন্তির সঙ্গে যুক্ত হয় পরফিরিয়ার ধারণাটি। গণমাধ্যমে তা ব্যাপক প্রচার পেলেও সেই সময় থেকেই এই মতটিকে বিজ্ঞানীরা অস্বীকারই করে এসেছেন।[2][3]
১৮১৯ সালে প্রকাশিত হয় ইংরেজ লেখক জন পোলিডোরি রচিত "দ্য ভ্যাম্পায়ার" বইটির। এই বইটির মাধ্যমেই আধুনিক কথাসাহিত্যের সৌন্দর্যমণ্ডিত ও কেতাদুরস্ত ভ্যাম্পায়ার-ধারণার সূত্রপাত ঘটে। বইটি ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। তর্কসাপেক্ষে এই বইটিকেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে লেখা সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী ভ্যাম্পায়ার কাহিনি বলা চলে।[1] ১৮৯৭ সালে প্রকাশিত ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা উপন্যাসটিকে স্মরণ করা হয় ভ্যাম্পায়ার-বিষয়ক উপন্যাসের একটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন হিসেবে। এই উপন্যাসটিই আধুনিক ভ্যাম্পায়ার কিংবদন্তির মূল ভিত্তিটি রচনা করেছিল। যদিও স্টোকারের সমসাময়িক আইরিশ লেখক জোসেফ শেরিডান লে ফানুর কারমিলা উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৭২ সালেই। তবে ড্রাকুলা উপন্যাসের সাফল্যই পরবর্তীকালে কথাসাহিত্যে স্বতন্ত্র ও বিপুলায়তন ভ্যাম্পায়ার কথাসাহিত্যের বর্গটির জন্ম দেয় এবং সেই সময় থেকেই ভ্যাম্পায়ারেরা ভৌতিক কথাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান চরিত্রে পরিণত হয়। কথাসাহিত্যের বাইরেও চলচ্চিত্র, টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও ভিডিও গেমের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীতেও এই বর্গ তার জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে।