Loading AI tools
বলপ্রয়োগ বা জোরজবরদস্তি করে অপরের মধ্যে ভীতিসঞ্চার করা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পরপীড়ন বলতে কারও মধ্যে ভীতিসঞ্চার বা কারও উপর আধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্যে আক্রমণাত্মকভাবে বারংবার ক্ষমতার ব্যবহার, বলপ্রয়োগ, কর্তৃত্বের অপব্যবহার বা অন্যায় ব্যবহার করা বা করার হুমকি দেওয়াকে বোঝায়। এছাড়া বারংবার ঠাট্টা-মশকরার ছলে উত্ত্যক্ত করা, বারংবার হেয়সূচক ডাকনাম ধরে ডাকা, ক্রূর ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের পাত্র করা, সামাজিকভাবে একঘরে ও বিচ্ছিন্ন করা, খারাপ গুজব ছড়ানো -- এই ধরনের ব্যবহারও পরপীড়নের সংজ্ঞার অন্তর্গত বলে গণ্য করা হয়।[1] সাধারণত এ ধরনের ব্যবহার বারংবার ও অভ্যাসগতভাবে করা হয়। যে ব্যক্তি এরূপ আচরণ করে, তাকে পরপীড়ক বলে। এর একটি পূর্বশর্ত হল পরিপীড়কের কাছে এরকম মনে হওয়া যে শারীরিক বা সামাজিক ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। পরপীড়ন তাই সংঘাত থেকে ভিন্ন।[2][3]
এই নিবন্ধটি অন্য একটি ভাষা থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
পরপীড়নকে আক্রমণাত্মক বা আগ্রাসী আচরণের একটি উপশ্রেণী হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এটিকে ন্যূনতম তিনটি মানদণ্ড দিয়ে বৈশিষ্ট্যায়িত করা সম্ভব: (১) শত্রুভাবাপন্ন সংকল্প, (২) ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা এবং (৩) কোনও নির্দিষ্ট সময়কাল ধরে পুনরাবৃত্তি।[4]
বাংলা ভাষাতে পরপীড়ন বোঝাতে বহু শব্দ ও শব্দগুচ্ছ রয়েছে, যেমন - ভীতি প্রদর্শন, বলপ্রয়োগের হুমকি, শাসানি, চোখপাকানি, চোখরাঙানি, তর্জন-গর্জন, ধমকানি, দাবড়ানি, হুমকি-ধামকি, মাস্তানি, মাতব্বরি, দাদাগিরি, গলাবাজি, চোটপাট, হম্বিতম্বি, মামদোবাজি, ইত্যাদি। এগুলির মধ্যে সূক্ষ্ম অর্থভেদ আছে।
শারীরিক, মানসিক অথবা আবেগিকভাবে যেকোন ব্যক্তিকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত আগ্রাসী আচরণের পুনরাবৃত্তিমূলক কাজই হলো পরপীড়ন। একক থেকে গোষ্ঠী পর্যায়ে একের পর এক পরপীড়নের ব্যাপ্তিকে মাস্তানি বলে। যাতে পরপীড়কদের এক বা একাধিক প্রতিনিধি থাকে যারা প্রাথমিক পরপীড়কদের কাজে সহায়তা করতে ইচ্ছুক থাকে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলে পরপীড়ন করাকে সমকক্ষীয় অবব্যবহার (পিয়ার অ্যাবিউজ) হিসেবে গণ্য করা হয়।[5] রবার্ট ডব্লিউ ফুলের বিশ্লেষণ করে দেখান যে, পদমর্যাদাজাত দুর্ব্যবহার (র্যাংকিজম) এক ধরনের পরপীড়ন। নরওয়ের গবেষক ড্যান ওবায়েস বলে, পরপীড়ন ঘটে যখন একজন ব্যক্তি "এক বা একাধিক ব্যক্তির দ্বারা প্রকাশিত, বারবার এবং অতিরিক্ত মাত্রায় নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের অংশ হয়"।[6] এবং এই নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ঘটে যখন একজন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য ব্যক্তিকে শারীরিক স্পর্শ, শব্দ বা অন্য যেকোন উপায়ে আঘাত করে অথবা অস্বস্তি প্রদান করে।
বিশেষ করে এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির ওপর যে কোনওভাবে কতৃত্ব অর্জন করতে পরপীড়নমূলক কাজ করে থাকে।[7]
মানুষের একে অরের সাথে যোগাযোগের যেকোন ক্ষেত্রে এই পরপীড়নমূলক সংস্কৃতিগড়ে ওঠে। এটি হতে পারে বিদ্যালয়, পরিবার, কর্মস্থল,[8] বাড়ি এবং আশপাশ। সাম্প্রতিক সময়ে পরপীড়ন করার মূল ক্ষেত্র হয়ে উঠছে সামাজিক মাধ্যম ওয়েবসাইট সমূহ।[9] ২০১২ সালে আমেরিকান কিশোর ফুটবলারদের নিয়ে এক গবেষণায় দেখা যায় “সবচেয়ে শক্তিশালী নির্দেশক ছিল এটা উপলব্ধি করা যে একজন খেলোয়ারের সবচেয়ে প্রভাবশালী সত্ত্বাটি এই বর্বর আচরণের অনুমোদন করবে কিনা। “[10]
পরপীড়ন বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতিতে হতে পারে। যুক্তরাজ্যে পরপীড়নের কোন সঠিক সংজ্ঞা নেই, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মত কিছু রাষ্ট্রে এর বিরুদ্ধে আইন রয়েছে।[11] পরপীড়ন মূলত চার ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে- মনস্তাত্ত্বিক (কিছুক্ষেত্রে আবেগিক অথবা সম্বন্ধযুক্ত), মৌখিক, শারীরিক এবং আন্তর্জালীয়।[12] আধিপত্য প্রমাণ করার জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে উদ্দেশ্য করে শারীরিক আক্রমণ, বল প্রয়োগ, মৌখিক নির্যাতন অথবা হুমকি এবং এই ধরনের কাজ বারবার করে। সামাজিক শ্রেণী, বর্ণ, ধর্ম, সামাজিক লিঙ্গ , যৌন দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যক্তিত্ব, সম্মান, বংশ, শক্তি, আকৃতি অথবা সক্ষমতার[13] পার্থক্য এই ধরনের আচরণের যুক্তিযুক্ত কারণ। যখন পরপীড়ন মূলক আচরণ দলবদ্ধভাবে করা হয় এটিকে বলা হয় মাস্তানি।[14]
এই অনুচ্ছেদ অংশটির রচনাশৈলী সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। |
