Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন রোমাঞ্চকর পশ্চিমা ধাঁচের চলচ্চিত্র। সিমন মোরের চিত্রনাট্য চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন স্যাম রেইমি। ছবিতে দেখা যায় এলেন নামে একজন নারী দ্য লেডি নাম নিয়ে জন হেরডের নিয়ন্ত্রিত শহরে আসে এবং তার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে এক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এতে এলেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্যারন স্টোন ও হেরড চরিত্রে জিনি হেকম্যান। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাসেল ক্রো, রবার্টস ব্লোজম, কেভিন কনওয়ে, ল্যান্স হেনরিকসেন, প্যাট হিঙ্গল, গ্যারি সিনিসে, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও প্রমুখ।[3]
দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড | |
---|---|
পরিচালক | স্যাম রেইমি |
প্রযোজক | জশুয়া ডোনেন প্যাট্রিক মার্কি অ্যালেন শাপিরো |
রচয়িতা | সিমন মুর |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | অ্যালান সিলভেস্ট্রি |
চিত্রগ্রাহক | দান্তে স্পিনোত্তি |
সম্পাদক | পিয়েত্রো স্ক্যালিয়া |
প্রযোজনা কোম্পানি |
|
পরিবেশক | ট্রাইস্টার পিকচার্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১০৭ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $৩৫ মিলিয়ন[1] |
আয় | $১৮.৬ মিলিয়ন[2] |
এটি রাসেল ক্রো অভিনীত প্রথম মার্কিন চলচ্চিত্র ও উডি স্ট্রড অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র (ছবিটি তাকে উৎসর্গ করা হয়) এবং রবার্টস ব্লোজম অভিনীত শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র (২০১১ সালে মারা যান)।
আনুমানিক ১৮৮১ সালের দিকে দ্য লেডি নামে এক অজ্ঞাতনামা নারী ওল্ড ওয়েস্ট শহরে আসে এবং সেখানে আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতার আয়োজন করে নগরপাল ও প্রাক্তন ডাকাত জন হেরড। সেখানে দ্য লেডির হেরডের সাবেক অনুচর ও বর্তমানে ধর্মপ্রচারক কোর্টের সাথে সাক্ষাৎ হয়। হেরড তাকে বন্দী করে এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে বাধ্য করে। সে রাতে লেডি কোর্টকে হেরডের লোকদের হাত থেকে বাঁচায়। এছাড়া লেডির দ্য কিড নামে এক দোকানির সাথে দেখা হয়। দ্য কিডের ধারণা হেরড তার বাবা এবং সে তাকে খুশি করার জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডে দ্য কিড এক সুইডিশ দ্রুতগতি সম্পন্ন এক প্রতিযোগী এবং কোর্ট দাম্ভিক এইস হ্যানলনকে হারায়। দ্য লেডিও তার এক পূর্ব শত্রুকে হারায় যাকে সে পূর্বে একবার মেরে চাকায় বেঁধে রেখে এসেছিল। কোর্টকে হেরড একটি বন্দুক কিনে দেয় এবং বলে দেন যেন তাকে একটির বেশি বুলেট না দেওয়া হয়, যাতে সে শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে। শেষ পর্যন্ত দ্য লেডি ও কোর্ট দুজন দুজনের সম্মুখীন হয়। কিন্তু তারা একে অপরের বিরুদ্ধে বন্দুক তাক করতে নারাজ হওয়ার হেরড তাদের দুজনকে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। শেষ পর্যন্ত কোর্ট দ্য লেডিকে গুলি করে এবং ডাক্তার ওয়ালাশ তাকে মৃত ঘোষণা করে।
