ভূত্বক
From Wikipedia, the free encyclopedia
ভূত্বক হল পৃথিবীর বাইরের দিকের একটি পাতলা আবরণ, যা পৃথিবীর আয়তনের ১% এরও কম অংশ জায়গা দখল করে আছে। এটি অশ্মমণ্ডলের (অশ্মমণ্ডল হল পৃথিবীর স্তরগুলির একটি বিভাগ, যার মধ্যে ভূত্বক এবং ম্যান্টেলের উপরের অংশটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে) উপরের অংশ ।[1] অশ্মমণ্ডল ভূত্বকীয় পাতে বা টেকটোনিক প্লেটে বিভক্ত, পাত বা প্লেটগুলো চলমান। এর মাধ্যমে ভূ-অভ্যন্তরের তাপ মহাকাশে মুক্ত হতে পারে।
ভূত্বক ম্যান্টলের ওপরে অবস্থিত। এই অবস্থানটি স্থিতিশীল কারণ উপরি ম্যান্টলটি পেরিডোটাইট দিয়ে তৈরি এবং তাই ভূত্বকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ঘন। ভূত্বক এবং ম্যান্টলের সীমানায় উপযুক্তভাবে মোহোরোভিচিচ বিচ্ছিন্নতা অবস্থিত, এই সীমানাটি স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় ব্যাতিক্রমী ভূকম্পীয় বেগ দিয়ে।
পৃথিবীর ভূত্বকে দুটি স্বতন্ত্র ধরন আছে:
- মহাসাগরীয়: ৫ কিমি (৩ মা) থেকে ১০ কিমি (৬ মা) পুরু[2] এবং মূলত আরও ঘন, অধিকাংশ ম্যাফিক শিলা, যেমন বেসাল্ট, ডায়াবেস এবং গ্যাব্রো দিয়ে গঠিত।
- মহাদেশীয়: ৩০ কিমি (২০ মা) থেকে ৫০ কিমি (৩০ মা) পুরু এবং প্রধানত কম ঘনত্বের অধিকাংশ ফেলসিক শিলা, যেমন গ্রানাইট দ্বারা গঠিত।
যেহেতু মহাদেশীয় এবং মহাসাগরীয় ভূত্বক উভয়ই নীচের ম্যান্টলের চেয়ে কম ঘন, দুই ধরনের ভূত্বকই ম্যান্টলের ওপর আক্ষরিকভাবে "ভেসে" থাকে। একে বলা হয় সমস্থিতি অবস্থা, মহাসাগরীয় ভূত্বক মহাসাগরীয় ভূত্বকের থেকে ওপরে থাকার এটিও একটি কারণ: মহাদেশীয় কম ঘন এবং তাই উঁচুতে "ভেসে" থাকে। ফলস্বরূপ, জলের স্রোত মহাসাগরীয় ভূত্বকের উপরে চলে এসে মহাসাগর তৈরি করে।
ভূত্বকের তাপমাত্রা গভীরতার সাথে বৃদ্ধি পায়,[3] নিচের দিকে যেতে যেতে ম্যান্টলের সীমানায় তাপমাত্রা ২০০ °সে (৩৯২ °ফা) থেকে ৪০০ °সে (৭৫২ °ফা) পরিসরে থাকে। ভূত্বকের ওপরের অংশে স্থানীয়ভাবে তাপমাত্রা প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ৩০ °C (৫৪ °F) বেড়ে যায়, কিন্তুভূত্বকের গভীরে ভূতাপীয় নতিমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম।[4]