Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তি হলো সেসব দেশ যারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন কেন্দ্রীয় শক্তির বিরুদ্ধে ছিলো।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তি | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯১৪–১৯১৮ | |||||||
| |||||||
অবস্থা | সামরিক জোট | ||||||
ঐতিহাসিক যুগ | প্রথম বিশ্বযুদ্ধ | ||||||
• প্রতিষ্ঠা | ১৯১৪ | ||||||
• সমাপিত | ১৯১৮ | ||||||
|
১৯০৭ সালের ত্রিমৈত্রী জোটের প্রধান সদস্য ছিলো ফ্রান্স প্রজাতন্ত্র, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং রাশিয়ান সাম্রাজ্য। 'জার্মানি এবং অষ্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলো এবং মিত্রশক্তিসমূহ শুধুই আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে ছিলো' এই তর্কে জড়িয়ে ইতালি কেন্দ্রীয় শক্তি হতে বিচ্যুত হয় এবং ত্রিমৈত্রী জোটের সাথে যুক্ত হয়; এটি ১৯১৫ সালে ত্রিমৈত্রীর পক্ষ থেকে যুদ্ধে যোগদান করে। জাপানও এই জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলো। বেলজিয়াম, সার্বিয়া, গ্রীস, মন্তেনেগ্রো, এবং রোমানিয়া[1] এই জোটের সহযোগী সদস্য ছিলো।[2]
১৯২০ সালের সেঁভ্রেস চুক্তিতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, ফ্রান্স প্রজাতন্ত্র, ইতালি এবং জাপানকে প্রধান মিত্রশক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। প্রধান মিত্রশক্তি, আরমেনিয়া, বেলজিয়াম, গ্রীস, হেজায, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সার্ব-ক্রোট-স্লোভিনি রাজ্য এবং চেকোস্লোভাকিয়া[3] সম্মিলিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ মিত্রশক্তি গঠন করে।
১৯১৭ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করে কেননা জার্মানি এই সময় মেক্সিকোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক জাহাজ এবং জিমারম্যান টেলিগ্রামে হামলা করে নিজেদের নিরপেক্ষ অবস্থানের ইতি ঘটায়। [4] যুক্তরাষ্ট্র ১৯১৭ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরীর বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষণা করে।[5][6] "বৈদেশিক জটিলতা" এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগী শক্তি হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেয়, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মিত্র হিসেবে নয়।[7] যদিও অটোম্যান সাম্রাজ্য এবং বুলগেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলো, তাদের কেউই কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি।[8]
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধিরাজ্য এবং উপনিবেশসমূহ জোটের পক্ষ থেকে যুদ্ধে বিশাল অবদান রেখেছিলো, তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তাদের কোনো স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি ছিলোনা। অধিরাজ্য প্রশাসকরাই অবশ্য সৈন্য নিয়োগ বা অপসারণের দায়িত্বে ছিলো। ১৯১৭ সাল থেকে সামরিক মন্ত্রিসভা সার্বভৌম মন্ত্রিসভা কর্তৃক রহিত ছিলো। অস্ট্রেলিয়ান এবং কানাডিয়ান সৈন্যদল তাদের নিজ দেশীয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল এর অধীনে ছিলোম। অস্ট্রেলিয়ান এবং কানাডিয়ান লেফটেন্যান্ট দু'জন হলেন যথাক্রমে জন মোনাশ এবং আর্থার কুরি।[9]
