Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বেড়ন্তাঙ্গল পাখিরালয় ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেঙ্গলপট্টু জেলার মধুরান্তকম তহশিলে অবস্থিত ৩০-হেক্টর (৭৪ একর) অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল৷ জাতীয় সড়ক ৩২ (ভারত)|৩২ নং জাতীয় সড়কেও ওপর চেন্নাই থেকে ৭৫ কিলোমিটার (৪৭ মা) দক্ষিণে এই পাখিরালয়টি অবস্থিত৷ মধুরান্তকম ও চেঙ্গলপট্টু থেকে সহজগম্য৷ প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিযানের সময়ে ২৬ টি বিরল প্রজাতি সহ প্রায় ৪০,০০০ পাখির সমাগম হয় এখানে৷ [1]
বেড়ন্তাঙ্গল পাখিরালয় வேடந்தாங்கல் பறவைகள் சரணாலயம் | |
---|---|
সংরক্ষিত অভয়ারণ্য | |
তামিলনাড়ুতে বেড়ন্তাঙ্গল পাখিরালয়ের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ১২°৩২′৪৪″ উত্তর ৭৯°৫১′২১″ পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | তামিলনাড়ু |
জেলা | চেঙ্গলপট্টু |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৩৬ |
আয়তন | |
• মোট | ০.৩ বর্গকিমি (০.১ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ৩২৩ |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | তামিল |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
নিকটবর্তী শহর | মধুরান্তকম |
দপ্তর | পরিবেশ ও বন বিভাগ, ভারত সরকার |
বেড়ন্তাঙ্গল উত্তুরে ল্যাঞ্জাহাঁস, গিরিয়া হাঁস, ধূসর খঞ্জন, নীলপাখা তিলিহাঁস, পাতি কপিঞ্জল এবং অন্যান্য৷[2]
এটি ভারতের সবচেয়ে পুরাতন জলাশয় ভিত্তিক পাখিরালয়।[1][3] তামিল ভাষায় বেড়ন্তাঙ্গল শব্দটির অর্থ শিকারীদের পল্লী।[4] খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এটি ছিল স্থানীয় জমিদারদের মৃগয়া করার শ্রেষ্ঠ স্থান। সমগ্র অঞ্চলের ছোট ছোট থাকার জন্য তা পরিযায়ী পাখিদের পরিপন্থী। পক্ষী বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব ভেবে ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার এই অঞ্চলটিকে পাখিরালয় তৈরি করার চিন্তাভাবনা করেছিলেন। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন চেঙ্গলপট্টুর জেলা সমাহর্তার নির্দেশে এই পাখিরালয়টি স্থাপিত হয়।
পাখিরালয়টি দর্শনের জন্য শ্রেষ্ঠ সময় হল নভেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। এই সময় স্থানীয় উপজাতি গুলির সাথে সাথে বহু পরিযায়ী পাখির আনাগোনা হয়। আশেপাশের গ্রামগুলির প্রত্যেকেই প্রায় এই পাখিরালয়ের নিয়ে যথেষ্ট তৎপর।
বহু বছর ধরেই স্থানীয়দের মধ্যে বেড়ন্তাঙ্গল হ্রদ পাখিরালয়ের সৌন্দর্য এবং পরিযায়ী পাখিদের নির্বিঘ্নে থাকার জন্য জনসচেতনতা রয়েছে। অভয়ারণ্য তৈরি পূর্ব থেকেই স্থানীয় চাষীরা পরিযায়ী পাখির আগমন এবং তাদের ফসলের বৃদ্ধির কথা বুঝতে সক্ষম ছিলেন। খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে স্থানীয়দের চেঙ্গলপট্টু লিওনেল প্রাসাদে ব্রিটিশ সৈন্যদের এই অঞ্চলে ঢুকে পাখি হত্যা করার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে। ওই সময়ে (১৭৯৮) তারা তৎকালীন জেলা সমাহর্তা থেকে কাওলী তথা পাখি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছিলেন।[5] ১৯৩৬ জেলা সমাহর্তা সরকারিভাবে এটিকে একটি অভয়ারণ্য ঘোষিত করে। ১৯৬২ মাদ্রাজ বনদপ্তর আইন এর অন্তর্ভুক্ত করে এটিকে একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পরিণত করা হয়।
খ্রিস্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে এই অভয়ারণ্যে জীব বৈচিত্র গণনা শুরু হয়।[6][7] ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজ বনদপ্তর আইন দ্বারা বেড়ন্তাঙ্গল সংরক্ষিত অরণ্যে পরিণত হওয়ার দশ বছর পর এটিকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়।
১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ জুলাই তারিখে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এটিকে বেড়ন্তাঙ্গল হ্রদ পাখিরালয়ে পরিণত করা হয় যা ছিল ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতাভুক্ত। দর্শনার্থী এবং পরিদর্শক হিসেবে ইন্সপেক্টরদের থাকার জন্য ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের নিকটে একটি পর্যটক নিবাস ও হোটেল নির্মাণ করা হয়।
অঞ্চলটি পূর্বে ছিল ৫০০ টি হিজল গাছের বাসভূমি, ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে আরও ১০০ টি এবং ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে আরও ১,০০০ টি হিজল গাছ এখানে রোপিত করা হয়।
বেড়ন্তাঙ্গল হ্রদ পাখিরালয়েপ্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার পাখি পরিযায়ী হল আসে তাদের মধ্যে কিছু পাখিকে অতি সহজেই শনাক্ত করা যায়। সহজেই দেখা যায় এমন কিছু পাখি হলো বড় পানকৌড়ি ছোট পানকৌড়ি, গয়ার, গ্রিব, পাতি বক, ছোট বগা, পাতি জলমুরগি, নিশি বক, রাঙা মানিকজোড়, উত্তুরে ল্যাঞ্জাহাঁস, দেশি কানিবক, কপিঞ্জল, উত্তুরে খুন্তেহাঁস, টার্ন, কালোমাথা কাস্তেচরা এবং আরো অন্যান্য। পরিযায়ী পাখির মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুলি হল, কানাডা থেকে আসা গিরিয়া হাস এবং নীলপাখা বালিহাঁস; শ্রীলঙ্কা থেকে আসা গয়ার এবং খয়রা কাস্তেচরা; অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা চিতিঠুঁটি গগণবেড়; বাংলাদেশ থেকে আসা ধুপনি বক এবং এশীয় শামুকখোল; সাইবেরিয়া থেকে আসা রাঙা মানিকজোড়; মিয়ানমার থেকে আসা চামচঠুঁটি এবং আশেপাশের স্বল্প পরিযায়ী দেশি মেটে হাঁস[8]
বেড়ন্তাঙ্গল ও কারিকিলি পাখিরালয়দুটিকে একত্রে তামিলনাড়ুর গুরুত্বপূর্ণ পক্ষী জীববৈচিত্র্য অঞ্চলের অন্তর্গত৷ এটির কোড নং ২৯৷[9]
বেড়ন্তাঙ্গল হ্রদ সমুদ্রতল থেকে ১২২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত৷ এটির জল চারপাশের ২৫০ একরজমিতে চাষের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ হ্রদের পশ্চিম ও দক্ষিণাংশ বাঁধ দিয়ে আটকানো আবার উত্তর ও পূর্ব অংশ চাষের জমির দিকে খোলা৷ চারটি ছোট ছোট খালের দ্বারা এই হ্রদে গল সঞ্চিত হয়৷ হ্রদের গড় গভীরতা ৫ মিটার৷ মূলত উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু চলাকালীন এখানে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে, বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪০০ মিলিমিটার৷[3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.