পরপীড়নের ইংরেজি পরিভাষাটি হল "বুলিইং" (Bullying), আর যে পরপীড়ন করে, তাকে "বুলি" (Bully) বলে। "বুলি" শব্দটি ইংরেজি ভাষায় ১৫৩০-এর দশকে সর্বপ্রথম "প্রিয়" বা "প্রিয়া" (সুইটহার্ট Sweetheart) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং উভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়ছিল। ওলন্দাজ ভাষার শব্দ "বুল" (boel) থেকে (যার অর্থ ভাই বা প্রেমিক) সম্ভবত মধ্য উচ্চ জার্মান "বুওলে" (buole, অর্থাৎ "ভাই") তুলনামূলক কম অনিশ্চিত উৎস (তুলনা করা হয় জার্মান buhle "lover")। ১৭তম শতাব্দীতে " fine fellow", "blusterer", "to harasser of the weak" এর মাধ্যমে নিন্দার্থে প্রকাশিত হওয়া শুরু করেছিল। এটি "lover" এবং "ruffian" এর মধ্যে "protector of a prostitute " হিসেবে একটি সংযোগ স্থাপন করে, যা "bully" সম্পর্কে একটি বোধ তৈরি করে ( যদিও এটি ১৭০৬ সাল পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি)। "To bully" ক্রিয়াটি ১৭১০ সালে সর্বপ্রথম সত্যায়িত।[15] অতীতে মার্কিন সংস্কৃতিতে এই পদটি ভিন্নার্থে ব্যবহৃত হত, যেমন বিস্ময় / পরামর্শ, বিশেষত এর সাথে সংযুক্ত বিখ্যাত থিওডোর রুজভেল্ট [16] এবং বর্তমানে bully pulpit এর মধ্যেও এটি চলমান।
এই অনুচ্ছেদ অংশটির রচনাশৈলী সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। |
একক পরপীড়ন চার ভাগে বিভক্ত। সামষ্টিক পরপীড়ন মাস্তানি নামে পরিচিত এবং এটি একক পরপীড়ন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।
ব্যক্তির জীবনে শারীরিক, মৌখিক এবং সম্বন্ধীয় পরপীড়ন প্রাথমিক পর্যায়ে সর্বাধিক প্রচলিত এবং এটি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে পরবর্তী জীবনেও চলমান থাকে।
একক
একজন একক ব্যক্তির দ্বারা একটি লক্ষ্য বা লক্ষ্যবস্তুকে ব্যক্তিগত ভাবে পরপীড়নের কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।
শারীরিক
যে কোন ধরনের পরপীড়ন যা যে কারো শরীরে আঘাত অথবা তাদের অধিকারের ক্ষতি করা। চুরি, ধাক্কাধাক্কি, আঘাত, মারামারি অথবা সম্পদের যে কোন ধ্বংস হলো শারীরিক পরপীড়ন। শারীরিক পরপীড়ন কদাচিৎই একজন লক্ষ্যের প্রথম অভিজ্ঞতা হয়। প্রায়শই পরপীড়ন বিভিন্ন ভাবে শুরু হয়। শারীরিক পরপীড়নে পরপীড়ক প্রধানত তার শরীর ব্যবহার করে লক্ষ্যকে আক্রমণ করে থাকে।
মাঝেমাঝে প্রাপ্তবয়স্কদের দল কিছু কুসংস্কারের কারণে একটি জোড়াকে লক্ষ্য ও আলাদা করে দেয়। এতে পরিস্থিতি দ্রুত এমন দিকে যায় যেখানে তারা তাদের সহপাঠীদের দ্বারা বিদ্রুপ, নির্যাতন এবং মারের শিকার হয়। শারীরিক পরপীড়ন প্রায়শই সময়ের সাথে দ্রুত বাড়তে থাকে এবং এটি একটি ক্ষতিকর পরিণতি ঘটাতে পারে এবং অনেকেই এটির বৃদ্ধি রোধ করে এটি বন্ধ করতে চেষ্টা করেন।[17]
মৌখিক
কথা বলার দ্বারা সংঘটিত যেকোন পরপীড়ন। নাম ধরে ডাকা, গুজব ছড়ানো, কাউকে হুমকি দেওয়া, এবং অন্যদের নিয়ে মজা করা এই সবকিছু মৌখিক পরপীড়নের অন্তর্ভুক্ত। মৌখিক পরপীড়ন সর্বাধিক প্রচলিত পরপীড়নের একটি ধরন। মৌখিক পরপীড়নে পরপীড়ক তার কণ্ঠের ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে, মৌখিক পরপীড়ন উভয় জেন্ডারের ক্ষেত্রে হয়, কিন্তু মেয়েরা এটি বেশি সম্পাদিত করে। মেয়েরা সাধারণত, ছেলেদের তুলনায় সূক্ষ্মভাবে অপমান করে। অন্য ব্যক্তিদের উপর আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য মেয়েরা মৌখিক নির্যাতন করে, সামাজিক ভাবে বর্জনীয় কৌশল ও ব্যবহার করে। তবে, এখানে যথেষ্ট সূক্ষ্মতা সম্পন্ন অনেক ছেলে আছে যারা নির্যাতন করার জন্য মৌখিক কৌশল গুলো ও ব্যবহার করে এবং কারো মাধ্যমে শারীরিক পরপীড়ন আসাকে এড়িয়ে যেতে চায় তখন তারা শব্দের ব্যবহার করে।[18]
সম্বন্ধীয়
যেকোন ব্যক্তির সম্মান অথবা সামাজিক অবস্থানকে বিভিন্ন কৌশল যা হতে পারে শারীরিক অথবা মৌখিক পরপীড়ন এর মাধ্যমে ইচ্ছেকৃত আঘাত করার মত যে কোন ধরনের পরপীড়ন। সাধারণত, সম্বন্ধীয় পরপীড়ন তরুণদের করা হয় কিন্তু বিশেষত মেয়েরা এর শিকার। সামাজিক অবস্থান উচ্চ করা এবং অন্যদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পরপীড়কে সম্বন্ধীয় পরপীড়নকে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। শারীরিক পরপীড়ননের বিপরীত যা সুস্পষ্ট, সম্বন্ধীয় পরপীড়নে তা প্রকাশ্য নয় এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলমান থাকতে পারে যা লক্ষ্য করা যায় না।[19]
পরিগণকীয় পরপীড়ন পরিগণক (কম্পিউটার) ও আন্তর্জাল (ইন্টারনেট) প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়রানি, হুমকি দেওয়া, বিব্রত করে অথবা অন্য ব্যক্তিকে লক্ষ্য হলো পরিগণকীয় (সাইবার) পরপীড়ন। যখন একজন প্রাপ্তবয়স্ক এর সাথে যুক্ত থাকে তখন এর সংজ্ঞা হয় পরিগণকীয় (সাইবার) হয়রানি অথবা সাইবার স্ট্যাকিংয়ের এমন একটি অপরাধ যা আইনি পরিণতি পেতে পারে এবং কারাদণ্ড হতে পারে।[20]
সামষ্টিক
সামষ্টিক পরপীড়ন এর কৌশল হলো একাধিক ব্যক্তি একটি লক্ষ্য অথবা লক্ষ্য গুলির বিরুদ্ধে কাজ করা। সামাজিক মাধ্যমে ট্রোলিং আচরণ, যদিও সাধারণত নিয়মিক পাঠক দ্বারা স্বাভাবিক ধরা হয়, এটি মাঝেমাঝে অ্যাস্ট্রোটুরফারদের পৃষ্টপোষকতায় সংগঠিত হয়।
মাস্তানি
মাস্তানি বলতে যে কোন ব্যক্তিকে একটি দলের দ্বারা পরপীড়ন, যেকোন ক্ষেত্রে যেমন হতে পারে একটি পরিবার, সমবয়সী দল, বিদ্যালয়, কর্মস্থল, প্রতিবেশীগণ, সম্প্রদায় অথবা অনলাইন। যখন এটি কর্মস্থলে সংবেদনশীল আপত্তি হিসেবে ঘটে, সহকর্মী, অধস্তন অথবা উর্ধ্ববতন দ্বারা। " গ্যাং আপ এর মত"। গুজব ছড়ানো, পরোক্ষ ইঙ্গিত, ভয় দেখানো, অপমান, কুখ্যাত ও বিছিন্নতার মাধ্যমে কাউকে কর্মস্থলে জোর করা, এটিকে ক্রূর, অযৌক্তিক জাতিগোষ্ঠীগত নয়/ জাতিগোষ্ঠী সাধারণ হয়রানি হিসেবেও উল্লেখ্য করা যায়।