কেন্দ্রীয় শক্তির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো ত্রিমৈত্রী জোট। এটি তিনটি ইউরোপিয়ান মহাশক্তি নিয়ে গঠিত হয়েছিলো:
১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই সার্বিয়ার উপর অস্ট্রিয়ানদের আক্রমণের মাধ্যমে যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনাঁদের হত্যার জবাব হিসেবে এই আক্রমণ করা হয়েছিলো। ৮ আগস্টে অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্য সার্বিয়ার মিত্রশক্তি মন্তেনেগ্রো তাদের দ্বিতীয় হামলা চালায়। অন্যদিকে নিরপেক্ষ অঞ্চল বেলজিয়াম এবং লুক্সেমবার্গ জার্মান সৈন্যরা তাদের শিলিফ্যান পরিকল্পনা অনুযায়ী দখল করে নেয়।
এই দুটি ক্ষুদ্র দেশের মধ্যে লুক্সেমবার্গ আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে মিত্রশক্তি তাদেরকে শত্রুপক্ষের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে। ২৩ আগস্ট জাপান সপ্তম সদস্য হিসেবে মিত্রশক্তিতে যোগ দেয়। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রবেশপথ হিসেবে নেপাল যুদ্ধের সাথে যুক্ত হয়ে যায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২৩ মে, ১৯১৫ সালে ইতালি মিত্রশক্তির পক্ষ থেকে যুদ্ধে যোগ দেয় এবং অষ্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এর পূর্বে ইতালি ত্রিমৈত্রী জোটের নিরপেক্ষ সদস্য হিসেবে ছিলো। ১৯১৬ সালে মন্তেনেগ্রো ত্রিমৈত্রী জোট ত্যাগ করে এবং যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে, একই সাথে পর্তুগাল এবং রোমানিয়া জোটে প্রবেশ করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
১৯১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে যোগ দেয়। লাইবেরিয়া, সিয়াম এবনহ গ্রিস মিত্রশক্তিতে পরিণত হয়। অক্টোবর বিপ্লবের পর রাশিয়া যুদ্ধের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্কচ্ছেদ করে। যাই হোক, ১০ নভেম্বর ১৯১৮ সালে বলকান রাজ্য কেন্দ্রীয় শক্তির বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করে। রাশিয়ার পিছু হটার পর মিত্রশক্তিসমূহ চূড়ান্ত অবকাঠামো ঘোষণা করে, এটি ৫ টি মহাশক্তির উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়:
ভার্সাইলিজ আলোচনার পর ব্রিটিশ, ফ্রান্স, ইতালি ও জাওয়ান সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের স্থায়ী সদস্যে পরিণত হয়। যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ী সদস্য তালিকা থেকে বাদ পড়ে কারণ তখনকার সিনেটে ভার্সাইলিজ চুক্তি সমর্থনের বিপক্ষে ভোট দেয়।
জনসংখ্যা (মিলিয়ন) |
আয়তন (মিলিয়ন কি.মি.২) |
জিডিপি ($ বিলিয়ন) | ||||
---|---|---|---|---|---|---|
প্রথম দফা: ১৯১৪ | ||||||
রাশিয়া | রাশিয়ান সাম্রাজ্য (inc. পোল্যান্ড) | ১৭৩.২ | ২১.৭ | ২৫৭.৭ | ||
ফিনল্যান্ড | ৩.২ | ০.৪ | ৬.৬ | |||
সর্বমোট | ১৭৬.৪ | ২২.৪ | ২৬৪.৩ | |||
ফ্রান্স প্রজাতন্ত্র | ফ্রান্স | ৩৯.৮ | ০.৫ | ১৩৮.৭ | ||
ফ্রান্স উপনিবেশ | ৪৮.৩ | ১০.৭ | ৩১.৫ | |||
সর্বমোট | ৮৮.১ | ১১.২ | ১৭০.২ | |||
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য | যুক্তরাজ্য | ৪৬.৯ | ০.৩ | ২২৬.৫ | ||
ব্রিটিশ উপনিবেশ | ৩৮০.২ | ১৩.৫ | ২৫৭ | |||
