Loading AI tools
বাংলাদেশী গায়িকা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নাশিদ কামাল একজন বাংলাদেশী কণ্ঠশিল্পী, লেখিকা ও জনসংখ্যাতত্ত্ব বিষয়ের অধ্যাপিকা।[1] তিনি বাংলা লোকগীতির বিখ্যাত শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমদ এর বড় নাতনি। কামাল নজরুল সংগীতের শিল্পী হিসেবে বিখ্যাত।[2][3] নজরুল সংগীতে তার অবদানের জন্য তিনি ২০০৯ সালে নজরুল একাডেমি থেকে নজরুল পুরস্কার এবং ২০১৪ সালে নজরুল ইনস্টিটিউট থেকে নজরুল পদক পেয়েছেন।[4][5]
নাশিদ কামাল | |
---|---|
নাশিদ কামাল | |
জন্ম | ১৯ মার্চ ১৯৫৮ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | পিএইচডি (মেডিক্যাল ডেমোগ্রাফি) |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অভ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন (LSHTM) |
পেশা | গায়িকা, লেখিকা ও জনতত্ত্বর অধ্যাপিকা |
পরিচিতির কারণ | নজরুল ভক্ত ও অনুসারী |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | দ্য গ্লাস ব্যাঙ্গেলস, দ্য রিটার্ন অব লাইলি |
উপাধি | ডক্টর |
দাম্পত্য সঙ্গী | হোসেন এমডি মুসা (১৯??-১৯??), আনিস ওয়াইজ (১৯৯৩-২০০২, মৃত্যু ) |
সন্তান | আরমীন মুসা, আশনা মুসা |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | আব্বাসউদ্দীন আহমদ (দাদা), মোস্তফা জামান আব্বাসী (চাচা), ফেরদৌসী রহমান (ফুফু) |
পুরস্কার | নজরুল এওয়ার্ড (২০০৯), নজরুল পদক (২০১৪) |
মোস্তফা কামাল ও হোসনে আরা কামাল এর তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় নাশিদ কামাল যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। কামালের পিতা একজন বিচারক ছিলেন এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।[6] মা ছিলেন কবি, অধ্যাপিকা ও জনহিতৈষী। তিনি অবসরের পূর্ব পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাজকল্যাণ বিভাগের চেয়ারপারসন ছিলেন। [7] নাশিদ কামালের দুই বোন হলেন নীলা সাত্তার ও নাফিজা কে মনেম। তার চাচা মুস্তাফা জামান আব্বাসী প্রখ্যাত বাংলাদেশী সংগীতজ্ঞ এবং ফুপু ফেরদৌসী রহমান জনপ্রিয় নেপথ্য গায়িকা। দুই বছর বয়সে নাশিদ কামাল পিতামাতার সঙ্গে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান) চলে আসেন। ছোট থাকতেই তিনি গান গাওয়া শুরু করেছিলেন। ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশনের (পিটিভি) পূর্বপাকিস্তান কেন্দ্রে (বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশন-বিটিভি) এর উদ্বোধনী দিনে শিশুশিল্পী হিসেবে তিনি গান করেন।[1] পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ওস্তাদ পি সি গোমেজ, ওস্তাদ আখতার সাদমানি, ওস্তাদ কাদের জামিরি, পণ্ডিত যশরাজ প্রমুখ প্রখ্যাত গুরুর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেন।[4] গান শেখা ও গাওয়ার সঙ্গে তিনি তার্কিক ও উপস্থাপক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন।[8] ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের টেলিভিশনে প্রচারিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা “তর্ক যুক্তি তর্ক” অনুষ্ঠানে তিনি শ্রেষ্ঠ বক্তার পুরস্কার লাভ করেন।
নাশিদ কামাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত চিকিৎসক আনিস ওয়াইজকে বিয়ে করেন, যিনি মেজর জেনারেল পদে থাকা অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত হন। আনিস ২০০২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের দুই মেয়ে আরমীন মুসা ও আশনা মুসা। আরমীন ঘাসফড়িং ব্যান্ডের গীতিকার-গায়িকা আর আশনা যুক্তরাজ্যনিবাসী আইনজীবী।[9]
