প্রজেক্ট ৫২৩
From Wikipedia, the free encyclopedia
প্রজেক্ট ৫২৩ (অথবা কার্যাদেশ নং পাঁচশত তেইশ ; চীনা: 523项目)[1] ভিয়েতনাম যুদ্ধে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের ওষুধ উৎপাদনের স্বার্থে সাংস্কৃতিক পুনর্গঠনের ও এর পরবর্তী সময়ে চীন প্রজাতন্ত্র কর্তৃক পরিচালিত একটি গোপন সামরিক গবেষণার সাংকেতিক নাম।[2] ১৯৬৭ সালের মে মাসের (বছরের পঞ্চম মাস) ২৩ তারিখে যাত্রা শুরু করায় প্রজেক্টির এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। সেসময়ে যুদ্ধে নিহত সৈন্যের সংখ্যার চেয়ে ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত হয়ে বেশি সৈন্য মৃত্যুবরণ করায় এই রোগের ওষুধ আবিষ্কারের লক্ষ্য নিয়ে প্রজেক্ট ৫২৩ এর সৃষ্টি হয়।[3] ভিয়েতনাম প্রজাতন্ত্রের (সেসময়ে উত্তর ভিয়েতনাম) প্রধানমন্ত্রী হো চি মিনের নির্দেশনায় চীন প্রজাতন্ত্রের প্রিমিয়ার চৌ এনলাই “মিত্রদের সৈন্যবাহিনীকে যুদ্ধের উপযোগী রাখতে” প্রজাতন্ত্রের চেয়ারম্যান মাও সেতুং-কে ম্যালেরিয়া প্রতিকারে নতুন ওষুধের জন্য গণ গবেষণাপ্রকল্প চালু করতে রাজি করিয়ে ফেলেন। ৫০০ চীনা বিজ্ঞানীকে ডাকা হয়। প্রকল্পটিকে দুটি ধারায় বিভক্ত করা হয়। একটি ধারা সিনথেটিক যৌগের উন্নয়নে নিয়োজিত হয়, আরেকটি ধারা প্রথাগত চীনা ওষুধের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিয়োজিত থাকে। দ্বিতীয় ধারাটি বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়; তারা সরাসরি একটি নতুন ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী যৌগশ্রেণীর আবিষ্কার ও উন্নয়ন ঘটায় যার নাম আর্টেমিসিনিন[4] প্রকল্পটি ১৯৮১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করা হয়।
উচ্চ কার্যক্ষমতা, নিরপত্তা এবং স্থায়িত্বের জন্য আর্টেমিসিন যেমন আর্টেমিথার এবং আর্টেসুনেট; ফ্যালসিপ্যারাম ম্যালেরিয়া জনিত রোগের প্রতিকারে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হতে থাকে। এগুলোর সম্মিলিত ওষুধ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সমর্থিত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের তালিকার অন্তর্ভুক্ত। প্রজেক্টের সদস্যদের মধ্যে চৌ ইকিং ও তার দল চাইনিজ একাডেমী অফ মিলিটারি মেডিকেল সাইন্সের অণুজীববিজ্ঞান ও মহামারিবিদ্যা ইন্সটিটিউটে কোয়ারটেম (আর্টেমিথার-লিউমফ্যানট্রিন এর সমন্বয়ে তৈরি) নামক ওষুধের উন্নয়নের জন্য ২০০৯ সালে “অ-ইউরোপীয় দেশ” বিভাগে ইউরোপিয়ান ইনভেন্টর অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।[5] চায়না একাডেমী অফ চাইনিজ মেডিকেল সাইন্সের কিং হাওসু রিসার্চ সেন্টারের ইন্সটিটিউট অফ মেটারিয়া মেডিকা এর বিজ্ঞানী তু ইউইউ আর্টেমিসিন আবিষ্কারের জন্য ২০১১ সালে ল্যাস্কার-ডিবেকারি ক্লিনিকাল মেডিসিন রিসার্চ পুরস্কার এবং ২০১৫ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[6]