পরপীড়ক ও সহযোগী
গবেষণায় দেখা যায় যে, হিংসা ও বিরক্তি পরপীড়নের কারণ, পরপীড়কদের আত্মসম্মান নিয়ে গবেষণা কিছু সমালোচনা মূলক ফলাফল এনেছে যেখানে কিছু পরপীড়ক অহংকারী এবং আত্মরতিমূলক, তারা পরপীড়নকে গোপন, উত্তেজনাপূর্ণ অথবা আত্মসম্মান বৃদ্ধির উপায় হিসেবে ব্যবহার করে, যার দ্বারা অন্যজনকে আপত্তিজনক ভাবে অবমাননা করে নিজেকে ক্ষমতাশালী মনে করে। পরপীড়করা হিংসা করে অথবা নিজেরা নিজেদেরকে বোকা ভাবে। মনোবিজ্ঞানী রায় বাউমিস্টার দাবি করে যে, ব্যক্তিদের অবমাননাকর আচরণের মাধ্যমে তারা নিজেরা গর্বিত কিন্তু ঠুনকো অহংবোধ সম্পন্ন। কারণ তারা নিজেদেরকে খুব উচ্চস্তরের চিন্তা করে, তারা বেশিরভাগ সময়ই অন্য লোকজন থেকে সমালোচনা এবং শ্রদ্ধা আশা করে যার অভাবে তারা ক্ষুব্ধ হয় এবং প্রতিক্রিয়া স্বরূপ নির্যাতন এবং অপমানের সাথে অসম্মান করে।
গবেষকেরা কিছু ঝু্ঁকিপূর্ণ উপাদান চিহ্নিত করেছে যেমন হতাশা, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার, দ্রুত রেগে যাওয়া এবং জোর প্রয়োগ করা, আগ্রাসী মূলক আচরণের প্রতি আকর্ষণ, অন্যদের কাজের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ আচরণ, নিজস্ব ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার প্রতি সচেতনতা এবং ঘোরাচ্ছন্ন, কঠোরতা। এই সকল উপাদান একত্রিত হয়ে এই আচরণের সৃষ্টি হয়। যুব সমাজের উপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, সমাজ বিরোধী বৈশিষ্ট্য এবং হতাশার সংযোগই তরুণ সহিংসতার সবচেয়ে বড় পূর্বাভাস। যেখানে ভিডিও গেম সহিংসতা এবং টেলিভিশন সহিংসতার প্রকাশগুলো এই আচরণের পূর্বাভাস ছিল না।
পরপীড়ন পরপীড়কের জিনগত প্রবণতা বা মস্তিষ্কের অস্বাভাবিকতার ফসল। যখন পিতামাতা আবেগের সঠিক উন্নয়ন এবং আগ্রাসী আচরণ নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী সাহায্য করতে পারে। কিছু সন্তান পরিবারের অনিরাপদ সংযুক্তি, অপ্রয়োজনীয় নিয়মানুবর্তিতা এবং পরিবেশের উপাদান যেমন পারিবারিক জীবনে চাপ এবং সহোদরের শত্রুতা সহ বিভিন্ন কারণে দক্ষতাগুলোর বিকাশ ঘটাতে পারে না। ডাঃ কুক বলেছেন, "একজন পরপীড়ক অন্যদের সাথে সমস্যা সমাধানে অসুবিধাগ্রস্ত হয় এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও অসুবিধাগ্রস্ত হয়। সাধারণত ছেলে এবং মেয়ে একে অন্যের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিশ্বাস পোষণ করে। তারা নেতিবাচকতা অনুভব করে, যা এসেছে পরিবারের দ্বন্দ্বপূর্ণ পরিবেশ এবং পিতামাতার সঠিকভাবে দেখাশুনার অভাব, বিদ্যালয়কে নেতিবাচক ভাবে দেখা এবং সমবয়সীর নেতিবাচক প্রভাব দ্বারা।
সাধারণ দর্শক
প্রায়শই একটি বিশাল সংখ্যক দর্শকদের উপস্থিতিতে পরপীড়নের ঘটনা ঘটে। বহুক্ষেত্রে পরপীড়ক অধিকাংশের সমর্থন আদায় করার ক্ষমতা রাখে যার প্রতিরোধে দর্শকদের "কথা বলার" ভীতি জেগে ওঠে। "পরপীড়ন মানসিকতা " কোন ও প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাথমিক গোষ্ঠীকে চ্যালেঞ্জ করা না হলে এটি প্রায়শই দলের মধ্যে একটি স্বীকৃত আদর্শ হয়ে ওঠে।
যদি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে পরপীড়নের সময় প্রায়শই কয়েক মাস, কয়েক বছর বা তার ও বেশি সময় ধরে দলের মধ্যে স্থায়ী হয়। দর্শকদের মধ্যে যারা এই খারাপ আচরণের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের নিজস্ব "বন্ধুত্ব গোষ্ঠী " বা "সহায়তা গ্রুপ" প্রতিষ্ঠা করেছে তাদের পরপীড়কদের তুলনায় বেশি সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হয়।
ভুক্তভোগী
একজন সাধারণ ভুক্তভোগী সাধারণত আক্রমণাত্মক, সামাজিক দক্ষতার অভাব, নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, সামাজিক সমস্যা সমাধানে অসুবিধাগুলি অনুভব করে, একটি নেতিবাচক পরিবার, স্কুল এবং সম্প্রদায়ের পরিবেশ থেকে আসা এবং সহকর্মীদের দ্বারা লক্ষণীয়ভাবে প্রত্যাখ্যান ও বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভুক্তভোগীদের প্রায়শই শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হওয়ার পাশাপাশি আবেগগতভাবে সহজেই হতাশ হওয়ার মতো বৈশিষ্ট্য থাকে। তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যও থাকতে পারে যা তাদের পরপীড়কদের কাছে সহজ টার্গেট তৈরি করে যেমন বেশি ওজন হওয়া বা কোনও ধরনের শারীরিক বিকৃতি থাকা। ছেলেরা শারীরিক হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং অপ্রত্যাশিতভাবে মেয়েদের ধর্ষণ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কুক দ্বারা পরিচালিত এবং ২০১০ সালে আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা প্রকাশিত একটি মেটা-বিশ্লেষণের ফলাফলগুলি শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের পরপীড়ন করার জন্য মূল ঝুঁকির কারণ হিসেবে এবং পরপীড়ক হওয়ার জন্যও সামাজিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতার অভাব বলে মনে করেছে। [21]
ধোঁকাবাজি করার জন্য শিশুরা প্রায়শই শারীরিক বা মানসিক লক্ষণগুলি দেখায় যেমন: স্কুলে যেতে ভয় পাওয়া, মাথাব্যথার অভিযোগ করা বা ক্ষুধা কমে যাওয়া, স্কুল কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহের অভাব এবং বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সাথে সময় কাটাতে এবং সর্বোপরি দুঃখবোধ তৈরি করে।