নাশিদ হলিক্রস গার্লস হাই স্কুল থেকে ১৯৭৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে মেয়েদের মেধাতালিকায় ৭ম স্থান অধিকার করেন। হলিক্রস কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় সমন্বিত মেধাতালিকায় ২য় স্থান লাভ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ালেখা করেন এবং ১৯৮০ সালে নিজের বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। এরপর তিনি কানাডার কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয় (অটায়া) থেকে ১৯৮২ সালে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি লন্ডন এর ক্যামডেন এ ‘লন্ডন স্কুল অভ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ (LSHTM) এ মেডিকেল ডেমোগ্রাফিতে ডক্টোরাল ডিগ্রির জন্য যান এবং ১৯৯৬ সালে পিএইচডি লাভ করেন।
কামালের প্রফেশনাল ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৮৩ সালে, যখন তিনি ICDDRB যোগদান করেন। তিনি সেখানে তিন বছর কাজ করেন। তিনি বাংলাদেশ এবং সুদানের হয়ে UNFPA-এর উপদেষ্টা ও ছিলেন। তার প্রকাশনা বহুল স্বীকৃত স্বাস্থ্য জার্নাল- দ্য ল্যানসেট সহ ২৫টিরও বেশি পিয়ার রিভিও জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।[1]
কামাল ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট (আই.এস.আর.টি) তে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে, তিনি ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে (IUB) জনসংখ্যা-পরিবেশ ডিপার্টমেন্টের প্রধান হয়ে ১৯৯৬ সালে যোগদান করেন এবং ২০১০ সালে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এর জীব পরিসংখ্যান বিভাগের প্রফেসর হয়ে আসার আগ পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।[1] তিনি বর্তমানে পরিসংখ্যানের সহকারী প্রফেসর হয়ে BRAC Business School, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়-এ কর্মরত আছেন।
নাশিদ কামালের বারটি প্রকাশিত বই রয়েছে,এরমধ্যে দশটি লেখক হিসেবে এবং দুটি প্রকাশক হিসেবে। বাংলা এবং ইংরেজি, উভয় ভাষায় লিখেন। তিনি কল্পকাহিনী (উপন্যাস এবং ছোট গল্প), কবিতা, জীবনী, অনুচ্ছেদ এবং রচনাসমগ্র লিখেছেন। এছাড়াও তিনি, বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, যেখানে নজরুলের সাহিত্যকর্ম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।[1] লাইলির প্রত্যাবর্তন তার সব থেকে আলচিত বই সিরিজ, যা নজরুলের বিখ্যাত গানগুলোর অনুবাদ। চক্রবাক হচ্ছে এরকম আরেকটি উল্লেখযোগ্য অনুবাদ গ্রন্থ যেখানে নজরুলের বাইশটি প্রেমের কবিতা স্থান পেয়েছে। তার অন্যান্য অনুবাদের মধ্যে রয়েছে- কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী, বাংলাদেশের জাতীয় কবির জীবনী নিয়ে মূলত রফিকুল ইসলামের লিখিত বই, এবং My Life in Melody, আব্বাস উদ্দীন আহমদের আত্মজীবনী।[10]
নাশিদ কামাল চার দশক ধরে গান গেয়ে যাচ্ছেন। নজরুল গীতিশিল্পী হিসেবে সুখ্যাতি এবং বাংলা লোক সংগীত পরিবেশনের জন্য তিনি বহুলভাবে পরিচিত।[1] তিনি ক্লাসিক্যাল এবং সেমি-ক্লাসিক্যাল সংগীত শিল্পী হিসেবে ও পরিচিত। তাছাড়া, তিনি উর্দু গজল গান ও গেয়ে থাকেন। বাংলা এবং উর্দু গান গাওয়ার পাশাপাশি, তিনি অনেক বিদেশি ভাষায় যেমন- জাপানী, চীনা, রোমানিয়ান এবং টার্কি ভাষায় ও গান গেয়েছেন।[4] নজরুল গীতি, গজল এবং লোক সংগীত সহ কামালের এগারটি রেকর্ডেড গানের এ্যালবাম আছে। যখন থেকেই তিনি শিশু শিল্পী হিসেবে গান শুরু করেন, তখন থেকেই তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন রেডিও এবং টেলিভিশন স্টেশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করে আসছেন।[4]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.