Loading AI tools
বৃষ্টি, বজ্র ও প্রচন্ড ঘূর্ণি বাতাস সম্বলিত আবহাওয়া উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ঘূর্ণিঝড় বা ঘূর্ণাবর্ত হল ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রে সৃষ্ট বৃষ্টি, বজ্র ও প্রচণ্ড ঘূর্ণি বাতাস সংবলিত আবহাওয়ার একটি নিম্ন-চাপ প্রক্রিয়া যা নিরক্ষীয় অঞ্চলে উৎপন্ন তাপকে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত করে। এই ধরনের ঝড়ে বাতাস প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ছুটে চলে বলে এর নামকরণ হয়েছে ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণন উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে।
ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানলে যদিও দুর্যোগের সৃষ্টি হয়, কিন্তু এটি আবহাওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা পৃথিবীতে তাপের ভারসাম্য রক্ষা করে। গড়ে পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৮০ টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। এর অধিকাংশই সমুদ্রে মিলিয়ে যায়, কিন্তু যে অল্প সংখ্যক উপকূলে আঘাত হানে তা অনেক সময় ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করে।
ঘূর্ণিঝড় হল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় বা বায়ুমণ্ডলীয় একটি উত্তাল অবস্থা যা বাতাসের প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত হয়। এটি সাধারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের একটি। ঘূর্ণিঝড় হল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় (Tropical cyclone) ।পৃথিবীর ৩০º উত্তর এবং ৩০º দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। দক্ষিণ আটলান্টিক এবং দক্ষিণ-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর ব্যতীত পৃথিবীর বাদবাকি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাগরাঞ্চল যে মারাত্মক বায়ুমণ্ডলীয় দুর্যোগসমূহ জন্ম দিচ্ছে তা সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর পৃথিবী জুড়ে গড়ে ৮০টি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হয়,এর মধ্যে কিছু ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানে আবার কিছু ঘূর্ণিঝড় মহাসাগরের বিলীন হয়ে যায়।আবহাওয়াবিজ্ঞানে ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাসাগর বা সমুদ্রে সৃষ্ট বৃষ্টি, বজ্রপাত, গভীর নিম্নচাপ ও প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মানরত ঘূর্ণিবায়ুর সংবলিত আবহাওয়ার একটি নিম্নচাপীয় প্রক্রিয়া যা নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমুদ্রের অনুকূল তাপমাত্রায় গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে কেন্দ্রাভিমুখী ঘূর্ণায়মান প্রচণ্ড ঘূর্ণিবায়ুপ্রবাহ ও তাপকে মেরু অঞ্চলের দিকে অতি প্রবল বেগে ঘূর্ণাবর্ত হয়ে ছুটতে থাকে এবং ধেয়ে যায়, মেরু অঞ্চলের দিকে ধেয়ে যাওয়া ঘূর্ণায়মান প্রচণ্ড বায়ুপ্রবাহ সংবলিত ঝড়কে ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন বলে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়া পদ্ধতিকে "সাইক্লোজেনেসিস" বলে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি বা উৎপত্তিস্থল হল সাধারণত পৃথিবীর নিরক্ষীয় রেখায় নিরক্ষীয় অঞ্চলে অ্যান্টিসাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী কাছে। ঘূর্ণিঝড় অপর নাম হল ঘূর্ণিবাত্যা।