ডুবলিনের ত্রিনিতি কলেজে পরপীড়ন বিরোধী কেন্দ্রের মোনা'ও মোর লিখেছেন, এখানে গবেষণার একটি ক্রমবর্ধমান সংস্থা রয়েছে, যা নির্দেশ করে যে ব্যক্তি, শিশু অথবা প্রাপ্তবয়স্ক যেই হোক না কেন যারা ক্রমাগত আপত্তিজনক আচরণের শিকার হয় তারা চাপজনিত অসুস্থতা ঝুঁকিতে থাকে যা অনেকসময় আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়। যারা পরপীড়নের লক্ষ্য হয়ে থাকে তারা আবেগিক এবং আচরণগত সমস্যায় ভোগে। পরপীড়নের কারণে নিঃসঙ্গতা, হতাশা, উদ্বেগ, আত্ম সম্মান কমে যায় এবং অসুস্থতার প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। তরুণ ছেলে মেয়েদের সামঞ্জস্যহীনতার কারণ হিসেবে ও পরপীড়ন এবং যারা পরপীড়কদের দ্বারা পরপীড়নের লক্ষ্য হয় তারা ও নিজেদেরকে বৃহৎ একটি সামাজিক সমস্যায় দেখতে পায়। একটি মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, খাবারের অস্বাভাবিকতা, উদ্বেগ, দেহের ডিমোর্ফিয়া এবং অন্যান্য নেতিবাচক মানসিক প্রভাবের সাথে ও পরপীড়ন যুক্ত।
আত্মহত্যা
যদিও এখানে প্রমাণ রয়েছে যে, পরপীড়ন আত্মহত্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে, পরপীড়ন আত্মহত্যার একক কারণ নয়। যে সকল ছেলে মেয়ে পরপীড়িত তাদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রধান কারণ হতাশা। কেবল যুক্তরাজ্যের ১৫ থেকে ২০ জন শিশু আত্মহত্যা করে কারণ তারা পরপীড়নের শিকার হয়। নেটিভ আমেরিকান, আলস্কান নেটিভ, এশীয় আমেরিকান, এল জি বি টি গ্রুপের লোকদের মধ্যে উচ্চতর মাত্রায় আত্মহত্যার ঝুঁকি রয়েছে। যখন কেউ পরিবার এবং বন্ধুদের সমর্থন পায় না, এটা ভুক্তভোগী হওয়ার মত অবস্থা সৃষ্টি করে।
নিউইয়র্ক এর নিজস্ব প্রতিবেদন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ১২ তম গ্রেড সমাপ্তকারী থেকে ৯ম গ্রেডের পরপীড়কদের মধ্যে যারা পরপীড়নের শিকার হয়েছে তাদের তুলনায় পরপীড়কদের মধ্যে অধিক হতাশাজনক লক্ষণ এবং মনস্তাত্ত্বিক অসুবিধা রয়েছে। ছেলে এবং মেয়ে উভয়েই যারা সকল ধরনের পরপীড়নের সাথে জড়িত তারা কিছু বছর পরেও হতাশ। প্রাথমিক সমীক্ষার ২ বছর পরে ফিনিশ কিশোরদের নিয়ে আরো একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, যারা কখনো পরপীড়নের শিকার হয়েছে তাদের মধ্য হতাশা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা অতিমাত্রায়।
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপর করা একটি অনুদৈর্ঘ্য গবেষণায় বলা হয়েছে, যে সকল ছেলেরা পরপীড়নের শিকার, যারা শিকার এবং পরপীড়ক উভয়ের ভূমিকা পালন করে তাদের অন্যান্যদের তুলনায় হতাশা এবং আত্মহত্যা করার প্রবণতার মাত্রা বেশি। বোস্টনের উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে শিক্ষার্থীরা পরপীড়নের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে, তারা পরপীড়নের শিকার যারা হয়নি তাদের থেকে আত্মহত্যার বিষয়টি কম বিবেচনা করেছে। এই সমীক্ষায় আরো বলা হয় যারা অপরাধী, ভুক্তভোগী ও অপরাধী তারাই আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি নেয়। তরুণেরা যেখানে বসবাস করে সেখানেও পরপীড়ন অভিজ্ঞতার পার্থক্য রয়েছে। যারা শহরে বসবাসকারী তাদের মধ্যেই আত্মহত্যার ইচ্ছা মাত্রা বেশি। আমেরিকার একটি জাতীয় গবেষণায় ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা সাইবার পরপীড়নের শিকার হয় তারা উচ্চতর হতাশায় আছে যারা অন্যান্যভাবে পরপীড়নের শিকার হয় তাদের তুলনায়।
যদি কোনো কিশোরকে পরপীড়ন করা হয় এবং হতাশার লক্ষণগুলি পাওয়া যায় তবে এটি প্রশ্ন করা উচিত এবং হস্তক্ষেপগুলি কার্যকর করা উচিত। ডেনিশ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যেসব বাচ্চাদের পরপীড়ন করা হয়েছে, তারা তাদের বাবা-মা এবং শিক্ষকদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছিল এবং কেউ কেউ শিক্ষক বা পিতামাতার হস্তক্ষেপের পরে পরপীড়নের বা হুমকির ঘটনা বন্ধ হওয়া প্রত্যক্ষ করেছে। গবেষণাটি বিদ্যালয় প্রোগ্রাম-সহযোগিতাগুলি বাস্তবায়নের গুরুত্বের উপর জোর দেয় যাতে এটি ঘটে তখন যথাযথভাবে হস্তক্ষেপ করতে এবং সঠিকভাবে হস্তক্ষেপ করার জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং পরপীড়ন- বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। গবেষণায় যারা পরপীড়নমূলক আচরণের শিকার তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য পিতামাতা এবং শিক্ষকদের পরপীড়কদের সাথে তাদের পরপীড়ন মূলক আচরণ সম্পর্কে কথা বলার গুরুত্বও দেখায়। কিছু লোক পরপীড়ন উপেক্ষা করা খুব সহজ বলে মনে করেন, অন্যদের কাছে এটি খুব কঠিন এবং এটি একটি চূড়ান্ত পর্যায়েও পৌঁছাতে পারে। গণমাধ্যমের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্টে পরপীড়নের কারণে আত্মহত্যার প্রমাণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রায়ান হলিগান, ফোবি প্রিন্স, ডন-মেরি ওয়েসলি, নিকোলা অ্যান রাফেল,[22] মেগান মিয়ার, অড্রি পট, টাইলার ক্লেমেন্তি, জেমি রোডেমায়ার, কেনেথ ওয়েশুহান, জাদিন বেল, কেলি ইয়োম্যানস, রেহাতে পার্সন, আমান্ডা টড, ব্রোডিলেক, জেসিকা হাফার, হামেদ নাস্তোহ, স্লাদজানা বিদোভিচ, এপ্রিল হিমস, চেরিস মোড়ালেজ এবং রেবেকা আন সেডউইক। শিক্ষার জন্য আত্মহত্যা সচেতনতার কণ্ঠস্বর অনুসারে, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী যুবকদের জন্য মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ আত্মহত্যা। 16 শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী আত্মহত্যাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে, ১৩ শতাংশ একটি পরিকল্পনা তৈরি করে এবং ৮ শতাংশ গুরুতর চেষ্টা করেছে।
