Loading AI tools
রিডলে স্কট নির্দেশিত ছায়াছবি, ২০০৮ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বডি অফ লাইজ ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন অ্যাকশন স্পাই চলচ্চিত্র। এটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন রিডলি স্কট। মধ্যপ্রাচ্যের প্রেক্ষাপটে নির্মিত চলচ্চিত্রে আল-সালিম নামে এক জঙ্গির পিছনে সিআইএ এবং জর্ডানের গোয়েন্দা বাহিনীর তৎপরতা দেখানো হয়েছে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, রাসেল ক্রো, মার্ক স্ট্রং, গোলশিফতেহ ফারাহানি, ভিন্স কলোসিমো, অস্কার আইজ্যাক, আলি সুলাইমান, আলন আবুতবল প্রমুখ। চলচ্চিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রে ১০ অক্টোবর, ২০০৮ মুক্তি পায়।
বডি অফ লাইজ | |
---|---|
পরিচালক | রিডলি স্কট |
প্রযোজক |
|
চিত্রনাট্যকার | উইলিয়াম মোনাহান |
উৎস | ডেভিড ইগ্নেটিয়াস কর্তৃক বডি অফ লাইজ |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | মার্ক স্ট্রেইটেনফেল্ড |
চিত্রগ্রাহক | আলেকজান্ডার হুইট |
সম্পাদক | পিয়েত্রো স্কালিয়া |
প্রযোজনা কোম্পানি |
|
পরিবেশক | ওয়ার্নার ব্রস. পিকচার্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১২৮ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | |
নির্মাণব্যয় | $৭০ মিলিয়ন |
আয় | $১১৫.১ মিলিয়ন |
রজার ফেরিস ইরাকে সিআইএর কেইস অফিসার। সে আল-সালিম নামে একজন জঙ্গির খোঁজ করছে। নিজার নামে এক জঙ্গির সাথে তার দেখা হয়, যে তাকে উত্তর আমেরিকায় অভিবাসনের বিনিময়ে জঙ্গিদের তথ্য দিতে প্রস্তুত। ফেরিস তার বস এড হফম্যানের নিষেধ সত্ত্বেও নিজারের প্রস্তাবে সম্মত হয়। নিজারকে ব্যবহার করে সে জঙ্গিদের মূল ঘাটি বের করতে চায়, কিন্তু নিজার ধরা পড়লে ফেরিস তাকে গুলি করতে বাধ্য হয় যাতে সে জঙ্গিদের তার ব্যাপারে কিছু না বলতে পারে। নিজারের তথ্য অনুযায়ী কোন অ্যাকশন না নেওয়ার ফেরিস হফম্যানের উপর রাগান্বিত হয়ে তার সঙ্গী বাসামকে নিয়ে ইরাকের বালাদের একটি নিরাপদ বাড়ির খুঁজে যায়। সেখানে এক জঙ্গি আক্রমণে ফেরিস ও বাসামের গাড়ি আরপিজির আঘাতে ধ্বংস হয়। একটি হেলিকপ্টার ফেরিস আর কিছু ডিস্ক উদ্ধার করলেও বাসাম বোমার আগাতে মারা যায়।
ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে কয়েকজন জঙ্গি ম্যানচেস্টারে বাসে বোমা হামলার পরিকল্পনা করে, কিন্তু পুলিশ সেখানে পৌঁছালে নিজেরাই নিজেদের বোমার আঘাতে মারা যায়। সুস্থ হওয়ার পর ফেরিসকে আল-সালিমকে খুঁজতে আবার জর্ডানে পাঠানো হয়, সেখানে তার সাক্ষাৎ হয় জর্ডানের গোয়েন্দা প্রধান হানি সালামের সাথে।
হফম্যান আল-সালিমের একটি নিরাপদ বাড়ি খুঁজে পায় এবং ফেরিসকে লক্ষ্য রাখতে বলে। পাশাপাশি সে স্থানীয় সিআইএ কর্মকর্তা স্কিপকে দিয়ে একটি অপারেশন চালায়, যার কথা ফেরিস জানে না। স্কিপ সিআইএর বন্দী জিয়াদ আবিশিকে ব্যবহার করে নিরাপদ বাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার জন্য। সে তার অন্য সঙ্গীদের এ ব্যাপারে জানাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফেরিস তার পিছু নেয়ে এবং তাকে এমন ভাবে হত্যা করে যাতে মনে হয় পাল্টা গোলাগুলিতে সে মারা গেছে। হানি সালাম নিরাপদ বাড়িতে থাকা বাকিদের মেরে ফেলার সমর্থন জানায় এবং ফেরিস হফম্যানকে সাইড অপারেশন চালানো এবং এজেন্সির কাজে হস্তক্ষেপ করার জন্য দোষারোপ করে। হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগের টিকা নিতে গিয়ে তার আইশা নামের নার্সের সাথে তার দেখা হয় এবং তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
