বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রণীত অপরিহার্য ওষুধের আদর্শ তালিকা
From Wikipedia, the free encyclopedia
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রণীত অপরিহার্য ওষধের আদর্শ তালিকা (ইংরেজি: WHO Model List of Essential Medicines) বা ইএমএল হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রণীত ওষুধের একটি তালিকা যেখানে সবচেয়ে কার্যকর এবং কোনো একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত ওষুধগুলোকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজস্ব অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণয়নে এই তালিকা টি প্রায় সময়ই ব্যবহৃত হয়।[1] ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৫৫-এরও বেশি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রণীত এই আদর্শ ওপর ভিত্তি করে নিজেদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের নিজস্ব তালিকা প্রণয়ন করেছে। এই দেশগুলোর মধ্যে উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় প্রকার দেশও রয়েছে [1]
এই তালিকাটি মূল ওষুধ ও পরিপূরক ওষুধ এই দুই ভাগে বিভক্ত। মূল ওষুধগুলো প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর জন্য সবচেয়ে ব্যয়সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে বিবেচিত। একই সাথে এই ওষুধ গুলো কোনো স্বাস্থ ব্যবস্থায় সামান্য অতিরিক্ত কিছু স্বাস্থ্যসেবামূলক সংস্থানের মাধ্যমেই ব্যবহার যোগ্য। অপরদিকে পরিপূরক ওষুধগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবামূলক সংস্থানের মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষিত পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা রোগনিরূপণের জন্য সুনিদিষ্ট যন্ত্রপাতি ও উপকরণ বা অপেক্ষাকৃত কম ব্যয়-সুফল অনুপাত।[2] মূল তালিকার প্রায় ২৫% ওষুধ পরিপূরক ওষুধ হিসেবে তালিকাভুক্ত।[3] এছাড়াও কিছু ওষুধ মূল ও পরিপূরক উভয় অংশেই তালিকাভুক্ত।[4] যদিও তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ ওষুধ-ই জেনেরিক ড্রাগ হিসেবে পাওয়া সম্ভব, তবে কৃতিস্বত্ব বা পেটেন্টের অধীনে থাকলেও তা তালিকাভুক্তির আওতা থেকে বাদ পড়ে না।[5]
এই তালিকা টি সর্বপ্রথম ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত হয় এবং সেই তালিকায় ছিলো ২১২টি ওষুধ।[1][6] বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি দুই বছর অন্তর এই তালিকা টি হালনাগাদ করেন।[7] এই তালিকার ১৪তম সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছিলো ২০০৫ সালে এবং সেখানে ৩০৬টি ওষুধ ছিলো।[8] ২০১৫ সালে প্রকাশিত ১৯তম সংস্করণে ছিলো ৪১০টি ওষুধ।[7] তালিকার ২০তম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিলো ২০১৭ সালে যেখানে মোট ৪৩৩টি ওষুধ ছিলো।[9][10] ২০১৯ সালে এই তালিকার ২১তম সংস্করণটি প্রকাশিত হয়।[11] এই তালিকার ওপর ভিত্তি করে প্রণীত বিভিন্ন দেশের জাতীয় তালিকাগুলোতে তালিকাভুক্ত ওষুধের পরিমাণ ৩৩৪ থেকে ৫৮০-এর মধ্যে।[3]
পরবর্তীতে ২০০৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য আলাদা ভাবে শিশুদের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রণীত অপরিহার্য ওষুধের আদর্শ তালিকা (EMLc) নামে একটি পৃথক তালিকা প্রণয়ন করে যা বর্তমানে ৭ম সংস্করণে রয়েছে।[7][12] শিশুদের প্রয়োজন যাতে যথাযথভাবে নিশ্চিত করা হয় তা নিশ্চিতকল্পে এই তালিকাটি প্রণয়ন করা হয়।[13][14] শিশুদের তালিকায় থাকা ওষুধগুলো মূল তালিকাতেও অন্তর্ভুক্ত।[15] এই তালিকাটি ও টীকা সমূহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মূল তালিকার ১৯তম থেকে ২১তম সংস্করণের ওপর ভিত্তি করে লিখিত।[2][9][11] ওষুধের পাশে থাকা α নির্দেশ করে যে কোন একটি ওষুধ কেবলমাত্র পরিপূরক তালিকায় রয়েছে।[2][11]