ইতিবাচক উন্নয়ন
কেউ কেউ তর্ক করেন যে পরপীড়ন জীবনের পাঠ শেখায় এবং শক্তি দেয়। শিশু উন্নয়ন সংস্থার হেলেন্ড গান্ডবার্গ বিতর্ক ছড়িয়ে দিয়েছিলেন যখন তিনি যুক্তি দেন যে পরপীড়ন এর লক্ষ্য হওয়ায় একটি শিশুকে শিক্ষা দেয় "কীভাবে বিতর্ক গুলো পরিচালনা করতে হয় এবং অন্যদের সাথে মিথস্ক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়" এবং শিক্ষকদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় কিন্তু পরপীড়নের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া উচিত।
এটি লক্ষ্য হতে পারে এবং অন্যের কাছে এই জাতীয় পরপীড়ন বিরোধী নির্যাতন মোকাবিলার দক্ষতার শিক্ষা হলো ঘটনার হারগুলি হ্রাস করার একটি কার্যকর দীর্ঘমেয়াদী উপায় এবং স্বতন্ত্রের জন্য একটি মূল্যবান দক্ষতা-ক্রম হিসাবে প্রমাণ।
হরমোন সংক্রান্ত
পরিসংখ্যানের দিক থেকে, বয়স এবং যৌবনের নিয়ন্ত্রণ ফলাফল নির্দেশ করে যে গড়ে মৌখিকভাবে পরপীড়ক মেয়েরা কম টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করে এবং মৌখিকভাবে পরপীড়ক ছেলেরা অন্যদের তুলনায় অধিক টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করে।
অন্ধকার ত্রিভুজের গবেষণায় (আত্মরতি, প্রতারক, মানসিক অস্থিরতা ব্যাধিগ্রস্থ) নির্দেশ করে পরপীড়কদের সাথে বিরূপ প্রকৃতির প্রমাণ সংযুক্ত আছে।[23]
একজন পরপীড়ক তার নিজের দুর্বলতার বোধ থেকে পরপীড়নমূলক কার্যক্রম চালায়। একজন পরপীড়ক তার ঘৃণ্য কার্যকলাপ লক্ষ্য করা সত্ত্বেও এই জাতীয় নেতিবাচকতার আসল উৎস চূড়ান্তভাবে পরপীড়কের নিজের নিরাপত্তাহীনতা এবং দুর্বলতা। এরকম আগ্রাসী প্রবণতা বাস্তুচ্যুত নেতিবাচক আবেগগুলো ঘটতে পারে ক্ষুদ্র স্তরের যে কোন জায়গায়, ক্ষুদ্র স্তর থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি অথবা আন্তর্জাতিক সশস্ত্র ক্ষেত্রে ও।
সমবয়সীদের মধ্যে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া ও পরপীড়ন হতে পারে যেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে আগ্রাসন, হয়রানি এবং নির্যাতন। পরপীড়ন সাধারণত ভুক্তভোগীর চেয়ে ক্ষমতায় অবস্থিত লোকদের দ্বারা সংঘটিত পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ। একটি ক্রমবর্ধমান গবেষণা সংস্থা, পরপীড়ন এবং আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা (ই আই) এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখিয়েছে। মায়ের এটি এল (২০০৪) ই. আই. কে সামগ্রিক ভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে যে, "সঠিকভাবে আবেগ উপলব্ধি করা, ভালো চিন্তায় আবেগের ব্যবহার, আবেগ বুঝতে পারা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা"। এই ধারণাটি আবেগ এবং বুদ্ধিমত্তাকে সমন্বিত করে। পরপীড়ক অথবা পরপীড়ন ভুক্তভোগীর নিম্ন আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা পরপীড়নের সাথে জড়িত। ই. আই পরপীড়ক ও পরপীড়িতের আচরণে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ই. আই নির্যাতন কমিয়ে আনতে পারে, ই. আই শিক্ষা পরপীড়ন রোধে এবং আবিষ্কার এবং পদক্ষেপের উন্নয়ন করতে পারে।
সাইবার পরপীড়ন
প্রযুক্তির মাধ্যমে করা যে কোন পরপীড়ন হলো সাইবার পরপীড়ন। সঠিক দেখাশুনা, কর্তৃপক্ষের অভাবে এই ধরনের পরপীড়ন ধরা পড়েনা, কারণ পরপীড়ক এখানে নিজেকে অন্যরূপে জাহির করে, এটি অপ্রকাশিত ভাবে পরপীড়নের ক্ষেত্র। সাইবার পরপীড়নে অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু এটির কোন সীমা নেই, ইমেইলের অপব্যবহার, তাৎক্ষণিক বার্তা, লিখিত বার্তা, ওয়েবসাইট, সামাজিক মাধ্যমের সাইট ইত্যাদি। ফেসবুক, মাইস্পেস, ইন্সটাগ্রাম এবং টুইটার সহ উদ্ভাবিত সামাজিক নেটওয়ার্ক এ সাইবার পরপীড়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু কিছু রক্ষী সংস্থা এমনভাবে তৈরি যাতে সাইবার পরপীড়ন ছড়িয়ে পড়ছে।
অক্ষমতায় পরপীড়ন
এটা লক্ষণীয় যে অক্ষম ব্যক্তিরা অসামঞ্জস্যহীনভাবে পরপীড়িত এবং গালাগালি পেয়ে থাকে, এই ধরনের পরপীড়ন ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। এই পরপীড়নে কেবলমাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরাই সীমাবদ্ধ নয়, এমনকি যারা হুইলচেয়ার ব্যবহার করে অথবা শারীরিকভাবে অঙ্গহীন যেমন ঠোঁট কাটা, কিন্তু আরো রয়েছে শিখন প্রতিবন্ধী, যেমন অটিজম, ডেভেলপমেন্ট কোঅর্ডিনেশন ডিজঅর্ডার।
এখানে আরো একটা সমস্যা সংযুক্ত আছে, যারা শিখন প্রতিবন্ধী তারা কাউকে বোঝাতে পারেনা, যদিও তারা অভিযোগ করে কিন্তু অবিশ্বাসী অথবা অবহেলিত হয়।[24]
সমকামী পরপীড়ন
একজন ব্যক্তি অথবা দল যে কোন গে অথবা লেসবিয়ানকে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে মৌখিক অথবা শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে পরপীড়ন করাকে সমকামী পরপীড়ন বা সমকামী প্রহার আখ্যায়িত করা হয়
