Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বৈরাম খাঁ (ফার্সি: بيرام خان) ছিলেন মোঘল সম্রাট হুমায়ুন এবং আকবরের সেনাপতি এবং উপদেষ্টা এবং হুমায়ুনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও শ্রদ্ধেয় সভাসদ। হুমায়ুন তাকে খান ই খানান-বৈরাম খান (রাজাধিরাজ বা রাজাদের রাজা) উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। ঐতিহাসিক গ্রন্থ জওহর আবতাচির থেকে জানা যায়, বৈরাম খাঁ’র প্রকৃত নাম ছিল বৈরাম বেগ[1][2][3] আকবরের অভিভাবক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।[4] কোন কোন ইতিহাসবিদরা তাকে হিন্দুস্থানের মুকুটহীন বাদশাহ বলে সম্বোধন করেন। আকবর তাকে খান বাবা বলে সম্বোধন করতেন
বৈরাম বেগ[1] | |
---|---|
বৈরাম খাঁন (ফার্সি: بيرام خان) (উপাধি) | |
মুঘল সাম্রাজ্যের রাজ প্রতিনিধি | |
কাজের মেয়াদ ১৫৫৬ – ১৫৬১ | |
সার্বভৌম শাসক | আকবর |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | c. ১৫০১ ইরান |
মৃত্যু | ৩১ জানুয়ারি ১৫৬১ শহস্ত্রলিঙ্গ দিঘি, আনহিলয়াদ পাটন, মোঘল সাম্রাজ্যাধীন গুজরাত |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সন্তান | রহিম(মেওয়াতি বেগম সাহিবার পুত্র) |
জীবিকা | আকবরের প্রধান উপদেষ্টা, মুঘল সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি এবং উপশাসক |
ধর্ম | শিয়া ইসলাম |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | মুঘল সাম্রাজ্য |
কাজের মেয়াদ | আনুমানিক ১৫৫৭-১৫৬১ |
পদ | ৪৫ |
কমান্ড | মুঘল সেনাবাহিনী |
যুদ্ধ | খানওয়ার যুদ্ধ ঘাগরার যুদ্ধ শম্ভল অবরোধ পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ |
বৈরাম খাঁ মোগল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে প্রায় বিস্মৃত এক নাম। তিনি ছিলেন মোগল সৈন্যবাহিনীর প্রধান সেনাপতি। সম্রাট হুমায়ুনের অত্যন্ত আস্থাভাজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং এক ক্ষুরধার কূটনীতিবিদ; ছিলেন সম্রাট আকবরের একজন অভিভাবক, প্রধান পরামর্শদাতা, উপদেষ্টা, শিক্ষক এবং সম্রাটের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগী। ভারত উপমহাদেশে মোগল সাম্রাজ্য বিস্তারে তার একনিষ্ঠতা, বিশ্বস্ততা এবং অবদান ছিল প্রশ্নাতীত।
১৫০১ খ্রিস্টাব্দে আফগানিস্তানের বাদাখশানে তার জন্ম। তিনি কারা ফনলু গোত্রের বাহারলু বংশের উত্তরাধিকারী ছিলেন।[5][6] এই কারা ফনলু গোত্রটি কয়েক দশক পশ্চিম পারস্য শাসন করে। সম্রাট বাবরের সেনাবাহিনীতে বাবরের নিরাপত্তায় নিযুক্ত ছিল বৈরাম খাঁ’র পূর্বপুরুষরা। জওহর আবতাচির গ্রন্থ থেকে জানা যায়, বৈরাম খাঁ’র পিতৃদত্ত নাম ছিল বৈরাম বেগ । বাদশাহ হুমায়ুন তকে ‘খাঁ’ বা ‘খান’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তার সাহসীকতা ও বিশ্বস্ততার স্বীকৃতি হিসেবে মোগল দরবারে তাকে ‘ইয়ার-ই-ওয়াফাদর’ (অনুগত বন্ধু), ‘বারদার-ই নিকু-সিয়ার’ (সুপ্রভাত ভাই), ‘ফারজান্দ-ই-আদাতমন্দ ‘(সৌভাগ্যবান পুত্র), ‘খান-ই- খানান’ (রাজাদের রাজা) উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
বাবর যখন দিল্লীর মসনদ দখল করেন তখন বৈরাম খাঁ’র বয়স মাত্র ১৬। এই বয়সেই তিনি যোগ দিলেন বাবরের মোগল সেনাবাহিনীতে।[7] সময়টা ছিল মোগল সাম্রাজ্যের উত্থানের সময়। ভারতবর্ষে সম্রাজ্য বিস্তারে মোগল সেনাবাহিনী ভারতবর্ষের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। অল্প বয়সেই বৈরাম খাঁ তার শৌর্য-বীর্যে মোগল সেনাবাহিনীতে নিজস্ব এক পরিচয় তৈরি করে নিতে সক্ষম হন। তিনি হয়ে উঠলেন সম্রাটের আস্থাভাজন বিশ্বস্ত এক সৈনিক।
সম্রাট হুমায়ুনের আমলে বৈরাম খাঁ ছিলেন সম্রাটের এক বিশ্বস্ত সহচর। হুমায়ুনের আমলে তিনি মোহরাদারের পদ অলঙ্কৃত করেন। এ সময় মোগল সেনাপতি হিসেবে বৈরাম খাঁ বেনারস, গুজরাত, বাংলা প্রভৃতি জায়গায় সফল অভিযান পরিচালনা করেন। শের শাহ সুরির সাথে যুদ্ধে পরাজয়ের মাধ্যমে মোগল সাম্রাজ্যের পতনের সময়েও বৈরাম খাঁ সম্রাটকে ছেড়ে যাননি। পরাজিত হয়ে সম্রাট হুমায়ুন যখন পারস্যে নির্বাসিত ছিলেন, তখন তার একনিষ্ঠ সহচর হিসেবে ছিলেন বৈরাম খাঁ। মোগল সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য সম্রাটকে তিনি প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করে গেছেন। সম্রাটের নির্দেশে বিশ্বস্ত সেনাপতি হিসেবে বৈরাম খাঁ কান্দাহার পুনরুদ্ধার করে গেছেন।
পরবর্তীতে স্থায়ী মোগল সাম্রাজ্য পুনঃনির্মাণে সাহসী এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। সম্রাট হুমায়ুন বৈরাম খাঁ’র কর্মদক্ষতা, পান্ডিত্য, বিচক্ষণতা আর আনুগত্যে খুবই প্রসন্ন ছিলেন। তিনি বৈরাম খাঁকে তার মন্ত্রিসভার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অনুসারী হিসেবে গণ্য করতেন। আর সে কারণেই তিনি তার এই বিশ্বস্ত সেনাপতিকে সর্বোচ্চ সম্মান ‘খান-ই-খানান’ যার অর্থ ‘রাজাদের রাজা’ সম্মানে ভূষিত করেন।
হুমায়ুনকে দিল্লীর মসনদে পুনরায় আরোহণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বৈরাম খাঁ। হুমায়ূনের শাসনামলে বৈরাম খাঁ তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। তিনি সবসময় সম্রাটকে সবধরনের ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখতে সচেষ্ট থাকতেন। হুমায়ুনও তাই বৈরাম খাঁকে খুবই পছন্দ করতেন। মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য তাই মোগল পরিবারেররই এক কন্যার সাথে বৈরাম খাঁ’র বিয়ে দেন তিনি।
কথিত আছে তিনি সম্রাট আকবরের পাঠানো গুপ্তচরের দ্বারা নিহত হন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.