জামাইকার ইতিহাস
উইকিমিডিয়ার ইতিহাস নিবন্ধ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ক্যারিবিয়ান দ্বীপ জ্যামাইকাতে ৬০০ খ্রিস্টাব্দ বা ৬৫০ খ্রিস্টাব্দে রেডওয়্যার সম্প্রদায়ের লোকেরা বাস করতো, তারা রেডওয়্যার(ইংরেজিঃ Redware) মৃৎশিল্পের সাথে যুক্ত ছিল।[1][2][3] প্রায় ৮০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে, আরাওয়াক উপজাতিরা ও তাইনো উপজাতিরা বাসস্থান স্থাপনের মাধ্যমে দ্বীপটিতে দ্বিতীয় উত্থান নিয়ে এসেছিল, যা ১৪৯৪ সালে কলম্বাস আগমনের পূর্ব পর্যন্ত বলবৎ ছিল।[1] জামাইকার আদি বাসিন্দারা জ্যামাইকাকে "জেইমাখা"(ইংরেজিঃ Xaymaca) নামে ডাকতো, যার অর্থ হল "বন এবং জলের দেশ"।[4] স্পেনীয়রা আরাওয়াকদের দাস বানিয়েছিল এবং স্পেনীয়রা তাদের সাথে এমন রোগ নিয়ে এসেছিল যে রোগটির দ্বারা আরও আরাওয়াক উপজাতি আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।[5] আগে ইতিহাসবিদরা বিশ্বাস করতেন যে ১৬০২ সাল নাগাদ আরাওয়াক-ভাষী তাইনো উপজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। যাইহোক, কিছু তাইনো উপজাতির মানুষ জ্যামাইকার অভ্যন্তরের বনভূমি ও পর্বতমালায় পালিয়ে যায়, সেখানে তারা পালিয়ে যাওয়া আফ্রিকান দাসদের সাথে মিশে যায় এবং পরবর্তীতে প্রথমে স্পেনীয় এবং তারপরে ইংরেজ শাসন থেকে বেঁচে থেকেছিল।[6][7][8]
স্পেনীয়রা কয়েকশো পশ্চিম আফ্রিকান মানুষদের এই দ্বীপে নিয়ে এসেছিল। তবে ইংরেজরা বেশিরভাগ আফ্রিকানকে জামাইকাতে নিয়ে এসেছিল।
১৬৫৫ সালে ইংরেজরা স্পেনীয় উপনিবেশবাদীদের পরাজিত করে জামাইকা আক্রমণ করেছিল। আফ্রিকান ক্রীতদাসরা রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে দ্বীপের অভ্যন্তরে পালিয়ে গিয়ে স্বাধীন সম্প্রদায় গড়ে তুলেছিল যারা পরবর্তীতে মেরুন (ইংরেজিঃ Marrons) নামে পরিচিত লাভ করেছিল।[9] জ্যামাইকার উপকূলে ইংরেজরা পোর্ট রয়্যালের উপনিবেশ নির্মাণ করেছিল, যেখানে জলদস্যুতার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়, কারণ অনেকগুলি ইউরোপীয় বিদ্রোহী তাদের সমুদ্রের উপর সাজা ভোগ করার জন্য তাদের দেশ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। ক্যাপ্টেন হেনরি মর্গান, যিনি একজন উপনিবেশর অধিকারী ও ওয়েলসের অধিবাসীদের অন্তর্গত একজন শত্রু-জাহাজ আক্রমণ ও লুণ্ঠনের অধিকারপ্রাপ্ত বেসরকারী জাহাজের মালিক ছিলেন, পোর্ট রয়্যাল উপনিবেশ এবং জাহাজ ঘাঁটিগুলিতে অভিযান চালিয়ে ক্যারিবীয়নদের মধ্যে অন্যতম ধনী জলদস্যু হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ব্রিটিশ জামাইকা আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে জলদস্যুতাকে হটিয়ে আখকে প্রতিস্থাপন করা হয়। চিনি শিল্পটি শ্রমিক-বান্ধব ছিল এবং এই জন্য ব্রিটিশরা কয়েক হাজার আফ্রিকান দাসকে জামাইকাতে নিয়ে আসে। ১৮৫০ সালের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ জ্যামাইকান মানুষের সংখ্যা শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যার থেকে বেশি হয়ে উঠে যা তৎকালীন বিশ অনুপাত এক এর সমান ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীতে দাসত্বের আবরণে বেষ্টিত তৎকালীন জামাইকানরা এক ডজনেরও বেশি বড় বিদ্রোহ পরিচালনা করেছিল, যার মধ্যে ১৭৬০ সালের ট্যাকির বিদ্রোহ অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও ব্রিটিশ এবং পর্বত অবস্থানরত জামাইকান মেরুন সম্প্রদায়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমিক সংঘাত ছিল যেমন ১৭৩০ দশকের প্রথম মেরুন যুদ্ধের সমাপ্তি এবং ১৭৯৫–১৭৯৬ সালের দ্বিতীয় মেরুন যুদ্ধ।