বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম বা বাইলাফন্ড লা (বালটি ভাষায় অর্থ প্রজাপতিদের গিরিবর্ত্ম) সালতোরো পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত একটি গিরিবর্ত্ম বিশেষ।
বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম সিয়াচেন হিমবাহের ঠিক পশ্চিমে এবং সিমলা চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যের নিয়ন্ত্রণ রেখার শেষ প্রান্ত হিসেবে সংজ্ঞায়িত এনজে ৯৮৪২ থেকে ৪০ কিমি (২৫ মা) উত্তরে সালতোরো পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত।
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ভারত, পাকিস্তান ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ সামরিক পর্যবেক্ষক দল যুদ্ধবিরতি রেখা চুক্তিতে সই করে। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ, পাকিস্তান ও অন্যন্যরা যুদ্ধবিরতি রেখা চুক্তি অনুযায়ী মানচিত্র প্রদর্শন করত। [2] কিন্তু ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে দ্য ইউনাইটেড স্টেটস ডিফেন্স ম্যাপিং এজেন্সী কোন রকম তথ্যসূত্র ছাড়াই তাদের কৌশলগত অগ্রণী মানচিত্রে এনজে ৯৮৪২ থেকে কারাকোরাম গিরিবর্ত্মের (৫,৫৩৪ মিটার) পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলকে চীনের অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। [3] এই মানচিত্রে সিয়াচেন অঞ্চল ও তার পার্শ্ববর্তী গিরিবর্ত্মগুলি পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত বলে দেখানো হওয়ায় ১৯৭০ এর দশক থেকে ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত এই অঞ্চলের উঁচু শৃঙ্গগুলিতে অবিযানের জন্য পর্বতারোহী অভিযাত্রী দল পাকিস্তান সরকারের কাছে অনুমতি চাইতে থাকে এবং পাকিস্তান তাদের অনুমতিপত্রও প্রদান করে। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে জাপানী পর্বতারোহী কাতায়ামা বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম হয়ে টেরাম কাংরি-১ (৭,৪৬৫ মি অথবা ২৪,৪৯১ ফু) ও টেরাম কাংরি-২ (৭,৪০৬ মি অথবা ২৪,২৯৮ ফু) পর্বতশৃঙ্গদ্বয় জয়ের অভিযানে পাকিস্তানের থেকে অনুমতি লাভ করে। [4] ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে জারোস্লাভ পন্সারের নেতৃত্বে এক জার্মান অভিযাত্রী দল বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম হয়ে সিয়াচেন হিমবাহে প্রবেশ করে এবং সিয়াচেন হিমবাহ ও টেরাম শেরের সংযোগস্থলে অভিযানের মূল ঘাঁটি তৈরী করে। এই সব ঘটনা পাকিস্তানকে এই সকল অঞ্চলের দাবী জানাতে উৎসাহ দেয়। [5] ভারত সরকার ও সেনাবাহিনী সব কিছু লক্ষ্য করে মানচিত্রটির ব্যাপারে প্রতিবাদ করে। মার্কিন মানচিত্র ও পাকিস্তানের অনুমতিপত্রের গুরুত্ব অনুভব করে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাই অল্টিচিউড ওয়ারফেয়ার স্কুলের কমান্ডিং অফিসার কর্ণেল নরেন্দ্র কুমার সিয়াচেন অঞ্চলে টেরাম কাংরি-২ পর্বতশৃঙ্গে সেনা পর্বতারোহণ অভিযান করেন। [6]
বাইলাফন্ড, সিয়া ও গ্যোং এই তিনটি গিরিবর্ত্মে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সিয়াচেন দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে অপারেশন মেঘদূত ভারতীয় সামরিক অভিযান হয়ে এসেছে। [7] ভারত অপারেশন মেঘদূত শুরু হতে দ্রুত সিয়া ও বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম দখল করে অধিকার করে নেয়।[1] সিয়াচেন হিমবাহের পশ্চিম দিকে ও নিয়ন্ত্রণ রেখার নিকটে অবস্থিত হওয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী এই স্থানে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। [8][9][10]
১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের পরে পাকিস্তান ভারতকে ঐ অঞ্চল থেকে হঠিয়ে দেওয়ার জন্য বহুবার ব্যর্থ অভিযান করে। এর মধ্যে ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের আক্রমণ ছিল সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য। এই আক্রমণের নেতৃত্ব দেন পারভেজ মুশাররফ। তিনি স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপের একটি সদ্য তৈরী কমান্ডো দলের ৮০০০ সৈন্যের এক বিশেষ গ্যারিসনকে বাইলাফন্ড গিরিবর্ত্ম দখলের জন্য পাঠান। কিন্তু তীব্র যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনা পিছু হটতে বাধ্য হয়। [11][12]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.