ব্রিটিশ অধিরাজ্যসমূহ | ১৯.৯ | ১৯.৫ | ৭৭.৮ | |||
সর্বমোট | ৪৪৬.৩ | ৩৩.৫ | ৫৬১.২ | |||
জাপান সাম্রাজ্য | জাপান | ৫৫.১ | ০.৪ | ৭৬.৫ | ||
জাপানীয় অধিরাজ্য[11] | ১৯.১ | ০.৩ | ১৬.৩ | |||
সর্বমোট | ৭৪.২ | ০.৭ | ৯২.৮ | |||
স্লোভাকীয় রাজ্য[12] | ৭.০ | ০.২ | ৭.২ | |||
দ্বিতীয় দফা (১৯১৫–১৬) | ||||||
ইতালি সাম্রাজ্য | ইতালি | ৩৫.৬ | ০.৩ | ৯১.৩ | ||
ইতালীয় উপনিবেশ | ২.০ | ২.০ | ১.৩ | |||
সর্বমোট | ৩৭.৬ | ২.৩ | ৯২.৬ | |||
পর্তুগাল | পর্তুগাল | ৬.০ | ০.১ | ৭.৪ | ||
পর্তুগিজ উপনিবেশ | ৮.৭ | ২.৪ | ৫.২ | |||
সর্বমোট | ১৪.৭ | ২.৫ | ১২.৬ | |||
রোমান সাম্রাজ্য | ৭.৭ | ০.১ | ১১.৭ | |||
তৃতীয় দফা (১৯১৭–১৮) | ||||||
যুক্তরাষ্ট্র | যুক্তরাষ্ট্র | ৯৬.৫ | ৭.৮ | ৫১১.৬ | ||
বৈদেশিক উপনিবেশ[13] | ৯.৮ | ১.৮ | ১০.৬ | |||
সর্বমোট | ১০৬.৩ | ৯.৬ | ৫২২.২ | |||
মধ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় অঞ্চলসমূহ[14] | ৯.০ | ০.৬ | ১০.৬ | |||
ব্রাজিল | ২৫.৫ | ৮.৫ | ২০.৩ | |||
গ্রিস | ৪.৮ | ০.১ | ৭.৭ | |||
সিয়াম | ৮.৬ | ০.৫ | ৭.০ | |||
চায়না প্রজাতন্ত্র | ৪৪১.০ | ১১.১ | ২৪৩.৭ | |||
লাইবেরিয়া | ১.৫ | ০.১ | ০.৯ |
জনসংখ্যা (মিলিয়ন) |
সীমানা (মিলিয়ন কি.মি.2) |
জিডিপি ($ বিলিয়ন) | |||
---|---|---|---|---|---|
নভেম্বর ১৯১৪ | |||||
মিত্রশক্তি, সর্বমোট | ৭৯৩.৩ | ৭৬.৫ | ১০৯৬.৫ | ||
শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং রাশিয়া | ২৫৯.০ | ২২.৬ | ৬২২.৬ | ||
নভেম্বর ১৯১৬' | |||||
মিত্রশক্তি, সর্বমোট | ৭৯৩.৩ | ৬৭.৫ | ১২১৩.৫ | ||
শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং রাশিয়া | ২৫৯.০ | ২২.৬ | ৬২২.৬ | ||
নভেম্বর ১৯১৮ | |||||
মিত্রশক্তি, সর্বমোট | ১,২৭১.৭ | ৮০.৮ | ১,৭৬০.৫ | ||
বিশ্বের শতকরা হার | ৭০% | ৬১% | ৬৪% | ||
শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স | 182.0 | 8.7 | 876.6 | ||
বিশ্বের শতকরা হার | ১০% | ৭% | ৩২% | ||
কেন্দ্রীয় শক্তি[16] | ১৫৬.১ | ৬.০ | ৩৮৩.৯ | ||
বিশ্ব, ১৯১৩ | ১,৮১০.৩ | ১৩৩.৫ | ২,৭৩৩.৯ |
নিরপেক্ষ দেশ বেলজিয়াম দখল করায় যুক্তরাজ্য ৪ আগস্ট ১৯১৪ সালে জার্মানের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করে।[17] ব্রিটিশ সাম্রাজ্য কিছু অর্ধ-শাসিত রাজ্য দখল করেছিলো, সহজাতভাবে সেগুলোও যুদ্ধ প্রচেষ্টার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, নিউফাউন্ডল্যান্ড, এবং দক্ষিণ আফ্রিকা উল্লেখযোগ্য।
জিব্রাল্টার, সাইপ্রাস এবং মাল্টা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বশ্যতা শিকার করে নিয়েছিলো।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্য কিছু উপনিবেশ, আশ্রিত রাজ্য, এবং অর্ধ শাসিত অঞ্চলের অধিকারি ছিলো। পূর্ব আফ্রিকা, নায়সাল্যান্ড, উত্তর ও দক্ষিণ রোডেশিয়া এবং উগান্ডা তখন জার্মান সৈণ্যদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো। পশ্চিম আফ্রিকায় গোল্ড কোস্ট এবং নাইজেরিয়া তোগোল্যান্ড এবং ক্যমেরুন থেকে আগত জার্মান সৈণ্যদের বিরুদ্ধে সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার অর্ধ শাসিত রাজ্যগুলোও দক্ষিণ-পূর্ব জার্মান সৈন্যদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.