নিরাপদ বাড়িতে মুস্তাফা কারামি নামে একজনকে সালাম চিনতে পারে এবং তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে জর্ডানের গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করার জন্য বাধ্য করে। হফম্যান কারামিকে ব্যবহার করতে বললে সালাম মানা করে। ফেরিস ও সালামকে না জানিয়ে হফম্যান স্কিপকে নির্দেশ দেয় কারামিকে ধরে নিয়ে আসতে। কারামি পালিয়ে যায় এবং নিরাপদ বাড়ির বাকি জঙ্গিদের জানিয়ে দিলে তারা সেখান থেকে চলে যায়। স্কিপ ধরা পড়লে সালাম ফেরিসকে দোষারোপ করে এবং তাকে জর্ডান থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফেরিস ওয়াশিংটনে হফম্যানের কাছে ফিরে আসে এবং তার আল-সালিমকে ধরার নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে।
এটি ইসলাম সম্পর্কে, আমরা কোথায় আছি ও কোথায় নেই, ও এটি সেই পুরো বিষয়ের একটি আকর্ষণীয়, প্ররোচক, আন্তরীণ দৃশ্য।
২০০৬ সালের মার্চে, ওয়ার্নার ব্রস. চিত্রনাট্যকার উইলিয়াম মোনাহানকে ডেভিড ইগ্নেটিয়াস-এর উপন্যাস পেনেট্রেশন অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখার জন্য ভাড়া করে, যা পরিচালনা করবেন রিডলি স্কট।[2] ২০০৭ সালের এপ্রিলে উপন্যাসটির নাম পরিবর্তিত হয়ে বডি অফ লাইজ করা হলে ছবিটির নাম ও পরিবর্তন করা হয় এবং লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওকে প্রধান চরিত্রের জন্য নেয়া হয়।[3] ডিক্যাপ্রিও এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তার চুল বাদামী রং করে এবং চোখে বাদামি কনট্যাক্ট লেন্স পড়েন।[4] ডিক্যাপ্রিওকে নেওয়ার পর রাসেল ক্রোকে পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে নেওয়া হয়। মোনাহানের চিত্রনাট্য পুনরায় স্টিভ জাইলিয়ান সম্পাদনা করলে ক্রো অফিসিয়ালি সম্মত হয়।[5] এই চরিত্রে মানানসই হওয়ার জন্য ক্রোকে ৬৩ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন বাড়াতে হয়।[6] তিনি এই চলচ্চিত্র সম্পর্কে বলেন যে মার্কিন সরকার ও বৈদেশিক নীতির এই চলচ্চিত্র খুব জনপ্রিয় হবে তা তিনি মনে করেন না, কিন্তু এটা তার পছন্দের কাজও ছিল না।[7] হানি সালাম চরিত্রে অভিনয় করা মার্ক স্ট্রং তার ২০০৫ সালের চলচ্চিত্র সিরিয়ানা ও অলিভার টুইস্ট-এ অভিনয়ের সুবাদে সুযোগ পান।[8]
বডি অফ লাইজ আলেকজান্ডার উইটে প্রথম চিত্রগ্রহণ। তার পূর্বে তিনি রিডলি স্কটের ৬টি চলচ্চিত্রে দ্বিতীয় ইউনিট ক্যামেরা অপারেটর হিসেবে কাজ করেছেন। স্কট একাধিক ক্যামেরা সেট-আপের জম্য পরিচিত, এবং এই চলচ্চিত্রেও তিনি তিনটি ক্যামেরার ব্যবহার করেছেন। এ প্রসঙ্গে উইট বলেন, অভিনয়শিল্পীরা একাধিক ক্যামেরার ব্যবহার পছন্দ করেন, এতে তারা সব সময় চরিত্রের মধ্যে থাকেন এবং সময় নষ্ট হয় না।[9]
স্কট পূর্বে অনেক রকমের গ্রেডিং ব্যবহার করলেও এই ছবিতে তার ব্যবহার করেন নি। তিনি পোস্ট-প্রোডাকশনে ডিজিটাল ইন্টারমেডিয়েট ব্যবহার করেন, যাতে সেটে তার আলো নিয়ে চিন্তা না করতে হয়। পরিচালক ছবিতে বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চান এবং পরে অল্প কালার গ্রেডিং যোগ করা হয়, এবং ওয়াশিংটন ও মরক্কোর দৃশ্যে মূল রঙই ব্যবহার করা হয়।[9]