আইনি পরপীড়ন
আইনি পরপীড়ন কোনও ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তি দেওয়ার জন্য এক উদ্বেগজনক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে আসে। আইনি হানাহানি প্রায়শই অপ্রয়োজনীয়, পুনরাবৃত্তিমূলক বা বোঝা মামলা মোকদ্দমা অভিযোগের দায়ে বিবাদীকে ভয় দেখানোর জন্য মামলা মোকদ্দমার রূপ নিতে পারে, মামলা-মোকদ্দমার আইনি যোগ্যতার কারণে নয়, তবে মূলত আইনি লড়াইয় হয়ে থাকে প্রতিপক্ষের অক্ষমতার কারণে । এটি
Strategic Lawsuit Against Public Participation (এসএলএপিপি) রূপ নিতে পারে। এই ধরনের অপব্যবহারের সম্ভাবনা সম্পর্কে আংশিক উদ্বেগ ছিল যা ২০১১ এবং ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সোপা এবং পিপাএর বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করেছিল।
সামরিক পরপীড়ন
২০০০ সালে, যুক্তরাজ্যে মিলিটারী অফ ডিফেন্স (MOD) পরপীড়নকে সংজ্ঞায়িত করেছে "শারীরিক শক্তির ব্যবহার অথবা কর্তৃপক্ষের কুবচন অন্যদেরকে ভয় দেখান অথবা অত্যাচার করা অথবা অবৈধভাবে শাস্তি দেওয়া"।
কিছু বিতর্ক আছে যে এই আচরণ অনুমোদন যোগ্য, "সৈনিকদের" পেশাগত জীবন অন্য পেশা থেকে ভিন্ন, সৈনিকরা তাদের জীবনে ঝুঁকি নেয়, তাদের অনুসারে, শারীরিক শক্তির উন্নয়ন এবং পরপীড়ন মেনে নেওয়ার শক্তি আশা করে।
পিতামাতার সন্তানকে পরপীড়ন
যেসকল পিতামাতা তাদের সন্তানদের উপর বিভিন্ন উপায়ে ক্রোধ, অনিরাপত্তা এবং ক্রমাগত নির্যাতন ও নিয়ন্ত্রণ করলে তাদের নিজের সন্তানরা তাদের সমবয়সীদের উপর অতিরিক্ত আগ্রাসী ও নিয়ন্ত্রণকারী হয়ে উঠার সম্ভবনা বেড়ে যায়।
আমেরিকার মনস্তাত্ত্বিক সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে পিতামাতাদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দেন যে যখন তারা সন্তানদের সামনে তাদের সমবয়সীদের উপর পরপীড়ন করে তারা সন্তানদের সময় এমন উদাহরণ স্থাপন করার সময় বিবেচনা করা উচিত যে তাদের সন্তানরা তাদের সমবয়সী, সহকর্মী এবং সন্তাদের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করবে।
কারাগারে পরপীড়ন
পরপীড়কদের জন্য কারাগার একটি পরিচিত পরিবেশ। এখানে আসামি এবং কর্মীদের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ক পরিবেশ যুক্ত হয়। এখানে যে সকল সম্ভাব্য পরপীড়ন হতে পারে তা হলো:
বিদ্যালয়ে পরপীড়ন
বিদ্যালয় ভবনের আশেপাশে বা কাছাকাছি যে কোনও অংশে পরপীড়নের ঘটনা ঘটতে পারে, যদিও শারীরিক শিক্ষার ক্লাস এবং ছুটির সময় এটি প্রায়শই ঘন ঘন ঘটতে পারে। বিদ্যালয় হলওয়ে, বাথরুমে, স্কুল বাসে এবং বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় এবং যে ক্লাসগুলিতে দলীয় কাজ অথবা বিদ্যালয় ছুটির পরে প্রয়োজন হয় সেখানেও ঘটে। বিদ্যালয়ে পরপীড়নের মধ্যে মাঝে মাঝে একদল শিক্ষার্থী থাকে যা বিশেষভাবে একজন শিক্ষার্থীর সুবিধা গ্রহণ বা বিচ্ছিন্ন করে এবং পরবর্তী লক্ষ্যে পরিণত হওয়া এড়াতে এমন বাইরের লোকদের আনুগত্য লাভ করে। ২০১১ এর ডকুমেন্টারি bully, আমরা স্কুলে এবং স্কুল বাসে বাচ্চারা উভয়ই যে নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যায় তা প্রথম দেখি। মুভিটি কয়েকটা বাচ্চাকে দেখায় যেখানে আমরা দেখতে পাই যে কীভাবে পরপীড়ন তাদের বিদ্যালয় এবং তাদের বাড়ি উভয়কে প্রভাবিত করে। ধর্ষণকারীদের কোনও বয়সের সীমা না থাকলেও, এই পরপীড়ন গুলি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার আগে তাদের লক্ষ্যটিকে টানাটানি এবং তাড়িত করতে পারে। পরবর্তী লক্ষ্য হওয়ার ভয়ে দর্শকরা সাধারণত অংশ নেয় বা দেখার জন্য বেছে নেয়। শিক্ষকরা এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা নিজেরাই পরপীড়ন ঘটাতে পারে; ব্যবস্থাপনায় একটি অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে যা সহজেই সূক্ষ্ম বা গোপনীয় নির্যাতন (সম্পর্কযুক্ত আগ্রাসন বা জড় আগ্রাসন), অবমাননা বা বর্জন - এমনকি পরপীড়ন-বিরোধী নীতির প্রতিচ্ছবিবদ্ধ প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে পারে।
২০১৬সালে, কানাডায়, উত্তর আমেরিকার একটি মা এবং তার পুত্রের দ্বারা আইনি নজির স্থাপিত হয়েছিল, পুত্রকে তার পাবলিক বিদ্যালয়ে পরপীড়ন করার পরে মা ও ছেলে অটোয়া-কার্লেটন জেলা বিদ্যালয় বোর্ডের বিরুদ্ধে একটি আদালত মামলা জিতেছে, এটি উত্তর আমেরিকার মধ্যে প্রথম মামলা যেখানে একটি বিদ্যালয় বোর্ড যত্নের মান পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য একটি পরপীড়ন মামলায় প্রমাণিত হয় ("যত্ন করার কর্তব্য" যা বিদ্যালয় বোর্ড শিক্ষার্থীর প্রতি করে থাকে)। সুতরাং, এটি একটি বিদ্যালয় বোর্ডের কোনও শিশুর ক্ষতি হওয়ার জন্য অবহেলায় দায়বদ্ধ বলে প্রমাণিত হওয়ার নজির স্থাপন করে, কারণ তারা একটি শিশুকে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পরপীড়ন মূলক আচরণ থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিল। একইভাবে অন্যরকম এক পরপীড়নের ঘটনা ঘটেছে এবং এটি ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় জিতেছিল (ওয়েস্টন বনাম সেন্ট প্যাট্রিক্স কলেজ, ২০১৩)।
যৌন পরপীড়ন
