জ্ঞানযোগ
হিন্দুধর্মের চারটি আধ্যাত্মিক পথের একটি / From Wikipedia, the free encyclopedia
জ্ঞানযোগ (সংস্কৃত: ज्ञानयोगः) বা জ্ঞানমার্গ হলো মোক্ষ বা মুক্তির জন্য তিনটি ধ্রুপদী পথের মধ্যে একটি (মার্গ)।[1][2] হিন্দুধর্মে, এটি "জ্ঞানের পথ" এর উপর জোর দেয়,[3][4] "আত্ম-উপলব্ধির পথ" নামেও পরিচিত।[5] অন্য দুটি হল কর্মযোগ (কর্মমার্গ) ও ভক্তিযোগ (ভক্তিমার্গ)।[1][6][7] হিন্দু গ্রন্থের আধুনিক ব্যাখ্যায় রাজযোগ এবং ক্রিয়াযোগের মতো পদ্ধতি, কৌশল ও সূত্র পাওয়া গেছে।[8][9] সংস্কৃত ভাষায় "জ্ঞান" শব্দের অর্থ "জানা"।[10]
জ্ঞানযোগ হল নাম ও রূপের বাইরে গিয়ে পরম সত্যকে উপলব্ধি। জ্ঞানযোগ অনুসারে, এই উপলব্ধির মাধ্যমে মোক্ষ লাভ সম্ভব। যোগ দর্শনের অন্যান্য শাখায় একটি বিশেষ নাম বা রূপকে ধ্যান করার মাধ্যমে পরম সত্যকে উপলব্ধি করার কথা বলা হয়। কিন্তু জ্ঞানযোগে তা বলা হয় না। জ্ঞানযোগের মতে, শুধুমাত্র জ্ঞানই যথেষ্ট। এই যোগের কোনো কোনো অভিমত সাংখ্য দর্শনের অনুরূপ।
ভগবদ্গীতা অনুসারে, অদ্বৈতবাদী দার্শনিক আদি শঙ্কর “ব্রহ্মজ্ঞান”-এর উপর প্রাথমিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। অন্যদিকে। বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী দার্শনিক রামানুজের মতে, জ্ঞান ভক্তির একটি শর্ত মাত্র।[11] ভগবদ্গীতায় (১৩।৩) কৃষ্ণ বলছেন, প্রকৃত জ্ঞান “ক্ষেত্র” (কর্মের ক্ষেত্র—অর্থাৎ, দেহ) এবং “ক্ষেত্রজ্ঞ”-এর (দেহকে যিনি জানেন—অর্থাৎ, আত্মা) সঠিক ধারণার মাধ্যমে পাওয়া যায়। কৃষ্ণের মতে, জ্ঞানীর এই দুইয়ের পার্থক্য সম্পর্কে অবহিত হওয়া কর্তব্য।[12]