বডি অফ লাইজ চলচ্চিত্রের সঙ্গীত সুর করেছেন মার্ক স্ট্রেইটেনফেল্ড। এটি রিডলি স্কটের চলচ্চিত্রের তার তৃতীয় কাজ। অর্কেস্ট্রার অংশ রেকর্ড করা হয় ওয়ার্নার ব্রাদার্স স্টুডিওজের ইস্টউড স্কোরিং স্টেজে।[10]
চলচ্চিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিকভাবে ২০০৮ সালের ১০ অক্টোবর মুক্তি পায়।[11] টার্নার ব্রডকাস্টিং সিস্টেম তাদের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক টিবিএস ও টার্নার নেটওয়ার্ক টেলিভিশন-এ দেখানোর জন্য স্বত্ত্ব কিনে।[12]
ওয়ার্নার হোম ভিডিও ২০০৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বডি অফ লাইজ-এর ডিভিডি মুক্তি দেয়। একক ডিস্কে ইংরেজি, ফরাসি ও স্পেনীয় সাবটাইটেলসহ এবং দুই-ডিস্ক বিশেষ সংস্করনে পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও ঔপন্যাসিকের কিছু কথা ও বিহাইন্ড দ্য সিন প্রামাণ্যচিত্র দেওয়া হয়। ব্লু-রে সংস্করণেও চলচ্চিত্রের মূল বিষয়ের বর্ণনা দেওয়া হয়।[13]
বডি অফ লাইজ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার প্রেক্ষাগৃহে প্রথম সপ্তাহে $১২.৯ মিলিয়ন আয় করে, যা আশানুযায়ী ৪০% কম। সে সপ্তাহে ছবিটি ডিজনের বেবারলি হিলস চিহুয়াহুয়া ও সনি/স্ক্রিন জেমের কুয়ারেন্টাইন-এর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ আয় করে। ওয়ার্নার ব্রাদার্সের একজন বলেন ছবির শুরুর সপ্তাহে তিনি আশাহত এবং এর জন্য তিনি ছবির বিতর্কিত কাহিনীকে দোষারোপ করেন। ১৪ সপ্তাহ প্রেক্ষাগৃহে চলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে চলচ্চিত্রটি মোট $৩৯ মিলিয়ন আয় করে।[14]
উত্তর আমেরিকার বাইরে চলচ্চিত্রটি ভালো করে। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সপ্তাহে অক্টোবর ৯-১২, ২০০৮ $২,১০৪,৩১৯ আয় করে পিক্সার অ্যানিমেশনের ওয়াল-ই ও বেবারলি হিলস চিহুয়াহুয়া কে পিছনে ফেলে প্রথম স্থান দখল করে।[15] যুক্তরাজ্যে চলচ্চিত্রটি ২১-২৩ নভেম্বর প্রথম সপ্তাহে ৩৯৩ প্রেক্ষাগৃহে £৯৯১,৯৩৯ আয় করে কুয়ান্টাম ও সোলেস-এর পর দ্বিতীয় স্থান দখল করে।[16] সব মিলিয়ে চলচ্চিত্রটি উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে $৪০ মিলিয়ন ও সারাবিশ্বে $১১৫,০৯৭,২৮৬ আয় করে।[17]
বডি অফ লাইজ সমালোচকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করে। পর্যালোচনা সাইট রটেন টম্যাটোস-এ ২০৩টি পর্যালোচনার ভিত্তিতে চলচ্চিত্রটির রেটিং স্কোর ৫৪% এবং গড় রেটিং ৫.৮/১০।[18] মেটাক্রিটিক-এ ৩৭টি সমালোচনার ভিত্তিতে চলচ্চিত্রটির স্কোর ১০০-এ ৫৭, যা মিশ্র বা গড় সমালোচনা নির্দেশ করে।[19]
শিকাগো সান-টাইমসের রজার ইবার্ট চলচ্চিত্রটিকে ৪-এ ৩ দিয়েছেন এবং অভিনয়, লোকেশন ও সংলাপের প্রশংসা করেন কিন্তু কাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন যে এই ছবির কিছু অংশ দর্শক বিশ্বাস করলেও সন্দেহ রয়ে যাবে।[20] লস আঞ্জেলেস টাইমসের কেনেথ তুরানও একই কথা বলেন যে রিডলি স্কটের পরিচালনা, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও ও রাসেল ক্রোদের মত অভিনেতাদের অভিনয় ও মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিবাদী গল্প সবসময় দেখার মত, কিন্তু এই গল্প দিয়ে দর্শক ধরে রাখা কষ্টকর।[21] নিউ ইয়র্ক পোস্টের লু লুমেরিক বলেন এই গল্পে এমন কিছু নেই যা দর্শক আগে দেখে নি।[22] ডেনভার পোস্টের লিসা কেনেডি বলেন বডি অফ লাইজ এ-লিস্টের কাজ কিন্তু এর ফলাফল বি-লিস্টের।[23]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.