যৌন পরপীড়ন হলো"যে কোন পরপীড়ন, যা শারীরিক বা অশারীরিক, এটি কোনও ব্যক্তির যৌনতা বা লিঙ্গের উপর ভিত্তি করে। যৌনতা বা লিঙ্গকে ছেলে বা মেয়েদের দ্বারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয় অন্য ছেলে বা মেয়েদের প্রতি - যদিও এটি আরও বেশি মেয়েদের প্রতি নির্দেশিত। এটি কোনও ব্যক্তির মুখে, তার পিছনে বা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চালানো যেতে পারে।
তৃতীয় লিঙ্গ পরপীড়ন
তৃতীয় লিঙ্গ পরপীড়ন হলো কোনও ব্যক্তিকে শারীরিক, যৌন বা মৌখিকভাবে শিকার করার কাজ কারণ তারা হিজড়া ( transgender or transsexual) হয়। সমকামী এর মতো নয়, এটি যৌন অভিমুখী নয়, লক্ষ্যটির প্রকৃত অনুভূত লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে এটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কর্মস্থলে পরপীড়ন
কর্মস্থলে পরপীড়নের ঘটনা ঘটে যখন কোনও কর্মচারী কর্মক্ষেত্রে অন্যের কাছ থেকে ক্রমাগত খারাপ আচরণ অনুভব করে যা ক্ষতির কারণ হয়। কর্মক্ষেত্রে পরপীড়ন হতে পারে মৌখিক, অ- মৌখিক, মানসিক, শারীরিক নির্যাতন এবং অবমাননার মতো কৌশল। এই ধরনের কর্মস্থলে আগ্রাসন বিশেষত কঠিন কারণ, সমবয়সী পরপীড়নের সাধারণ ফর্মের বিপরীতে। কর্মক্ষেত্রের পরপীড়ক প্রায়শই তাদের সংস্থা এবং তাদের সমাজের প্রতিষ্ঠিত নিয়ম এবং নীতিগুলির মধ্যে কাজ করে। কর্মস্থলে পরপীড়ন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ্য হিসাবে কর্তৃত্বে থাকা কোনও ব্যক্তির দ্বারা এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রতিবেদন করা হয়েছে। তবে, পরপীড়ক সমবয়সী ও হতে পারে এবং মাঝে মধ্যে অধস্তন হতে পারে। "কর্মস্থলে পরপীড়ন" এর প্রথম পরিচিত হয় 1992 সালে আন্দ্রে অ্যাডামসের একটি বইতে Bullying at Work: How to Confront and Overcome It। গবেষণা গুলোতে পরপীড়নের উপর বৃহত্তর সাংগঠনিক প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি গোষ্ঠী-স্তর প্রক্রিয়াগুলির প্রভাবগুলিতে প্রভাব ফেলেছে এবং পরপীড়নের আচরণের রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টিও তদন্ত করেছে। পরপীড়নের ঘটনাটি গোপন বা অপ্রকাশিত হতে পারে। এটি সংস্থার ঊর্ধ্বতনদের দ্বারা হতে পারে যা অনেকেই জানেন। নেতিবাচক প্রভাবগুলি কেবলমাত্র লক্ষ্যবস্তু ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এবং এটি কর্মচারী মনোবল হ্রাস এবং সাংগঠনিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। Cochrane Collaboration systematic এর পর্যালোচনাটিতে খুব নিম্নমানের প্রমাণ পেয়েছে যে প্রস্তাবিত যে সাংগঠনিক এবং স্বতন্ত্র হস্তক্ষেপগুলি কর্মকস্থলে পরপীড়ন মূলক আচরণগুলি প্রতিরোধ করতে পারে।
প্রাতিষ্ঠানিক
প্রাতিষ্ঠানিক পরপীড়ন হল প্রতিষ্ঠানের স্কলার এবং কর্মীদের বিশেষত উচ্চশিক্ষার স্থান যেমন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্মস্থলে পরপীড়ন। এটি সাধারণ বলে মনে করা হয়, যদিও গবেষকদের কাছ থেকে তেমন কোনও মনোযোগ অন্য কিছু প্রেরণা দেওয়ার মতো মনোযোগ পায়নি।
শ্রমজীবী পরপীড়ন
তেলের খনি এবং মেকানিক দোকান এবং মেশিন দোকান সহ শ্রমজীবিদের চাকরি গুলিতে বৈশিষ্ট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। মনে করা হয় যে ভয় দেখানো এবং প্রতিশোধের ভয় ঘটনার প্রতিবেদন হ্রাস করে। পুরুষ অধ্যুষিত শিল্প ক্ষেত্রগুলিতে, সাধারণত অল্প শিক্ষার ক্ষেত্রে যেখানে ঘটনাগুলির প্রকাশকে ছোট করে দেখা হয়, এই জাতীয় শিল্পের আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক মিলিয়নে প্রতিবেদন করা সম্ভবত একটি দুষ্টু চক্রের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটি প্রায়শই উচ্চ-পদমর্যাদার প্রশাসকদের পক্ষে সমর্থন পেতে হেরফের এবং ঘটনাগুলির জবরদস্তির সাথে একত্রে ব্যবহৃত হয়।
তথ্য প্রযুক্তিতে
পরপীড়নের একটি সংস্কৃতি তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) তে প্রচলিত রয়েছে, যার ফলে উচ্চ অসুস্থতার হার, নিম্ন আদর্শ, দুর্বল উৎপাদনশীলতা এবং উচ্চ কর্মীদের-ঘুরানো হয়। সময়সীমা দ্বারা চালিত প্রকল্পের কাজ এবং স্ট্রেসড আউট ম্যানেজাররা তথ্য প্রযুক্তি কর্মীদের উপর তাদের প্রভাব ফেলে।
আইনি পেশায়
আইনি পেশায় পরপীড়ন অন্য কিছু পেশার তুলনায় বেশি সাধারণ বলে মনে করা হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে এর বিপরীতমুখী, শ্রেণিবদ্ধ ঐতিহ্য এ দিকে অবদান রাখে। পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম সময়ের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী মহিলা, প্রশিক্ষণার্থী এবং আইনজীবীরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন যেমন জাতিগত সংখ্যালঘু আইনজীবী এবং লেসবিয়ান, সমকামী এবং উভকামী আইনজীবী।
চিকিৎসায়
চিকিৎসা পেশায় পরপীড়ন করা সাধারণ, বিশেষত শিক্ষার্থী বা প্রশিক্ষণার্থী ডাক্তার এবং নার্সদের ক্ষেত্রে। ধারণা করা হয় যে এটি কমপক্ষে একটি অংশে চিকিৎসা পেশায় রক্ষণশীল ঐতিহ্যবাহী কাঠামোগত কাঠামো এবং পাঠদানের পদ্ধতিগুলির ফলস্বরূপ, যার ফলস্বরূপ একটি দুষ্ট চক্র হতে পারে।
নার্সিংয়ের ক্ষেত্রে
