ব্যবহারকারী:Md. Shahoriar Nazir/ঔষধশাস্ত্র/ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহার বিজ্ঞান
From Wikipedia, the free encyclopedia
ফার্মেসি বা ঔষধশাস্ত্র হলো ওষুধ আবিষ্কার, উৎপাদন, প্রস্তুত, বিপণন, পর্যালোচনা এবং পর্যবেক্ষণের চর্চা ও বিজ্ঞান, যা নিশ্চিত করে ওষুধের নিরাপদ, কার্যকরী এবং সাশ্রয়ী ব্যবহার। এটি একটি বিবিধ বিজ্ঞান কারণ এটি স্বাস্থ্য বিজ্ঞানকে ঔষধপ্রস্তুতের বিদ্যা সংক্রান্ত বিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এর সাথে যুক্ত করে। সাম্প্রতিককালে, ওষুধপ্রস্তুত শিল্পের বিকাশে চিকিৎসাবিদরা এখন সহজেই রোগীদের জন্য যথোপযুক্ত ওষুধ নির্বাচন করতে পারছেন এবং রোগীদের জন্য ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে পারছেন। স্থাপনাভেদে ফার্মেসি অনুশীলনকে সাম্প্রদায়িক বা প্রাতিষ্ঠানিক ফার্মেসি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক ফার্মেসি সমাজে সরাসরি রোগীর যত্ন প্রদান করে থাকে, যা ক্লিনিকাল ফার্মেসি নামে পরিচিত। [1]
পেশা | |
---|---|
নাম | ফার্মাসিস্ট, ঔষধবিদ |
পেশার ধরন | পেশাজীবী |
প্রায়োগিক ক্ষেত্র | স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, রসায়ন |
বিবরণ | |
শিক্ষাগত যোগ্যতা | ডক্টর অব ফার্মেসি, মাস্টার অব ফার্মেসি (এম. ফার্ম), ব্যাচেলর অব প্রফেশনাল ফার্মেসি (বি.ফার্ম), ডিপ্লোমা ফার্মেসি |
সম্পর্কিত পেশা | চিকিৎসক, ফার্মেসি প্রযুক্তিবিদ , ফার্মেসি সহকারী, অন্যান্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ |
ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহার বিজ্ঞান স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা যা মূলত রসায়নশাস্ত্রের সাথে জীববিজ্ঞানের একটি যোগসূত্র হিসাবে কাজ করে। মূলত ঔষধের প্রস্তুতি এবং ঔষধের নিরাপদ ও সঠিক ব্যবহার, বিতরণ ও পরিবেশন, ইত্যাদি এর আলোচ্য বিষয়।[১] আধুনিক যুগে ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহারবিদ ঔষধ প্রস্তুতকরণ ও সংরক্ষণ, ঔষধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য বিতরণ, এর সঠিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, সঠিক রোগীভিত্তিক প্রয়োগ, ইত্যাদি বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহার বিজ্ঞানের ইংরেজি পরিভাষা "ফার্মেসি"; শব্দটি এসেছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ “Pharmakon” থেকে যার একাধিক আভিধানিক অর্থের একটি হল "ঔষধ"। ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহারবিদদেরকে ইংরেজি পরিভাষাতে "ফার্মাসিস্ট" বলে।
ফার্মেসি চর্চায় প্রথাগত কার্যক্রম যেমন ওষুধের সংমিশ্রণ এবং বিপণন বিদ্যমান রয়েছে। এতে আরো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত আধুনিক পরিষেবা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিসেবা হচ্ছে ক্লিনিকাল সেবা, নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার জন্য ওষুধের পর্যালোচনা এবং ওষুধ সম্পর্কিত তথ্য প্রদান। ফার্মাসিস্টরা বা ঔষধবিদরা , তাই, ওষুধ চিকিৎসার বিশেষজ্ঞ এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী যারা রোগীদের সুবিধার জন্য ওষুধ ব্যবহারের পরিমিত মাত্রা নিশ্চিত করে।
একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে ফার্মেসি (প্রাথমিক অর্থে) সেবার চর্চা করা হয় তাকে ফার্মেসি বলা হয় (এই শব্দটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশি প্রচলিত) বা কেমিস্টস (Chemists) (যা গ্রেট ব্রিটেনে বেশি পরিচিত, যদিও ফার্মেসি নামে এখানেও প্রচলিত আছে)[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়ঔষধালয়গুলোতে সাধারণত ওষুধ বিক্রি করে, সেইসাথে বিবিধ পণ্য যেমন, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, অফিস উপকরণ, খেলনা, চুল যত্নের পণ্য, সাময়িক পত্র এবং মাঝে মাঝে নাস্তা এবং মুদি সামগ্রীও বিক্রি করে থাকে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে ভেষজ এবং রাসায়নিক উপাদানগুলির মূল্যায়নে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রণয়নের পূর্বে ঔষধবিদদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কাজ রসায়ন ও ঔষধবিজ্ঞান (pharmacology) আধুনিকায়নের পথিকৃৎ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহার বিজ্ঞানের তিনটি প্রধান মৌলিক বিভাগ আছে। এগুলি হল ঔষধনির্মাণ বিজ্ঞান (Pharmaceutics), ঔষধবিজ্ঞান (Pharmacology) এবং রোগীভিত্তিক গবেষণা (Clinical research)।
ঔষধনির্মাণ বিজ্ঞান বিভাগে বিশুদ্ধ ঔষধীয় কাঁচামাল বা উপাদান থেকে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ নির্মাণ প্রক্রিয়া নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এর মধ্যে থাকে কার্যকরী ঔষধি যৌগের সাথে ব্যবহার করা অতিরিক্ত যৌগসমূহের ব্যবহার (Excipients), প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির বিবরণ (Tooling), সূত্রায়ন ও প্রস্তুতকরণ (Formulation and Preparation), মোড়কজাতকরণ (Packaging) ও তার উপকরণ, ইত্যাদি। একক মাত্রার ঔষধ নকশাকরণ (Dosage Form Design) ঔষধনির্মাণ বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। এই উপবিভাগে ঔষধের কণা ও তার বৈশিষ্ট্য প্রাধান্য পায়; সাথে থাকে পূর্বপ্রস্তুতি (Preformulation)। পূর্বপ্রস্তুতি বলতে বোঝায় ঔষধের প্রস্তুতির পূর্বে করণীয় বিষয়সমুহ, যেমন- ট্যাবলেট তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজন তার ত্বরান্বিত স্থায়িত্ব পরীক্ষা (Accelerated Stability Testing)।
ফার্মেসির ক্ষেত্রকে প্রাথমিকভাবে নিম্নোক্ত কয়েকটি শাখায় ভাগ করা যায়:
- ঔষধপ্রস্তুতবিদ্যা বা ঔষধনির্মাণ বিজ্ঞান (pharmaceutics)
- ঔষধসঞ্চরণবিজ্ঞান (pharmacokinetics)
- ঔষধি রসায়ন এবং ভেষজ ঔষধবিজ্ঞান (medicinal chemistry and pharmacognosy)
- ফার্মেসি অনুশীলন (pharmacy practice)
উল্লেখিত ফার্মেসির শাখাগুলির মধ্যে এবং অন্যান্য বিজ্ঞান, যেমন প্রাণরসায়ন, এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট সীমানা সবসময় পরিলক্ষিত হয় না। প্রায়শই, বিভিন্ন শাখার সহযোগী দলগুলি (ফার্মাসিস্ট এবং অন্যান্য বিজ্ঞানী) রোগীর যত্নের জন্য নতুন চিকিৎসা এবং পদ্ধতিগুলি প্রবর্তনের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করে। যাইহোক, ফার্মেসি তার সাধারণ আকারে একটি মৌলিক বা বায়োমেডিকাল বিজ্ঞান নয়। ঔষধি রসায়নও ঔষধবিজ্ঞান, জৈব রসায়ন এবং রাসায়নিক জীববিজ্ঞানের সমন্বয়ে গঠিত সাংশ্লেষিক (synthetic) রসায়নের একটি স্বতন্ত্র শাখা।
ঔষধবিজ্ঞান/ফার্মাকোলজিকে কখনো কখনো ফার্মেসির চতুর্থ শাখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও ফার্মাকোলজি ফার্মেসি অধ্যয়নের জন্য অপরিহার্য, তবে এটি ফার্মেসির জন্য সুনির্দিষ্ট নয়। উভয় বিভাগের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট রয়েছে। যারা ফার্মেসি (রোগী-ভিত্তিক) এবং ফার্মাকোলজি (একটি বায়োমেডিকেল বিজ্ঞান যাতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োজন হয়) উভয়ই অনুশীলন করতে চান তারা পৃথকভাবে ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হন এবং ডিগ্রি পান।
ফার্মাকোইনফরমেটিক্স (pharmacoinformatics) ফার্মেসির আরেকটি উদীয়মান শাখা হিসাবে বিবেচনা করা হয়, দক্ষতা ও নিরাপত্তার সাথে পদ্ধতিগতভাবে ওষুধ আবিষ্কার এবং বিকাশের জন্য।
ফার্মাকোজেনোমিক্স (pharmacogenomics) হল জিন-সম্পর্কিত genetic-linked) ভিন্নতা বিষয়ক অধ্যয়ন, এ ভিন্নতা রোগীর রোগ প্রতিক্রিয়া, অ্যালার্জি এবং ওষুধের বিপাককে প্রভাবিত করে। [2]