জাতীয় শোক দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি প্রাক্তন জাতীয় দিবস।[1] আওয়ামী লীগের সরকার দিবসটিকে জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে শোকের সাথে পালন করে থাকত।[2] এ দিবসে কালো পতাকা উত্তোলন ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হতো। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে বাংলাদেশস্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিবসের উৎপত্তি।

দ্রুত তথ্য জাতীয় শোক দিবস, অন্য নাম ...
জাতীয় শোক দিবস
Thumb
বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ, ধানমন্ডি, ঢাকা
অন্য নামশোক দিবস
তাৎপর্যবাংলাদেশস্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার স্মরণ
তারিখ১৫ আগস্ট
প্রথম বার১৫ আগস্ট ১৯৭৬ (বেসরকারিভাবে)
বন্ধ

২০২৪ সালে অন্তর্বর্তী সরকার এই দিনের সাধারণ ছুটি বাতিল ঘোষণা করে ও জাতীয় দিবস থেকে বাদ দেয়।[3][4][5]

ইতিহাস

­­­১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেদিন তিনি ছাড়াও নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। এছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন। ১৫ আগস্ট নিহত হন মুজিব পরিবারের সদস্যবৃন্দ হলেন: ছেলে শেখ কামালশেখ জামাল ও শিশু পুত্র শেখ রাসেল; পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল; ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি। বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসেন কর্নেল জামিলউদ্দীন, তিনিও তখন নিহত হন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তার ছোটবোন শেখ রেহানা

দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিবসের উৎপত্তি হয়। ১৯৯৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদকে পাশ কাটিয়ে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেন। অধ্যাদেশটি পরে সংসদে একটি বিলের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়। ২০০১ সালে তৎকালীন বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় এলে তারা বিলটি পরিবর্তন করে ও শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে।[6] সেই সময় সরকারি স্বীকৃতি না থাকলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দিবসটির পালন অব্যাহত রাখে। ছয় বছর পর বাংলাদেশ হাইকোর্ট ১৫ই অগাস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করে।[7] যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনরায় দিনটিতে ছুটি চালু করে।[6] সমাজবিজ্ঞানী হাসানুজ্জামান চৌধুরী এক লেখায় লিখেন যে, বিএনপি নেত্রী ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগকে অবজ্ঞা করতে এবং দিবসটিকে উপহাস করতে তার জন্মদিন পরিবর্তন করে ১৫ই আগস্ট করেছিলেন।[8]

পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর, প্রতি বছর ১৫ আগস্টকে শোক দিবস হিসেবে পালন করত।

২০২৪ সালের ১৩ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকার এই দিনের সাধারণ ছুটি বাতিল ঘোষণা করে।[9][10] এরপর ১৬ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ সরকার এই দিবসটি জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে পরিপত্র জারি করে।[11]

কর্মসূচি

এই দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবনসহ বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হত। বিশেষ মুনাজাত ও কোরআন তিলাওয়াত করা হত। প্রধানমন্ত্রী সকালে ধানমন্ডিতে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন। এরপর বনানীতে ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা জানানো হত। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হত। এ সময় ফাতিহা পাঠ ও সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদানসহ বিশেষ মুনাজাত ও দোয়া মাহফিল হত। বাদ জোহর সারা দেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মুনাজাত ও প্রার্থনা করা হত। বেতার ও টেলিভিশন শোক দিবসের অনুষ্ঠানমালা সরাসরি সম্প্রচার করত। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করত। সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হত।[12]

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.