নার্সিংয়ের ক্ষেত্রে পরপীড়ন করা যদিও আমেরিকান নার্সিং অ্যাসোসিয়েশন বিশ্বাস করে যে সমস্ত নার্সিং কর্মীদের নিরাপদ, অ-আপত্তিজনক পরিবেশে কাজ করার অধিকার রয়েছে, তবে নার্সিং পেশায় পরপীড়ন করা বিশেষত প্রচলিত হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে যদিও কারণগুলি স্পষ্ট নয়। । মনে করা হয় যে সম্পর্কের আগ্রাসন (গল্প করা ও ভয় দেখানোর মতো পরপীড়নের মানসিক দিক) সম্পর্কযুক্ত। মেয়েদের মধ্যে সম্বন্ধীয় আগ্রাসন গবেষণা করা হলেও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের মধ্যে তেমনটা হয়নি।
শিক্ষার ক্ষেত্রে
শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে পরপীড়ন হওয়াই সাধারণত শিক্ষকদের পরপীড়ক বানাতে হয় তবে এগুলি কখনও কখনও বিদ্যালয় পরিবেশের মধ্যেও পরপীড়ন তৈরি করে।
bully" ক্রিয়াটি সাধারণত "আক্রমণাত্মকভাবে বা ভয় দেখানোর দ্বারা নিজের পথে বাধ্য করা" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, এই শব্দটি সাধারণত যে কোনও জীবনের অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেখানে পারস্পরিক অংশীদারি আগ্রহ এবং সুবিধাগুলির মতো আরও ইতিবাচক লক্ষ্যগুলির পরিবর্তে প্রাথমিকভাবে ভয় দেখানো দ্বারা প্রেরণা পাওয়া যায়। যেমন, কর্তৃত্ব বা ক্ষমতার যে কোনও ব্যক্তিরাই অন্যকে অনুপ্রাণিত করার প্রাথমিক উপায় হিসাবে ভয় দেখিয়ে ব্যবহার করতে পারে যেমন একটি প্রতিবেশী "protection racket don", একজন জাতীয় স্বৈরশাসক, শৈশবকালীন নেতা, সন্ত্রাসী, একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, এমনকি ব্যবসায়ের সিইও, যথাযথভাবে তাকে পরপীড়ক হিসাবে ও বলা যেতে পারে। মনোবিজ্ঞানী পলিন রেনি-পেটনের মতে, আমরা প্রত্যেকে আমাদের জীবনের যে কোনও পর্যায়ে পরপীড়ক হবার সম্ভাবনার মুখোমুখি হই।
বৃদ্ধদের সাহায্য করার জন্য ডিজাইন করা নৃবিজ্ঞানী রোবটদের উপর শিশুরা পরপীড়ন করেছে। তাদের আক্রমণের প্রথমে রোবটদের চলাচলের পথে বাধা দিয়ে শুরু হয় এবং তারপরে মৌখিক নির্যাতনের দিকে এগিয়ে যায়, আঘাত করে এবং বস্তুকে ধ্বংস করে। সাক্ষাৎকার নেওয়া পঁচাত্তর শতাংশ শিশু রোবটটিকে "মানবসুলভ" হিসাবে বুঝতে পেরেছিল যেহেতু এটি যেভাবেই অপব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন ৩৫% বাচ্চারা রোবটকে পরাজিত করেছিল তারা আসলে "উপভোগের জন্য" করেছে।
সকলের পরপীড়ন প্রতিরোধ, হ্রাস, বন্ধ করার প্রচেষ্টা পরপীড়ন প্রতিরোধ করতে পারে। পরপীড়ন প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রচার এবং আয়োজন চলছে। পরপীড়ন প্রতিরোধে প্রচার এবং আয়োজন গুলো হলো : Anti-Bullying Day, Anti-Bullying Week, International Day of Pink , International STAND UP to Bullying Day এবং National Bullying Prevention month। যুক্তরাষ্ট্রের Anti-Bullying laws ৫০ টি অঞ্চলের ২৩ টি অঞ্চলের বিদ্যালয়ে পরপীড়ন অবৈধ করেছে।
পরপীড়ন সাধারণভাবে চলমান এবং বিচ্ছিন্ন আচরণ নয়। লোকেরা প্রতিক্রিয়া জানাবার সাধারণ উপায় হিসেবে সেগুলি উপেক্ষা করার চেষ্টা করা, পরপীড়কদের মুখোমুখি হওয়া বা কোনও কর্তৃপক্ষের ব্যক্তির দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা এবং ডাকার চেষ্টা করে। চলমান পরপীড়ন কে বন্ধ করার জন্য বেশিরভাগ সময় এটিকে এড়িয়ে যায় এবং সময়ের সাথে সাথে এটি আরও খারাপ হতে থাকে। পরপীড়ন মূলক আচরণের তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শনাক্তকরণের আগে এটি নিয়ন্ত্রণ করা আরও সহজ। দর্শকরা পরপীড়নের প্রতিক্রিয়া জানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ কিছুই না করে এটিকে চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে পারে না, যখন আচরণের বিরোধিতা করার মত ছোট পদক্ষেপগুলি এটি হ্রাস করতে পারে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যেমন শিশু বা কৈশোরবস্থায় বাবা-মা, বা তত্ত্বাবধায়ক, মানবসম্পদ কর্মী বা কর্মক্ষেত্রে উচ্চকক্ষীয় কেউ এবং স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থা। কর্তৃপক্ষ পরপীড়ন স্বীকৃতি দেওয়া এবং থামাতে প্রভাব ফেলতে পারে এবং এমন পরিবেশ তৈরি করতে পারে যেখানে এটি চলবে না। অনেক পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষে কাজ করা লোকেরা অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং অযোগ্য, তারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হয় জানেন না, এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ লোকজনকে পরপীড়ন করার পক্ষে সমর্থন করে, এটিকে অব্যাহত রাখতে এবং লক্ষ্যকে বিচ্ছিন্নকরণ ও প্রান্তিককরণ বৃদ্ধি করে। প্রতিক্রিয়া জানাতে সবচেয়ে কার্যকর কয়েকটি উপায় হলো পরপীড়ন মূলক আচরণ হচ্ছে তা স্বীকৃতি দেওয়া এবং এমন পরিবেশ তৈরি করা যেখানে এটি অবিরত থাকবে না। যাদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে তাদের কোন দিকে ঝুঁকতে এবং কীভাবে এই বিষয়গুলি মোকাবেলা করা হবে তার নিয়ন্ত্রণ খুব কমই রয়েছে, তবে সমর্থনের একটি উপায় হ'ল একজন কাউন্সেলর বা মনোবিজ্ঞানীকে খুঁজে বের করা, যাকে পরপীড়ন সামলানো বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
পরপীড়নে ভুক্তভোগীরা কল দিতে পারে Thursday's Child 's International Bullying Helpline at 1 (800) USA KIDS [872-5437] or 1 [831-1234] যেকোন মোবাইল থেকে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের বাহির থেকে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.