ঘূর্ণিঝড়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘সাইক্লোন’ গ্রিক শব্দ ‘কাইক্লোস’ (Kyklos) থেকে এসেছে। কাইক্লোস শব্দের অর্থ কুণ্ডলী পাকানো সাপ। ঘূর্ণিঝড়ের উপগ্রহ চিত্র থেকে এমনতর নামকরণের যথার্থতা বোঝা যায়। ব্রিটিশ-ভারতীয় বিজ্ঞানী ও আবহাওয়াবিদ হেনরী পিডিংটন ১৮৪৮ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত সামুদ্রিক দুর্যোগ বিষয়ক পুস্তক The Sailor’s Horn-book for the Law of Storms -এ প্রথমবারের মতো সাইক্লোন শব্দটি ব্যবহার করেন। একটি অঞ্চলে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে একটি কেন্দ্রাভিমুখী ঘূর্ণায়মান প্রচণ্ড বায়ুপ্রবাহ থেকেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়কে আমেরিকা মহাদেশে ‘হারিকেন’, দূরপ্রাচ্যে ‘টাইফুন’, দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশে বলা হয় সাইক্লোন এবং বাংলায় ঘূর্ণিঝড়। পাশ্চাত্যে হারিকেনকে মানুষের নামেও চিহ্নিত করা হয়, যেমন: মিচেল, এন্ড্রু, ক্যারল, ডরোথি এবং ইভ। তবে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে এ ধরনের নামকরণ প্রবণতা নেই। কখনও কখনও মধ্য অক্ষাংশ অঞ্চলে এটিকে নিম্নচাপ (Depression) বলা হলেও বর্তমানে সাইক্লোন শব্দটি হারিকেনধর্মী গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিম্নচাপকে প্রকাশের জন্যই ব্যবহূত হচ্ছে, বিশেষত যখন তা ভারত মহাসাগর থেকে উদ্ভূত হয়। বাংলায় এর আরেকটি প্রচলিত নাম ‘তুফান’ যা চীনা শব্দ ‘টাইফুন’ থেকে এসেছে।ভৌগোলিক দিক থেকে বাংলাদেশ আর্দ্র গ্রীষ্মমণ্ডলের অংশ, যার উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের প্রান্তে রয়েছে অনেকটা চোঙ আকৃতির উপকূলভাগ। বাংলাদেশের এ স্বতন্ত্র ভৌগোলিক অবস্থান মৌসুমীবায়ুর সঙ্গে সঙ্গে সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো এবং বন্যাও বয়ে আনে।ঘূর্ণিঝড় সাধারণত গভীর সমুদ্রে সৃষ্টি হয় বিধায় এ সম্পর্কে যথাযথ অনুসন্ধানের কাজটি খুব সহজ নয়। মহাশূন্য গবেষণার অগ্রগতির ফলে আবহাওয়া উপগ্রহগুলি এ সম্পর্কে মূল্যবান কিছু তথ্য দিতে পারায় অনুসন্ধানের কাজে কিছুটা অগ্রগতি ঘটেছে। উন্নত দেশসমূহ বিমান থেকে নিরীক্ষণ এবং ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সরাসরি অনুসন্ধানকর্ম পরিচালনা করে থাকে। সম্প্রতি সাধারণত উন্নত ও অনুন্নত দেশসমূহে ঘূর্ণিঝড় পরীক্ষা-নিরীক্ষণ এবং অনুসন্ধানকর্মের সূত্রপাত ঘটেছে।
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য আনুষংগিক কিছু প্রভাবক কাজ করে।
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৬-২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকা আবশ্যক এবং একটি নির্দিষ্ট গভীরতা(কমপক্ষে ৫০ মিটার)পর্যন্ত এ তাপমাত্রা থাকতে হয়। এজন্য আমরা দেখি সাধারণত কর্কট ও মকর ক্রান্তিরেখার কাছাকাছি সমুদ্র গুলিতে গ্রীষ্মকালে বা গ্রীষ্মের শেষে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। অন্য কোথাও হয় না।
নিরক্ষীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে পৃথিবীপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে গেলে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়। এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য মেরু অঞ্চল থেকে শীতল বায়ু উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণে নিরক্ষরেখার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। কিন্তু পৃথিবীর ঘূর্ণনের প্রভাবে সৃষ্ট করিওলিস শক্তির (coriolis force) কারণে এ বায়ু সোজাসুজি