নৃত্যের তালে তালে, হে নটরাজ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নৃত্যের তালে তালে, হে নটরাজ হল একটি রবীন্দ্রসংগীত। গানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতি-সংকলন গীতবিতান গ্রন্থের ‘বিচিত্র’ পর্যায়ভুক্ত ২ সংখ্যক গান।[1] গানটি মিশ্র খাম্বাজ-বাহার রাগে ও দাদরা ইত্যাদি তালে (তালফেরতা) নিবদ্ধ।[2][3] স্বরবিতান গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডে এটির স্বরলিপি মুদ্রিত হয়েছে।[2] এটি চার স্তবকে ২৯টি ছত্রে রচিত গান। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী গানটি কলিগঠন সম্ভব হয়নি।[4][5]
‘নৃত্যের তালে তালে, হে নটরাজ’ গানটির পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায় (পাণ্ডুলিপি সংখ্যা ২৪ ও ২৭)।[3] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গানটির ইংরেজি অনুবাদও করেছিলেন: Let the links of my shackles snap at every step of thy dance.[3]
গানটির রচনা ও সুরসংযোজনা প্রসঙ্গে সাহানা দেবী লিখেছেন, “কবি বললেন, ‘আজ একটা নৃত্যসঙ্গীত রচনা করা গেল, এই সবে শেষ করলুম।’ বলে সদ্যরচিত “নৃত্যের তালে তালে হে নটরাজ” গানটি গেয়ে আমাদের শোনালেন। সকলেই উচ্ছ্বসিত, দিনুদার (দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর) চোখমুখ আনন্দে উদ্ভাসিত। কবির মুখে গানটি শুনেই আমার কেমন মনে হল এই গানটির চারটি স্তবক চাররকম তালে বসালে নাচ বেশ জমবে। মনে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৎক্ষণাৎ বলে ফেললাম, ‘আপনার এই নৃত্যসঙ্গীতের চারটি স্ট্যাঞ্জা চার রকম তালে বসালে কেমন হয়?’ দেখলাম ওঁর বেশ পছন্দ হয়েছে কথাটা, উনি দিনুদার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমার তো মনে হয় বেশ ভালোই হবে – কি বলিস রে?’ দিনুদাও সাগ্রহে অনুমোদন করলেন। কবি গানের চারিটি স্তবকের চার রকম তাল করে দিলেন। আমরা যখন এই গান শিখি তখন “নমো, নমো, নমো, তোমার নৃত্য অমিত বিত্ত ভরুক চিত্ত মম” এই অংশটি ছিল না, এটা ছাড়াই আমরা তখন গেয়েছি। পরে কবি এই অংশটা জুড়ে দিয়েছিলেন।”[6]
"নৃত্যের তালে তালে, হে নটরাজ" গানটি ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের ২১-২৫ ফাল্গুন নাগাদ (৫-৯ মার্চ, ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ) শান্তিনিকেতনে রচিত হয়।[2] বিচিত্রা পত্রিকার আষাঢ় ১৩৩৪ সংখ্যায় নটরাজ ঋতুরঙ্গশালা অংশে ‘নৃত্য গান’ শিরোনামে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়।[3][2] স্বরলিপি প্রথম প্রকাশিত হয় বিচিত্রা পত্রিকারই ভাদ্র ১৩৩৪ সংখ্যায়।[2][3] স্বরলিপিকার ছিলেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।[2][3] গানটির সুরভেদ আছে।[2]
১৩৩৫ বঙ্গাব্দের ১৩ ও ১৫ মাঘ কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে পরিবর্তিত আকারে সুন্দর গীতিনাট্যের পুনরাভিনয়েরর সময় এই গানটি গীত এবং সেই উপলক্ষ্যে প্রচারিত পুস্তিকায় মুদ্রিত হয়।[3] তারপর বনবাণী কাব্যগ্রন্থের ‘নটরাজ ঋতুরঙ্গশালা’ অংশে ‘নৃত্য’ শিরোনামে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়।[3] ১৩৪০ বঙ্গাব্দের ৯ অগ্রহায়ণ বোম্বাই (অধুনা মুম্বই, মহারাষ্ট্র) শহরে মঞ্চস্থ শাপমোচন নৃত্যনাট্যে এই গানটি নতুন গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।[3] উল্লেখ্য, এই নৃত্যনাট্যের গানগুলি বারে বারে পরিবর্তিত হয়েছে। ইতিপূর্বে ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের ১৫-১৬ চৈত্র কলকাতার নিউ এম্পায়ার থিয়েটারে শাপমোচন মঞ্চায়নের সময় এই গানটি ছিল না।[3] গানটি গীতবিতান প্রথম সংস্করণের (শ্রাবণ ১৩৩৯) তৃতীয় খণ্ডে এবং দ্বিতীয় সংস্করণের (ভাদ্র ১৩৪৬) দ্বিতীয় খণ্ডে প্রকাশিত হয়।[3]
গানটি রেকর্ড করেছিলেন সুচিত্রা মিত্র (এন ২৭৯০৬ এসটিএইচভি ২৪২২৫, ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত[7]) ও রবিচক্র-সম্মেলক।[8]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.