দ্য লেডিকে মৃত দেখে সে তৎক্ষণাৎ হেরডের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায়। কিন্তু হেরড তাকে পরের দিন সকালে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে বলে জানায়। সেই রাতে রাস্টি নামে হেরডের এক লোক কোর্টকে বেঁধে মারধোর করে এবং তার বন্দুক চালানোর হাত ভেঙ্গে দেয়। পরদিন সকালে কোর্টের হাতের অবস্থা দেখে রাস্টিকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলে। রাস্টি কোর্টকে বাম হাতে তার সাথে প্রতিযোগিতার আহ্বান জানায়, কোর্ট রাজি হয়। কিন্তু তার আগেই হেরড তাকে গুলি করে। এবার হেরড ও কোর্টের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এসময়ে দ্য লেডি শহরে আসে এবং সে তার আসল পরিচয় বলে এবং তার বাবার ব্যাজ হেরডের দিকে নিক্ষেপ করে। দ্য লেডি তার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেয়ে এবং কোর্টকে শহরের মার্শাল পদদান করে শহর ছেড়ে যায়।
সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট ১৯৯৩ সালের মে মাসে সিমন মুরের কাছ থেকে কাহিনী স্বত্ব কিনে নেয় এবং জুলাই মাসে শ্যারন স্টোনকে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়। কারণ তিনি সহ-প্রযোজক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন।[4] তার পরিচালক পছন্দের সুযোগ থাকায় তিনি স্যাম রেইমিকে চলচ্চিত্রটি পরিচালনার প্রস্তাব দেন কারণ তার আর্মি অফ ডার্কনেস (১৯৯২) দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। শ্যারন অন্য প্রযোজকদের বলেন যদি রেইমি পরিচালনা না করে তবে তিনি অভিনয় করবেন না।[5] মুরও রেইমির দ্য এভিল ডেড দেখার পর রেইমিকে পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার জন্য আগ্রহী ছিলেন।[4]
রাসেল ক্রো শুরুতে এই ছবির অন্য একটি চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন। পরে শ্যারন স্তন তাকে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বলেন। এ প্রসঙ্গে শ্যারন স্টোন বলেন যখন আমি রম্পার স্টম্পার (১৯৯২) দেখেছিলাম, আমি ভেবেছিলাম রাসেল শুধু আকর্ষণীয় ও প্রতিভাবানই নয়, সে অকুতভয়। আমার কাছে অকুতভয়রা খুবই আকর্ষণীয়।[6] রেইমির কাছে ক্রো ছিল সাহসী ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত এবং তাকে দেখে তিনি অ্যামেরিকার কাউবয়রা কেমন ছিল তা আন্দাজ করেন।[6] রেইমির সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতার সম্পর্কে ক্রো বলেন যে রেইমি চতুর্থ স্টুজ।[4]
সনি পিকচার্স শ্যারনের পছন্দ নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিল কারণ তখন ক্রো তেমন জনপ্রিয় মুখ ছিল না।[4] জিনি হেকম্যান-এর হেরড চরিত্রের জন্য ট্রাইস্টার পিকচার্সকে শ্যুটিংয়ের স্থান পরিবর্তন করে ডুরাঙ্গো থেকে মেক্সিকোর অ্যারিজোনার টাকসনে নিতে হয়।[7] স্যাম রকওয়েল দ্য কিড চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিল, কিন্তু পরে এই চরিত্রে অভিনয় করেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও. সনি পিকচার্স ডিক্যাপ্রিওর চরিত্রের ব্যাপারেও দ্বিধান্বিত ছিল। ফলে শ্যারন স্টোন নিজে ডিক্যাপ্রিওর পারিশ্রমিক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।[4]
চলচ্চিত্রটির চিত্রায়ন শুরু হয় ১৯৯৩ সালে অক্টোবর মাসে,[8] কিন্তু রাসেল ক্রোর অস্ট্রেলিয়ায় আরেকটি ছবির কাজের জন্য কিছুদিন দেরী হয়।[4] মূল চিত্রায়ন শুরু হয় ২১ নভেম্বর, ১৯৯৩ এবং শেষ হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪[8][9] চলচ্চিত্রটি ধারণ করা হয় অ্যারিজোনার ওল্ড টাকসন স্টুডিওজ[4] এবং টাকসন থেকে ৪০ মাইল দক্ষিণপূর্বে মেসকালে।[1] আবহাওয়াজনিত কারণে নির্মাণ কিছুদিন বন্ধও ছিল।[10]
শ্যারন স্টোনের একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেওয়ার আগে বাদ দেওয়া হয়।[11] এই অভিনেত্রী/সহ-প্রযোজক মনে করেন এই দৃশ্যটি ছবিতে যে বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে তার সাথে খাপ খায় নি। তবে তা হোম ভিডিওর জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিল।[1]