প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। এ জন্য আমরা দেখি, উত্তর গোলার্ধে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরতে থাকে। নিরক্ষরেখার উপর এ শক্তির প্রভাব শূন্য। কাজেই, এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূলে থাকলেও করিওলিস শক্তি ন্যূনতম থাকায়, নিরক্ষরেখার ০ ডিগ্রী থেকে ৫ ডিগ্রীর মধ্যে কোন ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায় না। সাধারণত, নিরক্ষরেখার ১০ ডিগ্রী থেকে ৩০ ডিগ্রীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।
বায়ুমণ্ডলের নিম্ন ও মধ্যস্তরে অধিক আর্দ্রতা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ঘূর্ণিঝড় স্বতস্ফুর্তভাবে সৃষ্টি হতে পারে না। সমুদ্রে আগে থেকে বিরাজমান বিক্ষুব্ধ কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি থাকলে, ঘূর্ণিঝড় সাধারণত সেটাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এছাড়া, পশ্চিমমুখী নিম্ন বায়ুচাপসম্পন্ন পূবালী স্রোত (easterly waves), আবহাওয়ায় উচ্চতার সাথে সাথে বায়ুর গতি ও দিকের স্বল্প পরিবর্তন এবং দ্রুত শীতলীকরণের ফলে নির্গত তাপ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সহায়ক।
ঘূর্ণিঝড় উৎপন্ন অঞ্চল হিসেবে ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রগুলিকে সাতটি বেসিন বা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও হুঁশিয়ারী প্রদানের জন্য বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া বিভাগ কাজ করছে। নিচে সাতটি বেসিনের নাম এবং সেখানে তদারককারী সংস্থাগুলোর তালিকা দেয়া হলঃ
বেসিন এবং তদারককারী সংস্থা | |
---|---|
বেসিন | বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনস্থ আবহাওয়া বিভাগ |
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর | ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার |
উত্তর পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর | ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার এবং সেন্ট্রাল প্যাসিফিক হারিকেন সেন্টার |
উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর | জাপান আবহাওয়া সংস্থা |
উত্তর ভারত মহাসাগর | প্যানেল দেশসমূহঃ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা,মায়ানমার ও থাইল্যাণ্ড আবহাওয়া বিভাগ |
দক্ষিণ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর | জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার |
দক্ষিণ পূর্ব ভারত মহাসাগর | ব্যুরো অফ মিটিওরলজি (অস্ট্রেলিয়া) |
দক্ষিণ পশ্চিম ভারত মহাসাগর | মিটিও ফ্রান্স |
প্রতিটি বেসিনে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মৌসুম ভিন্ন ভিন্ন। উত্তর আটলান্টিকে ঘূর্ণিঝড় মৌসুম শুরু হয় জুনের ১ তারিখ এবং শেষ হয় নভেম্বর ৩০ তারিখে। বাংলাদেশ উপকূলে মূলতঃ বর্ষাকালের শুরুতে এপ্রিল-মে মাসে এবং বর্ষার শেষে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ দেখা দেয়। তবে বর্ষাকালেও বিক্ষিপ্তভাবে ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায়।
সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা দেখি যে বর্ষা আসার আগে এপ্রিল থেকে মে মাস এবং বর্ষা বিদায়ের পর অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে বঙ্গোপসাগরসহ যেকোনো মহাসাগর অনুকূল থাকলে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন হুটহাট করে সৃষ্টি হয় না।উৎপত্তি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৭°সে এর উপরে থাকা প্রয়োজন। অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি ঘটে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি অঞ্চল থেকে। সাধারণত ৫° উত্তর থেকে ৩০° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে ৩০° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলির উৎপত্তি ঘটে। ধারণা করা হয় যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ক্ষেত্রে আন্তঃক্রান্তীয় মিলন বলয় (Inter-tropical Convergence zone) - এর কিছু ভূমিকা রয়েছে। আন্তঃক্রান্তীয় মিলন বলয়ের অবস্থান হল বিষুবরেখার কাছাকাছি, যেখানে দুই গোলার্ধের বায়ুপ্রবাহ এসে মিলিত হয়, তবে এর অবস্থান ঋতুভেদের ওপর নির্ভর করে। একটি ঘূর্ণিঝড় পৃথিবীর আবর্তন থেকে সৃষ্ট ‘কোরিওলিস ফোর্স’ থেকে তার ঘূর্ণায়মান গতি প্রাপ্ত হয়। কার্যত বিষুবরেখায় এ শক্তি শূন্যের (০) পর্যায়ে থাকে। সুতরাং ঘূর্ণিঝড়গুলি ঠিক বিষুবরেখা থেকে সৃষ্টি হয় না।
ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বিস্ময়কর গাঠনিক চিত্র হল এর ‘চোখ’। উপগ্রহ চিত্রগুলিতে এ চোখের গঠন বা আকৃতি আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। ঘূর্ণিঝড়ের চোখের মতো অংশটি ক্ষুদ্র এবং প্রায় বৃত্তাকার বা কখনও এটি চ্যাপ্টা হয়। এ অঞ্চলের ব্যাস থাকে ৮-৫০ কিমি। চোখে বায়ুচাপ থাকে সর্বনিম্ন এবং তাপমাত্রা থাকে সর্বোচ্চ। ঘূর্ণিঝড়ের চোখ যত উষ্ণ থাকে ঝড় ততো বেশি শক্তিশালী হয়। চোখে বায়ুপ্রবাহ থাকে খুবই হালকা (সাধারণত ঘণ্টায় ২৫ থেকে ৩০ কিমি-এর বেশি নয়) এবং মেঘ থাকে না বললেই চলে। এর বিপরীতে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যায় চোখটির পরিসীমার বাইরে প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় যাকে চোখ-দেয়াল বলা হয়। এখানে বাতাসের বেগ এবং বৃষ্টিপাত সবচেয়ে বেশি।চোখ-দেয়ালের বাইরের সীমানা থেকে বাতাসের বেগ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি সাধারণত বৃত্তাকার অথবা প্রায় বৃত্তাকার এবং এর ব্যাস ১০০ থেকে ৮০০ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড়গুলি প্রায়শই কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্গে একটি লম্বা লেজের মতো অঞ্চল নিয়ে আবর্তিত হয় এবং এ প্রলম্বিত অংশে একাধিক বলয় থাকে। সমগ্র বিষয়টি একটি সর্পিলাকার কাঠামো তৈরি করে যা অনেকটা ‘উল্টানো কমা’ বা ‘উদ্ধার চিহ্নের’ মত। ঘূর্ণিঝড়ের লেজটি কয়েক শত কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের লেজের মতো অংশটি সাধারণত প্রাণকেন্দ্র বা মুল অংশটির পূর্বেই ভূমিকে অতিক্রম করে যার ফলে ঝড়ের পূর্বে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয় এবং ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার শুরুতে প্রায়শই বৃষ্টিপাত ঘটে। এধরনের লক্ষণ সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত হতে পারে।
শুনতে তিনটি পৃথক ঝড়ের নাম মনে হলেও আসলে এগুলো অঞ্চলভেদে ঘূর্ণিঝড়েরই ভিন্ন ভিন্ন নাম। সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। সাইক্লোন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ কাইক্লোস (kyklos) থেকে, যার অর্থ বৃত্ত বা চাকা। এটা অনেক সময় সাপের বৃত্তাকার কুণ্ডলী বুঝাতেও ব্যবহৃত হয়। ১৮৪৮ সালে হেনরি পিডিংটন তার ‘সেইলর’স হর্ণ বুক ফর দি ল’অফ স্টর্মস’(Sailor's horn book for the law of storms) বইতে প্রথম সাইক্লোন শব্দটি ব্যবহার করেন। তারপর থেকেই ঘূর্ণিঝড় বুঝাতে সাইক্লোন শব্দের ব্যবহার শুরু হয়।
