Loading AI tools
ভারতের বন্দর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ধামরা বন্দর হল ভরতের ওড়িশা রাজ্যের একটি গভীর জলের সমুদ্র বন্দর। এটি ওড়িশার ভদ্রাক জেলায় অবস্থিত।বন্দরটি পুরানো ধামরক বন্দরের ৭ কিলোমিটার (৪.৩ মা) দূরে গরে উঠেছে।বন্দরটি নির্মানের চুক্তি হয় ১৯৯৮ সালে। এই বন্দর নির্মান করেছে ল্যান্ড অ্যান্ড টুগরো ও টাটা স্টিল। এই সংস্থা দুটির ৫০:৫০ মালিকানা রয়েছে বন্দরটিতে।[2]ধামরা বন্দরে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ সালে প্রথম জাহাজ নোঙর করে এবং ১০ এপ্রিল ২০১১ সালে বন্দরটিতে প্রথম বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করে।[3]বন্দরটির বছরে পন্য পরিবহনের ক্ষমতা ২৫ মিলিয়ন টন ছিল। বর্তমানে এই ক্ষমতা বৃদ্ধি করে করা হয়েছে ৮০ মিলিয়ন টন।[4] গ্রিনপিস এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে দাবি করে যে বন্দর প্রকল্পটি নিকটবর্তী সংরক্ষিত এলাকা এবং অলিভ রিডলে কচ্ছপের মতো বিপন্ন প্রজাতিগুলির জন্য হুমকি সরূপ হবে।[5]
২০১৪ সালের জুন মাসে বন্দরটি আদানি পোর্টের হাতে আসে। দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো $১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ইস্পাত কারখানা নির্মাণ এবং ধামরায় নতুন বন্দর নির্মাণ, কর্ম সংস্থান ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। বন্দরটি একটি খনিজ অঞ্চলের থেকে লৌহ আকরিক রপ্তানি করতে ব্যবহার করা হবে।[6] ওড়িশা সরকার নতুন বন্দরের কাছাকাছি এলাকাতে বন্দর সম্পর্কিত শিল্প গড়ে তুলতে পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে একটি জাহাজ নির্মাণ শিল্প এবং একটি পেট্রো-রাসায়নিক ও গ্যাস ভিত্তিক উৎপাদন কেন্দ্র পরিকল্পনায় রয়েছে রয়েছে। ধামরার জন্য একটি বিশেষ বিনিয়োগ অঞ্চলের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং একটি আবাসিক এলাকা, স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য শহুরে পরিকাঠামো নির্মানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।[7]
১৯৯৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ওড়িশা সরকার সমসাময়িক আধুনিক সুবিধাগুলির সাথে ধামরাতে ছোট বন্দর নির্মানের করার সম্ভাবনার নির্ণয় ও মূল্যায়ন করার জন্য এম/এস ইন্টারন্যাশনাল সিপোর্টস ড্রেজিং প্রাইভেট লিমিটেডকে (আইএসডিপিএল) আমন্ত্রণ জানায়। স্থান পরিদর্শন এবং প্রাথমিক আলোচনা/মূল্যায়ন পরে, পরবর্তী সমিক্ষার জন্য ধামরা বন্দর নির্বাচিত হয়। ওড়িশা সরকার এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি , চেন্নাই (আইআইটি,চেন্নাই) কর্তৃক পরিচালিত গবেষণাগুলির উপর ভিত্তি করে এবং সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে আইএসডিপিএল বন্দর প্রকল্পের প্রস্তাব করে। আইএসডিপিএল এবং ওড়িশা সরকার বিল্ড ওন ওপেরেটার শেয়ার এন্ড ট্রান্সফার (বিওওএসটি) ভিত্তিতে বিদ্যমান বন্দরের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য ৩১ মার্চ ১৯৯৭ সালে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। আইএসডিপিএল ২ এপ্রিল ১৯৯৮ সালে ওড়িশা সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা বেসরকারি অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের বন্দর খাতে অবকাঠামো উন্নয়নে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। প্রস্তাবিত ধামরা বন্দর হাওড়া-চেন্নাই প্রধান লাইনে পূর্ব উপকূল রেল জোনের অন্তর্গত ভদ্রক স্টেশনের থেকে ৬২ কিলোমিটার পূর্ব ওড়িশা রাজ্যের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি ছোট বন্দর। ধামরা বন্দরটি সমস্ত আবহাওয়ার উপযোগি গভীর জলের আধুনিক বন্দর হিসাবে উন্নিত করা হয়, যা সমস্ত আধুনিক জাহাজকে কার্যকরীভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হবে এবং বিশ্বমানের আদর্শে কার্যকর হবে। আইএসডিপি প্রস্তাব করেছে যে, ধামরা বন্দর ও ভদ্রকের মধ্যে রেললাইনটি বেসরকারি ভাবে স্থাপিত হবে, যা পরবর্তীতে রেলওয়ে বোর্ড কর্তৃক স্বকৃত হবে। প্রকৃতপক্ষে, এই প্রকল্প থেকে বিনিয়োগের পরিবর্তে ভদ্রক ও রেনাটাল স্টেশনের মধ্যে প্রস্তাবিত রেল সংযোগের প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অসুবিধা হওয়ার কারণে আইএসডিপিএল এই প্রকল্প থেকে অংশ গ্রহণ প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে রেলপথ নির্মানের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। ২০০৫ সালে ৫০-৫০ অংশীদারত্বে লারসেন অ্যান্ড টর্ব্রো লিমিটেড এবং টাটা স্টিলস ধামরা পোর্ট কোম্পানির নামে একটি যৌথ উদ্যোগ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে।
পরিকল্পিত বন্দরটির বছরে ৮৩ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহন করার ক্ষমতা সহ ১৩ টি বার্থ থাকবে। প্রথম ধাপে, দুই ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের বার্থ সম্পূর্ণরূপে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কার্গো হ্যান্ডলিং সঙ্গে, কোক কয়লা, বাষ্প কয়লা, তাপ কয়লা ও চুনাপাথর, এবং লৌহ আকরিক ও ইস্পাতের আমদানি-রপ্তানি পরিচালনা করতে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৮ কিলোমিটার বন্দরের প্রবেশ পথ ১৮ মিটার গভীরতার সঙ্গে সমুদ্রগামী জাহাজ গুলিকে বন্দর ব্যবহারের সুবিধা প্রদান করে। প্রথম পর্যায়ে বন্দরের পণ্য পরিবহন ক্ষমতা হল ১৫.২৫ মিলিয়ন টন আমদানিকৃত করা কয়লা ও চুনাপাথর এবং ৯.৭৫ মিলিয়ন টন রপ্তানিকৃত আকোরিক এবং ইস্পাত।[8]
৬২ কিলোমিটার রেলপথ ভদ্রক/রণিতালের সঙ্গে বন্দরটিকে যুক্ত করে, যেটি ৮ মে ২০১১ সালে চালু হয়।[9] এটা শিল্পের জন্য বেসরকারি সংস্থা ও ভারতীয় সরকারের দ্বারা নির্মিত প্রথম রেল অবকাঠামো। [9] এটি ভারতীয় রেল ও ধামারা বন্দরের মধ্যে একটি পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নির্মিত। [9]
২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বন্দরে প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ নোঙর করে, যেটি ছিল একটি অস্ট্রেলিয়ান জাহাজ এবং টাটা স্টিলের জামশেদপুর কারখানার জন্য ৪৫,০০০ টন ককিং কয়লা সরবরাহ করে। [10]
২০১৪ সালের মার্চ মাসে, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ডস বে কয়লা টার্মিনাল থেকে ১,৯৪,০৭৩ টন কয়লা বহন করে মকু মিনার নামে একটি জাহাজ ধামরা বন্দরে নোঙর করে, যেটি সেই সময়ে ভারতের বন্দরে নোঙর করা সবচেয়ে বড় জাহাজ ছিল। ধামরা বন্দর ভারতের বন্দরগুলি প্রথম ২,০৭,৭৮৫ ডিডব্লিউটি জাহাজ নোঙর করে। [11]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.