চলচ্চিত্রের মৌলিক সঙ্গীত ভ্যারেস সারাবান্দের লেবেলে ১৯৯৫ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়[12] গানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেন অ্যালান সিলভেস্ট্রি ও মিক্সিং করেন ডেনিস এস. স্যান্ডস। কেনেথ কারমান ও থমাস ড্রেসচার সঙ্গীত সম্পাদনা করেন।[13]
দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড: চলচ্চিত্রের মৌলিক সঙ্গীত | |
---|---|
অ্যালান সিলভেস্ট্রি কর্তৃক চলচ্চিত্রের সঙ্গীত | |
মুক্তির তারিখ | ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ |
দৈর্ঘ্য | ৩১:০১ |
সঙ্গীত প্রকাশনী | ভ্যারেস সারাবান্দে |
দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড: চলচ্চিত্রের মৌলিক সঙ্গীত | ||
---|---|---|
নং. | শিরোনাম | দৈর্ঘ্য |
১. | "রিডেম্পশন" | ৩:২৫ |
২. | "গানফাইট মন্টেজ" | ১:৪১ |
৩. | "কুডন'ট টেল আস এপার্ট" | ১:১৭ |
৪. | "জন হেরড" | ১:২১ |
৫. | "এলেন'স ফার্স্ট রাউন্ড" | ১:১০ |
৬. | "লেডি'স দ্য উইন্টার" | ০:৪৭ |
৭. | "ডিনার টুনাইট" | ২:১১ |
৮. | "কোর্ট'স স্টোরি" | ১:০২ |
৯. | "এলেন ভার্সেস ড্রেড" | ১:১০ |
১০. | "কিড ভার্সেস হেরড" | ৪:১৭ |
১১. | "আই ডোন্ট ওয়ানা ডাই" | ২:০০ |
১২. | "দ্য বিগ ডে" | ২:২৭ |
১৩. | "এলেন রিটার্নস" | ৩:৫৪ |
১৪. | "দ্য ল'স কাম ব্যাক টু টাউন" | ০:৪৯ |
১৫. | "দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড (শেষ দৃশ্যে)" | ৩:৩০ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৩১:০১ |
দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ২,১৫৮টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং প্রথম সপ্তাহে $৬,৫১৫,৮৬১ আয় করে। ছবিটি মোট $১৮,৬৩৬,৫৩৭ আয় করে[2] এবং বক্স অফিস বোম্ব বলে ঘোষিত হয়। সিমন মুর বলেন ছবিটি ইউরোপে মোটামুটি ব্যবসা করে।[1]
দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনেরই সমালোচনা লাভ করে। ৪১টি সমালোচনার ভিত্তিতে রটেন টম্যাটোস-এ ১০-এর গড় ৫.৯ রেটিং-এ এই ছবির রেটিং স্কোর ৫৬%।[14] মেটাক্রিটিক-এ ২১টি সমালোচনার ভিত্তিতে ছবিটির গড় স্কোর ১০০-এ ৪৯।[15]
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর জেনেত মাসলিন শ্যারন স্টোনের অভিনয় এবং রেইমির পরিচালনার প্রশংসা করে বলেন, স্টোন রেইমির কৌশলকে সুন্দরভাবে রপ্ত করেছে এবং কাল্ট চলচ্চিত্র পরিচালক রেইমিও তার সেরাটা দিয়েছে।[16] শিকাগো সান-টাইমস-এর রজার ইবার্ট ক্লিশেগুলো প্রকাশ করার জন্য ছবিটির সমালোচনা করেছেন কিন্তু রেইমির পরিচালনা ও দান্তে স্পিনোত্তির চিত্রগ্রহণের প্রশংসা করেছেন।[17] সমালোচক ও রেইমির জীবনীকার বিল ওয়ারেন বলেন, এটি সার্জিও লিয়ন-এর ১৯৬০-এর দশকের স্পাগেটি ওয়েস্টার্ন-এর অনুরূপ বিষয়, পদ্ধতি ও আপীল নিয়ে নির্মাণের সতর্ক প্রচেষ্টা ছিল, বিশেষ করে ক্লিন্ট ইস্টউড অভিনীত ম্যান উইথ নো নেইম-এর মত।[5] শিকাগো রিডার-এর জোনাথান রোসেনবাম বলেন "রেইমি সার্জিও লিয়নের মত চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছিল এবং দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড উপভোগ্য ছিল।"[18] রোলিং স্টোন-এর পিটার ট্রেভারস বলেন যে দ্য কুইক অ্যান্ড দ্য ডেড বিখ্যাত পশ্চিমা ধাঁচের চলচ্চিত্রের সংকলন। রেইমি কৌশলটা ঠিক ধরতে পারলেও মূল বিষয়টা ধরতে পারেন নি।"[19]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.