আটলান্টিক মহাসাগর এলাকা তথা আমেরিকার আশেপাশে ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ যখন ঘণ্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশি হয়, তখন জনগণকে এর ভয়াবহতা বুঝাতে হারিকেন শব্দটি ব্যবহার করা হয়। মায়া দেবতা হুরাকান- যাকে বলা হত ঝড়ের দেবতা, তার নাম থেকেই হারিকেন শব্দটি এসেছে। তেমনিভাবে,প্রশান্ত মহাসাগর এলাকা তথা চীন, জাপানের আশেপাশে হারিকেন- এর পরিবর্তে টাইফুন শব্দটি ব্যবহূত হয়, যা ধারণা করা হয় চীনা শব্দ টাই-ফেং থেকে এসেছে, যার অর্থ প্রচণ্ড বাতাস। অনেকে অবশ্য মনে করেন ফার্সি বা আরবি শব্দ তুফান থেকেও টাইফুন শব্দটি আসতে পারে।
শ্রেণী | বায়ুপ্রবাহ |
---|---|
৫ম | ≥৭০ m/s, ≥১৩৭ knots ≥১৫৭ mph, ≥২৫২ km/h |
৪র্থ | ৫৮–৭০ m/s, ১১৩–১৩৬ knots ১৩০–১৫৬ mph, ২০৯–২৫১ km/h |
৩য় | ৫০–৫৮ m/s, ৯৬–১১২ knots ১১১–১২৯ mph, ১৭৮–২০৮ km/h |
২য় | ৪৩–৪৯ m/s, ৮৩–৯৫ knots ৯৬–১১০ mph, ১৫৪–১৭৭ km/h |
১ম | ৩৩–৪২ m/s, ৬৪–৮২ knots ৭৪–৯৫ mph, ১১৯–১৫৩ km/h |
ক্রান্তীয় ঝড় |
১৮–৩২ m/s, ৩৪–৬৩ knots ৩৯–৭৩ mph, ৬৩–১১৮ km/h |
---|---|
ক্রান্তীয় নিম্নচাপ |
≤১৭ m/s, ≤৩৩ knots ≤৩৮ mph, ≤৬২ km/h |
সাতটি বেসিনেই বাতাসের গতিবেগ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়কে কতগুলো শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। আটলান্টিক এলাকার জন্য, প্রাথমিক অবস্থায় বাতাসের গতিবেগ যখন ঘণ্টায় ৬২ কি.মি.-র নিচে থাকে, তখন একে শুধু নিম্নচাপ (Tropical depression) বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি.-এ উন্নীত হলে এটিকে একটি নাম দেওয়া হয় এবং ঘণ্টায় ৬২ কি.মি. থেকে ১১৭ কি.মি. ব্যবধানে এটিকে একটি ঝড় বা Tropical storm বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ যখন ঘণ্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশি হয়, তখন এটি হারিকেন পর্যায়ে উন্নীত হয়। বাতাসের তীব্রতা এবং ধ্বংসক্ষমতা অনুযায়ী হারিকেনকে আবার এক থেকে পাঁচ মাত্রার ৫ টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। আবিষ্কারকের নামানুসারে এটি সাফির-সিম্পসন স্কেল নামে পরিচিত।
বাতাসের তীব্রতা এবং ধ্বংসক্ষমতা অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারতে ঘূর্ণিঝড়কে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হয়, তাকে ঘূর্ণিঝড় বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। গতিবেগ যদি ৮৯-১১৭ কিলোমিটার হয়, তখন তাকে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বা ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বলা হয়। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হয়, তখন সেটিকে হ্যারিকেন গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় বা ‘ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিলোমিটার বা তার বেশি হলে তাকে ‘সুপার সাইক্লোন’ বলা হয়।
সাফির সিম্পসন হারিকেন স্কেল মাপনীটি বাতাসের উপর ভিত্তি করে হারিকেনকে পাঁচটি ভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করে। ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার শ্রেণী-৩ এবং তার উপরের হারিকেনকে প্রধান হারিকেন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করে এবং যৌথ টাইফুন সতর্কীকরণ কেন্দ্র ১৫০ mph (২৪১ কিমি/ঘন্টা) বা তার বেশি (শক্তিশালী বিভাগ ৪ এবং বিভাগ ৫) এর টাইফুনকে সুপার টাইফুন হিসাবে (যদিও সমস্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় খুব বিপজ্জনক হতে পারে) শ্রেণীবদ্ধ করে। বেশিরভাগ আবহাওয়া সংস্থা বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) দ্বারা সুপারিশকৃত টেকসই বাতাসের সংজ্ঞা ব্যবহার করে, যা ১০ মিনিটের ৩৩ ফু (১০.