Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চিত্রল নদী (উর্দু, পশতু - چترال سيند) হল পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাংশে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তরাংশ ও আফগানিস্তানের পূর্বাংশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। এর দৈর্ঘ্য ৪৮০ কিলোমিটার (মূল নদী ২৬০ কিলোমিটার, মস্তুজ ও ইয়ারখুন নদীর সাথে মিলিত দৈর্ঘ্য ৪৮০ কিলোমিটার)। স্থানীয় ভাবে এই নদী কুনার নদী (کونړ سيند) ও কামা নদী (کامه سيند) নামেও পরিচিত। হিন্দুকুশ পর্বতমালার বরফগলা জলে পুষ্ট দক্ষিণপশ্চিমবাহী এই নদী সিন্ধু অববাহিকার নদীসমূহের মধ্যে অন্যতম।[1] আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহরের কাছে এই নদী বাম দিক হতে কাবুল নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এরপরে সেই মিলিত স্রোত কাবুল নদী নামে দক্ষিণপূর্বে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় পাকিস্তানে প্রবেশ করে আটক শহরের কাছে সিন্ধু নদের সাথে মিলিত হয়েছে।
চিত্রল (کونړ سيند) | |
কুনার, কামা | |
River | |
দেশ | পাকিস্তান, আফগানিস্তান |
---|---|
province | খাইবার পাখতুনখোয়া, নুরিস্তান, কুনার, নানগারহর |
উপনদী | |
- বাঁদিকে | শিশি নদী |
- ডানদিকে | লুৎখো নদী, মস্তুজ নদী, পেচ নদী, লান্দাই সিনদ নদী |
উৎস | হিন্দুকুশ পর্বতমালা |
মোহনা | কাবুল নদী |
- অবস্থান | জালালাবাদ |
দৈর্ঘ্য | ৪৮০ কিলোমিটার (২৯৮ মাইল) |
অববাহিকা | ২,৬০০ বর্গকিলোমিটার (১,০০৪ বর্গমাইল) |
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চিত্রল জেলায় হিন্দুকুশ পর্বতমালার উত্তর ঢালের হিমবাহ থেকে এই নদীর উৎপত্তি। কিন্তু উৎসস্থল থেকে বেশ কিছুটা নেমে এসে মস্তুলে বাম দিক থেকে বয়ে আসা লুৎখো নদীর সাথে মিলিত হবার আগে পর্যন্ত এই স্রোত মূলত মস্তুজ নদী নামেই পরিচিত। এরপরে এই মিলিত স্রোত চিত্রল বা চেত্রার নামে দক্ষিণ মুখে প্রবাহিত হয়ে আফগানিস্তানে কুনার উপত্যকায় প্রবেশ করেছে। আফগানিস্তানে ঢুকে এই নদী কুনার নামে পরিচিত হয়। আসাদাবাদ শহরের কাছে এই নদীর সাথে ডান দিক থেকে এসে মিলিত হয়েছে হিন্দুকুশ পর্বতমালারই বরফগলা জলে পুষ্ট আরেকটি নদী পেচ। এরপর এই মিলিত স্রোত কুনার নদী নামে আরও কিছুটা বয়ে গিয়ে জালালাবাদ শহরের একটু পূর্বে কাবুল নদীতে গিয়ে পড়ে।
চিত্রল নদী তার উচ্চ গতিপথে মূলত পাকিস্তানের চিত্রল জেলায় হিন্দুকুশ পর্বতের উত্তর ঢালে হিমবাহের বরফগলা জলে পুষ্ট হয়ে হিন্দুকুশ পর্বতমালার পূর্ব সীমা বরাবর নেমে এসেছে। এই অংশে এই নদী মূলত মস্তুজ নদী নামেই পরিচিত। এই নদী খাতের পূর্ব দিকের পর্বতমালাকে সাধারণভাবে হিন্দুরাজ পর্বতমালা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এরপর মস্তুজ শহরের কাছে পূর্ব থেকে বয়ে আসা লুৎখো নদীর সাথে মিলিত হয়ে এই নদী প্রথমে চিত্রল নদী নামে পরিচিতি লাভ করে পাকিস্তানের চিত্রল উপত্যকা ও পরে কুনার নদী নামে আফগানিস্তানের কুনার উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই দুই উপত্যকাই এই নদীর জলে পুষ্ট হয়। এখানকার মানুষের জীবন ও অর্থনীতিতে এই নদীর গুরুত্ব যথেষ্টই বেশি। আঞ্চলিক পর্যায়ে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ পাকিস্তানের চিত্রল জেলার প্রধান শহর ও প্রশাসনিক কেন্দ্র চিত্রল এই নদীর ধারেই অবস্থিত।[2] ১৯৯০ সালে UNHCR কর্তৃক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশের মারাওয়ার জেলার ৬০% মানুষই পানীয় জলের জন্য এই নদীর জলের উপরই নির্ভরশীল।[3]
দুই লাগোয়া উপত্যকা কুনার ও চিত্রল বর্তমানে দু'টি আলাদা আলাদা দেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বিভক্ত। কিন্তু আগে এই অঞ্চলের উপর দিয়ে একটি বহুল ব্যবহৃত বাণিজ্যপথ চালু ছিল। পামিরগ্রন্থির উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের মধ্য দিয়ে আসা গিরিপথগুলি থেকে এই উপত্যকাদু'টির মধ্য দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের সমভূমিতে নেমে আসার পথটি ছিল একটি অন্যতম সহজ পথ। তবে চিত্রল নদীটি বেশিরভাগ অঞ্চলেই নৌচলাচলের পক্ষে অযোগ্য হওয়ায় এক্ষেত্রে জলপথের থেকে স্থলপথই বেশি ব্যবহৃত হত। মধ্য ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইংরেজ সেনাপতি মেজর জেনারেল অগাস্টাস অ্যাবট এই অঞ্চলে অভিযান চালাতে গিয়ে আফগানিস্তানের কুনার উপত্যকায় এই নদীর অববাহিকা অঞ্চল প্রত্যক্ষ করেন। তাঁর বিবরণেও এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও সৌন্দর্যের সুন্দর একটি বিবরণ আমরা পেয়ে থাকি।[4] তবে বর্তমানে এই বাণিজ্যপথ রাজনৈতিক কারণে সম্পূর্ণই পরিত্যক্ত।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.