১ মি) উচ্চতায় বায়ু পরিমাপকে নির্দিষ্ট করে। এবং তারপর এর গড় গ্রহণ করে। এর বিপরীতে, ইউএস ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস, সেন্ট্রাল প্যাসিফিক হারিকেন সেন্টার এবং জয়েন্ট টাইফুন সতর্কীকরণ কেন্দ্র টেকসই বাতাসকে এক মিনিটের গড় বাতাস হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে, একই ৩৩ ফু (১০.১ মি) এ উচ্চতাপরিমাপ করা হয়,এবং এটি এই মাপনীর জন্য ব্যবহৃত সংজ্ঞা। মাপনীটি বাতাসের গতিতে মোটামুটি লগারিদমিক। পাঁচটি বিভাগ তীব্রতা বৃদ্ধির ক্রমে নিম্নোক্ত উপধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়গুলোর বায়ুপ্রবাহের গতিবেগের উপর ভিত্তি করে এর তীব্রতা বোঝাতে “সাফির সিম্পসন হারিকেন স্কেল” নামক একটি বিশেষ স্কেল অনুযায়ী যেকোন ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়কে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণন গতিবেগ ফেরেলের সূত্রানুসারে→ উত্তর গোলার্ধে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় সেসব ঘূর্ণিঝড় ঘড়ির কাঁটার বিপরীতমুখী দিকে (Retrograde/Reverse direction) ঘূর্ণায়মান হয় আর দক্ষিণ গোলার্ধে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় সেসব ঘূর্ণিঝড় ঘড়ির কাঁটার অগ্ৰমুখী দিকে (Prograde/Progressive direction) ঘূর্ণায়মান হয়।
আটলান্টিক মহাসাগর এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি.-এ উন্নীত হলে অর্থাৎ নিম্নচাপ যখন ঝড়ে পরিণত হয়, তখন এটিকে চিহ্নিত করার জন্য একটি নাম দেয়া হয়। হারিকেন অবস্থাতেও এগুলো এ নামেই পরিচিত হয়। ইংরেজি বর্ণমালা অনুসারে ২১ টি নাম (৫ টি অক্ষর বাদ দিয়ে) এক বছরের জন্য বাছাই করা হয় যেগুলো সাধারণত পর্যায়ক্রমিকভাবে ছেলে ও মেয়েদের নাম দিয়ে রাখা হয়। যেমন-২০০৬ সালের প্রথম হারিকেনটির নাম আলবার্টো, দ্বিতীয়টি বেরিল ইত্যাদি। এক বছরে ২১ টির বেশি হারিকেন উৎপন্ন হলে (২০০৫ সালে যেমন হয়েছিল), গ্রিক বর্নমালা অনুযায়ী নামকরণ করা হয়- হারিকেন আলফা, বিটা ইত্যাদি। এরকম ছয় বছরের জন্য নাম আগেই নির্ধারণ করে রাখা হয় এবং ছয় বছর পর পর একই নামগুলো আবার ফিরে আসে। যেমন ২০০৫ সালের নামগুলো আবার ২০১১ সালে ফিরে আসবে। তবে ক্যাটরিনা নাম আর কখনো ফিরে আসবে না, কারণ ধ্বংসাত্মক হারিকেনের নামগুলো তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় এবং নতুন নাম নির্ধারণ করা হয়। ২০১১ সালে ক্যাটরিনার জায়গায় তাই নতুন হারিকেনের নাম হবে ক্যাটিয়া (Katia)।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে।
যেমন ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যাণ্ড এবং ওমান, যাদের প্যানেলকে বলা হয় WMO/ESCAP।
এক সময় ঝড়গুলোকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হতো। ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো।
এ কারণে ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।
সে সময় আটটি দেশ মিলে মোট ৬৪টি নাম প্রস্তাব করে। সেসব ঝড়ের নামের মধ্যে এখন 'ফণী' ঝড়কে বাদ দিলে আর সাতটি নাম বাকী রয়েছে।
এর আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ করা হতো।
সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা অনেকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে দায়ী করেছেন। ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রের তাপমাত্রা ১৯৭০ সালের পর প্রায় এক ডিগ্রী ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই এক ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী এবং বেশি সংখ্যায় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, আটলান্টিকে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস প্রাকৃতিক একটি চক্রের কারণে ঘটে। এই চক্রের বৈজ্ঞানিক নাম আটলান্টিক মাল্টিডিকেডাল ওসিলেশন যা সংক্ষেপে AMO নামে পরিচিত। এই চক্রের কারণে প্রকৃতিতে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা কয়েক দশক ধরে কখনও বাড়ে, আবার কয়েক দশক ধরে কমে। কিনতু বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে চক্রের এই বর্ধিষ্ণু ধারা বিগত বর্ধিষ্ণু ধারাগুলোর চাইতে অস্বাভাবিক রকমের বেশি। তারা এই অস্বাভাবিকতার জন্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং-কে দায়ী করছেন। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রধানত অধিক হারে গ্রীনহাউস গ্যাস (CO2 ইত্যাদি) নির্গমন দায়ী যা মূলতঃ উন্নত বিশ্বে স্থাপিত বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে নির্গত হয়।
বাংলাদেশে ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড়ে এত বেশি লোক আর কখনো মারা যায় নি।
১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোক নিহত হয়েছিল এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ১৮৭৬ সালের বিখ্যাত বাকেরগঞ্জ সাইক্লোনে প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত হয়েছিল, এর মধ্যে প্রায় এক লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল দুর্ভিক্ষ ও মহামারীতে। আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে আমরা ১৫৮২ খ্রীষ্টাব্দে বাকেরগঞ্জ তথা বর্তমান বরিশালে আঘাত হানা আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের কথা জানতে পারি, যেটিতেও প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত হয়েছিল।
পক্ষান্তরে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড়ে সবচাইতে বেশি লোক নিহত হয়েছিল ১৯০০ সালে টেক্সাসের গ্যালভেস্টন উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ে। প্রায় দশ হাজার লোক এতে নিহত হয়েছিল। এর পরপরই গ্যালভেস্টন উপকূলীয় সমুদ্রে লেভী বা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। গত বছর লুইজিয়ানা-মিসিসিপি উপকূলে আঘাত হানা বিখ্যাত হারিকেন ক্যাটরিনা ছিল সম্পদের ক্ষতি হিসাবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘূর্ণিঝড়। প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ এতে ধ্বংস হয়েছিল, যদিও ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৬০০। গত বছর আটলান্টিক উপকূলে রেকর্ড সংখ্যক হারিকেন সৃষ্টি হয়েছিল এবং তার মধ্যে বেশ কয়েকটি যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে আঘাত হানে।
ঘূর্ণিঝড় শুধু পৃথিবীতেই হয় না। এই জাতীয় ঝড় Jovian গ্রহগুলতেও দেখা যায় যেমন - নেপচুনের ছোট কালো স্পট, যা জাদুকরের চোখ (Wizard's Eye) হিসাবেও পরিচিত। এই কালো স্পটের ব্যাস সাধারণত গ্রেট ডার্ক স্পটের এক তৃতীয়াংশ। এটি দেখতে একটি চোখের মত, তাই এটার নাম "জাদুকরের চোখ"। মঙ্গলেও ঘূর্ণিঝড় দেখা যায় যার নাম মহা লাল বিন্দু।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.